বাড়ছে উষ্ণতা, আসছে শেষ সময়

কাজী নজরুল ইসলামের একটা কবিতার লাইন আছে:
“আসিতেছে শুভদিন,
দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ!”

চিন্তা না করে মানুষ এমনভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে, যার ঋণ হয়তো প্রকৃতি শোধ দেবে খুব শীঘ্রই।

পৃথিবীতে মানুষ বাস করছে কম দিন হয়নি। কিন্তু, সব সময় প্রকৃতির সাথে একটা মধুর সম্পর্ক ছিল মানুষের। দেয়া এবং নেয়ার সম্পর্ক। প্রকৃতির কাছ থেকে মানুষ যেমন নিতো, তেমনি প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করার ব্যপারে নিজের অজান্তেই সাবধান থাকতো।

কিন্তু, আমরা তো আধুনিক মানুষ। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যপারে তো আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই। আমরা শুধু চাই, শুধুই চাওয়া। প্রকৃতির ভারসাম্য নিয়ে আমাদের কোন চিন্তাভাবনা নেই। আমাদের সামনে কি দূর্দিন আসছে, সেটা হয়তো এই ছবিগুলো দেখলে কিছুটা বোঝা যাবে………

আর্কটিক সাগরের বৈশিষ্ট্যই ছিল, এটা মোটামুটি সারা বছর বরফে ঢাকা থাকতো। কিন্তু, এখন আর তেমন নেই। ছবিতে যে তিমির দলটা আছে, এই প্রজাতির তিমি তাদের সারা জীবন বরফের উপর নির্ভর করে থাকে। কিন্তু, এই বরফগলা সাগরে তাদের জীবন অনিশ্চিত।

উত্তর মেরুতে মেরু ভল্লুকের বাস। কিন্তু, উষ্ণতা বৃদ্ধিতে গলে যাওয়া বরফের কারণে তাদের থাকার স্থান এখন তীব্র হুমকির মুখে।

আলাস্কার স্প্রাস গাছগুলোর বেঁচে থাকতে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ঠান্ডা দরকার হয়। এর চেয়ে বেশী উষ্ণতায় তাদের উপর এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়, যার শিকার হয়ে মৃত্যুর পথে এই গাছগুলো। ১৯৭৫ থেকে আলাস্কার স্প্রাস গাছগুলোর ৫০%(প্রায় এক লাখ হেক্টর জমির গাছ) ইতিমধ্যে মরে গিয়েছে।

কানাডার ম্যাকেঞ্জি নদীর মোহনার ছবি। মাটির নীচের জমাট বরফ গলে গিয়ে তৈরী পানির চাপে, মাটি উঁচু হয়ে ঢিবির মত হয়ে গিয়েছে।

বরফের উপর হেঁটে চলতে হত যেই মেরু ভল্লুককে লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে হচ্ছে, ছিন্নভিন্ন বরফের উপর দিয়ে। অনেক বিজ্ঞানী ধারণা করছেন, ২০৫০ এর আগেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই প্রানীটি, আরো অনেক প্রাণীর সাথে।

সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির তৈরী হয়েছে কিছু সামুদ্রিক ডেড জোন। সেখানে মরে যাওয়া মাছগুলো ভেসে এসেছে সমুদ্র সৈকতে।

আর্জেন্টিনার একটি গ্লেসিয়ারের ছবি। উপরে ১৯২৮ এবং নিচেরটা বর্তমানের।

ঘূর্ণিঝড় তো এখন নিয়মিত ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সারা পৃথিবী জুড়ে।

শুধু ঘূর্নিঝড় নয়, তৈরী হচ্ছে ধূলিঝড়। আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ অংশ থেকে তোলা ছবি।

আর্কটিকের মধ্যে দিয়ে এমন অনেক নদী ও জলপ্রপাত তৈরী হয়েছে, যেগুলো এখানে থাকার কথা নয়। দিনে দিনে বাড়ছে এগুলো, আরো বাড়ছে বরফ গলার হার।

পেঙ্গুইন থাকার কথা বরফের মধ্যে। কিন্তু, বরফ হারিয়ে গেলে কোথায় যাবে তারা?

 

পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়েছিল ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন যেই হারে বাড়ছে সেই হারে বাড়লে এই শতাব্দীর শেষে বৃদ্ধি পাবে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রায় পুরো পৃথিবী চলে যাবে পানির নিচে।

এখন সিদ্ধান্ত আপনার। চুপ করে বসে থাকবেন, না এর বিরুদ্ধে লড়বেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রয়েছে আপনার অপেক্ষায়।

স্বপ্ন বিলাস সম্পর্কে

বাস্তবে মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জীবনের নানা পথ ঘুরে ইদানীং মনে হচ্ছে গোলকধাঁধায় হারিয়েছি আমি। পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করি আর দেখে যাই চারপাশ। ক্লান্ত হয়ে হারাই যখন স্বপ্নে, তখন আমার পৃথিবীর আমার মতো......ছন্নছাড়া, বাঁধনহারা। আর তাই, স্বপ্ন দেখি..........স্বপ্নে বাস করি.....
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে ইতিবাচক-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

20 Responses to বাড়ছে উষ্ণতা, আসছে শেষ সময়

  1. নিলয় বলেছেনঃ

    ভীষণ যুগোপযোগী লেখা 🙂 নিঃসন্দেহে প্রিয়তে :love:

    এই লেখাটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে অনেক সচেতনতা তৈরি হবে- একটু চেষ্টা করি! 🙂

    another great work, ভাইয়া, keep it up :clappinghands: :huzur:

  2. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    ছবিগুলো দেখে আসলেই ভয় পেলাম।
    দারুণ লেখা, আশা করি অনেককে ভাবাবে।

  3. সাথী বলেছেনঃ

    অনেক ভালো লিখা 🙂
    আমাদের সবারই উচিত অনেক সচেতন হওয়া এবং পরিবেশ দূষণ যাতে কম হয় সে দিকে খেয়াল রাখা।

  4. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    ১৯৫০ সাল তো কবেই চলে গেছে!
    অনেক বিজ্ঞানী ধারণা করছেন, ১৯৫০ এর আগেই মেরু ভল্লুক বিলুপ্ত হয়ে যাবে>> এই ইনফরমেশন তো অনেক পুরনো!
    বিলুপ্ত কি হয়ে গেছে? না ভবিষ্যতে যাবে? 😳

  5. মুবিন বলেছেনঃ

    ছবিগুলো সত্যিই ভাবিয়ে তোলে 🙁

  6. সামিরা বলেছেনঃ

    মন খারাপ করা। 🙁

  7. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    অনেক ধন্যবাদ পোস্টের জন্য।

    এই রকম মনে জাগানো লেখা দরকার আমাদের।

  8. অদ্ভুত ছেলে বলেছেনঃ

    হুম ছবিগুলো আসলেই ভাবিয়ে তোলে।

    শেষ ছবিটা বেশি রকম কিউট 😀

  9. প্রজ্ঞা বলেছেনঃ

    দুশ্চিন্তাউদ্রেককারী! :thinking:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।