[“থ্রি ইডিয়টস” মুভিটা দেখেন নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। “ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান” নামে যে বইটা থেকে তৈরি হয়েছে এই মুভি, তার লেখক চেতন ভাগত। নিউইয়র্ক টাইমসের ভাষ্যমতে ভারতের ইতিহাসে ইংরেজি ভাষায় লেখা সবচাইতে বেশি বিক্রিত বইয়ের এই লেখক একই সাথে দারুণ একজন বক্তাও বটে! একটা বিজনেস স্কুলের এমবিএ-র ওরিয়েনটেশন অনুষ্ঠানে নতুন ব্যাচের ছাত্রদের জন্য দেয়া তার বক্তৃতার অনুবাদ এটা।]
শুভ সকাল। আমাকে কথা বলার সুযোগ দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আজকের দিনটা তোমাদের নিয়ে; তোমরা, যারা নিজেদের ঘরের স্বাচ্ছন্দ্যের (কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে তার অভাবের) জীবন ছেড়ে জীবনে কিছু না কিছু হবার জন্য এখানে এসেছো। নিশ্চয়ই তোমরা আজ উত্তেজিত। মানুষের জীবনে এমন দিন খুব কমই আসে যখন সে সত্যিকার অর্থেই রোমাঞ্চিত হয়, কলেজের প্রথম দিন তার মাঝে একটি। আজ এখানে আসার আগে তোমরা হয়তো বারবার শিহরিত হচ্ছিলে – অডিটোরিয়ামটা কেমন হবে, টীচাররা কেমন হবেন, ক্লাসমেট কারা হবে…কৌতূহল জাগানোর মত উপকরণের অন্ত নেই। এর নামই রোমাঞ্চ, তোমার ভেতরের সেই স্ফুলিঙ্গ যা আজ তোমাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। এই স্ফুলিঙ্গকে কেমন করে জিইয়ে রাখা যায়, তাই নিয়েই আজ কথা বলবো আমি। অন্যভাবে বলতে গেলে, কেমন করে ‘সবসময়’ না হলেও, ‘সবচাইতে’ সুখী হওয়া যায় – তাই নিয়ে।
এই স্ফুলিঙ্গের শুরু কোথায়? আমাদের জন্ম থেকেই – আমার অন্তত তাই ধারণা। আমার তিন বছরের যমজ ছেলেদের মাঝে হাজারো স্ফুলিঙ্গ। সামান্য একটা স্পাইডারম্যানের খেলনা পেয়েই তারা আনন্দে লাফাতে থাকে। পার্কের নড়বড়ে দোলনা কিংবা বাবার মুখের গল্পই যথেষ্ট তাদেরকে খুশি করার জন্য। জন্মদিনের কেক কবে কাটতে পারবে, তার জন্য কয়েক মাস আগ থেকেই ওরা দিন গুণতে শুরু করে।
তোমাদের মত ছেলেমেয়েদের মাঝেও আমি কিছুটা স্ফুলিঙ্গের রেশ পাই। কিন্তু আরেকটু বয়স বাড়লেই, সেই মানুষদের মাঝে এটা খুঁজে পাওয়া কঠিন। এর অর্থ কী দাঁড়াচ্ছে? বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই স্ফুলিঙ্গ ম্লান হয়ে যায়। এমন হলে সে মানুষ একঘেয়ে, বিষণ্ন, উদ্দেশ্যহীন আর তিক্ত হয়ে পড়ে। ‘Jab we met’এর প্রথম আর শেষ অংশে কারিনাকে মনে পড়ে? স্ফুলিঙ্গ ম্লান হয়ে গেলে ঠিক তেমনটাই হয়। এটাকে কীভাবে রক্ষা করা যায়?
