
ছবি কৃতজ্ঞতা: আমি!
একটা শহরভর্তি মানুষ এত গোমড়ামুখো হয় কীভাবে? ঢাকার মানুষ যে কতটা হাসিখুশি আর গল্পবাজ সেইটা এই শহরে না আসলে আমি বুঝতে পারতাম না। দেশের মানুষ যে রাস্তায়-ঘাটে হো হো করে আসে, কথা বলে আর চিৎকার করে – সেই কথার ভাষা ভালো হোক কি খারাপ, তার যে কত মূল্য তা আমি এখন বুঝতে পারি। এজন্যই কি ঢাকা প্রাণের শহর? এখানে তো আমি প্রাণ খুঁজে পাই না।
মেট্রোতে-ট্রামে-বাসে শ’য়ে শ’য়ে নির্বিকার নিরুত্তাপ মুখ দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত। ভুটান যেয়ে মনে হয়েছিল পাহাড়ের কাছে থাকা মানুষেরা কি খুব বিনয়ী হয়? কারণ সারাক্ষণই আমার নিজেকে কেমন তুচ্ছ আর সামান্য মনে হত, আর শুধু মাথা নুয়ে আসতো। আর এখানে এসে মনে হয়, শীতের দেশে থাকা মানুষেরা কি খুব শীতল হয় – বরফশীতল? আমি আশা করি না যে অদ্ভুত পোশাক পরা একটা অচেনা মেয়ের দিকে তাকিয়ে এখানকার মানুষ হাসবে, কথা বলবে, তাই বলে নিজেরাও একটু হাসবে না, গল্প করবে না? রাস্তায় মনে হয় এক-আধটু শব্দ পাওয়া যায় কেবল স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েগুলির কাছে গেলেই, সেটাও এত কম আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যে হঠাৎ মেট্রোতে তাদের কারো কথা কিংবা হাসির আওয়াজ কানে আসলেই মনে হয় যে কেউ মনে হয় ভীষণ কোন নিয়ম ভঙ্গ করলো। এত সুন্দর একটা শহর, ন্যাচারাল আর্কিটেকচারাল কোন প্রকার সৌন্দর্যের কোন অভাব নাই, সেখানের মানুষেরা এত গম্ভীর থাকে কেন?
এমন না যে আমি কোন বিশেষ ধরনের আচরণকেই আদর্শ মনে করি আর বাকি সবকেই অনাদর্শ, কিন্তু একেক সমাজের মানুষ কেন এত দারুণ রকম আলাদা হতে পারে তা জানতে ইদানিং খুবই আগ্রহ জাগে আমার।