ঢাকার রাস্তায় আজকাল দেখতে পাওয়া একটা দৃশ্যকে নিজের মত করে সবাইকে দেখানোর একটা চেষ্টা করলাম।সবাইকে বলে রাখি আমি ব্লগার নই-সত্যি বলতে কি এটাই কোন ব্লগে আমার প্রথম পোস্ট!তাই লেখা লেখির ত্রুটি নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।
এই ধরনের কার্যকলাপের পক্ষে আছেন কেউ-তাদের যুক্তি ওরা একদিন হলেও তো বেশ হাঁটা হাঁটি করে কাজ কর্ম করছে,আর আপনি তো ঘরে বসে ফেসবুক-ব্লগে কলম চালাচ্ছেন!আর বাচ্চাদের যদি কিছুটা হলেও সাহায্য হয় তবে কাজটা করতে সমস্যা কোথায়?যত্ত সব সন্দেহ বাতিক গ্রস্থ লোকজন!
আবার যারা বিপক্ষে আছেন তাদের যুক্তি-হুঁহ,আসছে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া পোলাপান একদিনের Show Off করতে!কইতে পারে না শুদ্ধ বাংলা, না শুদ্ধ ইংরেজি, এরা করব সমাজ সেবা!খালি dress up করে রাস্তায় হাঁটা হাঁটির নাম সমাজ সেবা নয় বুঝলে বাবা!
পক্ষ-বিপক্ষ কোন পক্ষকেই defend বা protest করার মত যুক্তি ভান্ডার আমার নেই।আমি নিজের মত করে বিষয়টা চিন্তা করার চেষ্টা চালাই।আমার ভাবতে ভালোই লাগে আমার বয়সী তরুন তরুনীরা সমাজের কাজে এগিয়ে আসছে, পথশিশুদের কথা চিন্তা করে একদিন হলেও পথে নেমে আসছে, মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে কিছু একটা করার চেষ্টা করছে।একদিনের প্রতীকি কাজ হলেও এই কাজটা তাদের মনের মাঝে হয়ত একটা স্থায়ী কিছু রেখে যাবে যা তাদের প্রেরণা দিবে ভবিষ্যতের পথে।হয়ত এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি যারা তারাও এমনটাই ভাবেন।কর্পোরেট,মার্কিন আগ্রাসন,বানিজ্যীকরন এইসব বড় বড় কথা হয়ত তাদের মাথায় আসে না।অনেক সুন্দর একটা চিন্তা।
তবে আবার একইসাথে মাথায় অন্য একটা ভাবনাও আসে।আমি যখন ফেসবুকে এমন একটা প্রতিষ্ঠানের পেজে যাই তখন দেখি দেয়ালটা-আমার ছবি কই?এইদিনের ছবি বেশ ভালো আসছে।ছবি গুলো কবে পাবো?-এই ধরনের পোস্টে ভর্তি।বলতেই পারে কারন তারুন্য মানেই উচ্ছাস আর তারুন্যের উচ্ছাসে এমন একটা দিনে ছবি তুলতেই পারে তারা-কতই বা আর বয়স ওদের!হাঁ ছবি তোলা তো ভালোই-তবে কাজের কিছু কথা যদি লেখা দেখতাম আরো ভালো লাগত।না হলে হয়ত মানুষ পেজটাকে সুন্দরী স্বেচ্ছাসেবিকাদের ছবি দেখার পেজ হিসেবেই ব্যবহার করতে শুরু করবে।
এই লেখার উদ্দেশ্য সমালোচনা না।উদ্দেশ্য আমার কিছু আশাবাদ ব্যক্ত করা।পথশিশুদের জন্য স্বেচ্ছাশ্রম দেয়া অনেক ভালো একটা কাজ।তাদের কাজকে বুঝতে শেখা,ওদের কষ্টটা শেয়ার করা,একদিন ওদেরকে শিশুপার্কে ঘোরানো-সবই মহৎ উদ্যোগ মানি। তবে কিনা এই উদ্যোগটা যেন একদিনের একটা experience না হয়ে যায়।যারা স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে তাদের মাথায় যেন এই ধারনাটা না ঢুকে যায় যে সমাজের জন্য কাজ করা মানে রাস্তায় নেমে একদিনের ছুটা ছুটি আর দিন শেষে ফেসবুকে একটা প্রোফাইল পিকচার।