বাংলাদেশ: উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা (দ্বিতীয় কিস্তি)

বিশ্ববিদ্যালয় হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করা সহ বিভিন্ন ধরনের গবেষনামূলক কাজকর্ম করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে বর্তমানে পাবলিক আর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে সর্বমোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ১৩০ টি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কত?  বিশ্ববিদ্যালয় হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান তৈরি হয়, সেই জ্ঞান বিতরণ করা হয়। গবেষণা হয়, এমন বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের কয়টি আছে? যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিছু না কিছু হলেও গবেষণা হয়, সেখানে গবেষণার মান কেমন?

আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথাই বলি। বর্তমানে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭ টি। এর মাঝে ১১ টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে গবেষণার জন্যে কোন অর্থ বরাদ্দই নেই! একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্যে একটা টাকাও বরাদ্দ নেই, ভাবা যায়!

আমাদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষনাখাতে ব্যয়, সেই ব্যয়ে কেমন কাজ হচ্ছে, তা নিয়ে প্রতিবছর ইউজিসি বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একটু চেষ্টা চরিত্র করে সেখান ২০১৪-১৫ সালে গবেষণা কর্মের যে তথ্য পেলাম, তা নিচের টেবিলে মোটামুটিভাবে তুলে ধরবার চেষ্টা করছি (২০১৫-১৬ বছরের রিপোর্ট এখনও তারা সম্পূর্ণ প্রকাশ করে নি)-

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা খাতে ব্যয় ও প্রকাশিত আন্তর্জাতিক প্রকাশনা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা খাতে ব্যয় এবং প্রকাশিত আন্তর্জাতিক প্রকাশনা

 

আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কর্মের কী হাল;, সেটা এই টেবিলের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের নামের আগে টাইটেল হিসেবে ‘Research University’ লাগিয়ে নিয়েছে, তাদের অবস্থাও যে করুণ, তা আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়। যাও বা এরা কিছু আন্তর্জাতিক গবেষনাপত্র প্রকাশ করে, তার অবস্থা খুব একটা সুবিধার না। নেচারইনডেক্সের হিসেবে ২০১৪-১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে সবমিলিয়ে মাত্র ১৮ টি উচ্চমানের (High Impact) গবেষনাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, যার সাতটিই প্রকাশ করেছে International Centre for Diarrheal Disease Research, Bangladesh (icddr,b)।

অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়/গবেষণাপ্রতিষ্ঠান/গবেষকদের সাথে কোলাবোরেশানে গবেষণা কাজেও বাংলাদেশের অবস্থান যথেষ্টই নড়বড়ে। সম্ন্বিত গবেষণার ক্ষেত্রে ১৫৮ টি উচ্চমানের গবেষণা পত্র প্রকাশকারী দ্দেশের মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান, ৮৪ তম।

অনুজ সম্পর্কে

সাদা কাগজে কালো কালিতে লিখতে গেলে হয়ত লিখতে হবে - প্রথমত আমি রক্ত মাংসে গড়া এক মানুষ, দ্বিতীয়ত চিরন্তন সত্য, মৃত্যুর সাথে করি বসবাস... https://www.facebook.com/CoercedAnuj
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা, বিবিধ, সচেতনতা-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

2 Responses to বাংলাদেশ: উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা (দ্বিতীয় কিস্তি)

  1. পাহাড়ি কন্যা বলেছেনঃ

    “আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কর্মের কী হাল;, সেটা এই টেবিলের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের নামের আগে টাইটেল হিসেবে ‘Research University’ লাগিয়ে নিয়েছে, তাদের অবস্থাও যে করুণ, তা আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়। যাও বা এরা কিছু আন্তর্জাতিক গবেষনাপত্র প্রকাশ করে, তার অবস্থা খুব একটা সুবিধার না।”– ভাল লিখেছেন :thinking: :thinking:

    • অনুজ বলেছেনঃ

      আমারতো বরং প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, ‘রিসার্চ ইউনিভার্সিটি’ বলতে তারা আসলে ঠিক কী বোঝাতে চান?
      স্পেশালাইজেশানের ভিত্তিতে ইউনিভার্সিটির ক্ল্যাসিফিকেশান হয় বলে জানি, কিন্তু এই রকম কোন ক্ল্যাসিফিকেশান আছে বলে কোথাও খুঁজে পাই নি আজতক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।