অনুবাদ: ভাঙা কলসি আর বুড়ো হবার গল্প

এক দেশে এক লোক ছিল। সে প্রতিদিন কাঁধে ঝোলানো একটা বাঁশের দু’মাথায় দুটো কলসিতে করে তার গ্রামে পানি নিয়ে আসতো।

কলসি দুটোর একটা ছিল খুব পুরনো, গায়ের কয়েক জায়গায় ফুটো। এই কলসির অর্ধেক পানিই বাড়ি আনতে আনতে রাস্তায় পড়ে যেত।

যে কলসিটা ভাল ছিল, সে নিজের কাজ ঠিকঠাক মত করতে পেরে তো দারুণ খুশি! কিন্তু অন্য কলসিটার সবসময় লজ্জায় মুখ ভার হয়ে থাকতো।

একদিন লোকটা যখন পানি আনতে যাবে, বুড়ো কলসি তখন লজ্জার মাথা খেয়ে বলে উঠলো, “আমাকে দিয়ে তো তোমার কোন কাজই হয় না। এত কষ্ট করে যে পানিটা নিয়ে আসো, তার অর্ধেকটাই তো পড়ে যেয়ে নষ্ট হয়। বাকিটা কাজে লাগে কেবল।”

লোকটা হেসে বললো, “আজ বাড়ি ফেরার পথে, রাস্তার দিকে একটু খেয়াল কোরো।”

আসার সময় পুরনো ভাঙা কলসিটা অনেক ফুল আর গাছপালা দেখতে পেলো পথে। লোকটা তাকে বললো, “দেখেছো তোমার দিকের রাস্তাটা কত সুন্দর? এমনটা কী করে হয়েছে জানো? বলছি শোনো।

তোমাদের নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তোমার অর্ধেকটা পানি পড়ে যাতে নষ্ট না হয়, এজন্য আমি পথের ধারে গাছের চারা লাগিয়েছি। তোমার হারানো পানিটা ওদের খুব কাজে লাগে, আর আমারো! আমি আমার বাচ্চাদের ভালো ভালো শাকসবজি খাওয়াতে পারি, গোলাপ দিয়ে ঘর সাজাতে পারি; তোমার কারণেই তো!

আমরা ভাবি বুড়ো হলে আমাদের কাজের ক্ষমতা কমে যায়, কিন্তু তা কেন হবে? আমরা আগের গুণগুলো হারিয়ে নতুন কিছু যোগ্যতা অর্জন করি কেবল। সেগুলো ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলেই বুড়িয়ে যাওয়াটা সার্থক।”

 

মূল গল্পের লিঙ্ক ((http://paulocoelhoblog.com/2009/12/12/the-cracked-jar-2/))

সামিরা সম্পর্কে

পীচ-গলা তরলে আটকে পা, দুঃস্বপ্ন অন্ধ দুই চোখে/ অসতর্ক হৃদয় পোষ মানে মিথ্যে বলার আফসোসে.../// প্রকাশিত লেখার কপিরাইট সংশ্লিষ্ট লেখক সংরক্ষণ করেন এবং লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখা আংশিক বা পূর্ণভাবে কোন মিডিয়ায় পুন:প্রকাশ করা যাবে না।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে অনুবাদ, গল্প, সাহিত্য-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

18 Responses to অনুবাদ: ভাঙা কলসি আর বুড়ো হবার গল্প

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    দারুণ শিক্ষামূলক।
    ভালো লাগে এই সব ইতিবাচক গল্প! 😀

  2. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    শেষের শিক্ষাটা দারুণ লাগলো। :clappinghands:

    যদিও গল্পটা আগে জানা ছিলো, কিন্তু, চমৎকার অনুবাদ এটাকে আরও অনেক সুন্দর করে তুলেছে। 😀

  3. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    :clappinghands:

  4. নিস্তব্ধ অমিত বলেছেনঃ

    সামিরা আপু …… আরেকটা অস্থির অনুবাদ দিলেন…… ভালো লাগলো পড়ে ……
    আপনি একটা কাজ করেন না…… হ্যারি পটার আর টোয়াইলাইট সিরিজ টা অনুবাদ করে ফেলেন …… আমি ইংরেজি পরতে পারি না…… ভালো অনুবাদ এর অভাবে এই দুইটা বই এখনও পড়ে মজা পাই নাই…… আপনি অনুবাদ করে দেন …… তারপর আমি পড়ে ফেলব ……

    • সামিরা বলেছেনঃ

      😀 ধন্যবাদ অমিত।
      খাইছে! 😛 টোয়াইলাইট আমি পড়িই নি এখনো…আর হ্যারি পটার অনুবাদ করা তো বিশাল দায়িত্বের কাজ।
      দেখি করতে পারি কিনা ভবিষ্যতে কখনো!

      • নিলয় বলেছেনঃ

        আপু- দারুণ লেগেছে! 🙂 সাবলীল অনুবাদ 🙂

        অফটপিক- ‘হ্যারি পটার’ আসলেই একালের তরুণদের কারো অনুবাদ করা উচিত… অনেকেই ইংরেজি লেখা পড়ে না, ভালো অনুবাদের অভাবে অনেক ক্লাসিক গল্পের সাথেই একালের শিশুদের পরিচয় হয়ে ওঠে না… 😳

        সেবা এককালে ভীষণ মানসম্পন্ন অনুবাদ করত- জানি না, এখনও সেটা অব্যাহত আছে কি না…

        btw, আমিও আপনার প্রোফাইল পিকচার দেখে প্রথমে ‘খালেদা জিয়া’ মনে করেছিলাম!! :yahooo: :penguindance:

  5. কিনাদি বলেছেনঃ

    পুরাই অস্থির!

  6. অচেনা রাজ্যের রাজা বলেছেনঃ

    শিক্ষণীয় অনুবাদ গল্পটা অনেক ভালো লাগলো।

    আপনার প্রফ পিকে থাকা পিচ্চিটার গালে কয়েকটা চিপা দিতে ইচ্ছে করে…. অনেক কিউট লাগে……. 😀

    • সামিরা বলেছেনঃ

      ধন্যবাদ!
      হুম আমারও, এই কারণেই তো দিছি ওর ছবি।
      কিন্তু সেইদিন আমার পিচ্চি কাজিন এই ছবির থাম্বনেইল দেখে জিজ্ঞেস করছে আমি খালেদা জিয়ার ছবি দিছি কিনা। :crying:

  7. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    মনটাই ভালো হয়ে গেলো গল্পটা পড়ে!

    কোয়েলহোর প্রেমে পড়ে যাচ্ছি, দিন কে দিন। :happy:

  8. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    মেয়েটা পেকে যাচ্ছে অনুবাদে… :love:
    খুবই সুন্দর গল্প।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।