ডায়েরী লেখা রিহানের অন্যতম শখগুলোর একটি, একদিনও ও লিখতে বসতে ভুল করে না, আজ ও রিহান ডায়েরী লিখতে বসেছে, তবে কোন এক কারণে ও খুব বিস্মিত!
২৯.০৯.২০০৯
“আজ অবাক করা এক ছেলের দেখা পেলাম,তার নাকি বন্ধুত্ব ভালো লাগে না!! পাগল নাকি ছেলেটা? নাকি আসলেই বন্ধুত্ব বলতে কিছু নেই? এই যে আমিও তো আজ প্রায় বন্ধুশুণ্য , এভাবেই মনে হয় মানুষ এক সময় খুব একা হয়ে যায়, তাই তো! আসলেই তো! নাহ ধুর কি ভাবছি! বন্ধু ছাড়া মানুষ হয় নাকি? ধুর অভ্র ছেলেটা মনে হয় আমার সাথে মজা করেছে, হুম তাই হবে! ধুর বাদ দেই! ভালো কথা আজ না কলেজে আমার প্রায় ২-৩ জন বন্ধু হয়ে গেছে, রানা, মাসুদ, আকাশ! তবে ক্লাসের মেয়েগুলোর সাথে কথা বলি নাই, এদের থেকে ১০ হাত দূরে থাকুন !
শেষ কথাটা লিখতে গিয়ে নিজে নিজেই হাসতে থাকে রিহান। তারপর আরও কিছুক্ষণ অতীতের দিন গুলোর কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে ও।
“এই রিহান! রিহান! উঠবি?, নাকি দিব পানি ঢেলে?” মায়ের মুখে পানি ঢালার কথা শুনে লাফ দিয়ে উঠে বসে রিহান। সে ভাল করেই জানে যে আর এক মুহূর্ত দেরি করলে সকালের গোসলটা তাকে বিছানাতে সারতে হবে। ” আম্মু, আর একটু ঘুমাই না?” রিহানের গলায় আহ্লাদি সুর। ” হুম , অনেক ঘুমিয়েছ বাপধন এবার ওঠ, আর দেখ গিয়ে ড্রইংরুমে তোমার বান্ধবী এসে বসে আছে তোমার সাথে কলেজে যাবে বলে ” আম্মুর মুখে দুষ্টামির হাসি । “আমার বান্ধবী! মা, তুমি কি পাগল নাকি? ঘুমাতে দিবানা ভালো কথা তাই বলে অযথা আমার নামে মিথ্যা বলা ঠিক না” রিহান রাগ করে বাথরুমে চলে যায়। ফ্রেস হয়ে যেই না রিহান ড্রইং রুমে ঢুকেছে ওমনি যেন তার মাথায় ধপাস করে আকাশ ভেঙ্গে পড়ল!! ” আরে এ তো দেখি সত্যিই আমাদের কলেজের মেয়ে!! এখানে কি করে???” মনে মনে ভাবে রিহান, আর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেয়েটার দিকে!
