হে ডোরেমন দ্য স্পেস ক্যাট, তুমি বাংলার বিড়াল হও

১. ভাইয়া, আমি দোরেমন দেখবো!
এবার  কোরবানীর ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম মহা আগ্রহ নিয়ে। অনেক দিন পর, পরিচিত আপন মানুষদের সান্নিধ্য ভাল লাগছিলো। বিশেষ করে আমার তিন মামাতো ভাই বোন। ছয়-চার-তিন বছর বয়সী এই মহা দুষ্ট পিচ্চিগুলাকে নিয়ে ভালই মজা করছিলাম। আমাদের বাসার পুরাতন কম্পিউটারে  ইন্টারনেট কানেক্শন লাগিয়েছে। পিচ্চিগুলাকে সাথে নিয়ে ভালই ফেসবুক ঝালাইয়ে ব্যস্ত ছিলাম।
ঘোর কাটল যখন আমার ছয় বছরের কাজিনটা বলে উঠল,” ভাইয়া কী করতেসেন? আমি দোরেমন দেখবো। আপনার কম্পিউটারে দোরেমন  আছে?”
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “আপ্পুস? দোরেমন কি?”
আমার উত্তর শুনে এক প্রকার অবাক হলো ও। “ আপনি দোরেমন চিনেন না! ও একটা কার্টুন।”দাঁতে জিভ কাটলাম তাকে দেখিয়ে।
এই বয়সে কত পাগল ছিলাম কার্টুন নিয়ে!  বিটিভির বিকাল ৩.১৫ থেকে ৪.০০ পর্যন্ত সময়টা ছিল আ্মার জন্য বরাদ্দ। নিনজা টরটয়েস, ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট, শিইরা  এসব সুপারহিরো খারাপ লোকদের কাছ থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য কী না করতো!

ফিরে আসি ডোরেমনে। সেদিন আমার পিচ্চি কাজিনের কাছে ‘দোরেমন’কে না চিনার জন্য লজ্জিত হয়েছি। কিন্তু, আমি ধারনাও করিনি, আরও কত বড় লজ্জা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি হিন্দী বুঝি না, এটা বলায় ও অবাক হয়ে গেল।
“আপনি এত্ত পড়াশুনা করেছেন, আপনি হিন্দী বুঝেন না?” , লজ্জায় আমার মুখ লাল হয়ে গেল। পিচ্চি তার নিষ্পাপ হাসি দিয়ে আমাকে দিল ক্ষমা করে।


২. ডোরেমন আর সিসিমপুর
কার্টুন নিয়ে প্রথম আলোতে একটা লেখা (( প্রথম আলো : সমস্যার নাম ডোরেমন। )) দেখেই মূলত আমার এ লেখা। উইকি (( ডোরেমন এর ইংরেজি উইকিপিডিয়া পেইজ)) ঘেঁটে কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করলাম। ডোরেমন এনিমেশনটা মূলত একটা জাপানী সিরিয়াল।
এ সিরিয়ালে ডোরেমন হলো একজন এলিয়েন বিড়াল, যে নাবিতা নামক এক পিচ্চির বাসায় পোষ্য হিসাবে থাকে। নাবিতার স্কুল জীবনের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে তার “সৌভাগ্যের ডাইমেনশন”-পকেট থেকে বিভিন্ন জিনিস বের করে দিয়ে, নাবিতাকে তার সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।
জাপানি মাংগা(কার্টুন) সিরিজটি এতটাই জনপ্রিয় যে, এটি বিশ্বের ১১টি ভাষায় অনুদিত হয়ে প্রচারিত হয়। শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় এর কোন ডাবিং করা হয়নি। মোটামুটি জাপানি ঐতিহ্যকে লালন করা কিছুটা সায়েন্স ফিকশন ধাচের এই সিরিজটি, তেমন জটিল কাহিনী না থাকায় , একেবারে ছোট এলিমেন্টারী স্কুলের শিশুদের জন্য  অনেক মজার।
বাংলাদেশের শিশুতোষ  বিনোদনে বিপ্লব সৃষ্টি করা এক পাপেট সো এর নাম সিসিমপুর। (( সিসিমপুর: বাংলা উইকিপিডিয়া। ))। বিদেশী একটা শো ‘সিসামীস্ট্রিট’ কে অনুসরণ করে দেশীয় চরিত্র দিয়ে বানানো এ অনুষ্ঠান খুবই সরল আনন্দ দেয় শিশুদের। বিভিন্ন শিক্ষামূলক ছোট ছোট ঘটনা দিয়ে সাজানো একেবারে এলিমেন্টারী স্কুলের শিশুদের জন্য তৈরী এ সিসিমপুর বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
৩.. ডোরেমন তুমি কেমন আছো?
প্রিয় ডোরেমন,
তুমি কেমন আছো? নিশ্চয় নাবিতাকে নিয়ে  অনেক ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছ। জানো ডোরেমন, তুমি জাপানের হলে কি হবে! আমাদের বাংলাদেশের শিশুরা কিন্তু তোমাকে অনেক পছন্দ করে। যেমন আমার ক্লাস ওয়ানের মামাতো বোনটা। সে তো তোমার নাম নিতেই পাগল।

তবে, দুঃখের কথা কি জানো? কিছু বড় বড় ভাইয়া আপু, যাদের কিনা কার্টুন দেখার বয়স নেই, তারা তোমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা ছড়াচ্ছে। তারা বলছে, তুমি নাকি বাংলাদেশের শিশুদের সাথেও হিন্দী ভাষায় কথা বলছো। এজন্য তারা নাকি হিন্দী শিখে একেকজন সালমান-কারিনা হয়ে যাচ্ছে। তুমি বলো, তোমার মত কিউট বিড়াল কি এত খারাপ হতে পারে?

ডোরেমন, আসলে কার্টুনকে কেউ বুঝে না। তাই দোষ দেয়। এই যেমন, বাংলা শিখার কথা ধরো। আমাদের বাচ্চারা কি আদতেই বাংলা শিখছে ছোটবেলা থেকে?

জন্ম নেয়ার পর থেকে তো  বাংলাদেশে, শিশুকে  প্রথম ভাষা হিসাবে ইংরেজী শিখানোরই চেষ্টা করা হয়। চোখ-নাক-হাত-পা এসব বাংলা সরল শব্দ না শিখে বাচ্চারা শিখে  আই, নোস, হ্যান্ড, লেগ। কুকুর, বেড়াল আর বাবুরা এখন হয়ে যায় ক্যাট, ডগ, বেবী। বাচ্চারা তাদের মমের কাছে  খেতে চায় ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার, সুইটস , মিল্ক ইত্যাদি।  বাচ্চাও ঠিক বুঝে নেয়, বাংলা হলো আনস্মার্ট ক্ষ্যাতদের ভাষা। এটা শেখা চলবে না।  আর তুমি হিন্দী বলো তাতেই তোমার এত দোষ?

আর হিন্দীও তুমি শেখাচ্ছ নাকি? শিশুর বাবা মা কেই তো দেখি, সারাদিনের কাজের ফাঁকে হিন্দী সিরিয়াল আর হিন্দী ফিল্মজগতের খবরাখবর নিতে নিতে বাংলা চ্যানেল দেখার ফুসরত মিলে না! এই করে করে, বিনোদনের মধ্য দিয়ে সাহিত্যিক বাংলা শেখার জন্য শিশুর যে পরিবেশটা দরকার ছিল, তা আর বাকি থাকে না। শিশুর কাছে তখন, কৃষকের ভাষা বন্দি হয়ে পড়ে অপছন্দনীয় কিছু টেক্সটবুকে। টেক্সটবুক পড়তে কি তোমাকে দেখার মত মজা লাগে? তুমিই বলো।

আবার তারা বলে, তুমি নাকি বাবুদেরকে মিথ্যা বলা শিখাচ্ছ। আরে, আমি তো জানি, নাবিতা যখন মিথ্যা কথা বলে বিপদে পড়ে, তখন তুমি তাকে অনেক তিরস্কার করো। আর তাকে সাহায্য করো তার বিপদ থেকে রক্ষা পেতে। তখন নাবিতা তোমার কাছে প্রমিজ করে যে আর কখনো মিথ্যা বলবে না। এখানে তোমার কি দোষ বলো? তুমি তো ভাল জিনিসই শিখিয়েছো।

তারা আবার বলে, তোমাকে দেখে দেখে নাকি অনেক সময় নষ্ট করছে শিশুরা। আমাদের সময়ে আমরা তো অনেক খেলা খেলতাম। এখন যদি শিশুরা ওই খেলাধুলার সুযোগ না পায় তারা তোমার কাছে না গিয়ে আর কী করতে পারে?

তবে ডোরেমন, মজা কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
আবার আরও কিছু ভাইয়া আপু আছে, যারা বলে বেড়াচ্ছে হিন্দী শিখা তো ভালই। হি হি। আমিও তো বলি, হিন্দী শিখলে তো ভালই। হি হি হি।

কিন্তু তারা কি ভেবে দেখেনা? বিদেশী ভাষা শিখতে হবে, নিজ ভাষা শিখার পরে — আগে নয়। অনেকে যুক্তি দেয়, অন্য ভাষা বাচ্চা কাল থেকে না শিখলে বড় হয়ে শিখতে পারবে না। তাদের যুক্তি যে সম্পূর্ণ ভুল তার প্রমাণ আমি। কই, আমি তো বাচ্চা কালে বিড়ালকে বিড়াল আর মুরগীকে মুরগী বলাই শিখেছি। আমার তো ইংরেজী শিখতে কোন প্রব্লেম হয় নি। কিংবা হিন্দী না বোঝায় কোন বিপদেও পড়ি নি। (ওই কাজিন পিচ্চিটার সামনে বাদে)

এই ফাঁকে তোমাকে একটা তথ্য দেই,  আমাদের বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় মানুষটি হলেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভাষা শিক্ষার ব্যপারে তিনি কি বলেছেন জানো? তিনি তার ছেলেবেলা নিয়ে বলেছেন-
“ তখনও ইংরেজি শব্দের বানান আর মানে-মুখস্থর বুক-ধড়াস সন্ধেবেলার ঘাড়ে চেপে বসে নি । সেজদাদা বলতেন আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি , তার পরে ইংরেজি শেখার পত্তন । তাই যখন আমাদের বয়সী ইস্কুলের সব পোড়োরা গড়গড় করে আউড়ে চলেছে I am up আমি হই উপরে ,He is down তিনি হন নীচে , তখনও বি-এ-ডি ব্যাড এম-এ-ডি ম্যাড পর্যন্ত আমার বিদ্যে পৌঁছয় নি ।” ((  ছেলেবেলা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।সৌজন্য: রবীন্দ্র রচনাবলী।))

শৈশবে ইংরেজি না শেখার কারণেই বোধয় আ্মরা তাকে বাংলা সাহিত্যের রবি হিসাবে পেয়েছি। এখন আমরা যদি আমাদের শিশুদেরকে ইংরেজী আর হিন্দী শিখাতে এভাবে উঠে পড়ে লাগি, তাহলে কবিগুরু রবি কিংবা জাতীয় কবি নজরুল তো পাবই না, বরং মধুসূদন পাওয়ার আশাও ছেড়ে দিতে হবে।

একি! আমার কথায় তুমি রাগ করো না। আমি বাংলাদেশ থেকে তোমাকে তাড়িয়ে দেব? কে বলেছে?

