দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো-২

একটা ছবি হাজার শব্দের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। কিছু ছবি মানুষের ইতিহাস বদলায়, কিছু ছবি  মানুষকে স্বপ্ন দেখায় আর কিছু ছবি মানুষকে করে বাকরুদ্ধ।

এমনই কিছু ছবি:

Tetons and the Snake River; Ansel Adams, 1942

অ্যানসেল অ্যাডামস এর এই ছবিটিকে বলা হয় ‘ন্যাচার ফটোগ্রাফি’র বিখ্যাত ছবিগুলোর একটি। ১৯৪২ সালে তোলা ছবিটি জলবায়ু সংরক্ষণ আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে। মানুষের সৌন্দর্যবোধকে নাড়িয়ে যায় অবলীলায়। ভয়েজার নভোযান-এ করে যে ১১৫টি ছবি মহাশুন্যে পাঠানো হয়, তার মধ্যে এটি অন্যতম।

 

Afghan Girl; Steve McCurry, 1984

আফগানিস্থানের যুদ্ধ কাকে কি দিয়েছে তা নিয়ে অনেক তর্ক হতে পারে, কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। রিফিউজি ক্যাম্পের এক কিশোরী মেয়ের চোখের ভয়, ঘৃণা, চিন্তা, কষ্ট সবকিছু কারও চিন্তাশক্তি এলোমেলো করে দিতে যথেষ্ট।

 

Starving Child Vulture, 1993

পুলিৎজার পুরস্কার জেতা কেভিন কার্টারের সেই বিখ্যাত ছবি! অপুষ্টিতে চলতে পারার শক্তি হারানো এক সুদানি শিশুকে অনুসরণ করছে একটা শকুন। অপেক্ষা করছে শিশুর মৃত্যুর। শেষ পর্যন্ত বাচ্চাটির কী হয়েছিল কেউ না জানলেও এ ছবি তোলার তিন মাসের মাথায় আত্নহত্যা করেন কার্টার। আফ্রিকার দারিদ্র আর যুদ্ধের নৃশংসতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এ ছবি।

 

The Power of One, 2006

একজন অভিবাসী মহিলা ঠেকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন ইসরাইলী সিকিউরিটি অফিসারদের। লড়াই চালিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছা প্রকাশের এক ছবি।

 

execution in Kurdish Iran, 1979

১৯৭৯-তে ইরানে কুর্দিদের হত্যার নির্মম দলিল এই ছবি। ছবিটি প্রকাশের সময় ফটোগ্রাফারের নাম গোপন রাখা হয় নিরাপত্তার জন্য। ২৭ বছর পর, ফটোগ্রাফার জাহাঙ্গীর রামজী নাম প্রকাশিত হয়।

 

The challenger space shuttle disaster, 1986

স্পেস শাটল ‘চ্যালেঞ্জার’ ১৯৮৬ সালে নিক্ষেপনের ৭৩ সেকেন্ডের মাথায় বিস্ফোরিত হয় আটলান্টিক মহাসাগরের উপর। ৭ জন অভিযাত্রীর সবাই নিহত হন। মহাকাশযাত্রার নিরাপত্তার বিষয়টি ব্যাপকভাবে তুলে আনে এ দূর্ঘটনা।

 

Stopping Time, 1964

বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় এম.আই.টি.  এর প্রফেসর হ্যারল্ড এডগার্টনের গবেষণার কাজে তোলা একটি ছবি, যা বিখ্যাত করে তোলে ‘হাই স্পিড ফটোগ্রাফি’।

 

First Black Student, 1957

যে কয়জন মানুষ প্রথম গায়ের রঙ এর উপর ভিত্তি করা শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে প্রথম এসেছিলেন স্কুলে তার একজন ডরোথি কাউন্টস। হ্যারী হার্ডিং হাই স্কুলে তার প্রথম দিন কেমন গিয়েছিল, তার পিছনে অঙ্গভঙ্গী করা মানুষগুলোই তার প্রমাণ। চারদিনের মাথায় স্কুল থেকে তার পরিবার তাকে অপসারণ করে নেয়। কিন্তু, গায়ের রং-কে শিক্ষা পাওয়ায় বাঁধা হতে না দেওয়ার চেষ্টার ছবি এটি।

 

Man walks on the Moon, 1969


নীল আর্মস্ট্রং এর তোলা এডুইন অলড্রিনের চাঁদে হাঁটার ছবি। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়, এই ছবি তার প্রতীক।

Palestinian father shields son, 2000

ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যের যুদ্ধ প্রতিনিয়ত কেড়ে নেয় জীবন। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার কী তীব্র চেষ্টা বাবা এবং ছেলের। বাবা জামাল আল দুররাহ এবং ছেলে মুহাম্মাদ আল দুররাহ এর জীবনের সমাপ্তিও ঘটে নীরবেই। এমন হাজারো গল্পের ভিড় থেকেও শান্তি বেরিয়ে আসে না।

 

দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো-১

দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো-৩: স্বাধীনতা

 