স্ফুলিঙ্গটাকে ধরে নাও একটা প্রদীপের শিখার মত। প্রথম কাজ হচ্ছে এতে অনবরত ইন্ধন যোগানো – শিখাটাকে জিইয়ে রাখা। পরবর্তী কাজ – একে ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে বাঁচানো।
স্ফুলিঙ্গ জিইয়ে রাখার জন্য লক্ষ্যস্থির করাটা জরুরি। মানুষের স্বভাবই হচ্ছে চেষ্টা করা, এগিয়ে যাওয়া আর নিজের সবটুকু সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো। এর নামই সাফল্য, সর্বোচ্চ এতখানিই আমাদের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব। সাফল্যের কোন বাহ্যিক মাপকাঠি নেই যেটা চাকরির বেতনভাতা কিংবা কোন বিশেষ গাড়ি অথবা বাড়ি দ্বারা মাপা যাবে।
আমরা বেশিরভাগই এসেছি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের কাছে সাফল্যের প্রথম সংজ্ঞা হল বৈষয়িক লক্ষ্য অর্জন। যখন আমরা বেড়ে উঠেছি এমন পরিস্থিতিতে যেখানে আর্থিক সীমাবদ্ধতা প্রতিদিনকার পাওয়া-না পাওয়াগুলোকে নির্ধারণ করে, অর্থনৈতিক মুক্তি সেখানে অনেক বড় অর্জন। কিন্তু এ অর্জন জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না। যদি তাই হত, তবে মি: আম্বানী আর কখনো কাজে আসতেন না। শাহ্রুখ খান অভিনয় ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকতেন। স্টীভ জবস আরো ভাল আইফোন বানানোর জন্য এত চেষ্টা করতেন না, কারণ পিক্সার থেকে তিনি ইতোমধ্যেই কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করে ফেলেছেন। তারা তাহলে এসব কেন করেন? কী সেই কারণ যা তাদের কাজ করতে উৎসাহ দেয়? কারণ এগুলো তাদের আনন্দ দেয়, এসবের মাঝে তারা প্রাণ খুঁজে পান। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাই ভাল লাগার জন্য যথেষ্ট। প্রচুর পড়াশোনা করলে তোমার ফলাফল ভাল হবে। মানুষের সাথে বেশি মিশলে তুমি ইন্টারভিউতে ভাল করতে পারবে। অনেক অনুশীলন করলে তুমি আরো ভাল ক্রিকেট খেলতে পারবে। তখন যদি এও জানতে পারো যে, তুমি টেন্ডুলকার হতে পারবে না, তবু তুমি এক ধাপ সামনে আগাবে। এই পরবর্তী ধাপের জন্য চেষ্টা করাটা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকৃতির একটা ছকে বাঁধা নিয়মের মাঝে আমাদের জন্ম। সুখী হওয়ার জন্য যা দরকার তা হল এ নিয়মকে মেনে নিয়ে একে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানো। তোমরা কী তাই করছো? লক্ষ্যস্থির করাটা এক্ষেত্রে তোমাদের জন্য জরুরি। কিন্তু শুধু ক্যারিয়ার কিংবা পড়াশোনার জন্য নয়; একটা ভারসাম্যপূর্ণ, সফল জীবনের জন্য লক্ষ্যস্থির করবে। আমি ‘সফল’এর আগে ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ কথাটা বললাম। এর অর্থ তোমার স্বাস্থ্য, সম্পর্ক, মানসিক শান্তি – এর সবই যেন ঠিকঠাক থাকে তা নিশ্চিত করা।
তোমার সম্পর্ক ভাঙার দিনে চাকরিতে পদোন্নতি পেলে সেটাকে অর্থহীন মনে হবে। ঠিক যেমন হয় পিঠে ব্যথা নিয়ে গাড়ি চালানোর সময়, কিংবা দুশ্চিন্তাভরা মন নিয়ে শপিং করতে গেলে।
