ছোট বেলা থেকেই এক্সপেরিমেন্ট করার ভয়াবহ উদ্যম কাজ করত আমার মধ্যে । কিন্তু দুঃখজনক ভাবে প্রতিটি এক্সপেরিমেন্ট এর ফলাফল আমাকে চিৎকার করে বুঝানোর চেষ্টা করেছে – “মা তুই এবার ক্ষেমা দে, মাফ কর..!!!” কিন্তু কোনকিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি আমাকে 8) আমার জীবনে করা প্রথম পরীক্ষা হচ্ছে ডালের মধ্যে মাংসের ঝোল ঢেলে দিয়ে বিস্ফোরণের অপেক্ষা করা
বুঝতেই পারছেন লাইফ চেনজিং ওই পরীক্ষার ফল এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি !এরপর একদিন না জানি কি ভাবতে ভাবতে বাসার ফ্রিজে লাগানো ইয়া বড় ম্যাগনেট টেলিভিশান এর স্ক্রীন এ চেপে ধরলাম…আশা ছিল খুব সুন্দর রংধনুর খেলা দেখতে পাবো… কিন্তু সেই আশায় গুরেবালি দিয়ে আমার হার্ট বিট এভারেস্ট এর উচ্চতায় উঠিয়ে দিয়ে স্ক্রীন এক সপ্তাহের জন্য রংধনুর মত হয়ে গেল। 😯 সেই যাত্রা বিজ্ঞানের এক্সপেরিমেন্ট এর দোহাই দিলেও এর পরের বার যখন বাসার খালি ছাদ টা দেখে সেটা কে সুইমিং পুল বানানোর মহৎ উদ্দেশে নামলাম, সেইবার আর শেষ রক্ষা হল না 😐 মাত্র ২৯ বালতি পানি ঢালতেই রুদ্র মূর্তির মত ছাদে এসে আমার বড় বোন হাজির হয়ে গেল এবং শতাব্দীর বৃহত্তম সুইমিং পুল প্রোজেক্ট এর সেখানেই ইতি ঘটল। :crying:
যদিও আমার কাজ কর্মে বাসার কারো কোন লাভ হয়নি কিন্তু সামনের বাসার মাঠ আমার বদৌলতে ফল-মূল সবজিতে ভরে গিয়েছিল বলে আমার বিশ্বাস। কারণ সামনের বাসার মাঠ আমি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে খুঁড়েছি বছরের পর বছর গুপ্তধনের আশায় :thinking: শেষমেষ সিগারেটের কিছু গোল্ডেন কাগজ নিয়েই আমার এই মহান প্রোজেক্ট বন্ধ করে দিতে হয় 🙁
ভার্সিটি তে ভর্তি হওয়ার পর সবার অনেক আশা ছিল আমি এবার সেন্সিবল কিছু করে দেখাবো :happy: সেটাই প্রমাণ করার জন্য প্রথম ইয়ারের ল্যাব এর প্রথম সপ্তাহে মাদাম যখন নির্দেশ দিলেন… ” যাও, যেই যেই পেজ দেখাবা সেই সেই পেজে কাগজ ঢুকায় মার্কার বানায় নিয়ে আসো… অতি আনন্দের সাথে আমি আর আমার ল্যাব পার্টনার প্রতি টা কাগজে মার্কার ঢুকিয়ে নিয়ে গেলাম… আফটার অল উনি ত সব পেজই দেখবেন নাকি???মাদাম যে আসলে পেজ বলতে এক্সপেরিমেন্ট গুলার ১ম পেজ বুঝিয়েছেন তা আর আমরা বুঝলাম না! এরপর মাদাম যখনই পাতা উলটান চানাচুরের মত ঝুরঝুর করে খালি মার্কার পড়ে !! 😳 প্রথম সপ্তাহেই মাদাম বুঝে গেলেন আমাদের মাথায় সিরিয়াস সমস্যা আছে।তাও উনি সহ্য করে নিয়েছিলেন… কিন্তু এরপর যখন একদিন ল্যাব এ আমাদের পারদের এক্সপেরিমেন্ট ছিল আর সেই পারদের বল বানায় আমাদের দিব্যি ক্রিকেট খেলতে দেখলেন উনি আর নিতে পারলেন না… চেঁচিয়ে বলে উঠলেন… ” এই মেয়ে…!!!! কি করেছ তুমি এগুলা???মুখেও হাত দিসিলা নাকি? :O তুমি কি পাগল?যাও এক্ষনি সাবান দিয়ে জিহ্বা ধোও!!! ” :fire: সেইদিন জিহ্বা ধুতে ধুতে খালি মনে হচ্ছিলো দুনিয়া আমার অরিজিনাল ট্যালেন্ট টা বুঝল না ।:crying: ব্যাপার না… ভ্যান গগের ও ছবির দাম হয়েছিল মৃত্যুর পর… অপেক্ষাই ভরসা :happy:
হাহা! মজারু!
ছোটবেলা কী দারুণ ছিল, খুব মিস করি ভাবলেই। এই লেখাটা পড়ে আবারো করলাম।
আমি অবশ্য শৈশব খুব একটা মিস করি না… কারণ আমার মনে হয় এখনও আমার শৈশব চলছে 😛 আর শৈশব শেষ না হলেই আমি বাঁচি! ধন্যবাদ 🙂
২৯ বালতি? 😯 😯 😯 😯 😯
তোর মাথার অনেকগুলা স্ক্রু মিসিং আছে, একদম নিশ্চিত! :thinking: =))
হু…গুনে গুনে ঠিক ২৯ বালতি 8) পানি কিছুটা জমেও গিয়েছিল। আপু বাগড়া না বাধালে হয়ত হয়েই যেত :yahooo:
:wallbash:
খুব সুন্দর হইসে রাহিন.. :huzur:
ধন্যবাদ :happy: