অভ্রর আজ মেজাজ টা বেশ খারাপ। অনেকদিন ধরে একটা ছবি আঁকার চেষ্টা করছে সে,১৮-১৯ বছরের একটা মেয়ের ছবি।কিন্তু এত কষ্ট করে আঁকার পর মেয়েটাকে দেখতে তার বড় খালার মত লাগছে।ব্যাপারটা কেমন হল?১৮ বছরের মেয়েকে যদি ৬১বছরের মহিলার মত দেখায় তাহলে সেই মহিলা আঞ্জেলিনা জোলির মত দেখতে হলেও কিছু যায় আসে না।রাগে অভ্রর এখন ছবিতে দাড়ি মোছ লাগিয়ে দিতে ইচ্ছা করছে.১২ টা যখন বেজেছে তখন ১৩ টা বাজাতে আর কি!
অবস্থা শুনে ফানি মনে হলেও অভ্রর অবস্থা কিন্তু মোটেও ফানি না।এই ছবি আঁকার অর্ডার পেয়েছে সে।তার ছোট বোনের ফ্রেন্ড সুমি দিয়েছে এই অর্ডার। আঁকতে পারলে নাকি ৪২০ টাকা দেয়া হবে তাকে টাকা টা ব্যাপার না… ইজ্জত টাই মেইন ব্যাপার। সুমির মত ত্যাঁদড় মেয়ে জীবনে দেখে নাই অভ্র। সেইদিন বাসায় এসে বলে…” হিহি,অভ্র ভাইয়া আপনার আঁকা একটা ছবি দিয়েন তো,আমার ছোট ভাই বল্টু তো রাতে ঘুমাতেই চায় না,ওকে ভয় দেখায় ঘুম পারাবো!”
অভ্রের সাথে কি ওর তামাশার সম্পর্ক?রেগে গিয়ে সেই মুহূর্তে অভ্র চ্যাঁলেঞ্জ ছুঁড়ে দিল যে ১দিনের মধ্যে সুমির ছবি এঁকে দিতে পারে ও।অভ্রর খুব আশা ছিল ব্যাপারটা সুমি ভুলে যাবে…কিন্তু ওর আশায় গুরেবালি দিয়ে সুমি প্রতি দুই দিন অন্তর তাকে অ্যালার্ম ক্লকের মত রিমাইন্ডার দেয়া শুরু করে দিল
আজকে সেই ছবিই আঁকতে বসেছে সে। এইসময় রুমে অভ্রর মা এসে ঢুকে বললেন, “বড় খালার জন্মদিনে যাবি না?” তারপর ছবির দিকে চোখ পড়তেই অবাক হয়ে বললেন, ” ও মা! বড় আপাকে এঁকেছিস দেখি! আপা যা খুশি হবেন, এই সেইদিনই বলছিলেন অভ্র দেখা পর্যন্ত করতে আসে না!এতদিনে একটা ছবির মত ছবি এঁকেছিস বাবা! ”
অতঃপর ঘণ্টা দুয়েক পর হাসিমুখে অভ্রকে দেখা গেল মোহাম্মদপুরের রাস্তায় ইয়া বড় এক ছবি হাতে। তখনি ওর মোবাইল টা বেজে উঠলো। ফোন ধরেই বলল, “হ্যাঁ সুমি?আরে মনে থাকবে না কেন? এই সপ্তাহেই পেয়ে যাবে তোমার ছবি।আজ বড় খালার জন্মদিন তো তাই ওনার টা আগে আঁকলাম । এরপরেই তোমার টার্ন, হ্যাঁভ পেশেন্স!! ভদ্রলোকের এক কথা!” এরপর মনে মনে অভ্র বলে উঠলো, সুমির ছবি আঁকতে গিয়ে খালা হয়ে গেছে।দেখি কাল থেকে খালার ছবিই আঁকার ট্রাই করব… ইনশা আল্লাহ সুমি হয়ে যাবে
হাহাহাহা
মজা পেলুম 😀
ধন্যবাদ 😀