আমরা কাউকে তাড়িয়ে দেই না। সবাইকে আমরা সাদরে গ্রহণ করি। কিন্তু, আমাদের ভাষার ব্যপারেও আমাদের আছে অগাধ শ্রদ্ধা আর অহংকার।

তুমি বিশ্বাস করবে না ডোরেমন, আমাদের বাংলা ভাষার ইতিহাস কত সমৃদ্ধ।
বিশ্বের একমাত্র ভাষা আমাদেরই, যার জন্য আমরা ১৯৫২ সালে জীবন দিয়েছি। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আমাদের ভাই রফিক-সালাম-বরকতেরা বাঁচিয়েছে আমাদের ভাষাকে। যে মহান আত্মত্যাগ দিয়ে এ ভাষা ঠোঁটে ধরে আছি, সে ভাষাকে এভাবে ছোট হতে দেখতে কত কষ্ট লাগে বোঝাতে পারবো না।

তারপরও কি আমরা পিছিয়ে আছি? দেখ আমাদের দেশেই তৈরী কী সুন্দর পাপেট সিরিয়াল। এই ছোট্ট দেশে এত ভাল জিনিস কঠিন দেশপ্রেম না থাকলে কেউ বানাতে পারে?

হ্যাঁ! এগুলাকেই আমাদের ফোকাস করতে হবে। বাচ্চাদেরকে দেখাতে হবে। আর আমাদের অভিভাবকরা যদি, হিন্দী সিরিয়াল আর চ্যানেলগুলো দেখা কমিয়ে বাংলা চ্যানেলে একটু সময় দেয়, বাচ্চারাও কি শিখবে না? অবশ্যই শিখবে। বাংলা দেখতে শিখবে, বলতে শিখবে।

ও কি? তুমি অমন রাগ করছ কেন? তোমাকে তখন আর বাবুরা দেখবে না এজন্য? আরে বোকা ডোরেমন, কে বলেছে তোমাকে দেখবে না? স্যাটেলাইটে কত কিছু বাংলা  ডাবিং করে প্রচারিত হচ্ছে? বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু অনেক দেশপ্রেমিক। আর অনেক পরিশ্রমী। তুমি বাংলায় কথা বলতে পার না, এটা যদি তারা বুঝতে পারে, তোমাকে তারা ঠিকই বাংলা শিখিয়ে দিবে। তুমি শিখবে না, ডোরেমন?
বলো, তুমি আমাদের বাংলার বিড়াল হবে না?

ইতি।
-তোমার একজন বয়সে বড় ভক্ত।

জ্ঞানচোর সম্পর্কে

সেই কবে জেগেছিলাম, বিলিয়ন বর্ষী নক্ষত্রের আলোয়, ডিরাকের সমুদ্রের পাড়ে। অবাক কৌতুহল নিয়ে গেলাম বহুদুর। তারপরও সহসা বুঝি, নিজে আমি,নিছক পড়ে থাকা ঝিনুকের খোলসে সোনালী অনুপাত খুঁজে বেড়াই। পড়ে থাকো তুমি, মহা সমুদ্র।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

22 Responses to হে ডোরেমন দ্য স্পেস ক্যাট, তুমি বাংলার বিড়াল হও

  1. নূরবাহার ঈয়াশা বলেছেনঃ

    আমার পিচ্চিটা রাতে ডোরেমন নিয়ে মশারির ভেতরে ঢুকে!!! 😀

  2. আলী আরাফাত শান্ত বলেছেনঃ

    তা আর হবে না মনে হয়!

  3. নিশম বলেছেনঃ

    এরকম পজিটিভ একটা লেখার খুব দরকার ছিলো 🙂 সমাধানগুলো তো আসলেই অনেক সোজা, আমরা এতো পেচাচ্ছি কেনো ????

