ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ:

সারা জীবন যপে গেলাম, ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ:

বুঝলাম না কিছুই, শুধু আওড়ে গেলাম শেখানো বুলি যত

মা বলে, ছেলে আমার কথা বলে তোতা পাখির মত।

 

মায়ের আশা ছিল আমি ইন্জিনিয়র হব,

বাবার ইচ্ছা ডাক্তার হয়ে টাকা কামাব,

শুনল না কেউ মনের কথা, আমি যে কি হব,

সারা জীবন যপে গেলাম ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ:।

 

ছেলেবেলায় আঁকা-আকিঁর শখ ছিল খুব,

পড়া শেষ করেই ছবি আঁকায় দিতাম আমি ডুব।

মা বলত কাকের ঠ্যাং বগের ঠ্যাং আঁকা বাদ দিয়ে,

বইটা নিয়ে এখন আরও একটু পড়গে গিয়ে।

 

একটু বড় হলাম যখন পেল খেলার নেশা

ভেবেছিলাম খেলাটাকেই করে নেব পেশা

মা বললেন, পড়া ছেড়ে শুধু খেলাধুলা?

তারচে বরং ব্যাগটাকে নিজের কাধেঁ ঝুলা

পড়গে গিয়ে কোচিঙেতে যদি বাঁচতে চাস

পড়লে সেথায় তবেই নাকি হবে পরীক্ষায় পাস!

 

করলাম পাস সগৌরবে গেলাম কলেজেতে,

রঙির জীবন, স্বাধীন আমি, উঠলাম আনন্দেতে মেতে।

গান-বাজনার সখ হল তখন থেকেই আমার,

কলম-খাতা শিকেয় তুলে তুলে নিলাম গিটার।

মা বললেন, দুনিয়াদারির কোন খবর রাখ?

বাঁচতে হলে পড় পড়- ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ:

 

কলেজ পাস করেই এবার মহা যুদ্ধ,

ভর্তি হবার সব দুয়ার দেখি যে রুদ্ধ!

আবার গেলাম কোচিঙেতে, আবার সেই বুলি

মুখ দিতে ফুটতে থাকল কথার ফুলঝুরি।

হতে হবে ইন্জিনিয়ার কিংবা চিকিৎসক

শুনল না কেউ একটিবারও কি যে আমার সখ।

যপেই আমি যাচ্ছি আমি যেন গাধার মত,

সেই শেখান বুলি- ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ:

ইস্ক্রা সম্পর্কে

লেনিনের "ইস্ক্রা" পত্রিকা থেকে আমার কবি বড় মামা আমার নাম রেখেছিলেন ইস্ক্রা (Iskra>Isckra) যার অর্থ আগুনের ফুলকি (Spark)। আমার সঙ্গে পরিচিত হতে গিয়ে সবারই আমার নাম সম্পর্কে একটা আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আমার নামের উৎপত্তি হল এই পত্রিকাঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Iskra ব্যক্তিগত জীবনে আমি আগুনের ফুলকির মত মোটেও উজ্জ্বল হতে পারিনি, তবে উজ্জ্বল হবার চেষ্টা করছি। আগুনের যেমন সবদিকে ছড়িয়ে পড়ার মনোভাব, তেমনি আমারও। তবে ক্ষণজন্মা ফুলকি হতে চাই না, হতে চাই সর্বগমনকারী আগুনের মত উদ্দীপ্ত আর পুড়িয়ে দিতে চাই যত অনিষ্টের মূল। যেকোন ধরণের সৃষ্টিশীল কাজ করতে আমার ভাল লাগে, যেমনঃ সংগীত, লেখালেখি, আঁকাআঁকি, বিতর্ক, কম্পিউটার সম্পর্কিত বিষয়াদি বা অন্য যেকোন কিছু। আর, আমি সকল সৃষ্টিশীল মানুষদের পছন্দ করি ও শ্রদ্ধা করি।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে কবিতা, সাহিত্য-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

7 Responses to ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ:

  1. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    বড়ই নিষ্ঠুর সত্যি!
    প্রতিভাগুলো এভাবেই ধ্বসে পড়ে অজান্তে।

    অফটপিক-

    বানান নিয়ে একটু সতর্ক থাকা ভালো। লেখার মান তাতে বাড়ে। পড়তেও ভালো লাগে।

    ‘কি, কী’ এর সমস্যা দূর করতে এটা দেখতে পারিস-

    http://shorob.com/2011/08/14/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9F/

    ‘রঙির জীবন’>> রঙিন হবে।
    ‘মহা যুদ্ধ’>> স্পেস হবে না। একটাই শব্দ এটা।

    একটু ঠিক করে নিস। 🙂

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    চমৎকার লাগছে!

    আসলেই! গাধার মতই জপে যায় আমাদের তরুণরা!

  3. বোকা মানুষ বলেছেনঃ

    শুধু মিল থাকলেই ভবিষ্যৎ এক রকম হয় না। ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় না গোলাম হোসেন! শুধু সিরাজের পতন হয়। মীরজাফরের নয়।

  4. বাবুনি সুপ্তি বলেছেনঃ

    সুন্দর লিখেছেন । কিন্তু কথা গুলো সত্যি।

  5. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    সবাইকেই মনে হয় একই জিনিসের মুখোমুখি হতে হয়। পড়াশোনার জন্য হয়ত শখটুকু পূরণ করা হয় না বেশিরভাগ সময়। বেঁচে থাকার আর নিশ্চিত ভবিষ্যৎয়ের কথা ভেবে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবার চেনা পথে হাঁটার তাড়নায় দেখা হয় না জীবনের বাকী গলি-ঘুপচিগুলো, যার শেষ প্রান্তে হয়ত সর্বসুখ লুকিয়ে আছে…………

    টপিক-টা খুব ভালো লেগেছে, লেখাটাও!

    বানান নিয়ে আরেকটু সতর্ক থাকা উচিত………

  6. খুব সত্যি একটা কথা লিখেছিস, এখন মাঝে মাঝে যখন পিছন ফিরে তাকাই, হঠাৎ হঠাৎ আক্ষেপ হয়, আসলেই কি ঠিক পথে এসেছি, এই কি হতে চেয়েছিলাম?

    তোর লিখাটা পড়ে আবারও মনে হলো, সারাজীবন কি অন্যের শেখানো বুলিই আউড়ে গেলাম? নিজেরটুকু কি কিছুই নেই?

    ভালো লাগলো ভাবনাটা ইস্ক্রা, আরোর অপেক্ষায় রইলাম…

  7. ইস্ক্রা বলেছেনঃ

    এই লেখাগুলো আমার প্রথম দিককার লেখা। বানান জ্ঞান আমার কাঁচা, স্বীকার করছি। উন্নতি করার চেষ্টা করছি, আপাতত ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে, কেমন?

    আর, আরও লেখা আসছে……আইসচে…হেহেহে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।