তোমরা হয়তো এমন অনেক উক্তি শুনেছো – জীবন একটা কঠিন প্রতিযোগিতা, এটা একটা ম্যারাথন অথবা এরকম কিছু। আমার চোখে জীবন হল নার্সারী স্কুলের সেই প্রতিযোগিতা, যেখানে চামচে মার্বেল মুখে নিয়ে দৌড়াতে হত। চামচ থেকে মার্বেল পড়ে গেলে দৌড়ে প্রথম হওয়াটা যেমন অর্থহীন, ঠিক তেমনি জীবনে নিজের স্বাস্থ্য আর অন্যদের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখতে পারলে তবেই কেবল তোমার সাফল্যের মূল্য থাকবে। তা না করলে সফল হলেও তোমার মাঝের এই স্ফুলিঙ্গ, এই রোমাঞ্চ আর প্রাণবন্ততা মিইয়ে আসবে।
স্ফুলিঙ্গটাকে জিইয়ে রাখা নিয়ে শেষ কথা – জীবনটাকে সিরিয়াসলি নিও না। আমার এক ইয়োগা টীচার ক্লাসে ছেলেমেয়েদের হাসাতেন। এক ছাত্র তাকে জিজ্ঞেস করলো – এসব কৌতুক আমাদের অনুশীলনের কোন ক্ষতি করবে কিনা। টীচার বললেন – সিরিয়াস হয়ো না, আন্তরিক হও। এই কথাটা তখন থেকে আমার প্রতিটা কাজের পেছনে ভূমিকা রেখেছে – তা আমার লেখা, আমার সম্পর্ক, আমার চাকরি কিংবা অন্য যাই হোক না কেন। আমি প্রতিদিন আমার লেখা নিয়ে হাজারটা মন্তব্য পাই – উচ্ছ্বসিত প্রশংসা থেকে শুরু করে তীব্র সমালোচনা। এর সবই যদি আমি গুরুত্বের সাথে নেই, তবে আমি লিখব কী করে? বাঁচবো কী করে? জীবন সিরিয়াসলি নেয়ার মত কিছু নয়, কারণ এখানে আমরা ক্ষণস্থায়ী। আমরা অনেকটা সীমিত সময়ের প্রিপেইড কার্ডের মত। ভাগ্য ভাল থাকলে আমরা আর বড়জোর ৫০ বছর – মানে মাত্র ২,৫০০ সপ্তাহ বাঁচবো। আমাদের কি আসলেই এত চিন্তিত হবার কিছু আছে? মাঝে মাঝে ক্লাস ফাঁকি দাও, কিছু বাজে ইন্টারভিউ দাও, প্রেমে পড়ো – এর সবই স্বাভাবিক। আমরা মানুষ, প্রোগ্রাম করা যন্ত্র নই।
স্ফুলিঙ্গ জিইয়ে রাখার জন্য আমি তোমাদের তিনটা জিনিসের কথা বললাম – অর্থপূর্ণ লক্ষ্য, ভারসাম্য আর জীবনকে সিরিয়াসলি না নেয়া। কিন্তু জীবনে এমন চারটা ঝড় আসবে যা এই শিখাকে একেবারে নিভিয়ে দিতে চাইবে। হতাশা, ব্যর্থতা, বেইনসাফি আর একাকীত্ব – এগুলোর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকাটা জরুরি।
তুমি যখন চেষ্টা করেও কোন কিছু থেকে আশানুরূপ ফল পাবে না, তখনই হতাশা আসবে; যখন সব কিছু তোমার পরিকল্পনামত চলবে না, কিংবা তুমি ব্যর্থ হবে। ব্যর্থতা মোকাবেলা করাটা কঠিন, কিন্তু করতে পারলে সেটা খুব কাজে দেয়। তোমাকে প্রশ্ন করতে হবে, এই ব্যর্থতা আমাকে কী শেখালো? তোমার অসহায় লাগবে। তোমার ইচ্ছে হবে সব ছেড়েছুড়ে দিতে, যেমনটা আমার হয়েছিলো যখন ৯ জন প্রকাশক আমার প্রথম বই প্রকাশ করতে আপত্তি জানায়। কিছু আইআইটিয়ান খারাপ ফলাফলের জন্য আত্মহত্যা করে – এটা কত বড় বোকামি? কিন্তু ব্যর্থতা তোমাকে খুব বেশি হলে এতখানি কষ্টই দিতে পারে। জীবনটা এমনই। সব চ্যালেঞ্জই যদি সবসময় জয় করা যেত, তবে তা আর চ্যালেঞ্জ থাকত না। আর মনে রাখবে – কোন কিছুতে ব্যর্থ হবার অর্থ তুমি তোমার সাধ্যের সীমায় পৌঁছে গেছো; সেখানে, যেখানে তুমি পৌঁছাতে চাও।
ব্যর্থতার জাতভাই হল হতাশা, দ্বিতীয় বাধা। তোমাদের কি এর অভিজ্ঞতা আছে? এমনটা হয় যখন সবকিছু থমকে দাঁড়ায়, যা ভারতের বেলায় খুবই খাটে। ট্রাফিক জ্যাম থেকে শুরু করে তোমার উপযুক্ত চাকরি – মাঝে মাঝে এর সবকিছুই এত সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে যে তুমি ভাবতে শুরু করবে তোমার লক্ষ্যগুলো আদৌ ঠিক আছে কিনা। বই লেখার পর আমি ঠিক করলাম বলিউডের জন্য লিখব, কারণ আমার মনে হয়েছিল তাদের লেখক দরকার। ছবি মুক্তি পাবার জন্য আমাকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে, অথচ আমাকে প্রচণ্ড ভাগ্যবান বলা হয় এ ব্যাপারে। হতাশা উৎসাহকে দমিয়ে দেয়, আর তোমার ভেতরের শক্তিকে নেতিবাচক কিছুতে পালটে দিয়ে তোমাকে তিক্ত করে তোলে। এর সাথে আমি কীভাবে মানিয়ে নিয়েছি? সে সময়টার একটা বাস্তবসম্মত বিশ্লেষণ – ছবি তাড়াতাড়ি দেখা হয়ে গেলেও তা বানাতে অনেক সময় নেয়, এজন্য হয়তো আমার কাজটা সময়সাপেক্ষ; ফলাফলের চাইতে প্রক্রিয়ার মাঝে আনন্দ খোঁজার চেষ্টা – আমি অন্ততপক্ষে স্ক্রিপ্ট লিখতে তো শিখছিলাম; পাশাপাশি অন্য পরিকল্পনা – আমার তৃতীয় বই লেখা; এমনকি বন্ধুবান্ধব, খাবার, ভ্রমণের মত জীবনের সামান্য আনন্দঘন উপকরণগুলোও তোমাকে এমন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে। মনে রাখবে, কোন কিছুই সিরিয়াসলি নিতে নেই। হতাশ হবার অর্থ তুমি কোন না কোন সময় ঠিক তাই করেছো।
বেইনসাফির(unfairness) সাথে মানিয়ে নেয়াটা সবচাইতে কঠিন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশটা এভাবেই চলে। যাদের বেশি চেনাজানা মানুষ আছে, কিংবা ধনী বাবা, সুন্দর মুখ, বংশমর্যাদা আছে তাদের জন্য সবকিছু পাওয়াই সহজ – শুধু বলিউডে না, সবখানেই। আর কখনো কখনো তোমার যা লাগবে তা হচ্ছে শুধু ভাগ্য। ভারতে এত কম সুযোগ আছে যে কিছু পেতে হলে তোমার ভাগ্য অসম্ভব রকমের প্রসন্ন হতে হবে। তবে মেধা আর পরিশ্রম আপাতত সাফল্য এনে দিতে না পারলেও, শেষ পর্যন্ত এগুলো কাজে লাগেই। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবে, কিছু মানুষ থাকবেই যারা তোমার চাইতে ভাগ্যবান। সত্যি কথা বলতে গেলে, তোমার যেহেতু কলেজে যাওয়ার সুযোগ আর এই বক্তব্য ইংরেজিতে বুঝতে পারার ক্ষমতা আছে – এর অর্থই দাঁড়াচ্ছে তুমি বেশির ভাগ ভারতীয়ের তুলনায় ভাগ্যবান। আমরা যা সেজন্য কৃতজ্ঞ হওয়া আর যা নই তা মেনে নেয়ার মত দৃঢ়তা আমাদের থাকা উচিত। আমি আমার পাঠকদের থেকে যে কত বেশি ভালবাসা পাই তা অন্য অনেক লেখক কল্পনাও করতে পারবেন না। কিন্তু আমার লেখার সাহিত্যমান প্রশংসা পায় না। আমি তা মেনে নিয়েছি। আমি দেখতে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের মত নই, কিন্তু আমার দুই ছেলেকে আমার চোখে তার চাইতেও সুন্দর লাগে। এটা হতেই পারে। বেইনসাফিকে কখনো তোমার স্ফুলিঙ্গ নিভিয়ে দিতে দিও না।