    উত্তম পিলাচ 😀

  4. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    আমার ছোট ভাইয়ের সাথে আমার মনোমালিন্য ইদানিং ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই ডোরেমন নিয়ে 🙁

    কেউ নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবে একে বাংলায় অনুবাদ করতে। 🙂

    কিন্তু, সমস্যা হলো, এ কার্টুনে এমন কিছু জিনিস দেখানো হয় যা বাচ্চাদের উপযোগী না। সেজন্য আমি চাই, ভাল কার্টুন ডাবিং করা হোক বাংলায় আর ছরিয়ে দেয়া হোক শিশুদের বিনোদনে।

  5. নিলয় বলেছেনঃ

    আমি বেশ কিছুদিন আগে আনিসুল হক স্যারের একটা লেখা পড়েছিলাম এই বিষয়ে… ‘ডরেমন’ নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই, 3D Animated movies এর ভীড়ে মাঝেমাঝে শিশুসুলভ 2D Manga দেখতে ভালোই লাগে… কিন্তু এই কথাটাও অনস্বীকার্য যে, হিন্দী সংস্কৃতির একটা গভীর প্রভাব ছেলেবেলাতেই পড়ে যাচ্ছে একালের ছেলেমেয়েদের মনে- যেইটা কোনভাবেই কাম্য নয় 😳 এখনকার ছেলেমেয়েরা কথা বলার আগে ‘chammakchallo’ শেখে, হাঁটতে শেখার আগে ‘sheila ki jawani’ নাচতে শেখে!! :wallbash:

    মাঝে মাঝে আমার প্রিয় ভাষাটাকে নিয়ে ভয়ই হয়- কখনো না বিদেশী আগ্রাসনে হারিয়ে পড়ে! 😳

    সচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়াসের জন্য ধন্যবাদ 🙂

  6. প্রজ্ঞা বলেছেনঃ

    আমাদের বাসাতেও এক সাড়ে তিন বছরের ”দোরেমন ভক্ত” পিচ্চি এসেছে। আমি অবশ্য কখনও দেখিনি কার্টুনটা। এখন ভাবছি দেখা উচিত।
    তবে যেটা দেখিনি সেটা নিয়ে মন্তব্য করবো না।
    শুধু বলবো, লেখাটা পড়ে ভাল লাগল অনেক! 😀

  7. ইঁদুর বলেছেনঃ

    anime মাঝে সাঝে দেখা পড়ে-দেখার সময় বুঝি আমার মত বুড়োই যেখানে এর নেশা ছেড়ে উঠতে পারেনা সেখানে বাচ্চারা পারবে কিভাবে?বাচ্চার ডোরেমন দেখবেই-জাপানি এনিমে কার্টুন গুলার মেকিং এবং স্টোরি সেটিং খুবই ভালো হয়-ফলে এটাতে এডিক্টেড না হয়ে উপায় নেই।বাচ্চারা মিথ্যা বলা শিখছে কি না শিখছে তা হয়ত মনোবিজ্ঞানীরা বুঝবেন ভালো তবে এই হিন্দী ডাব দেখে যে হিন্দী শিখছে সেটা নিঃসন্দেহে খারাপ।আমাদের দেশী চ্যানেল গুলাতে বাচ্চাদের কার্টুন দেখালে এবং সেটা যদি সময় মত আর বিজ্ঞাপনের জ্বালাতন ছাড়া দেখায় তবুও বাচ্চারা দেখবে নাকি সন্দেহ-কারন সেখানে কার্টুন নেটওয়ার্ক বা ডিজনী চ্যানেলের মত পরিবেশ কিন্তু নেই-ডিজনী বা সি এন খুললেই মনে হয় একটা কার্টুনের জগতে আছি-বিজ্ঞাপনে চকলেট ড্রিংক, ক্যান্ডি-অনুষ্ঠান ও সব কার্টুন-এই পর্যায়ের চ্যানেলের সাথে আমাদের দেশী চ্যানেলের একটা কিডস আওয়ার কি পাল্লা দিতে পারবে?বাচ্চাদের আলাদা চ্যানেলের প্রয়োজন-কিংবা বাংলাদেশে কার্টুন নেটওয়ার্ক আর ডিজনীর ভারতীয় ভার্সন বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক ভার্সন চালু করা-এর জন্য বিশাল উদ্যোগ প্রয়োজন।যারা এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তাদের বরাবর কিছু জানাবার উপায় কি?

