ছিঃ ছিঃ এত ছোট কাপড়?? Adult Movie?? এটা দেখা যায়?? প্রথম দৃশ্যেই আবার বিছানা ছিঃ ছিঃ। আরে ব্যাটা তোরে দেখতে কেডায় কইসে? বিদ্যা বালান কী তোরে SMS করসে যে তুই না দেখলে তিতাস নদীতে ঝাঁপ দিমু?
নিজেই ছিঃ ছিঃ করি আবার দেখার সময় তো এক ইঞ্চিও বাদ দিই না। দেখার নামে গিলি। আর দেখা শেষে বলি এই নোংরা মেয়েগুলির জ্বালায় যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে।
তেমনই এক নোংরা মেয়ে ছিল আশির দশকে দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্রে হৈ-হুল্লোড় লাগায়ে দেওয়া Silk Smitha। তার যৌবনের আগুনে অনেকেরই হৃদয় পুড়েছে কিন্তু শেষে ভাগ্যে জুটেছে “নোংরা” ও “অশ্লীল” নাম। তারই জীবন নিয়ে মুভি “The Dirty Picture”। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরী মুভিটি কারণ কেবল মাত্র প্রাপ্তবয়স্করাই বলতে পারবে এক অসাধারণ মুভি দেখে আসলাম।
কাহিনী জানা যাক। গরীব ঘরের মেয়ে রেশমা । মুভি পাগল এবং তৎকালীন সুপারস্টার Surya ( Naseeruddin Shah) এর প্রেমে মগ্ন। তার স্বপ্ন নায়িকা হবার। কিন্তু চেহারা তো কিছুই নাই। তাকে প্রেমিকাও মানায় না আবার স্ত্রীও মানায় না। বাসায় খাবার নেই। দুদিন ধরে চিনি খেয়ে আছে। এদিকে কুকুর পুরুষগুলি সবসময় লেজ নাড়া চাড়া করছে। অনেক চেষ্টা করেও মুভিতে কাজ পায় না। একবার এক মুভির একটি গানে এক Dancer এর প্রয়োজন যাকে একটু চাবুকের মার সহ্য করতে হবে। কেউ রাজী না। এগিয়ে আসে সে। এবং যে এক আগুন ঝরানো দৃশ্য করলো সেই দৃশ্যের জন্য মুভি চরম হিট। এরপর প্রযোজক Selvaganesh (Rajesh Sharma) তাকে নিয়ে একের পর এক মুভি করতে থাকে। তার নাম হয় Silk ( Vidya Balan)। সুপারস্টার Surya ( Naseeruddin Shah) ও Silk এর যৌবনের দাস হয়ে যায়। সবাই মুভি দেখতে যায় শুধুমাত্র Silk এর একটি দৃশ্যের জন্য। এদিকে মেধাবী পরিচালক Abraham ( Emraan Hasmi) এর ভালো মুভির কোন দাম নেই। সবাই Silk এর দেহ দেখতে চায়। Abraham শুধুমাত্র অপেক্ষায় থাকে কবে তার শত্রু Silk এর পরাজয় হবে।
Silk এর জীবনে দারুণ খ্যাতি এবং তার সাথে স্বপ্নের রাজকুমার Surya’র সাথে প্রেম সব মিলিয়ে অসাধারণ এক সময়। কিন্তু কয়েকদিন পর সে বুঝতে পারে যে Surya কেবল তার দেহকেই চায়। আর কিছু নয়। খ্যাতি, অহংকার এবং একাকীত্বের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলে Silk । এদিকে তার পিছনে সর্বদাই খারাপ বলে পত্রিকার লোকেরা। মাঝে Surya’র ভাই Ramakanth ( Tusshar Kapoor) এর সাথে প্রেমের পর তাকে দ্রৌপদী নামকরণ করা হয়। কিন্তু মাদক-ধুমপান সবকিছু ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় তাকে। Ramakanth ও তার থেকে দূরে চলে যায়।
ডুবে যাওয়া Career কে বাঁচাতে সে নিজেই মুভি প্রযোজনা করে কিন্তু ততদিনে তার মোটা শরীর আর তাকে আগের Silk বানাতে পারে না। এদিকে Abraham ( Emraan Hashmi) এখন নামকরা পরিচালক। Silk আজকে তার কাছে পরাজিত। কিন্তু কেন জানি তার পুরোনো শত্রুর শোচনীয় অবস্থা দেখে তার হৃদয় কেঁদে উঠে। যখন সবাই Silk এর নাম ভুলে যাবার পথে তখন Abraham তাকে সংগ দেয়। কিন্তু একদিন Silk সকলকে বিদায় জানিয়ে চলে যায় যেখান থেকে ফেরত আসার কোন পথ নেই।
মুভিটিতে মূলত দেখানো হয়েছে যে পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষদেরকে নারীরা কীভাবে খুব সহজেই নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাতে পারে। মুভিটির প্রত্যেকটি দৃশ্য এবং সংলাপ এক কথায় অসাধারণ। Milan Luthria’র যোগ্য পরিচালনা এবং Ekta Kapoor এর প্রযোজনার পর বিশেষভাবে সংলাপের জন্য Rajat Arora কে বাহবা দিতেই হয়।
মুভিটির মুল প্রাণ হলো Vidya Balan। এক কথায় ফাটাফাটি অভিনয়। এবছর যদি কোন ঘোষণা হয় যে আর অভিনেতা-অভিনেত্রী আলাদা পুরস্কার নয়। শুধুমাত্র একটি পুরস্কার দেয়া হবে। তবে নিঃসন্দেহে সেরা অভিনেতার পুরস্কার এবছর বিদ্যা বালান পাবেই। সংক্ষিপ্ত পোষাকে থাকা সত্বেও তার দৃশ্যগুলি প্রত্যেকটি তালি দেবার মত। একজন নায়িকার বিজয় তখনই হয় যখন দর্শকেরা তার যৌন আবেদনকে ভুলে গিয়ে অদ্ভুত হয়ে তার চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকে। এখানেই বিদ্যা বালান সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া Naseeruddin Shah, Emraan Hashmi কে বেশ ভালো লেগেছে। Tusshar Kapoor কে মোটামুটি লেগেছে। Anju Mahendra ‘র চরিত্রটিও বেশ ভালো। এছাড়া রাতনাম্মা চরিত্রে বেশ ভালো লেগেছে Mangal Kenkre কে।
মুভিটির সংগীত মোটামুটি হলেও “উ লা লা উ লা লা “ গানটির জন্য সবাই পাগল। Vishal – Shekhar এর সংগীতে বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ বাপ্পী লাহিড়ী এই গান গেয়ে সবাইকে মাতিয়ে ফেলেছে।
মুভিটি আসলেই একটি Adult Movie। কারণ বেশ কিছু রগরগে দৃশ্য আছে, যেগুলি আবার কাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় বলতে হবে। সুতরাং সবাই মিলে এক সাথে দেখার মত মুভি এটাকে আমি বলছি না। তবে যারা যারা মুভিটি দেখবেন, সবাই বলতে বাধ্য হবেন যে পুরাই উ লা লা মুভি। এক কথায় অসাধারণ।
রেটিং – ৪ / ৫
আগ্রহ ছিল মুভিটা দেখার, রিভিউ পড়ে আগ্রহ বেড়ে গেল………
মুভিটার নাম অনেকেই নিছে।
দেখতে হবে তো।
ভালো লাগছে রিভিউ। তবে রগরগের প্রয়োজনীয়তা আপেক্ষিক। হিচককের একটা মুভি (F দিয়ে শুরু সম্ভবত) ধর্ষণের দৃশ্য পুরোটা এভয়েড করে যায়। শুধু বোঝায় সেখানে ঘটছে। ক্যামেরা রুম এর বাইরে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসে… দারুণ লেগেছিলো।
সব কিছু দেখাতে নেই। মুভি দেখলে বুঝা যাবে।
রেটিং দেখি বিশাল দিছেন! 😀 রিভিউ ভালো লাগছে
আমি সবার সাথে একটু দ্বিমত পোষণ করছি।
আপনি যেহেতু চলচ্চিত্র ভক্ত এবং আমিও মোটামুটি তাই, আমি আপনার কাছ থেকে এমন কিছু মুভি রিভিউ আশা করি, যেটা ‘পাবলিক খাওয়া’ গোছের মুভি হবে না। যে মুভি দেখে আমার মনে হবে, ‘সত্যি এই মুভিটা আরও আগে কেন দেখি নি’!
আমি জানি, সবার পছন্দের ভিতটা একরকম নয়। তারপরেও মনে হয়, শিখতে পারা যায় এমন কিছু মুভি, অথবা যে মুভিগুলোতে গল্পের অসাধারণ ক্লাইমেক্স, ক্যামেরার ছোট ছোট কাজগুলো আরেকবার ভাবার মত, সেই মুভিগুলো সবাই কম-বেশি পছন্দ করে।
(যেমন, আমার মনে হয়, ‘বাবেল’ মুভিটা অথবা ‘দ্য প্রেসটিজ’)
এরকম কোন রিভিউ সামনে আনলে অনেক খুশি হবো।
ধন্যবাদ।
সহমত। “না দেখলে আফসোস থেকে যাবে” টাইপের ভাল ভাল মুভি’র রিভিউ চাই 🙂
ভাইজান, প্লিজ কিসু মনে কইরেন না, আমি আবার একটু খ্যাত টাইপের পাবলিক. . . হিন্দি মুভির প্রতি খুব একটা মহব্বত নাই :slap: :slap:
আমার আগ্রহ বিভিন্ন ভাষার (হিন্দি সহ) ক্লাসিক্যাল মুভির প্রতি। অনুরোধ রইলো বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন যুগের ‘সেইরাম’ কিছু ক্লাসিক্যাল মুভির রিভিও এর জন্য, যেসব মুভির নাম হয়তো আগে কখনো শুনিও নাই! ধন্যবাদ।