-হ্যালো আহমেদ, আর ইউ ফ্রি? ক্যান ইউ প্লিস গো উইথ মি?
-হ্যা লো ও ও…
-হ্যালো আহমেদ, ডু ইউ হিয়ার মি?
অনেক কষ্টে চোখ মেলে মোবাইলের দিকে তাকালাম…কলারের নাম দেখে একটু চমকে গেলাম, চোখ কচলে ভালো করে আবার দেখলাম…
-সিউর ম্যাম! আই এম কামিং…
আমার কথা শেষ না হতেই ওপার থেকে আবার শুনতে পেলাম, আই এম ওয়েটিং ইন ফ্রন্ট অফ ইউর বিল্ডিং…
সকাল নয়টা বাজে, টানা পাঁচ দিন প্রজেক্টের কাজ করে সেদিন বেঘোর ঘুমাচ্ছিলাম। কোনরকম প্যান্ট আর টিশার্ট পরে নিচে নেমে ম্যডামের বিশাল কালো গাড়িটি দেখতে পেলাম। ড্রাইভিং সিটে উনি বসে আছেন, ইঙ্গিত করলেন সামনের সিটে উঠে বসার জন্য…আমাকে হাসি মুখে গুড মরনিং বলে ড্রাইভ শুরু করলেন।
ওনার মুড খুব ভালো মনে হলো। আমি একটু আড়ষ্ট হয়ে বসে আছি আর চিন্তা করতেছি কাহিনী কি… ম্যাডাম একটি খাবারের দোকানের সামনে গাড়ি থামালেন।
মাই মেরিজ ডে ইজ এপ্রচিং …খেতে খেতে আমার দিকে তাকিয়ে একগাল হেসে উনি বলতে শুরু করলেন। এরপর উনি যা যা বললেন তার সারমর্ম হলো উনার হাজবেন্ডের জন্য আজ গিফট কিনে ডিএইচএল-এ তা নিউইয়র্ক পাঠাবেন। আর আমার কর্ম হলো গিফট কেনায় সাহায্য করা।
ভদ্রমহিলার বয়স ৫০/৫২ হবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে ইকনোমিষ্ট হিসেবে কাজ করেন। ওনার সাথে আমি চার মাস কাজ করি। হাজবেন্ডের পছন্দের টুকটাক অনেক জিনিস কয়েকটা মার্কেট ঘুরে কিনলেন এবং অবশেষে ডিএইচএল এর একটি আউটলেটে গিয়ে তা কুরিয়ার করে দিলাম।
আজ ওনাদের ম্যারিজ ডে। অফিসে গিয়ে শুনলাম উনি এখনো আসেন নাই, উইশ করবো তাই খুজতেছিলাম। অপেক্ষা করতে করতে লাঞ্চের টাইমে ওনাকে ফোন দিলাম…নো আনসার।
টানা দুই দিন উনি অফিসে আসেননি। এদিকে প্রজেক্টে আজই আমার শেষ দিন, বিকেলে অফিস থেকে বের হবার সময় ওনার টেক্সট ম্যাসেজ পেলাম, সেইদিন কল রিসিভ না করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আমাকে দেখা করতে বললেন। সন্ধায় ওনার বাসায় গিয়ে হাজির হলাম।
ড্রয়িং রুমে বসে আছি, ওনাকে খুব বিধ্বস্ত মনে হল, খুব টেনে টেনে জিজ্ঞেস করছিলেন, কেমন আছি। হ্যাপি ম্যারিজ ডে বলতেই দেখলাম উনি অস্বাভাবিক রকম চুপ হয়ে গেলেন। আমার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারলেন না…ওনার চোখে পানি দেখতে পেলাম…
ফুটপাত ধরে হাটতেছি…এলোমেলো…খুব অস্থির লাগতেছে। ম্যামের ব্যাপারটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে…ওনার হাজবেন্ড ওনাকে ডিভোর্স দিয়েছেন। ওনার এক ছেলে, সে অনেক আগ থেকেই আলাদা থাকে, তেমন যোগাযোগ রাখে না।
ম্যাম আমার মায়ের বয়সি।
ওনার কান্নামিশ্রিত কথাগুলো গুলো কানে বাজতেছে…আই হ্যাভ নাউ নো ফ্যামিলি, নো হোম, নো এড্রেস…
🙁
🙁
🙁
….
কত কষ্ট, না?
🙁
হুম, শুধুই দীর্ঘশ্বাস… 🙁
🙁
same here… 🙁
ধাক্কাটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না একেবারেই……
অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম মাত্র … 🙁
🙁
মন খারাপ হয়ে গেলো।
শেষের কথাগুলো কতটা নির্মম!
একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না এমন সমাপ্তির জন্য। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। 🙁