শেষ যে জিনিসটা তোমাদের স্ফুলিঙ্গকে ম্লান করে দিতে পারে তা হচ্ছে একাকীত্ব। বয়স যত বাড়বে, ততই তোমরা আবিষ্কার করবে যে তোমরা আলাদা। যখন তুমি ছোট্ট ছিলে, তখন সব বাচ্চাই আইসক্রিম আর স্পাইডারম্যান চাইত। এরপর আরেকটু বড় হয়ে যখন কলেজে এলে, তখনো তুমি অনেকটাই তোমার বন্ধুদের মতন। কিন্তু আর দশটা বছর যেতে দাও, দেখবে যে তুমি আলাদা। তুমি কী চাও, কিসে বিশ্বাস করো, কোন্ ব্যাপারটা তোমাকে নাড়া দেয় – এসব তোমার সবচেয়ে কাছের মানুষ থেকেও আলাদা হতে পারে। অন্যদের সাথে তখন বিরোধ দেখা দিতে পারে, যখন তোমার লক্ষ্য তাদেরগুলোর সাথে মিলবে না। তখন হয়তো বা তুমি কোন কোন লক্ষ্য থেকে সরে আসবে। কলেজের বাস্কেটবল ক্যাপ্টেনরা দ্বিতীয় সন্তান হতে না হতেই খেলা ছেড়ে দেয়, যা একসময় তাদের কাছে অনেক বড় কিছু ছিল। তারা এটা করে পরিবারের জন্য। কিন্তু এর জন্য তাদের স্ফুলিঙ্গ নিভে যায়। কক্ষনো এমন ধরনের আপোষ করবে না। আগে নিজেকে ভালবাসবে, তারপর অন্যদের।
এই তো। আমি তোমাদের চারটা বাধার কথা বললাম – ব্যর্থতা, হতাশা, বেইনসাফি আর একাকীত্ব। তোমরা কখনো এগুলোকে এড়াতে পারবে না, বর্ষার দিনের মতই নির্দিষ্ট সময় পর পর তোমাদেরকে এগুলোর মুখোমুখি হতে হবে। তখন শুধু রেইনকোটটা হাতের কাছে রাখতে হবে, দীপের শিখা যেন নিভে না যায়।
জীবনের সুন্দরতম বছরগুলোতে তোমাদেরকে আবারো স্বাগতম। আমাকে যদি কেউ ফেলে আসা সময়ে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিত, আমি নিশ্চিতভাবেই কলেজজীবনে ফিরে যেতাম। কিন্তু আমি আরো আশা করি, আজ থেকে দশ বছর পরও তোমাদের চোখের দীপ্তি আজ যেমন আছে, ঠিক তেমনই থাকবে। আশা করি যে, শুধু কলেজের সময়টুকুতেই নয়, জীবনের বাকি ২৫০০ সপ্তাহ জুড়েই তোমরা এই স্ফুলিঙ্গকে জিইয়ে রাখবে। শুধু তোমরা নও, আমি চাই আমার দেশের সব মানুষ একে জিইয়ে রাখুক, যেটা অতীতের যে কোন সময়ের চাইতেই এখন আমাদের জন্য বেশি জরুরি। আর এ কথাটা বলতে পারাটাই তো একটা চমৎকার ব্যাপার যে, আমি শত কোটি দীপশিখার দেশের মানুষ।
ধন্যবাদ।
মূল রচনা: ((http://www.chetanbhagat.com/speeches/spark/))
- চেতন ভাগত
চমৎকার লেখা।
ইনস্পায়ারিং।
অনুবাদ করে এভাবে জানানোর জন্য ধন্যবাদ সামিরা। 🙂
পড়ার জন্য তোমাকেও ধন্যবাদ আপু। 🙂
চমৎকার একটা অনুবাদের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
আমদের তরুণদের জন্য দারুণ একটা লেখা
হুম। 🙂 থ্যাঙ্কু।
খুবই ইন্সপায়ারিং একটা লেখা। আর, চমৎকার অনুবাদের কারণে এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম। :clappinghands:
মনে রাখার মত অনেকগুলো কথা।
হ্যাঁ ভাইয়া, আমার খুব প্রিয় speechটা। 🙂
চেতন ভাগত এর এই লেখাটার অংশ বিশেষ ওয়াল পোস্ট হিসেবে এক সময় পড়েছিলাম। পুরাটা পড়ার সুযোগ করে দেবার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ সামিরা!!
আসলেই কথা গুলো কত সত্য!!
হ্যাঁ এই লেখাটার একটা অংশ অনেক বেশি শেয়ার হতে দেখি ফেবুতে। 🙂
দারুণ ইন্সপায়ারিং একটা লেখা অনুবাদ করে এতো সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ আপু! :happy:
আমি তো দারুণ ইন্সপায়ার্ড! বিশেষত এই কথাটাতে- “আমাদের কী আসলেই এত চিন্তিত হবার কিছু আছে? মাঝে মাঝে ক্লাস ফাঁকি দাও, কিছু বাজে ইন্টারভিউ দাও, প্রেমে পড়ো – এর সবই স্বাভাবিক। আমরা মানুষ, প্রোগ্রাম করা যন্ত্র নই।” 😛
হাহা প্রজ্ঞা! 😛
চমৎকার বক্তৃতা। অনেক সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছে। সমস্যা গুলো আর সাথে সমাধান।
🙂
দারুণ তো! 🙂
😀
অনেক ভাল লাগল লিখাটা 🙂
চমৎকার অনুবাদের মাধ্যমে এভাবে জানানোর জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ।
“স্ফুলিঙ্গ জিইয়ে রাখার জন্য আমি তোমাদের তিনটা জিনিসের কথা বললাম – অর্থপূর্ণ লক্ষ্য, ভারসাম্য আর জীবনকে সিরিয়াসলি না নেয়া।”
জীবনকে সিরিয়াসলি নেবনা…… :happy:
ধন্যবাদ আপু। 🙂
“Don’t be serious, be sincere.” 😀
ভালো লাগলো বেশ।
ধন্যবাদ পড়েছেন তাই। 🙂
অনুবাদ স্বরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অনেক কিছু জানলাম আপনার সৌজন্যে।
লেখাটা প্রিয় স্বরে নিলাম।
ভালো থাকবেন 🙂
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ! 🙂
ভালো থাকবেন আপনিও।
ইংরেজিটা অনেক আগে পড়েছিলাম। চেতন ভাগত ইন্ডিয়ার একটা বিশাল অংশের ছেলেপিলের কাছে অনেক বিখ্যাত। তিনি বক্তব্য দিয়েই থাকেন ভারতের এখানে ওখানে।
একটু বেশিই সুন্দর। স্বচ্ছ আর প্রাঞ্জল অনুবাদ। লেখাটার অনুবাদককে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ! 😀
“মাঝে মাঝে ক্লাস ফাঁকি দাও, কিছু বাজে ইন্টারভিউ দাও, প্রেমে পড়ো – এর সবই স্বাভাবিক। আমরা মানুষ, প্রোগ্রাম করা যন্ত্র নই।”
বেশি জোশ, আপু :huzur: :clappinghands:
লোকটা মারাত্মক লেভেলের boss 🙂
অনুবাদও অসাধারণ হয়েছে :clappinghands:
আমি এখনো ভাবছি সবাই কেন এই লাইনটাই কোট করছে। 😛
অনেক ধন্যবাদ নিলয়, হ্যাঁ লোকটা আসলেই বস!
আমাদের সবারই তো এই লাইনটাই বেশি পছন্দ হওয়ার কথা 😛
পোলাপান সব গোল্লায় গেলো! 😛
তোমাকে প্রশ্ন করতে হবে, এই ব্যর্থতা আমাকে কি শেখালো?
অনেক ব্যর্থতা আছে! আস্তে আস্তে প্রশ্নগুলো করতে হবে। 8)
অনেক ভালো একটা স্পিচ সহজ আর বোধগম্য করে অনুবাদ করার জন্য আপনাকে
অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ পড়ার জন্য। 🙂
প্রথম-আলোয় এটা পড়েছিলাম মনে হয়!
তাই? আমি তো ছাপাতে দেই নি। অন্য কারো অনুবাদ হবে হয়তো। 🙂
আমি এই পোস্টটায় কমেন্ট করি নাই?? কিভাবে হয় কিভাবে হয়?? 😯
হেহে। 😛
অসাধারণ 😀