পড়ালেখা এবং গবেষণার জন্য মাত্র মাস তিনেক আগে জাপানে আগমন। ধীরে ধীরে মানিয়ে নেয়া এবং ভাল লাগার জিনিস খুজতে থাকার মধ্যে দিয়েই পার হচ্ছে সময়। বরাবরের মতো এখানেও আমার হরেক রকমের জিনিসের প্রতি আকর্ষণ দেখা দিচ্ছে। কিছু দেখলে আর শুনলে তা গভীরভাবে জানতে ইচ্ছে করে। আর এই অহেতুক আগ্রহের ফল সরূপ অনেক ছোট ছোট মজার জিনিস স্বল্প সময়ে জানতে পেরেছি।
প্রথমেই আসি অক্টোবর মাসের কথায়। বারোটি মাসের মধ্যে এই অবস্থান ১০। আর এই মাসের ১০ তারিখে দিনটা দাড়ায় ১০–১০। এই ১০–১০ কে যদি ইংরেজিতে লেখা হয় তাহলে 10-10. এই বার এই ইংরেজি লেখা টাকে যদি ক্লকওয়াইজ ৯০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয়া হয়, তাহলে একটা মজার জিনিস দাড়ায়। মনে হবে ভ্রু সহ দুইটা চোখ তাকিয়ে আছে। জাপানিজরা তাই এই দিনটাকে “চক্ষু দিবস” বানায় দিলো।
এবার আসি নভেম্বর মাসে। বারোটি মাসের মধ্যে এর রোল নাম্বার ১১। এই মাসের ১১ তারিখে দিনটা দাড়ায় ১১–১১। আবার ও যদি ইংরেজিতে লিখি তাহলে 11-11. হুম। অনেক গুলো ওয়ান। জাপানে কাঠির মতো একটা চকোলেট পাওয়া যায়। এর নাম “পকি”। অনেক গুলো ওয়ান এক সাথে পকির মতো দেখা যায় বলে এই দিনকে বানানো হল “পকি দিবস”। পকির সব চেয়ে বড় ব্যাপার হল, এটা শেয়ার করার জন্য সুবিধাজনক। কিন্তু, পকি সব দেশে পাওয়া যায় না বলে এই ব্যাপারটা অন্যদের কাছে খুব একটা আকর্ষণীয় দিবস বলে আমার মনে হয় না। তবে এই দিনে চাইনিজরা পালন করে “ সিঙ্গেল দিবস”। এটা বেশ সর্বজন স্বীকৃত ব্যাপার। সব সিঙ্গেলরা এই দিনে পার্টি করে। তবে ছেলে–মেয়ে আলাদা। সিঙ্গেল ছেলে–মেয়ে এক সাথে পার্টি করলে তো আর সিঙ্গেল দিবস থাকবে না!
এবার আসি খেলাধুলা দিবস। আপনি হয়তো মনে মনে ১০–১০ অথবা ১১–১১ এর মতো কিছু খুজতে অথবা ভাবতে সুরু করেছেন। নাহ। এই দিবসের ক্ষেত্রে এমন কিছু না। তবে তার চেয়ে ও কিছুটা জটিল। হিডেন মারকব মডেলের কথা হয়তো অনেকে জানেন। আবহাওয়া অনুমানের ক্ষেত্রে খুবই পরিচিত একটা গানিতিক উপায়। তবে এখন এই হিডেন মারকব মডেলে আবহাওয়া ছাড়িয়ে জেনেটিক গবেষণা পর্যন্ত চলে আসছে। ১০ অক্টোবর, ১৯৬৪ সালে টোকিয়োতে অলিম্পিকের আসর বসে। এই আসর বসে অক্টোবর মাসে। কারন ছিল বৃষ্টি থেকে পরিত্রান পাওয়া। তার প্রায় দুই বছর পর, ১৯৬৬ সাল থেকে এই দিনকে খেলাধুলা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর ১৯৬৪ সালে এই ১০ অক্টোবর নির্ধারণ করার পিছনে যুক্তি ছিল, অনেক অনেক বছর ধরে এই দিনটি রৌদ্রময় থাকে। এই তথ্য উদঘাটনের কাজে লাগে হিডেন মারকব মডেলে। কিন্তু, সমস্যা দেখা দিলো অন্য জায়গায়। অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ এক এক বছর সপ্তাহের এক এক দিন হয়। আর যেহেতু এই দিনে সরকারি ছুটি থাকে, তাই তারা এই দিনকে পাল্টে বানায় দিলো অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সোমবার। তাদের মতে, মানুষ জন শনি–রবি–সোম টানা তিন দিন বন্ধ পেলে বাকি সপ্তাহ ভালোভাবে কাজ করতে পারবে।
কত গুছানো আর চিন্তাশীল এদের দিবস গুলো। আপনারা শুধু পড়েই অনেক মজা পাবেন এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই। আর আমি যখন মানুষের সাথে মিশতে এবং গল্প করতে গিয়ে এক এক করে এই গল্প গুলো জানতে পেরেছিলাম, বিস্ময়ের কোন সীমারেখা ছিল না।
অপু ভাই, মজা পেলাম, ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
কিন্তু বুঝলাম না আপনার বিস্ময়ের সীমা ছিলনা কি জন্যে?!!
“কত গুছানো আর চিন্তাশীল এদের দিবস গুলো”- আপনার এই কথায় আমি খুব হতাশ হলাম আপনাকে নিয়ে। এই কথায় প্রকাশ পায় আমরা জাতি হিসেবে চিন্তায় গুছানো না !!!
কিন্তু আমাদের বহুদিন ধরে চলে আশা প্রবাদবাক্য গুলো যদি আপনি খেয়াল করেন দেখবেন আমরা বহু আগে থেকেই গুছানো আর চিন্তাশীল ছিলাম ………