সব গল্পেই লেখক অন্যের কথা বলে । আজ নাহয় আমি নিজের কথাই বলি ।
ব্যাপারটা আমি প্রথম টের পাই স্কুলে পড়বার সময় । একদিন রাতে এক বিকট দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠি । বড়চাচা কে কারা যেন কুপিয়ে মেরে ফেলছে । স্বপ্নটা দেখার পরপরই ভয় লাগতে শুরু করে । ৩ দিন পর মাঝরাতে হঠাৎ বাসায় কান্নাকাটি শুরু হয় । বড়চাচা খুন হয়েছেন । কারা যেন তাকে ফার্মগেটের মোড়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে ।
তখন থেকে আমি বুঝতে শুরু করলাম , কোনও এক অদ্ভুত কারণে আমার স্বপ্নগুলো সত্যি হয়ে যায় । কিন্তু আমি নিজের ইচ্ছে মতো স্বপ্ন দেখতে পারতাম না । তাহলে অনেক অপূর্ণ সাধই পূরণ হয়ে যেত । ঘুমের রাজ্যে আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না ।আমার অবচেতন মন স্বপ্নে আমাকে যা দেখাত , বাস্তবেও তাই হতও ।
২ বছর পর শাহেদের মৃত্যুটাও একইভাবে টের পেয়েছিলাম । ওকে সাবধানও করেছিলাম । কিন্তু দুর্ঘটনাটা ঘটলোই । খুব খারাপ লাগতো তখন । মনে হতো, আমি স্বপ্নে দেখেছি বলেই ওর মৃত্যু হয়েছে । ভাবতাম, ঘুমগুলো স্বপ্নহীন হলেই ভালো হতো ।
সুখস্বপ্ন যে ছিলো না, তা নয় । নিশিকে প্রথম যেদিন কলাভবনের সামনে দেখি, সেদিনই ওকে ভালো লেগে যায় । সেই রাতেই ওকে স্বপ্নে দেখি । বুঝতে পারি, আমার জীবনে কিছু সুন্দর মুহূর্ত আসছে । একটা সময় সে স্বপ্নগুলোও সত্য হয় । ৩ টি বছর কেটে যায় অধরা আনন্দে ।
সবচেয়ে ভয়ংকর স্বপ্নটা দেখেছি গতকাল রাতে । নিশির সাথে আমার বিয়ে হয়েছে । ও আমার হাত ধরে বসে আছে । ওর চোখ ভেজা । আমার দেহটা নিথর , নিস্তেজ । হাসপাতালের ক্যালেন্ডারে তারিখটা দেখতে পাই, আজ থেকে প্রায় ৬ মাস পরের তারিখ ।
স্বপ্ন ভাঙ্গার পর বুঝতে পারি, কিছুদিনের মাঝেই নিশির সাথে আমার বিয়ে হবে এবং এর ক’দিন পরেই আমি মারা যাবো । নিশির জীবনটা তখন পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে যাবে ।
কিন্তু এ স্বপ্ন আমি সত্য হতে দিবো না । তাই শেষ পর্যন্তও এ পথটিই বেছে নিতে হল । এছাড়া স্বপ্নকে মিথ্যে করার আর কোনও উপায় আমার জানা ছিল না ।
খুব ঘুম পাচ্ছে আমার…… খুব । তবে নিশিকে একটা কথা বলার ছিলো । আমি ওকে অনেক ভালো……
পরিশিষ্টঃ
লেখাটি শেষ করবার আগেই শুভ্র মাথা ঘুড়িয়ে টেবিলের উপর পরে গেলো । ওর মাথার পাশে পরে রইলো ঘুমের ওষুধের অনেকগুলো খালি পাতা ।
ভাইরে, প্রথম লিখা পড়ে যা বুঝেছিলাম, পরের লিখা পড়ে তার পুরোটাই পালটে গেলো……
ভালো লাগলো ভীষণ, কেমন লাগে এমন অদ্ভুত না চাওয়া ক্ষমতার অধিকারী হতে?
নিস্তব্ধ শৈশব ভাইয়া…… ঠিক বুঝতে পারলাম না…… প্রথম লেখা পরে কি বুঝছিলেন ???? …… আর এটা পড়ে চিন্তা পালটে গেলো কেন আপনার…… ?
আর এমন অদ্ভুত না চাওয়া ক্ষমতার অধিকারী হতে কেমন লাগে তা তো আমি জানি না রে ভাই…… শুভ্রকে জিজ্ঞেস করে দেখতে হবে ওর কেমন লাগে……
নাহ, আমি ভেবেছিলাম তোমার সব লিখাতেই হুমায়ূন আহমেদের ছাপ থাকবে, কিন্তু সেটাই ভুল ভেবেছিলাম! 😛
সব লেখাতে হয়তো হুমায়ূন স্যারের ছাপ থাকবে না…… কিন্তু উনি আমার সবচেয়ে বড় Inspiration…..
দারুণ তো গল্পটা! আমি শুরুর দিকে সত্যি ভাবা শুরু করেছিলাম। 😯
সত্য হলে ব্যাপারটা খুব একটা ভালো হত না ………
ধন্যবাদ সামিরা……
ভাল লাগলো গল্পটা …
মানুষ সবসময় ভবিষ্যতে কী হবে তা জানতে চায়, কিন্তু সবসময় সব না জানাই মনে হয় ভালো :thinking:
বেশি জানলে কষ্টটাও বোধহয় একটু বেশিই পেতে হয়……
ধুর ভাইয়া! কোথায় ভাবলাম সুন্দর একটা ভালবাসার গল্প শুরু হচ্ছে বোধহয়। কিন্তু এইখানে দেখি গল্প শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল! 🙁
ভালবাসার গল্পটা শুরু হলে নিশি নামের মেয়েটার যে আনেক কষ্ট পেতে হতো……
কী অদ্ভূত রকম একটা মনখারাপ সমগ্র চেতনাটাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে……… 🙁
আহারে…… :crying:
কি বল্বো! 😳
কিছু একটা তো অন্তত বলবেন……
কামডা কি করলি !!!! হায় হায় !!!! 🙁
লেখা ভালো লেগেছে প্রচন্ডো আনপ্রেডিক্ট্যাবল ছিও! একেবারে মারাত্মক একটা ধাক্কা খেতে বাধ্য হয়েছি ! সুন্দর 🙂
ধন্যবাদ ভাইয়া…… আপনার প্রশংসা পেয়ে চিক্কুর মারতে ইচ্ছা করতেছে……
এতটুকুন গল্পের কী শক্তিশালী এক ক্ষমতা! লেখার হাত চমৎকার। শেষে এসে এরকম একটা ধাক্কা খাব একেবারেই ভাবী নি!
“লেখাটি শেষ করবার আগেই শুভ্র মাথা ঘুড়িয়ে টেবিলের উপর পরে গেলো”>> এই বাক্যে ‘ঘুরিয়ে’ আর ‘পড়ে’ এইভাবে বানান দুটি বসবে। বাক্যের দুটো বানানই ভুল ছিল।
ধন্যবাদ ভাইয়া…… লেখাটা পড়ে অনেকেই বলছে যে , লেখাটা খুব ছোট হয়ে গেছে । কিন্তু , আমি লেখাটাকে আর বড় করবার কোনও প্রয়োজন মনে করি নাই বলে অল্পতেই শেষ করে দেয়া…… আর শেষের ধাক্কাটাই গল্পের প্রাণ…… :happy: :love: :happy: :love: