যারা মুভি জগত সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর রাখেন তারা দ্যা লেজেন্ড অব টারজান নিয়ে নিশ্চিত আগ্রহী ছিলেন। অনেকে হয়তবা দেখেও ফেলেছেন।
সাদা চামড়ার একটি লোক কীভাবে আফ্রিকার জঙ্গলের রাজা হয়?!
আপনার মনে হতে পারে বারোজ যেহেতু আমেরিকান লেখক তাই টারজান হোয়াইট হবে সেটাই স্বাভাবিক! কিন্তু সেটি আর স্বাভাবিক থাকে না যখন সেই আমেরিকান লেখকের গল্প বিশ্বজুড়ে আইকনে পরিণত হয়! সবাই টারজান নামক হলিউড ফিল্ম এর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে যে কিনা কালোদের তাদের কলোনিয়াল মাস্টারদের হাত থেকে রক্ষা করে! আমরা কখনই চিন্তা করি না এই আমেরিকান চরিত্রটি কীভাবে সবার হয়ে উঠল এত সমস্যার পরও!
এই লেখার মূল লক্ষ্য কিন্তু টারজান নয়। আপনি টারজান নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গেলে দেখবেন যে টারজান আমেরিকার সেই রেসিস্ট সময়ের অনেক রেসিস্ট আচরণ এর স্বাক্ষর বহন করে আছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে পাঠক এবং মুভির দর্শকদের কোন আইডিয়াই নেই এই সব রেসিজম এর ব্যাপারে!
দ্যা লেজেন্ড অব টারজান মুভির গল্পে যদি ফিরে যাই তাহলে দেখব যে এক কালো চরিত্র টারজানকে নিতে এসেছে কঙ্গোর কালোদেরকে বাঁচাতে! আফ্রিকার উপরে ঔপনিবেশিক শক্তির যে রক্তাক্ত অধ্যায় সেটা হতে পারত জর্জ ওয়াশিংটন উইলিয়ামস নামক এক কৃষ্ণাঙ্গ এক্টিভিস্ট এর গল্প। যিনি বেলজিয়ান এর রাজার কাছে কঙ্গোর লোকদের উপর অত্যাচার নিয়ে খোলা চিঠি লেখার মাধ্যমে জনমত গঠনের কাজ করেছেন। কিন্তু না। টারজান এর বীরত্বের গল্পের জন্য রিয়েল লাইফ হিরো উইলিয়ামস তাই হয়ে গেলেন এক কাল্পনিক সুপারহিরোর সাইডকিক! মুভিতে স্যামুয়েল এল জনসনকে দিয়ে যে চরিত্রটি দেখান হয়েছে তা আসলে হোয়াইট সেভিওর ন্যারেটিভ এর পশ্চাৎদেশ বাঁচানো ছাড়া আর কিছুই না! কেউ যদি বলতে আসে যে আপনেরা তো আবারো সাদা চামড়ার গুণগান গাওয়াইতাছেন কালো চামড়ার মানুষদের উদ্ধ্বার এর মাধ্যমে তাইলে বলা যাবে এই দ্যাখো আমরা তো স্যামুয়েল এর মতো শক্তিশালী অভিনেতা নিছি, শক্তিশালী রিয়েল লাইফের চরিত্র দিছি!
হোয়াইট চরিত্ররা কখনও সাদা চামড়ার শিক্ষক, কোচ কিংবা প্রমিজড ওয়ান হিসেবে আসে!
শুধু পুরুষ নয়! আপনি মেয়ে হোয়াইটদেরও পাবেন কালোদের উদ্ধার এ! যেমন ধরেন সাম্প্রতিক সময়ের মুভি দ্যা হেল্প এ!
ইন্ডিয়ানা জোন্স এন্ড দ্যা টেম্পল অব দ্যা ডুম এ যেমন হ্যারিসন ফোর্ড অসহায় ভারতীয়দের বলির হাত থেকে বাঁচাতে আসে কিংবা
প্রশ্ন আসতে পারে এই জাতীয় ফিল্মগুলার অরিজিন কী?
এই জাতীয় ফিল্মগুলো অরিজিন সেই সাদা চামড়ার কলোনিয়াল/ ইম্পিরিয়ালিস্টিক চিন্তাভাবনা যার আসল প্রকাশ ঘটেছিলরুডইউয়ার্ড কিপলিং এর কবিতাহোয়াইট ম্যান’স বার্ডেন এ! সাদা চামড়ার মানুষরা তুলনামূলকভাবে অসভ্য, অসংস্কৃত, ভঙ্গুর অশ্বেতাঙ্গদেরকে উদ্ধার করে নিজেদের শক্তি, মেধা, অনুপ্রেরণা কিংবা মানবিকতা দিয়ে!
মুভি নিয়ে আমার আগের পোস্ট
বিবাহিত জীবনে সুখী হইবার সহজ উপায় অথবা রিলেটিভিটির দুষ্ট রসিকতা!
কেন “হোয়াই দিজ কোলাভেরি ডি” এত জনপ্রিয় হলো?
সরব বাপ্পির এভারেস্ট জয় এর সাথে বিল গেটস এর রূপবতী মেয়ের সম্পর্ক কী?!
হুম সেদিনের আড্ডায় কোন একটা মুভি সম্পর্কে কথা উঠায় এই টার্মটা প্রথম শুনেছিলাম আপনার কাছে। এখন ভালোভাবে জানলাম। মারাত্নক বিষয়, আপনি ছাড়া অন্য কারো থেকে শুনলে নির্ঘাত কনস্পিরেসি থিওরি বলে উড়ায় দিতাম 🙁
“হোয়াইট সেভিওর ন্যারেটিভ”- আইডিয়ার সাথে পরিচিত ছিলাম কিন্তু টার্মটা আজকেই প্রথম জানলাম। অস্কারে উপস্থাপনা নিয়েও এ ব্যাপারটি উঠে এসছিল।