রাজিন রিভিউ: Detective Byomkesh Bakshy!

Byomkesh

সুপার হিরো মুভি এবং গোয়েন্দা নিয়ে মুভি একসময় সাধারণ মুভির কাতারেই পড়তো। কিন্তু ভেজাল লাগাইলো The Dark Knight এবং Sherlock। এরপর থেকে যতই ভালো সুপার হিরো মুভি বানাও না কেন সেটা The Dark Knight এর সাথে তুলনা চলে আসে এবং একই ঘটনা ঘটে গোয়েন্দা মুভির সাথে Sherlock নিয়ে। যদিও কোন ভারতীয় নির্মাতার বাপ-দাদারও সামর্থ্য নেই Sherlock এর মত কিছু করার তবুও “ব্যোমকেশ বক্সী” নিয়ে যখন মুভি হচ্ছে সেটা নিয়ে আগ্রহ থেকেই যায়। তবে ব্যোমকেশের গোয়েন্দাগিরি দেখতে গিয়ে যদি মনে হয় এর চেয়ে ভালো গোয়েন্দাগিরি পাশের ঔষধের দোকানের তপন করতে পারে তাহলে ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক।

 

তরুণ গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বক্সী ( Sushant Singh Rajput) এর নিকট অজিত বন্দোপাধ্যায় ( Anand Tiwari) তার বাপের নিখোঁজ হবার সমস্যার সমাধানের জন্য আসেন। বিশ্ব বিখ্যাত গোয়েন্দার সমাধান:” তোর বাপ কোন মাইয়ারে লইয়া ভাইগা গেসে।“ আরে আজব! বাপ না এরশাদ? আরো কিছু সূত্র থেকে জানা যায় মুভির এরশাদ পান খাইতো এবং কোন একখান ব্যাচেলর মেসে থাকতো। কেস তামাম করার লাইগ্গা ব্যোমকেশ সেই মেসে উপস্থিত। কয়দিন পর দেখি অজিতও সেই মেসে থাকবো ব্যোমকেশের লগে। গোয়েন্দা মুভি দেখি নাকি Gay-এন্দা মুভি ? পান খাওয়ার কথা শুইন্যা এক ব্যাটায় টেনশানে কাশি দেওয়ার এক দৃশ্য দেখে আমার স্ত্রী বলে উঠলো নিশ্চয় এই ব্যাটার কাছে পানের বাক্স টাইপ কিছু লুকানো আছে। কিন্তু আমাদের ব্যোমকেশের একটু বেশি বুদ্ধি তো এই জন্য তার ব্যাপারটা বুঝতে ২-৩ ঘন্টা লাগলো। তার এই হয় সেই হয় , চায়না থেকে লোক আসে , জাপান থেকে লোক আসে কিছুক্ষণ পর মঙ্গোলিয়া থেকে মনে হয়ে চেঙ্গিস খানও আসে। কিযে হইতেসে সেটা বোঝার জন্য মাথায় চিন্তা আসে মুভিটা দেখবো নাকি দেখার ভান করে ঘুমাবো? এই মুভি থেকেই আমি আইনস্টানের আপেক্ষিকতা তত্বের “কাল দির্ঘায়ন” এর নমুনা দেখতে পাই। ২-৩ ঘন্টা যাবার পর দেখি মুভি মাত্র ৩০ মিনিট হয়েছে। আল্লাহ্ বাঁচাও!

 

শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের সৃষ্টি ব্যোমকেশ নিয়ে রচনাবলী পড়ার সৌভাগ্য হয়নি। তবে সত্যজিত রায়ের ১৯৬৭ সালের মুভি “চিড়িয়াখানা” তে ব্যোমকেশ চরিত্রে উত্তম কুমারকে দেখে পুরাই কাইত হইয়া গেসিলাম। কি চরম একখান চরিত্র! কিন্তু এই মুভিতে এইডা কী দেখলাম? Sushant Singh Rajput কে ব্যোমকেশ হিসেবে দেখে মনে হয় “কে ভাই এইডা?”

 

দোষ বেচারা সুশান্ত সিং কে দেবার চাইতে আমি নির্দেশক দিবাকর বন্দোপাধ্যায়কেই দিবো। রক্ত দেখলে বমি করে, সব কিছুতেই একটু ভয় পায় এটা কোন ব্যোমকেশ? কই তার মুজিব চশমা? মোঁচ ব্যোমকেশ কবে থেকে রাখলো? যাই হোক চরিত্রের বাহ্যিক গঠন নিয়ে আমার জ্ঞান কম তাই ভুল হতেই পারে তবে ব্যোমকেশ বক্সীকে এরকম লুতাপুতা চরিত্র বানানো মাইনা নিলাম না। কারণটা কী? বাঙালী মানে লুতাপুতা আর পাঞ্জাবী মানে সিংহ?

 

কাহিনীর অনেক জায়গায় গোয়েন্দাগিরির প্যাঁচ আপনি গোয়েন্দার আগে বুঝে যাবেন কিন্তু কাহিনীটাই বুঝবেন না। এটা চিত্রনাট্যকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা। মুভির অর্ধেক দুর্দান্ত রকমের বোরিং এবং শেষভাগ সাধারণ মানের বোরিং।

 

অভিনয়ের দিক দিয়ে আনন্দ তিওয়ারী এবং নিরজ কবি বেশ ভালো করেছেন। সুশান্ত সিং এর জন্য একটু বেশি কঠিন হয়ে গেছে হয়তো তবে ছেলেটি মেধাবী। চরিত্রটি আরো একটু শক্তিশালী করলে হয়তো পারবে।

 

মুভিটির প্রোডাকশন ডিজাইন বেশ দারুন হয়েছে। ১৯৪৩ সালের কোলকাতাকে বেশ সুন্দরভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

 

মুভিটি আমার ভালো না লাগলেও বেশ ভালোই ব্যবসা করছে। পরবর্তী মুভিটিতে আশা করি আরো একটু ভালো করে বানাবে।

 

সব মিলিয়ে বোরিং মুভি।

 

রেটিং – ১/৫

রাজিন সম্পর্কে

এক কথায় চলচ্চিত্র ভক্ত , বোদ্ধা নয়।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চলচ্চিত্র-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

4 Responses to রাজিন রিভিউ: Detective Byomkesh Bakshy!

  1. সাইফুল বলেছেনঃ

    AÄb `Ë Gi cwiPvjbvq evsjv Uv †`L‡Z cv‡ib
    Avcbvi †jLv c‡o hv g‡b nB‡m evsjv gywf Uv g‡b nq G‡Zv Lvivc bv|(Avcbvi †`Lv wnw›` Uvi
    †P‡q)

  2. সাইফুল বলেছেনঃ

    অঞ্জন দত্ত এর পরিচালনায় বাংলা টা দেখতে পারেন
    আপনার লেখা পড়ে যা মনে হইসে বাংলা মুভি টা মনে হয় এতো খারাপ না।(আপনার দেখা হিন্দি টার চেয়ে)

  3. শারমিন বলেছেনঃ

    ব্যোমকেশ সমগ্র পড়েছি
    দারুণ লেগেছে
    আমার খুবই পছন্দের গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বক্সী।
    মুভিটা দেখা হয় নাই
    রিভিউ পড়ে এখন দেখার ইচ্ছেও নাই

  4. তুসিন বলেছেনঃ

    বাংলাটি দেখেছি। ভালো লেগেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।