“দোস্ত! গাঞ্জা দে …”
“গাঞ্জা নাই!”
“গাঞ্জা নাই তো কিইনা আন”
“গাঞ্জা কিনার টেকা নাই”
“ট্যাকা না থাকলে জুরাসিক পার্ক মুভি বানা!”
“ভালা বুদ্ধি!”
এভাবেই কয়েকটি গাঞ্জাখোড়দের অর্থপ্রাপ্তি লোভের নতুন পণ্য “Jurassic World”।
কাহিনী জানা যাক। ১৯৯৩ সালের জুরাসিক পার্কের ঘটনার ২২ বছর হয়ে গেছে। একই জায়গায় গড়ে উঠেছে নতুন “জুরাসিক ওয়ার্ল্ড”। পার্কটি সবার জন্য খোলা প্রায় অনেকদিন হলো। কীভাবে যে পার্কটি কার্যকরী হলো আল্লাহ মালুম। যাই হোক জুরাসিক ওয়ার্ল্ডের ব্যবসাতে কিছুটা মন্দা যাচ্ছে। ডায়নোসর গুলার দিকে মানুষ এমনে তাকায় যেন হাতি দেখে। আরে ব্যবসা চলবো ক্যামনে? এত দামি একটা পার্ক কিন্তু একটাও রোলার কোস্টারও নাই।
জুরাসিক ওয়ার্ল্ডের নতুন মালিক ইরফান খান মুভির লেখকদের চেয়েও বড় গাঞ্জাখোড়। নতুন ডায়নোসর বানাও যেটা টি-রেক্সের চেয়েও ভয়াবহ হবে। ভালো কথা। বানানো হলো ইন্ডোমিনাস রেক্স। ইন্ডোমিনাসের ডি এন এ তে কিছুটা টি-রেক্স আর বাকীটা কই থেকে নকল করছি কেউ জানে না। যাইহোক ইন্ডোমিনাসের উচ্চতা যখন ৫০ ফুট তখন খাঁচাতে সিমেন্ট ঢালা হচ্ছে। খাঁচাটা ঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য ডাক পড়ে নায়কের ( Chris Pratt)। তারপরেই ঘটে বিরাট অঘটন। পুরা পার্কে ব্যায়াম করে বেড়ায় এই ইন্ডোমিনাস। ক্যামনে তাকে থামানো সম্ভব?
মুভিটি কেন দেখতে যাবেন? ডায়নোসর দেখতে? তাহলে হতাশ হবেন না। ডায়নোসরগুলির দৃশ্যগুলি একেবারে দুর্দান্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে ইন্ডোমিনাস রেক্সের দৃশ্যগুলি আসলেই ফাটাফাটি। শেষের দৃশ্যে কিন্তু আমিও তালি দিয়েছি।
কিন্তু মনে রাখতে হবে এটি কোন মুভির উত্তরসূরি। ১৯৯৩ সালের জুরাসিক পার্ক একটি ক্লাসিক মুভি। চিত্রায়ন নির্ভর সেই মুভিটি এই যুগেও অসাধারণ লাগে। শুধুমাত্র ডায়নোসর চিত্রায়ন নয়; মুভিটিতে ছিলো কাহিনী এবং শক্তিশালী চরিত্র। এমনসব চরিত্র, যাদের সাথে দর্শকদের সম্পর্ক তৈরী হয়। নতুন মুভিটিতে চিত্রায়ন অসাধারণ হলেও প্রত্যেকটি চরিত্র একেবারে বিরক্তিকর। এ মুভির সেরা চরিত্র হচ্ছে ইন্ডোমিনাস। অন্য কোন চরিত্রের দৃশ্য এলেই মনে হয় “ইন্ডোমিনাসরে দেখা রে ব্যাটা”। তবে ইন্ডোমিনাসকে নিয়ে আরো একটু কাহিনী হয়তো আগানো যেত।
অভিনয়ের দিক দিয়ে Chris Pratt কিছুটা ভালো করলেও বাকি সবাই ছিল ভুয়া। Bryce Dallas Howard অত্যন্ত প্রতিভাশালী অভিনেত্রী হলেও তাকে সবচাইতে বিরক্তিকর লেগেছে। নায়ক-নায়িকা ছাড়াও আজেবাজে চরিত্রের অভাব নেই এই মুভিতে। প্রায় দুঘণ্টার মুভিতে প্রথম ৩০ মিনিটের মতো খালি হুদা কামের দৃশ্য।
মুভিটি বানানো কথা প্রায় ১৪ বছর ধরেই চলে আসছে। এতদিন অপেক্ষার পর মুভিটিকে কীভাবে পয়সা বানানোর যন্ত্র বানানো যায় সেটাই এতদিন ধরে হয়তো চিন্তা ভাবনা করা হয়েছে। কীভাবে নতুন একটি ডায়নোসর দেখানো যায়, কীভাবে ১৯৯৩ সালের মুভিটির কথা মনে করানো যায়, এবং শেষ দৃশ্যে কী কী দেখালে মানুষ খুশি হবে সবই করা হয়েছে। কিন্তু চিত্রনাট্যে কোন প্রাণ নেই। শেষ দৃশ্যে আমি তালি দিয়েছি কিন্তু হাসতে হাসতে পড়ে গেছি:” এই টা কী হইতেসে?”। মুভিটিতে কোনই যুক্তি নেই। এছাড়া এমুভিটি আগের গুলির মত সায়েন্স ফিকশান না হয়ে বরং মনস্টার মুভি হয়ে গেছে।
যাই হোক। মুভিটি দেখে খুব একটা হতাশাগ্রস্ত না হলেও এ মুভির পরবর্তী পর্ব দেখতে খুব একটা আগ্রহী হবো না। মুভিটি জুরাসিক পার্ক-৩ এর চেয়ে অনেক ভালো। কাহিনী এবং চিত্রনাট্যের কোন যুক্তি না খুঁজে মুভিটি দেখলে বেশ উপভোগ্যই মনে হবে।
রেটিং – ২.০ / ৫.০