এইসব স্বেচ্ছাসেবক দের মাঝে যেন সত্যিকারের সেবার চেতনাটা জাগ্রত হয়।তাদেরকে যেন পাওয়া যায় রমজানে ইফতার বিতরনের কাজে,যখন ঈদের সময় পথশিশুদের জন্য কাপড় বিতরন হয় সেখানে,শীতবস্ত্র সংগ্রহ করে হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে যারা বিতরন করে তাদের পাশে।এইসব কাজে ফেসবুকে প্রচার নেই,সার্টিফিকেটের আশা নেই,নেই টি শার্ট পড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো।তবে আছে সত্যিকারের একটা ভালো লাগার অনুভূতি।নিজেরা মিলে মিশে সমাজের জন্য ছোট একটা কিছু করা এমন একটা তৃপ্তির আবেশ।একদিনের হাঁটা হাঁটিতে যেই বোধটা কতটুকু আসে আমার সন্দেহ।
আমি অতি নগন্য মানুষ।কেউ যদি আমাকে এসে বলেন বড় বড় কথা বলেন নিজে কতটা কি করলেন তার কোন জবাব আমি দিতে পারব না।তবে আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে আমি এমন কত গুলো মানুষকে চিনি যারা এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে পারবেন।ঘরের খেয়ে বনে মোষ তাড়ানো এই মানুষগুলোকে দেখলে মনে হয় নাহ, এখনো হয়ত সবাই ঘুমিয়ে পড়নি।কিছু মানুষ আজ ও জেগে আছে।জাগ্রত থাকুক এই মানুষগুলো আর তারা জাগিয়ে তুলুক ঘুমিয়ে পড়া তারুন্যকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।আর চাই poverty যেন একটা product এ পরিনত না হয় যেটার জন্য মোড়ে মোড়ে মডেল দিয়ে বিজ্ঞাপন করা লাগে।
দারুণ চিন্তাভাবনা
এবং দুর্দান্ত কার্টুন!
সিমপ্লি দুর্দান্ত! :huzur:
ধন্যবাদ।=)
আহ! বহু কষ্টে আবার সরবে ঢুকতে পারলাম!!
disclaimer দিয়ে দেয়াটা দরকার ছিল, যে তুই ছিদ্রান্বেষন করছিস না, নাহলে হয়ত সব চেয়ে মারমুখী জবাবটা আমার কাছে পেতি!
অসাধারন একটা উদ্যোগ, কিন্তু মানুষের কটূক্তির কারন হয়ে যেতে পারে শুধুমাত্র অংশগ্রহনকারীদের আচরনের জন্য। কর্ম মনে ধারন করাটাই মূল। বারবার সবাইকে মনে করিয়ে দেয়াটা জরুরি, এইসব উদ্যোগ যেন একদিনেই থেমে না যায়,যেন ফেইসবুকের প্রোফাইল পিকচার পর্যন্তই সীমাবদ্ধ না থাকে। ধন্যবাদ!
অসাধারন কার্টুন বাই দ্যা ওয়ে!! তোকে অনেক উপরে দেখতে পারছি সামনের দিনগুলোতে। চালিয়ে যা!! :happy:
ছিদ্রান্বেষন,বিশ্লেষন করতে চাইনি-এমনি লেখা কথা বার্তা!=)
আপনার কার্টুন আঁকার হাত তো অসাধারণ!
“যেসন কাজে ফেসবুকে প্রচার নেই, সার্টিফিকেটের আশা নেই, নেই টি শার্ট পড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো। তবে আছে সত্যিকারের একটা ভালো লাগার অনুভূতি।”>> সেসব কাজকে আর সেসব কাজ করে যাওয়া মানুষকে আমার সালাম, শ্রদ্ধা।
খুব ভাল আর গোছানো আপনার চিন্তাভাবনা।
ব্লগে এটা প্রথম পোস্ট হলেও আশা করছি আপনাকে নিয়মিত পাব।
:welcome:
ধন্যবাদ!=)
কার্টুনটা কী চমৎকার লাগলো!
