শিক্ষাঙ্গনে সার্বজনীন প্রবেশগম্যতার আদায়ে গণস্বাক্ষর অভিযান

আগামী ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসকে সামনে রেখে দেশ ব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে সচেতনতা ও “সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা” (Universal Accessibility) নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টমহলকে উদ্যোগ নিতে সপ্তাহব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহের আয়োজন করছে বি-স্ক্যান (পরিবর্তনের চেতনায় নিবেদিত প্রাণ-একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন)

জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশ এই সনদ অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকারকে সুদৃঢ় করতে নতুন আইন তৈরী করছে। বাংলাদেশেও এই কাজ চলছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ এ সার্বজনীন প্রবেশগম্যতার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা বা universal accessibility সম্পর্কে মানুষের ধারণা এখনো স্পষ্ট নয়। যে কারণে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখিন হচ্ছেন এবং চারদেয়ালের ভিতর নিজেকে আবদ্ধ রাখছেন। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার, বিশেষ করে শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশগম্যতা না থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক। আর তাই সংশ্লিষ্টমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং ছাত্র সমাজকে সচেতন করার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসকে সামনে রেখে দেশ ব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ হাতে নিয়েছি।

২৭ নভেম্বর শুরু হয়ে ২ ডিসেম্বর, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একি সাথে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই স্বাক্ষর অভিযান চলবে। সংগৃহীত স্বাক্ষরগুলো শেষ দিনে অর্থাৎ ৩ ডিসেম্বর উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্যউন্নয়ন কার্যক্রমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করে সকলের জন্য সুন্দর পৃথিবী গড়তে একত্র হই।

আপনাদের সকলের অংশগ্রহণ আমাদের প্রচেষ্টাকে সফল করে তুলবে। আপনার শহরে/আপনার ক্যাম্পাসে অংশ নিন। ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হোন।

বিশ্ববিদ্যালয় তালিকা, স্থান ও সময়ঃ

# ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- টি এস সি চত্বরে স্বাক্ষর সংগ্রহ চলবে ২৭ নভেম্বর রোববার থেকে ২ ডিসেম্বর শুক্রবার, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা। শেষ দিন ৩ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় অপরাজেয় বাংলার সামনে আয়োজিত সমাবেশে মাননীয় উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সে সময় উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির শিক্ষকবৃন্দগণ। এর পরে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে রাজু ভাস্কর্জের সামনে অবস্থান কর্মসূচী নেওয়া হবে।
আয়োজনে বি-স্ক্যান স্বেচ্ছাসেবীবৃন্দ।

# চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- স্বাক্ষর সংগ্রহ চলবে ২৭ নভেম্বর বৃহষ্পতিবার থেকে ৩০ নভেম্বর, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা।
শেষ দিন ১ ডিসেম্বর চুয়েট গোল চত্বরে সকাল ১০:৩০ মিনিটে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে অবস্থান কর্মসূচী নেওয়া হবে। এর পরে আয়োজিত আলোচনা সভায় সংগৃহিত স্বাক্ষরগুলো মাননীয় উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বি-স্ক্যানের সহযোগীতায় আয়োজনেঃ চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

#পুর্বাশার আলো (আদর্শ শিশু কিশোর সংগঠন), চট্টগ্রাম- বি-স্ক্যানের সহযোগীতায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষদের অধিকার নিশ্চিত করতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে মানব বন্ধন এর আয়োজন করেছে ২ ডিসেম্বর, শুক্রবার, বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বর সম্মুখে।
বি-স্ক্যানের সহযোগীতায় আয়োজনেঃ পুর্বাশার আলো ও নার্চার সেন্টার ফর দ্যা ডিজেবলড এন্ড প্যারালাইজড।

# খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- স্বাক্ষর সংগ্রহ চলবে ২৭ নভেম্বর বৃহষ্পতিবার থেকে ১ ডিসেম্বর, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা। (১ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত)
১ ডিসেম্বর দুপুরে কুয়েট অডিটোরিয়ামে ছাত্র-শিক্ষক একত্রিত হয়ে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে র্যাদলী করে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে সংগৃহিত স্বাক্ষরগুলো মাননীয় উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
শেষ দিন ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কুয়েট ফিল্ম সোসাইটির ব্যানারে একটা মুভি কুয়েট অডিটরিয়ামে দেখানো হবে।
বি-স্ক্যানের সহযোগীতায় আয়োজনেঃ DREAM, A Voluntary Blood Donation Society of KUET, কুয়েট প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

# শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- স্বাক্ষর সংগ্রহ চলবে ২৭ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
শেষ দিন ৪ ডিসেম্বর বেলা বারোটার সময় লাইব্রেরী ব্লিংডিং এর সামনে ছাত্র-শিক্ষক একত্র হয়ে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে র‍্যালী করে ভিসি ভবনে গিয়ে সংগৃহিত স্বাক্ষরগুলো মাননীয় উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বি-স্ক্যানের সহযোগীতায় আয়োজনেঃ কিন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

# রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- ৩০ নভেম্বর থেকে ২ডিসেম্বর দিন ব্যাপী স্বাক্ষর গ্রহণ চলবে। ৩ ডিসেম্বর ছাত্র-শিক্ষক একত্র হয়ে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার হাতে মানববন্ধন এবং র‌্যালী করা হবে। ৪ ডিসেম্বর প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে মাননীয় উপাচার্যের হাতে সংগৃহিত স্বাক্ষরগুলো তুলে দেওয়া হবে।
বি-স্ক্যানের সহযোগীতায় আয়োজনেঃ বি-স্ক্যান স্বেচ্ছাসেবীবৃন্দ, প্রথম আলো বন্ধু সভা (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রোটারেক্ট ক্লাব।


সাবরিনা সুলতানা সম্পর্কে

“আমার কতো দাবি! কতো চাহিদা! কিছুই পাইনা। যেদিকে হাত বাড়াই সেদিকে অন্ধকার। সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ। সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ। প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ। সব নিয়ন্ত্রণে আমি বাঁধা আর গুমরে গুমরে কাঁদে আমার আশা আকাঙ্ক্ষা। ভালোবাসা!”
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে উদ্যোগ, সচেতনতা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

11 Responses to শিক্ষাঙ্গনে সার্বজনীন প্রবেশগম্যতার আদায়ে গণস্বাক্ষর অভিযান

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    দারুণ উদ্যোগ!

    সাথে আছি আপু।
    কাল যাবও! ঃদ

  2. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    সাথে আছি ইনশাআল্লাহ।
    আগামীকাল আমিও যাচ্ছি। 🙂

  3. নূরবাহার ঈয়াশা বলেছেনঃ

    আমিও থাকবো ইনশাআল্লাহ!

  4. সামিরা বলেছেনঃ

    এই অভিযান যে লক্ষ্যে হচ্ছে তা সফল হোক, এটা মনেপ্রাণে চাইছি।
    কাল আসছি আশা করা যায়। 🙂

  5. এসেছিলাম আপু, স্বাক্ষরও দিয়ে গেছি আপু, সাথে আছি, সবসময়, ছায়ার মতোই, ইনশাল্লাহ…

  6. প্রথম-নাম বলেছেনঃ

    আপনাদের উদ্যোগ সফল হোক!

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।