“হুম, শুনছিস ও ফারিহা, আমদের পাশের বাসায়ই থাকে, তোর কলেজেই তো পড়ে! আজ সকালে ওর মা এসেছিল বলল, ওর বাবা মাকে হুট করে গ্রামের বাড়ি যেতে হবে, কিন্তু ফারিহার তো কলেজ আছে, কিভাবে কি করবে বুঝতে পারছিল না, এমন সময় ফারিহাই তোর কথা বলল তুই ও নাকি ওর সাথে এক কলেজে পড়িস! তাই ওর মা বলল আজ যেন তুই আর ও এক সাথে কলেজে যাস, আমি ভাবলাম ঠিক ই তো আছে তুই এখানে নতুন , একজন ক্লাসমেট ও পেয়ে গেলি, আর খুব বেশি খারাপ লাগলে ওর সাথে গল্প গুজব ও করতে পারলি।”
” হুম গল্প না ছাই! এমনিতেই নতুন আসছি তার উপর একটা মেয়ের সাথে একসাথে কলেজে গেলে মান সম্মান টা আর থাকবে না” বিড়বিড় করে রিহান। ” কিরে কিছু বললি?” “নাহ কই? ”
রিহান আর ফারিহা রিক্সায় বসে আছে, ১০ মিনিট হয়ে গেছে দুইজনই চুপ। শেষ পর্যন্ত ফারিহাই মুখ খুলল ” ওই মিয়া চুপ করে আছ কেন? আর তোমার নাম টা অদ্ভুত না? রিহান! এইটা কোন নাম হল? আমরা কালকে এই নাম নিয়ে যা হাসাহাসি করলাম,” বলতে বলতে হাসতে শুরু করে ফারিহা। ” মানে? অদ্ভুত মানে? অদ্ভুতের কি হল এখানে? আর হাসার ই বা কি দেখলা তোমরা, আর আমার নাম নিয়ে তোমরা হাসার কে? ” রাগ হয় রিহান। ” আজব তো হাসব না কি কাঁদব? আর আসলে আমাদের এক বান্ধবীর নাম রিহা, আমরা ডাকি ” হাড়ি” , কাল তোমার নাম শোনার পর ওকে সবাই বললাম এই দেখ তোর জামাই ” ন হাড়ি ” বলেই আবার হাসতে থাকে ও! ” ধ্যাত ” রিহান আরও রেগে যায়।
কলেজ গেট থেকে প্রায় অনেকটা সামনে রিক্সা থামায় রিহান, বন্ধুরা দেখে ফেললে, আর রক্ষা নাই, কলেজে টেকাই মুশকিল হয়ে যাবে!
ক্লাসে সুমন স্যার বাংলা ক্লাস নিচ্ছেন, তিনি “হৈমন্তী” পড়াচ্ছেন। স্যার যতবারি অপুর কথা বলেন, ফারিহা আড় চোখে ১ম বেঞ্চের কোনায় বসা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থাকে, তার মনে হয় এই তার ” অপু” , তার ” মুহিব”, ভাবতে ভাবতে কোথায় যেন হারিয়ে যায় সে। কিন্তু কোণায় বসে থাকা ছেলেটার এই দিকে কি কোন খেয়াল আছে? সে ক্লাসের সবচেয়ে বড় বিদ্বান, সব কয়টা ক্লাসেই সে হা করে স্যারদের কথা গিলে আর তা যদি হয় সুমন স্যারের বাংলা ক্লাস তাহলে তো আর কোন কথাই নে, মন্ত্রমুগ্ধের মত স্যারের কথা শুনতে থাকে সে। সে আর কেউ নয় আমাদের
” অভ্র “। ( চলবে )
১ম লেখাটি পাওয়া যাবে এখানে http://shorob.com/?p=2962
সিরিজ গল্পটা চলতে থাকুক……
এই পর্ব বেশি ভালো লাগল।
প্রথম পর্বের শর্ট লিঙ্ক দাও।
যেমন তোমার এই পর্বের লিঙ্ক হচ্ছে http://shorob.com/?p=2975
আগের পর্বের লিঙ্ক http://shorob.com/?p=2962
:penguindance: ধইন্যবাদ 🙂
শেষ লাইনটা পড়ে ভালোই আগ্রহ জাগছে…… :clappinghands:
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম
শুনে আমিও আগ্রহ পেলাম , 😀
জীবনকাহিনী নাকি হে পিচ্চি? :love:
জী না, ফারিহার কথা আমি কিভাবে জানবো 😛
আগেরটার চেয়ে এইটা ভালো লাগছে। :yahooo:
আগের পর্বে কাহিনী কি হবে না হবে- তেমন কিছুই বোঝা যায়নি। এই পর্বে মোটামুটি প্ল্যাটফর্ম দেখতে পাচ্ছি একটা 🙂 এই পর্ব ভালো লেগেছে বেশ :clappinghands:
পরের পর্ব পাবো কবে? আমার ওয়াল-এ শেয়ার করবা 🙂
btw, কাহিনী কি জীবন কাহিনী নাকি হে অক্ষর? :love:
:happy: :happy: