বহুদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে লোহার গয়লাটা,
জলের উপরে।
ঠায় ভেসে আছে যেমনটি ছিলো
দু’যুগ আগেও।
কিংবা, হয়তো তারও আগে থেকে।
রঙটা একটু মিইয়ে গেছে,
মরিচা এসে ঠাঁই নিয়েছে সেখানটায়,
দূর থেকেও স্পষ্ট বোঝা যায়।
কতকিছুর সাক্ষী এই লোহার গয়লা-
দু’যুগে হয়েছে বহু রদবদল,
নদীর পানি হয়েছে কালচে,
তবুও কিছু মানুষ স্নান সারে এই জলেই।
সেদিনের সে শিশুটি এখন বাড়ির কর্তা,
তার ছোট ছেলেটা স্কুলে পড়ে, নার্সারিতে।
বড় ছেলেটা ক্লাস ফাইভে;
বড্ড লক্ষ্মী হয়েছে-
সাহাস্যে মুরগীর রানটা তুলে দেয়
ছোট ভা’য়ের পাতে।
বৃদ্ধ গোয়ালিনীর গাভীটা অ্যানথ্রাক্সে মরেছে
গতবছর।
রোজ বিকেলে গরুকে নাইয়ে দিতেন
এই বুড়িগঙ্গার জলেই-
নিজেও নাইয়ে নিতেন।
এখনও আসেন,
তাকিয়ে থাকেন গয়লাটার দিকে,
ছানিচোখে কীভাবে দেখেন কে জানে।
পাড়ের কোণায় ভাতের হোটেল,
জমে থাকা আলুর ছিলকা, পেঁয়াজের খোসা, মরিচের বোটাগুলো
ছুঁড়ে ফেলে নদীতে।
পেঁয়াজের খোসাগুলো ভেসে ভেসে যায়,
মাঝেমাঝে গিয়ে থামে লোহার গয়লাতে।
জল কেটে বয়ে চলা লঞ্চ, স্টিমারের ক্ষমতা বোঝা যায়
পাড়ে ভিড়া ঢেউগুলো দেখে।
ঢেউয়ের তালে দুলে উঠে গয়লাটা-
আজও দাঁড়িয়ে সেখানটাতেই
যেমনটি ছিলো দুই যুগ আগে।
নির্মম সত্য 🙁
কিন্তু খালি দুঃখের কবিতা লিখে :/