বাস্তব ও পরাবাস্তব [সরব “মুভি থেকে নেয়া”- ২৫]

অদ্ভুত জিনিস শিখার শখ আমার ছোট বেলা থেকেই। এরই ধারাবাহিকতায় আগ্রহ হল লুসিড ড্রিমিং (lucid dreaming) এর উপর। যারা Inception movie টা দেখেছেন তাদেরবোঝাতে হবে এটা কি জিনিস ?(চুপি চুপি বলি , মুভি তে যে লুসিড ড্রিমিং দেখানো হয়েছেতা অত্যন্ত অতিরঞ্জিত রূপ)

সুস্থ মানুষ স্বপ্ন দেখে। প্রবলেম হছে ঘুম থেকে উঠে আমরা এই গুলো মনে রাখতে পারি না।লুসিড ড্রিমিং শিখার ৩ টা স্টেপ রয়েছে।

১। স্বপ্ন মনে রাখার দক্ষতা

২। স্বপ্ন দেখার সময় বুজতে পারা যে, আপনি স্বপ্ন দেখছেন

৩। সপ্নকে প্রভাবিত করার দক্ষতা

( স্বপ্ন কে কখনো আপনি পুরোপুরি কন্ট্রোল করতে পারবেন না, আর যদি করতেও পারেন, তা আসলে আর স্বপ্ন থাকে না। যেমন ধরেন, আপনি স্বপ্ন দেখলেন আপনি পানিতে ভাসছেন, আপনি টের পেলেন আপনি স্বপ্ন দেখছেন, এখন মনে হল পানির রঙটা নীল! দূর পানির টক টকে লাল হলে কেমন হত, হয়ে গেল পানির রঙ লাল। কিন্তু হুট করে এক বোয়াল মাছ এসে আপনাকে খেয়ে ফেলল। এটা হত আপনার কোন ভাবনায় ছিল না, কিন্তু হয়ে গেল।)

এই বার মুভিতে যাই। মুভির নাম লুসিয়া (Lucia)। লুসিড ড্রিমিং এর উপর একটা মুভি। গল্পের নায়ক নিক্কি। তার জব সেটিসফেকসন খুবই ভালো, বস তাকে নিজের ছেলের মত দেখে। কাজ করে সিনেমা হলে, টর্চ শাইনার (Torch Shinerঃ টর্চ এর লাইট দিয়ে দর্শক দের সিট খুঁজে দেয়) হিসেবে। সমস্যা হচ্ছে সে রাতে ঘুমাতে পারে না।

একদিন পরিচয় হয় এক ড্রাগ বিক্রেতার সাথে। বিক্রেতা তাকে এক বোতল ঔষধ দেয়, যার নাম লুসিয়া। এই ঔষধ খেলে এক ঘুমে রাত কাবার হয়ে যায়। তার চেয়ে বড় কথা স্বপ্ন তৈরি হয়, বিচ্ছিন্ন কুনো স্বপ্ন না, ধারাবাহিক স্বপ্ন।

নিক্কি ঔষধ খেল। তৈরি হল  আলাদা একটি স্বপ্নের জগৎ। নতুন জগতে সে নিখিল, কান্নাডা মুভির জনপ্রিয় নায়ক। কল্পনার জগতে বর্তমান মানুষ গুলিও রয়েছে, তবে ভিন্ন রুপে। কল্পনার জগতে এক অপরূপাকে নারীকে দেখে ভালো লাগল, দেখা গেল বাস্তব জগতেও সে আছে।

এক সময় বাস্তব ও স্বপ্ন একাকার হয়ে। বেছে নিতে হয় যে কোন একটা কে। নায়ক বেছে নিবে কোনটি ? যেখানে সে টর্চ শাইনার নাকি যেখানে সে মুভি স্টার। নায়ক কি পারবে বেছে নিতে? বেছে নেবার ক্ষমতা কি তাকে আসলেও দেয়া হয়েছে।

ছবির ডিরেক্টর অত্যন্ত ধুরন্দর লোক। যেখানে নবীন ডিরেক্টর একজন প্রডিউসার খুঁজে পান না, সেখানে তিনি ১৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে তার প্রডিউসার বানিয়েছেন, জোগাড় করেছেন ৭০ লাখ রুপি। ফলাফল লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভাল এ প্রিমিয়ার এবং অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড, বক্স অফিসে ৩ কোটি রুপিরও বেশি সাফল্য।

 

Author:

Tushar Hossain

এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চলচ্চিত্র, বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।