আগে যখন এস.এস.সি, এইচ.এস.সি পরীক্ষায় মেধা তালিকার সিস্টেমটা ছিল, তখন ভালো ছাত্র হিসেবে কিছুটা সুনাম থাকায় আব্বু-আম্মু কত স্বপ্ন দেখত একসময় বড় হয়ে আমিও “স্ট্যান্ড” করব এবং আমার ছবি পত্র-পত্রিকায় ছাপা হবে। সেই ক্ষুদ্র বয়সেই আমার কাছে মনে হত “স্ট্যান্ড” যারা করে, তারা কী মেধাবীই না!! একবার পত্রিকায় দেখলাম মেধা তালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। তখনকার দিনে কম্পিউটার মানে একটা এলাহী ব্যাপার!! তাই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, আমাকে “স্ট্যান্ড” করতে হবে এবং আমারও কম্পিউটার চাই যাতে সারাদিন আমি কম্পিউটারে গেম খেলতে পারি। তাই “লেখাপড়া করে যে, কম্পিউটার গেম খেলে সে” এই প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কিছুটা আগ্রহী হয়ে পড়াশোনায় মনোযোগী হলাম।
সময় গড়িয়ে গেল। “মেধা তালিকা” সিস্টেমটার জায়গায় “জিপিএ” সিস্টেম নামের একটা আজিব (?) সিস্টেম জায়গা করে নিল। আজিব (?) সিস্টেম বলার কারণ একটু পরেই বুঝা যাবে, আশা করি। যেবার জিপিএ সিস্টেম চালু হলো, আমাদের কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ থেকে এস.এস.সি.তে মাত্র পাঁচজন সর্বোচ্চ গ্রেড ৪.৮৮ পেয়েছিল। কুমিল্লা বোর্ড থেকে একদম হাতেগোনাই সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ ৫ বা এ+ ছিল। ক্যাডেট কলেজগুলো সবসময়ই ফলাফলের ক্ষেত্রে সুনামের ঐতিহ্য বজায় রাখে। সেসময় আমাদের কলেজ থেকেই যখন বাঘা বাঘা ভাইয়ারা এ+ পেল না, তখন “জিপিএ” সিস্টেমটা অনেকের মনেই ভীতির সঞ্চার করেছিল। একজন তো বিখ্যাত উক্তিই করে বসলো, “এবার বুঝলা মামা, এতদিন তো চামে চামে স্ট্যান্ড করলা। এখন এই জিপিএ সিস্টেমে বুঝবা একদম উপরে উঠা (এ+) পাওয়া কি জিনিস!” আসলেই চারদিকে তখন এ+ এর দুর্ভিক্ষ।
এবার আরো একটু সামনে এগোই। এ+ নিশ্চয়তা দিয়ে গাইডবুকের কল্যাণে, এবং ছাত্র-ছাত্রীরাও কিছু স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করে তাদের গ্রেডটা একটু ‘আপগ্রেড’ করতে সক্ষম হলো। জিপিএ ৫ এর হাহাকার কিছুটা হলেও দূর হলো। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকাও একদম ফেলনা না, যদি তারা নম্বর দেওয়াতে উদারপন্থা অবলম্বন না করতেন।
এরপর “দিনকালও পাল্টাইল”। চতুর্থ বিষয়ের যোগের মত একটি মহান ব্যবস্থা গৃহীত হলো জিপিএ সিস্টেমে। হঠাৎ করে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেল। ব্যক্তিগতভাবে অনেক ভাইয়া-আপুকে চিনতাম যারা এখন দেশে এবং দেশের বাইরে বিশ্ববিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আছেন, তারা একসময় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন এবং অনেকেই মেধা তালিকায় জায়গা না করতে পারলেও যথেষ্ট ভালো নম্বর পেয়েছিলেন। ভাবতেই অবাক লাগত, তারা কত পরিশ্রম করেও সবগুলো বিষয়ে লেটার (এ+) পেতেন না, এখন কিভাবে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরাই গন্ডায় গন্ডায় এ+ পেয়ে যাচ্ছে?
এখন আর অবাক হই না। যেখানে মুখস্থবিদ্যাই সব, কতিপয় সাজেশন পড়েই পার পাওয়া যায়, গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই একটা প্রহসনে পরিণত হয়েছে, সেখানে রেকর্ড সংখ্যক জিপিএ ৫ বা এ+ না পাওয়াটাই অস্বাভাবিক। পত্রিকায় দেখি, বছর বছর শুধু জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের রেকর্ড ভাঙছে যেমন উসাইন বোল্ট ১০০ মিটার দৌড়ে নিজের রেকর্ড ভাঙে। উসাইন বোল্টের রেকর্ড ভাঙার সাথে তুলনা দেওয়াটা অবশ্য অযৌক্তিক, কারণ উসাইন বোল্টের প্রতিবার রেকর্ড ভাঙা মানে তার দৌড়ের লেভেলের উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু রেকর্ড সংখ্যক জিপিএ ৫ পাওয়া মানে কি শিক্ষার উন্নতি? যদি তাই হত, জাফর ইকবাল স্যারের মত মানুষেরা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ করতেন না। আমার কাছে মনে হচ্ছে এর সমাধানটা খুবই সহজ। ক্ষত পরিষ্কার না করে এর উপর প্রলেপ দেওয়ার মতই- শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি নির্মূল না করে জিপিএ ৫ কে হাতের মোয়া বানিয়ে দিলাম। শিক্ষার্থীরা হাস্যোজ্বল মুখে ‘ভি’ চিহ্ন দিয়ে পোজ মেরে ছবি তুলতে পেরে খুশি, সাফল্যের কিছু অযৌক্তিক মানদন্ডে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গুলো সেরা হতে পেরে খুশি, পত্রিকারও কাটতি, এবং দেশেরও একটি বিরাট (!) সাফল্যের মুকুট যুক্ত হলো।
এবার একটি ঘটনা বলি। আমার একজন মেধাবী বন্ধুর ছাত্রের কৌশল, “স্যার, অংকে দুর্বল, বাংলাতে কোনো মতে এ গ্রেড পেলেই হলো, আর চতুর্থ বিষয় মিলে এ+ পাওয়ার চান্স বেশি। এবার আপনি আমাকে কিছু সাজেশন দেন।” আমার সেই বন্ধুটি বলল, “আগে একবার হলেও পাঠ্যবইটি পড়, পরবর্তীতে অনেক কাজে লাগবে, তোমার ভিতটাও অনেক শক্ত হবে।” বুদ্ধিমান ছাত্রের জবাব, “না পড়েই তো ৮০ এর উপর পাব, কষ্ট করে পড়ার কি দরকার? আপনারও লাভ, আমারও লাভ।”
এই চিত্রটি শুধু একজন ছাত্রের না, অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর অনুকরণে আমাদের দেশেও জিপিএ পদ্ধতিটি চালু হয়, কিন্তু আমরা এর উচ্ছিষ্টাংশটুকুই গলাধকরণ করতে সক্ষম হয়েছি যেন। দ্রব্যমূল্যের সাথে পাল্লা দিয়ে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও লাফিয়ে বাড়ছে। গত বছর জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৮, ৬৭১ জন যা এবারে এইচ.এস.সি. এবং সমমানের অন্যান্য পরীক্ষায় বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪০ হাজারের কাছকাছি (৩৯, ৭৬৯)।
জিপিএ ৫ বৃদ্ধির তুলনামূলক পর্যালোচনার জন্য এবছর এবং বিগত বছরগুলোর এস.এস.সি. ও এইচ.এস.সি. ফলাফলের লিঙ্ক দেওয়া হলো:
২০০৯ সালের এস.এস.সি. তে জিপিএ ৫ পেয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ও এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় ২০,১৩৬ ((http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2009-05-27)) ((http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2009-07-26))
২০১০ সালের এস.এস.সি. তে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৬২, ১৩৪ এবং এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় ২৮,৬৭১ ((http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2010-05-16)) ((http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2010-07-16)) ।
