শূন্য থেকে এক: উদ্যোগ নিয়ে কথা কিংবা ভবিষ্যৎ গড়ার নিয়মকানুন – ১

[পিটার থিয়েলের ‘জিরো টু ওয়ান’ বই থেকে অনূদিত]

Image result for entrepreneurship

যে কারো চাকরির সাক্ষাৎকার নেয়ার সময়ে তাকে নিশ্চিতভাবে যে প্রশ্নটা আমি করি: “এমন কী আছে যা খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও তার ব্যাপারে খুব সীমিত সংখ্যক মানুষ আপনার সাথে একমত হয়?”

প্রশ্নটা সোজাসাপ্টা হওয়ার কারণে শুনতেও সহজ মনে হয়। তবে আসলে এর উত্তর দেয়া খুব কঠিন। বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে প্রশ্নটা কঠিন হওয়ার কারণ, স্কুলজীবনে সাধারণত সবাইকে এমন জ্ঞানের সাথেই পরিচিত করা হয় যা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। আর মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এটা কঠিন, কারণ এর উত্তর হিসেবে কাউকে অবশ্যই অজনপ্রিয় কিছুর কথা বলতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার দেখা পাওয়া ভার, তবে বুদ্ধির চাইতে সাহস গুণ হিসেবে আরো অপ্রতুল।

সে যাই হোক, এই প্রশ্নের উত্তরে আমি সাধারণত নিচের উত্তরগুলো শুনতে পাই:

“আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ভগ্নপ্রায়, জরুরি ভিত্তিতে এর পরিবর্তন দরকার।“

“আমেরিকা অন্য যে কোন দেশ থেকে আলাদা।“

“স্রষ্টা বলে কেউ নেই।“

উত্তর হিসেবে এসব তেমন ভালো কিছু নয়। প্রথম আর দ্বিতীয় বাক্যটা সত্য হতে পারে, কিন্তু অনেক মানুষ ইতোমধ্যেই এগুলোর সাথে একমত। অন্যদিকে তৃতীয়টা জনপ্রিয় এক বিতর্কের এক পক্ষের মন্তব্য কেবল। ভালো একটা উত্তর হতে পারে অনেকটা এই ধাঁচের: “বেশিরভাগ মানুষ ‘ক’তে বিশ্বাস করে, যদিও সত্য আসলে ‘ক’এর ঠিক উলটো।” আমার নিজের উত্তরটা আমি এ অধ্যায়ের শেষের দিকে জানাবো।

ভবিষ্যতের সাথে এই বিরুদ্ধ প্রশ্নের সম্পর্ক কী? নিদেনপক্ষে বলতে গেলে, ভবিষ্যৎ তো মূলত এখনো যেসব মূহুর্ত আসে নি সেগুলোর সমষ্টি। ভবিষ্যতের বিশেষত্ব কিংবা গুরুত্বের কারণ এই না যে সে এখনো আসে নি, বরং এর কারণ হলো ভবিষ্যৎ এমন একটা সময় যখনকার পৃথিবী আর আজকের পৃথিবীর মত থাকবে না। এভাবে ভাবলে, আগামী ১০০ বছরে যদি আমাদের সমাজের কিছুই না বদলায়, তাহলে ভবিষ্যৎ আসবে ১০০ বছর পর। যদি আগামী ১০ বছরেই অনেক কিছু আমূল বদলে যায়, তাহলে বলতে হবে ভবিষ্যৎ আমাদের দোরগোড়ায়। ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারে না সত্য, কিন্তু তার সম্পর্কে অন্তত দুটো বিষয় আমরা জানি: ভবিষ্যৎ হবে বর্তমান থেকে অন্যরকম, অন্যদিকে এর সম্ভাবনার শুরু আজকের পৃথিবীতেই হতে হবে। বিরুদ্ধ সেই প্রশ্নের বেশিরভাগ উত্তরই বর্তমানকে নানান দিক থেকে উল্টেপাল্টে দেখার চেষ্টা করে কেবল: ভালো উত্তর সেগুলোই যেগুলো ভবিষ্যতকে কিছুটা হলেও কাছ থেকে দেখতে পারে।

সামিরা সম্পর্কে

পীচ-গলা তরলে আটকে পা, দুঃস্বপ্ন অন্ধ দুই চোখে/ অসতর্ক হৃদয় পোষ মানে মিথ্যে বলার আফসোসে.../// প্রকাশিত লেখার কপিরাইট সংশ্লিষ্ট লেখক সংরক্ষণ করেন এবং লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখা আংশিক বা পূর্ণভাবে কোন মিডিয়ায় পুন:প্রকাশ করা যাবে না।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে অনুবাদ, ইতিবাচক, উদ্যোগ, চিন্তাভাবনা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।