:welcome:
ধন্যবাদ। 🙂
মুগ্ধ হলাম লেখাটা পড়ে। এই রাস্তায় ফুল বিক্রি নিয়ে বিস্তর আলোচনা দেখছি। এই সমালোচনা যেন আসল কাজটা বন্ধ হবার পথ সৃষ্টি না করে সেটাই প্রার্থনা। আজ যে ছেলে বা মেয়েটি স্রেফ সার্টিফিকেটে এর জন্য নামছে, কাল হয়ত সে একজন সেবক হয়েও অন্য কোন ভাবে তো নামতে পারে।
যারা রাস্তায় পথশিশুদের জন্য ফুল বিক্রি করতে নেমেছে ওদের বাসার কাজের ছেলে বা মেয়েটির সম্পরকেও ওদের মধ্যে একটা বোধ ও সৃষ্টি হতে তো পারে।
আপনার লেখা এবং ওদের কাজ- দুটোর জন্যই শুভকামনা।
সেটাই আশা রাখি-কিছু হলেও যেন মানুষগুলো জাগে!ধন্যবাদ।
৩ দিনে একাই যেই ফাইট দিলাম, মাশাল্লাহ !!! তবে, কিছুটা হতাশাব্যঞ্জক লেগেছে যখন দেখলাম আরিফদা, জাফর ইকবাল স্যার এসবে হ্যা’র সাথে হ্যাঁ’ মিলাচ্ছেন !!!
আমার কাছে এটা ছিলো শুধুই শো অফ ! নাথিং এলস !
কার্টুন ??? এক্কেবারে দশে দশ !!! দুর্দান্ত ম্যান !!!
আপনে নতুন ??? কি বলেন ???? আরি :welcome:
দুর্দান্ত আর ফাটাফাটি কার্টুনের অপেক্ষায় রইলাম আরও !!!
আমার একেবারেই হাতে খড়ি!ধন্যবাদ আপনাকে।=)
কার্টুনটা দেখে আপনার ফ্যান হয়ে গেলাম- কী অদ্ভুত সুন্দর চিন্তা করেছেন, বস! পুরাই অসাধারণ! you deserve a bow! :huzur:
“তাদেরকে যেন পাওয়া যায় রমজানে ইফতার বিতরনের কাজে,যখন ঈদের সময় পথশিশুদের জন্য কাপড় বিতরন হয় সেখানে,শীতবস্ত্র সংগ্রহ করে হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে যারা বিতরন করে তাদের পাশে।এইসব কাজে ফেসবুকে প্রচার নেই,সার্টিফিকেটের আশা নেই,নেই টি শার্ট পড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো।তবে আছে সত্যিকারের একটা ভালো লাগার অনুভূতি।নিজেরা মিলে মিশে সমাজের জন্য ছোট একটা কিছু করা এমন একটা তৃপ্তির আবেশ।”
মারাত্মক দামী কথা। টুকটাক সোশ্যাল ওয়ার্ক এখন প্রায় সবাই করি- কিন্তু কত জন এর থিমটা ধরতে পারে??
সাধুবাদ আপনাকে, চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভুল্টা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য… শুভ কামনা, keep it up :clappinghands:
ওহ, বলতে ভুলে গেসলাম- :welcome:
বাপরে-না ভাই আমি মোটেই বস লেভেলের কিছু নই!ধন্যবাদ আপনাকে!
🙂
অদ্ভুদ হইছে! যেন গালে কেউ থাপ্পড় দিয়ে দিল! এমন আরো চাই। সমাজের এই রূপ গুলো কারো চোখে পরে না।
ধন্যবাদ আপনাকে।=)
“আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে আমি এমন কত গুলো মানুষকে চিনি যারা এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে পারবেন।ঘরের খেয়ে বনে মোষ তাড়ানো এই মানুষগুলোকে দেখলে মনে হয় নাহ, এখনো হয়ত সবাই ঘুমিয়ে পড়নি।কিছু মানুষ আজ ও জেগে আছে।জাগ্রত থাকুক এই মানুষগুলো আর তারা জাগিয়ে তুলুক ঘুমিয়ে পড়া তারুন্যকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।”>> সালাম জানাই এসব মানুষদের, মন থেকে অনেক অনেক শ্রদ্ধা তাদের জন্য । :huzur:
খুব ভালো লাগলো আপনার লিখাটা পরে। 😀 সালাম জানাই আপনার চিন্তা ভাবনাকে । :huzur:
ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম!ধন্যবাদ।=)
খুবই চমতকার লেখা আর দুর্দান্ত আঁকা।
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই পোস্টটার জন্য। সামাজিক অনিয়মগুলোর বিরুদ্ধে একটা সৃষ্টিশীল প্রতিবাদ এটা। অনুগ্রহ করে চালিয়ে যান। সরবে আমাদের সাথে থাকুন, আমাদের নিয়েই এগিয়ে চলুন 🙂
:welcome:
প্রতিবাদ না আশাবাদ!=)-ধন্যবাদ!
“তবে কিনা এই উদ্যোগটা যেন একদিনের একটা experience না হয়ে যায়।যারা স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে তাদের মাথায় যেন এই ধারনাটা না ঢুকে যায় যে সমাজের জন্য কাজ করা মানে রাস্তায় নেমে একদিনের ছুটা ছুটি আর দিন শেষে ফেসবুকে একটা প্রোফাইল পিকচার।”
দারুণ ভাবনা। আসলেই যেন এমন না হয়ে যায়।
:welcome:
ধন্যবাদ। 😀
দশ পৃষ্ঠা লিখে যা বুঝনো যেত না আপনি তা একটি কার্টুন একে আর কয়েক লাইন লিখেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।
অনেক ধন্যবাদ।
:welcome:
নিয়মিত পাবার আশায় 🙂
সহমত!
“দশ পৃষ্ঠা লিখে যা বুঝনো যেত না আপনি তা একটি কার্টুন একে আর কয়েক লাইন লিখেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।”
:welcome: ইঁদুর ভাই!
:welcome:
খুবই ভালো একটা লেখা। ছিদ্রান্বেশন না করে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে…… :clappinghands:
সরবে স্বাগতম :welcome:
“কিছু মানুষ আজ ও জেগে আছে।জাগ্রত থাকুক এই মানুষগুলো আর তারা জাগিয়ে তুলুক ঘুমিয়ে পড়া তারুন্যকে.”
চরম। কার্টুনটা তো অবশ্যই! :huzur:
:welcome:
কার্টুনটা আপনার আঁকা! এতোদিন শুধু দেখে এসেছি তবে আজ খোদ কার্টুনিষ্টের নিজ হাতে লিখাও পড়লাম। ওদের কর্মকান্ড একটু কাছ থেকে দেখে বুঝার জন্য আমিও যোগ দিয়েছিলাম ওদের দু’তিনটি কর্মকান্ডে এবং বেশ কিছু বিষয় আমার পছন্দ হয়নি বিধায় আর যুক্ত থাকতে পারিনি। তবে চোখে যা দেখা যাচ্ছে তার চাইতেও ভয়ংকর কিছু একটা আসছে বলে মনে করি আমি। যদিও সঠিক শব্দ দিয়ে প্রকাশ করতে পারছি না এখন।
আপনার চিন্তাভাবনার সাথে কিভাবে যেন আমার চিন্তাধারা মিলে গেছে! পথশিশুদের সাহায্য করার জন্য এমন অনেক সংস্থা আছে যাদের ফেসবুক পেজ বা প্রচারণা নেই। কিন্তু তারা নিরবে এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করে যায়। কিছুদিন আগে একটি টিভি প্রোগ্রামে এরকম একজন মানুষের কথা শুনছিলাম, নামটি মনে নেই। ভদ্রলোক বিদেশী। তার সাথে কাজ করার জন্য অনেকে আগ্রহী। উপস্থাপক জানতে চাইলেন কিভাবে উনার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। উত্তরে উনি অমায়িকভাবে সুন্দর বাংলায় বলেছিলেন, ‘সাহায্য করতে চাইলে কোনো সংস্থার সাথে জড়িত হবার প্রয়োজন নেই। ছুটির দিনে কিংবা কাজের অবসরে কেউ যদি সেই পথশিশুদের সাথে কথা বলে, তাদের সাথে খেলে, নিজ থেকে যদি তাদেরকে কিছু খাবার বা কাপড় কিনে দেয় তাতেই ওরা খুশি হয়।’ উনার কথা শুনে খুব ভালো লেগেছিল এবং তা যথেষ্ট যুক্তিযুক্তও বটে।