স্বপ্ন বিলাস সম্পর্কে

বাস্তবে মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জীবনের নানা পথ ঘুরে ইদানীং মনে হচ্ছে গোলকধাঁধায় হারিয়েছি আমি। পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করি আর দেখে যাই চারপাশ। ক্লান্ত হয়ে হারাই যখন স্বপ্নে, তখন আমার পৃথিবীর আমার মতো......ছন্নছাড়া, বাঁধনহারা। আর তাই, স্বপ্ন দেখি..........স্বপ্নে বাস করি.....
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

31 Responses to দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো-২

  1. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    কে যেন বলেছিল, একটা ছবি, একটি বিশাল গল্পের কথা বলে। এই ছবিগুলোর প্রত্যেকটাই এর পেছনের বিশাল প্রেক্ষাপট চোখের সামনে নিয়ে আছে। ভাবতে বাধ্য করে।

    রাজনীতি, বিজ্ঞান, পরিবেশ, ইতিহাস কতকিছুই না প্রকাশ করে এগুলো। ধন্যবাদ।

    পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

  2. শিশিরকণা বলেছেনঃ

    “একটা ছবি হাজার শব্দের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। কিছু ছবি মানুষের ইতিহাস বদলায়, কিছু ছবি মানুষকে স্বপ্ন দেখায় আর কিছু ছবি মানুষকে করে বাকরুদ্ধ।”
    দুর্দান্ত, অসাধারণ….
    পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে চাই না , ঘোষণা চাই পরের পর্ব কবে আসবে…. :love:

  3. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    মন্তব্য করার মত কথা পাচ্ছি না!
    প্রথম লাইনটার যথার্থতা শতভাগ প্রমানিত। অনেক ভালো লাগছে। :clappinghands:

  4. নিস্তব্ধ অমিত বলেছেনঃ

    খুব ভালো লেগেছে……

  5. নিশম বলেছেনঃ

    এবারের ছবিগুলো অনেক অনেক বেশী শক্তিশালী ! দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকেও পা কাপিয়ে দেয়, বসে থাকা মানুষের গায়ে কাপুনী দেবার মত ছবি একেকটা !!! আপেলের ছবিটা তো শৈশবদা’র ভাষায় ” ভচাম ” !!!!

    আফগান মেয়েটা, দ্যা পাওয়ার অফ ওয়ান এই ছবি দুইটা নতুন করে ভাবতে শেখায়।

    প্রথম ছবিটার আলো ছায়ার খেলা দেখে তো উলটে পরবার দশা !

    আর কেভিন কার্টার ? এ ছবিটা প্রথম যেদিন দেখেছিলাম, আমার মনে আছে, লুকিয়ে কেঁদেছিলাম। তখন শৈঈশবেই আমার অবস্থান। কতোটা শক্তিশালী হলে, এক শিশুমনেও ঘন আবেগ তৈরী করতে পারে একটি ছবি ….

    এই সিরিজ চলুক !!! পিলাচ 😀

  6. তোর আগের পোস্টের সাথে এ পোস্টের অনেক বেশি পার্থক্য, ভয়ংকর সব ছবিগুলো, স্তব্ধ করে দেবার জন্য আর কিছুর দরকার হয় না, শেষ ছবিটা দেখে বসে রইলাম অনেকটা সময়, চোখের পানি ছাড়া আর কিছু নেই দেবার……

  7. তাসকীন বলেছেনঃ

    আফগান মেয়েটার ছবিটা অসম্ভব রকম!!!!কেমন হাহাকার জাগায় দেয়!

  8. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    দম বন্ধ হয়ে আসছিল এক-একটা ছবি দেখার সময়!

    তোকে কী বলে কৃতজ্ঞতা জানাব রে, আমার আজকের মন খারাপের এই কষ্ট চোখের বৃষ্টি করে এনে দেয়ার জন্য?
    তুই ই বলে দে…

  9. প্রজ্ঞা বলেছেনঃ

    শুধু দুনিয়া কাঁপানো না, এই ছবিগুলো হৃদয় কাঁপানো-ও!

    পর্ব ৩ এর অপেক্ষায় রইলাম!

  10. নিলয় বলেছেনঃ

    আবার একগুচ্ছ দুনিয়া কাঁপানো ছবি! :clappinghands:

    Afgan Girl অসাধারণ লেগেছে… আর কেভিন কার্টারের ছবিটা তো all times favouritesগুলোর মধ্যে একটি… লোকটার শেষ পরিণতির কথা ভাবলে খারাপই লাগে 😳

  11. সাদামাটা বলেছেনঃ

    অসাধারাণ :clappinghands:

  12. সামিরা বলেছেনঃ

    দারুণ! কিছু ছবি কমন পড়লো, আফগান মেয়ের ছবিটা কী যে অদ্ভুত!
    আপেলের ছবিটা দেখেছি আগে, অসাধারণ পুরাই! :penguindance:

  13. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    কেন যেন বাকহীন হলাম 🙁

  14. অচেনা রাজ্যের রাজা বলেছেনঃ

    শেষের ছবিগুলো দেখে ভাষাহীন হয়ে গেলাম…..

  15. Shahidul বলেছেনঃ

    কেভিন কার্টার আর ফিলিস্তিনের ছবিগুলো দেখে মনে খারাপ হয়ে গেল। 🙁

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।