He is missing me!

লন্ডনে চলে আসার পর দিন গুলো ভালোই কেটে যাচ্ছে তন্বীর। পড়াশোনা, পার্ট টাইম জব,নতুন বন্ধুদের সাথে জম্পেশ আড্ডার মাঝে সময় যে কখন চলে যায় সে হিসেব করেও কূল পায়না ও। দেশ ছাড়ার পর পর ভীষণ খারাপ লাগতো ওর। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে তন্বী, খুব আদরে তাকে বড় করেছেন তারা। তাই সে যখন বাইরে পড়তে আসার জেদ চাপলো খুব বেশি বারন করেননি কেউই। মা দু একবার হয়তো কিছু বলতে চেয়েছেন শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু বলেননি তবে।

জায়েদের সাথে এখানে আসার পরেই পরিচয় হয় ওর। সহজ করতে বলতে গেলে ওর জীবনে প্রিন্স চার্মিং হিসেবে যাকে চেয়েছিলো তাকে খুঁজে পেয়েছে ও।মাঝে মাঝেই ও নিজেকে ধন্যবাদ দেয় লন্ডনে পড়তে আসার সিদ্ধান্ত নেবার জন্য। এখানে না আসলে জায়েদ কে পেতো কি করে? পড়াশোনা হোক কিংবা কাজের চাপ সবসময় জায়েদ ওকে সাহায্য করে আসছে। জায়েদ খুব কেয়ারিং ছেলে। লন্ডনেই বড় হয়েছে কিন্তু বাকী সবার মতো ও না। এই বয়সেই রেস্পন্সিবলিটি শব্দটাকে নিজের আয়ত্বে খুব ভালো করে নিয়ে নিয়েছে সে। আর তন্বীর খুব খেয়াল রাখে জায়েদ। আগে থেকেই জীবনে সবকিছু ছিলো তন্বীর কিন্তু জায়েদ আসার পর থেকে জীবনের অর্থ হয়তো বুঝতে শুরু করেছে, পরিপূর্ণতা হয়তো একেই বলে।

এই উইকেন্ডটা সিটির বাইরে কাটাচ্ছে তন্বী। কাছের বন্ধু অনামীর সাথে তার বাড়ি থাকতে যাচ্ছে । হোয়াইট চ্যাপলের গিজগিজে পরিবেশ থেকে মুক্তিটা আবশ্যক ছিলো।কত কিছুদিন খুব ধকল গিয়েছে। জায়েদ ও খুব সাপোর্ট করেছে ওকে। ওই বলেছিলো শহরের বাইরে থেকে ঘুরে আসা উচিত তন্বীর। অনেকদিন ঘুরতে যায়না ও। ঘুম ভাঙ্গার পর যে আলস্য সারা গায়ে আদুরে গড়াগড়ি খায় বাইরে থাকা কালীন অনেকদিন তার স্বাদ থেকে বঞ্চিত ছিলো তন্বী। অনামী এক প্রকার জোর করে নাস্তার টেবিলে টেনে নিয়ে গেলো তন্বীকে। এ কথা সে কথায় অনেক হাসাহাসি হচ্ছে। আজ সারাদিন খুব ঘুরবে তন্বীরা। স্যান্ডুইচের শেষ কামড় দেয়ার পরপরই বিরামহীন হেঁচকি ওঠা শুরু হলো ওর। অনামী দাঁত কেলাচ্ছে। মা বলতেন হেঁচকি উঠলে পানি খেয়ে হয়। মা আরো একটা কথা বলতেন, যখন খুব প্রিয় কেউ স্মরণ করে তখনই নাকি হেঁচকি ওঠে। ফ্রীজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতলটা বের করে অনামীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো, দাঁত কেলাচ্ছিস কেন?
তোর অবস্থা দেখে, এতো বার স্নিজিং করে নাকি কেউ?
আরে বুঝিস না, জায়েদ ইজ মিসিং মি! তুমি তো হিংস্যুটে, ভালোবাসা বুঝো নাকি তুমি? হাসতে হাসতে জবাব দিলো তন্বী। আই বেট হি ইজ মিসিং মি!

ঠিক সেই সময়টায় সহস্র মেইল দূরে তন্বীর মেডেল হাতে হাস্যোজ্জ্বল ছবিটার দিকে তাকিয়ে মা ঘোলা হয়ে যাওয়া চশমার কাঁচ পরিষ্কার করতে করতে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।

[
বিঃদ্রঃ এই গল্পের থিমটি Terribly Tinny tales নামক ফেসবুক পেইজ থেকে নিয়েছি। অনেকদিন থেকে কিছু লিখতে পারছিলাম না। কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো নিজের কাছে। অবশ্যই অন্যের আইডিয়া নিয়ে লেখা খুব ভাল কথা না, তবে এই গল্পটা বা গল্পের মত কিছু একটা লিখে নিজের কাছে ভাল লেগেছে। পৃথিবীর সকল মা খুব সুখী হোন। ]

নূহা চৌধুরী সম্পর্কে

এক বাক্যে - আমড়া কাঠের ঢেঁকি !!! এক কথায় - অপদার্থ !!! X( ভালবাসতে ভালবাসি ... :) From every depth of good and ill The mistry which binds me still From the torent or the fountain From the redclif of the mountain My heart 2 joy at the same tone.... And all I loved, I Loved Alone...
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

4 Responses to He is missing me!

  1. শারমিন বলেছেনঃ

    শেষটা অনেক সুন্দর হয়েছে রে :love: :love:

  2. নূহা চৌধুরী বলেছেনঃ

    :love: :happy: thenkuu dwst

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।