রাজিন রিভিউ: Hamari Adhuri Kahani

Hamari_Adhuri_Kahani_official_poster

“কাহানি” এবং “ডার্টি পিকচার” দেখার পর বিদ্যা বালানের অভিনয়ের ভক্ত আমার মতো অনেকেই। যেই চলচ্চিত্র জগতে পুরুষদের আধিপত্যে নায়িকাদের কে শুধুমাত্র পুতুল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে বিদ্যা বালান প্রমাণ করে ছেড়েছেন যে একজন নারীও চলচ্চিত্রকে টেনে চাঁদেও নিয়ে যেতে পারে। তবে অনেকদিন ধরে মুখিয়ে ছিলাম কবে আবার বিদ্যা বালানের সেই নায়োকচিত রুপ দেখবো। পেলাম অবশেষে এই মুভি। এমরান হাশমি নায়ক? ধুর মিয়া। তারপর চারিদিকে এই মুভি নিয়ে গালাগালির ছড়াছড়ি। ভাবলাম এই মুভি দেখে সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয়না। স্ত্রীর চাপাচাপিতে অবশেষে দেখেই ফেললাম। বলতেই হবে বেশ চমকপ্রদভাবেই ভালো লেগেছে।

 

কাহিনী জানা যাক। বিদ্যার ছোট্ট ছেলেটির যখন একমাস বয়স তখন থেকে তার স্বামী ( রাজকুমার রাও) নিঁখোজ। পাঁচ বছর কেটে গেছে। স্বামীর অপেক্ষায় এখনো বসে আছে বিদ্যা। একটি বিরাট হোটেলে ছোটখাট চাকরী করে সংসার চলে। হঠাৎ চোখে পড়ে যায় বিরাট হোটেল ব্যবসায়ী এমরান হাশমির সাথে। ব্যস তারপর প্রেম-ভালোবাসা। কিন্তু সবকিছু কি এতই সহজ? ফিরে আসে বিদ্যার স্বামী।

 

মহেশ ভাট তার নিজের মাতা-পিতা এবং সৎ মার কাহিনী অবলম্বনে কাহিনীটি লিখেছেন। কাহিনী খুব বেশী গভীরে গিয়ে বলিনি। যতটুকু বলেছি শুনে সবাই খুব একটা গা করবে না। কিন্তু মুভির কাহিনীতে যথেষ্ট প্যাঁচ আছে বলে মনে হয়েছে। এছাড়া প্রথম দেখায় ভালোবাসা, সেই রাতেই বিছানায় শুয়ে তারা গোনা এইধরণের আজেবাজে কোন দৃশ্য মুভিটিতে নেই। প্রধান দুজন চরিত্র বেশ ভালোভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলতেই হবে তাদের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জন্মায়।

 

বিদ্যা বালানের অভিনয় নিয়ে কিছু না বললেই নয়। এত আধিপত্যের সাথে অভিনয় বলিউডে কোন নায়িকাই পারে না। এই মুভির চরিত্রটি তেমন শক্তিশালী না হলেও মুভিটির প্রধান চরিত্র অবশ্যই বিদ্যা। সংলাপ থাকুক কিংবা না থাকুক বিদ্যার অভিনয়ে সবার অবাক হতেই হয়।

 

ব্যক্তিগতভাবে এমরান হাশমিকে তেমন পছন্দ না করলেও এই মুভিতে বেশ ভালো লেগেছে। চুম্বনের জন্য বিখ্যাত হলেও এই মুভিতে কোন সেরকম কোন দৃশ্য নেই। অভিনয়টাও বেশ ভালোই করেছেন। এছাড়া রাজকুমার রাও এর উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও বেশ ভালো অভিনয় করেছেন।

 

পরিচালনায় মোহিত সুরি এবারও বেশ ভাল করেছেন। রোমান্টিক দৃশ্যগুলি বেশ সুন্দর করে পরিচালিত। তবে মোহিত সুরির সব মুভিতে এমন একটা ভেজাল দেখানো হয় যেটি দেখে মনে হয় এটা না দেখালেও পারতো।

 

মুভিটির অন্যতম সেরা দিক মুভির সংগীত। প্রত্যেকটি গান অসাধারণ। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অমি মিশ্র এবং মিথুন দারুন সংগীত দিয়েছেন। বিশেষ করে টাইটেল সংগীতটি বেশ সুন্দর।

 

মুভিটি সম্পর্কে অনেকেই অনেক কটুক্তি করছে। বলছে মুভির কাহিনী ভালো না কিংবা চিত্রনাট্য ফালতু। আমার কাছে চিত্রনাট্য, সংলাপ এবং কাহিনী বেশ ভালো বলেই মনে হয়েছে। মুভিটি তেমন ব্যবসাও করছে না। কেনই বা করবে? বিদ্যার মুভি। “কী একখান নায়িকা। শরীর এভাবে ঢেকেঢুকে রাখলে কি হয় বাপু?” – এরকম চিন্তাভাবনা করা মানুষ হয়তো ভারতে বেড়ে গেছে। তবে বলতে হবে বিদ্যাকে আরেকটু আকর্ষণীয় দেখানো সম্ভব ছিল। মুভির প্রথমদিকে বিদ্যাকে এমরান হাশমির বড় বোন বলেও মনে হয়।

 

যাই হোক। মুভিটি কালজয়ী কোন মুভি না হলেও বেশ ভালোই। সমাপ্তি আমার বেশ ভালো লেগেছে। এক কথায় টাইম পাস মুভি।

 

রেটিং – ৩ / ৫

রাজিন সম্পর্কে

এক কথায় চলচ্চিত্র ভক্ত , বোদ্ধা নয়।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চলচ্চিত্র-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।