  8. আমার কাছে একটা জিনিস অবাক লাগে, এমন ভাবনা এখনো কেউ ভাবেনি কেনো জানিনা, কিন্তু সবদেশে ওদের নিজস্ব একটা কার্টুন চ্যানেল থাকে, আমাদের নেই কেন? যেখানে এ থেকে জেড পর্যন্ত সব চ্যানেলে আমরা দিনরাত নাটক আর টক শো দেখায়ে দেশ উদ্ধার করে ফেলছি, সেখানে আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে ভাবার কেউ নেই, তার সবেচেয়ে বড়ো প্রমাণ এটাই……লজ্জ লাগলো বলতে, কারণ আমি নিজেও ভাবি নাই, আমাদের বিটিভি দেখার অধিকার ছিলো, এখন চ্যানেলের ভিড়ে তাও হারিয়ে গেছে! :S

  9. নীল রঙ পরী বলেছেনঃ

    আমিও সেদিন “ক্ষ্যাত” প্রমাণিত হয়েছি আমার ছোট কাজিন ভাইয়ের কাছে।
    খালি নাদান পোলাপান না, ডোরেমন মোটামোটি “বড়” পোলাপানদের মাথাও খেল।
    আর বাকিদের কথা তো নাই বললাম। বাসায় “হিন্দি চ্যানেল” না থাকলে একেকজনের মাথা খারাপ হয়ে যায়।

    বাসায় যে দুটো মেয়ে থাকে, তাদের একদিন হিন্দি চ্যানেলের “সাথিয়া” না দেখলে ভাতই হজম হয় না।

    হায়রে বাঙালী!!

  10. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    চারিদিকে ডোরেমন রব শুনিয়া আজ লাইফের ফার্স্ট ডোরেমন দেখিতে বসিলাম। ক্যামুন য্যানো :babymonkey:

  11. সাদামাটা বলেছেনঃ

    খুবই ভালা বুদ্ধি, ডোরেমনের ভাষা না শিখে ডোরেমনকে আমাদের ভাষা শিখিয়ে দেওয়া :penguindance:

    সিসিমপুর দেখি, ইকড়িমিকড়িকে অনেক পছন্দ আমার 🙂

  12. সামিরা বলেছেনঃ

    আজকেই এটা নিয়ে কথা হলো ফ্রেন্ডদের সাথে, ‘প্রথম আলো’র লেখাটা পড়ার পর।
    আমি নিজে দেখি নাই কার্টুনটা, কিন্তু পিচ্চি কাজিনদের মুখে শুনি।
    আসলেই প্রায় সব বাচ্চারাই দেখে এখন এই কার্টুনটা।

    লেখার পয়েন্টগুলি খুব খুব ভাল লাগছে। আর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার যেটা, বাচ্চারা কী দেখে কী শেখে এই দিকগুলি বাবা-মার আরো বেশি খেয়াল করা দরকার। শৈশব ভাইয়ার আইডিয়াটাও ভাল লাগলো, আমাদের একটা আলাদা কার্টুন চ্যানেল থাকতো। সাথে কার্টুন বাংলা করলেও কত ভালো হত!

    চমৎকার একটা লেখা। :huzur:

  13. ইয়াদ বলেছেনঃ

    প্রায় ছয়মাস পর কমেন্ট দিলাম।
    অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
    বই মেলায় এটা নিয়ে কত তুলকালাম কাণ্ড হল!

    • জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

      সে তো হয়েছেই। তবে শুনেছি কিছু জিনিস নাকি বাংলায় আসতে যাচ্ছে। হয়তো উড়ো খবর। আসলে, মাঠে কাজ করার মানুষের বড় অভাব। 🙁

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।