এবং ২০১১ সালের এস.এস.সি. ও এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা যথাক্রমে ৬২,৭৮৮ ও ৩৯,৭৬৯ ((http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-05-13)) ((http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-07-28)) ।
জিপিএ ৫ দেশের পাবলিক পরীক্ষার একটা সর্বোচ্চ গ্রেড, অর্থাৎ অবশ্যই সর্বোচ্চ মেধাবী শিক্ষার্থীরাই জিপিএ ৫ ধারী। ৪০ হাজার জিপিএ ৫ মানে ৪০ হাজার শিক্ষার্থীই সর্বোচ্চ এবং সমান মেধাবী!! একটা কথা মাথায় আসলো, জিপিএ ৫ এর কারণে মেধাবী যদি এতই বেশি হয়, দেশ যদি ‘শিক্ষার উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যায়’, তবে আমাদের ‘শিক্ষাব্যবস্থা’র আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত। বরং উল্টোটাই হয়, অনেকেরই এইচ.এস.সি. এর পরপরই ব্যাঙ্ক ব্যালান্স, আর জিপিএ ৫ এর সার্টিফিকেট দিয়েই বিদেশে পড়ার হিড়িক পড়ে যায়। পত্রিকা খুললেই বিজ্ঞাপনে ভরা থাকে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের এজেন্টদের, রাস্তায় রাস্তায় সাইনবোর্ড, ব্যানার।
এই হাতের মোয়া জিপিএ ৫ এর জোরেই অনেকেই বিদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে যাচ্ছে। জিপিএ ৫ যেহেতু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গ্রেড, তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও সর্বোচ্চ প্রত্যাশা করে থাকে এইসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। কিন্তু অনেক অযোগ্যের উপর যোগ্যরা চাপা পড়ে যায়, ফলে মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় দেশের। পরবর্তীতে যখন মেধাবী যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করে, বাজে ভাবমূর্তির কারণে তাদেরকে বাতিল করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ- অভিযোগ করেছেন বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষারত অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।
শুধু বিদেশে কেন, দেশেও কিন্তু মেধাবীরা অনেকটা চাপা পড়ে যাচ্ছে। এইচ.এস.সি. এর পরে শিক্ষার্থীরা ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। ভর্তির মোট নম্বরে অনেক জায়গাতে এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি. এর জিপিএ যোগ হয়। দুজন শিক্ষার্থীর মেধার বিশাল তারতম্য, কিন্তু জিপিএ এর সহজলভ্যতার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীটি পূর্ণ নম্বর পেয়ে যাচ্ছে। এভাবেই কিন্তু অনেক মেধাবীরা ঝরে পড়ে যাচ্ছে। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হারাচ্ছে মেধাবীদের।
সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপারটি আমার কাছে মনে হয়, মেধার চরম অবমূল্যায়ন। সোনা যদি সবার কাছেই ভরি ভরি থাকে, তাহলে সোনার কদরটাই বা কি থাকলো? তেমনি সাধারণ মেধাবী সবাই যদি জিপিএ ৫ পেয়ে যেতে থাকে, মেধাবিদেরকেও একই কাতারে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। অতি আশাবাদী হয়ে তারাই একসময় চরম নৈরাশ্যবাদী হয়।
জিপিএ ৫ বেশি শিক্ষার্থীরা পেলে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা যখন জিপিএ ৫ পেয়ে আস্ফালন করে, তখন মেধাবী শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে শঙ্কিত হই। কারণ, ভালোদের সাথে আদু ভাই ও বোনেরা যখন জিপিএ ৫ পেয়ে কলেজে ভর্তির জন্য দৌড়ায়, তখন “বয়স”টা ভর্তির জন্য একটা হাস্যকর মানদন্ড হয়ে দাঁড়ায়!!! কি আশ্চর্য!!
বিদেশে থাকা মেধাবীদের অনেকের সাথে ব্যক্তিগত কথোকপনে তাঁরা জানান, দেশে ফিরে আসতে চান, কিন্তু তাঁদের মেধা ও কাজকে মূল্যায়ন করা হয় না। যার ফলেই মেধা পাচারের মত কাজটি অগোচরে হয়ে যায়। তবে এই জিপিএ এর মোয়ার কল্যাণে এ বৈষম্যটি যেন আমরা অনেক আগেভাগেই শুরু করে দিয়েছি।
জিম্বাবুয়ের মুদ্রাস্ফীতির ভয়াবহ কাহিনী সবারই বোধহয় জানা, যাকে inflation না বলে অনেকে hyperinflation বললে সঠিক মনে করেন। এক বোতল পানির দামই ছিল ৫ লাখ ডলার। মুদ্রাস্ফীতি এতই ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায় যে, সরকার তাদের জিলীয়ন ডলার নোট থেকে ১২ টি ‘০’ (শুন্য) তুলে নিতে বাধ্য হয় ((http://edition.cnn.com/2009/WORLD/africa/02/02/zimbabwe.dollars/))।
অদূর ভবিষ্যতে হয়ত বাংলাদেশেও “জিপিএস্ফীতি” নামে একটি শব্দ প্রচলিত হবে। অস্বাভাবিক জিপিএ ৫ এর বৃদ্ধির কারণে জিপিএ ৫ স্কেলে ফলাফল সংকুলান হবে না। জিপিএ ৫ স্কেল বেড়ে গিয়ে জিপিএ ৫০০ কিংবা কততে গিয়ে ঠেকে আল্লাই ভালো জানেন।
তবুও সবকিছুর পড়ে একটাই চাওয়া, প্রকৃত মেধাবীদের যেন মূল্যায়ন করতে পারি। এত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও মেধাবীরা তাদের দ্যুতি ছড়াবে, এই আশায় আছি।
বিষয়টা ঠিক যে জিপিএ ৫ স্ফিতি হচ্ছে। কিন্তু এর ভালো দিক গুলো লেখায় অতোটা উঠে আসে নি। এটা নিয়ে আরও আলোচনা হবে।
ছোটবেলায় বাংলা পরীক্ষার জন্য কিছু কমন রচনা পড়তে হত, তারমধ্যে একটি ছিল “বিজ্ঞানের জয়যাত্রা”। রচনার বিভিন্ন পয়েন্টের মধ্যে আবার একটি ছিল “বিজ্ঞানের আশীর্বাদ ও অভিশাপ”। সেখানে লেখতাম, যে বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের একদম চলেই না, এই বিজ্ঞানই অনেক যুদ্ধ, হানাহানি, অশান্তির জন্য দায়ী। শেষমেশে অবশ্য লিখে দিতাম যে বিজ্ঞানের এই অভিশাপের জন্য দায়ী কিন্তু বিজ্ঞান নয়, দায়ী বরং বিজ্ঞানের ‘অপব্যবহারকারী’রাই।
ব্যাপারটা অনেকটা সেরকম। বিশ্বজুড়েই যখন বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জিপিএ সিস্টেমটা অত্যন্ত সাদরে গৃহীত হচ্ছে, এই পদ্ধতিটা গ্রহণযোগ্য হতেই পারে না – আমার বক্তব্য এমনটি নয়। কিন্তু এই সুন্দর সিস্টেমটিকে আমরাই অনেকটা কলুষিত করে ফেলেছি।
দ্রষ্টব্য: “উন্নত দেশগুলোর অনুকরণে আমাদের দেশেও জিপিএ পদ্ধতিটি চালু হয়, কিন্তু আমরা এর উচ্ছিষ্টাংশটুকুই গলাধকরণ করতে সক্ষম হয়েছি যেন।”
আমার লেখাতে কিন্তু আন্তর্জাতিক জিপিএ সিস্টেমের পক্ষেই পরোক্ষভাবে বলতে চেয়েছি!
খুবই সময়োপযোগী লেখা। এদেশে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। তবু ফিনিক্সের আশায় ভর করে স্বপ্ন দেখি, ঠিক উত্তরগুলো আমরা নিশ্চয় একদিন খুঁজে পাবো। 🙂
আশায় আছি, একদিন আমরাও প্রকৃত মেধাবীদের মূল্যায়ন করতে পারব এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে সক্ষম হব.. 🙂
ভালো লাগছে।
আমাদের সমাধান নিয়েও চিন্তা করা দরকার।
দেশে ফিরে আসতে চান, কিন্তু তাঁদের মেধা ও কাজকে মূল্যায়ন করা হয় না।
অনেক গুলা পয়েন্ট নিয়ে আসছো। এখন এই গুলা নিয়ে চিন্তা করা দরকার… কি করণীয় আমাদের।
”
দেশে ফিরে আসতে চান, কিন্তু তাঁদের মেধা ও কাজকে মূল্যায়ন করা হয় না।”
দেশের বাহিরে এসে অনেকের সাথে কথা বলে বেশ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করতে পেরেছি। ভাবছি, এ নিয়ে আরেকটি লেখা লিখব। আরো কিছু তথ্য যোগাড় করে এবং আরো মানুষের সাথে কথা বলে লেখতে হবে।
আসলেই সিস্টেমটা পরিবর্তন করার সময় এসে গেছে …
সহমত পোষণ করার জন্য ধন্যবাদ 🙂
আগে রেজাল্টের দিন সাজ সাজ রব পরে যেত আমাদের কলোনিতে। কেউ কেউ না কেউ দশের মাঝে থাকতই। আর তার সাথে বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক রা চলে আসত ছবি তুলতে বাবা মায়ের সাথে। সেই ভালো রেজাল্ট করা আপু বা ভাইয়ার জন্য আমরা যে খুশি হতাম! এখন কেউ এ+ পেয়েছে শুনলে আমার মন্তব্য হয় – “ও + ” পেয়েছে! ব্যস শেষ। :chup:
হুমমম, আমরা যখন স্কুলে ছিলাম, তখন ভাইয়া আপুরা আসত যারা ভালো রেজাল্ট করত। আমরাও তাদেরকে ঘিরে ধরতাম, মনে হত সেলিব্রিটি তারা।
আর এখন জিপিএ ৫ না পাওয়াটাই মনে হয় অস্বাভাবিক কিছু। 😆
গুরুত্বপূর্ণ টপিক!
আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, জিপিএস্ফীতির সাথে পাব্লিক ভার্সিটিগুলোতে আসনস্ফীতি সম্ভব হলে মেধাবীরা হয়তো বঞ্চিত হতো না। এবং তাদের সঠিক মূল্যায়ন করতে গিয়ে আর মেধার তারতম্য করতে হতো না!
আশা করছি এই সমস্যার সঠিক সমাধান অচিরেই বেরিয়ে আসবে।
ধন্যবাদ।
তবে ব্য
ক্তিগতভাবে আমার অভিমত হলো, জিপিএস্ফীতির সাথে পাল্লা না দিয়ে “শিক্ষার্থী”স্ফীতির অনুপাতে পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে আসনস্ফীতি করা উচিত। কারণ, ভর্তি পরীক্ষার সময় অনুষদ নির্বাচনের বিষয়টিও কিন্তু এসে যায়।
আশা রাখছি সমস্যা সমাধানের, এরই সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংস্কারও করা উচিত মনে করি।
ইদানিং নিজের এস।এস।সি র রেজাল্ট কাউকে বলতে লজ্জা লাগে…………এতো বেশী জি.পি.এ. 5 পায় এবং এমন স্টুডেন্টদের পেতে দেখি যাদের শিক্ষক হওয়ায় আমি জানি তাদের মেধা কিরকম।
নিজেকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে,আমি কি এতো খারাপ ছাত্র ছিলাম?
একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। জিপিএ ৫ আগে খুব বেশি সহজলভ্য ছিল না। যে বছর থেকে চতুর্থ বিষয় যোগ হলো, সে বছর তো জ্যামিতিক হারে জিপিএ ৫ অনেকে পেল। অনেক শিক্ষার্থীরা বুক ফুলিয়ে বলতে লাগলো তাদের ব্যাচের সাফল্যের কথা- জিপিএ ৫ এর সংখ্যা তারাই আগের বছরের শিক্ষার্থীদের চেয়ে অনেক গুণে বৃদ্ধি করতে পেরেছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, চতুর্থ বিষয় ছাড়া জিপিএ ৫ এর সংখ্যা ছিল অত্যন্ত নগণ্য
, এমনকি আগের বছরের শিক্ষার্থীদের ধারেকাছেও নেই!!
এ থেকে আপনি সান্তনা নিতে পারেন। :beshikhushi:
লেখাটা এত্ত দারুন লাগলো! অনেকগুলি জায়গাতেই চরমভাবে একমত।
সরবে স্বাগতম। 😛
অসংখ্য ধন্যবাদ!! 🙂
সতি অসাধারন লেখা। হাজার হাজার জি পি এ ৫ প্রমাণ করছে যে, বাঘের ছাল গায়ে চড়ালেই শেয়াল বাঘ হয়ে যায় না, শেয়ালই থেকে যায়। আফসোস, এদেশে এখন শেয়াল প্রজাতিই মুখস্ত বিদ্যার জোরে অনেক কিছু বনে যাবে আএমন আগেও মামা চাচার জোরে বনে যেত। শেয়াল বলাটা একটা উপমা মাত্র। এটা সেইসব স্বল্প মেধার শিক্ষার্থীদের ( যারা মুখস্ত করে জি পি এ ৫ পাচ্ছে)আঘাত করার জন্য নয়। আসলে দোষ তো এই নষ্ট সিস্টেমএর যেখানে quality কে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে না।