পৃথিবী জয় করা মানুষেরাঃ (পর্ব ১)

আজ আপনাদের বলব এমন কিছু মানুষের গল্প যাঁরা দৈহিকভাবে বিকলাংগ হয়েও সমাজের কাছে হার মানেননি। নিজের ইচ্ছাশক্তির বলে পূরন করেছেন অসাধ্য সব জিনিস। এঁরা পৃথিবীর কোটি মানুষের অনুপ্রেরণা, রোল মডেল।

শন সোয়ার্নার (Sean Swarner):

শন সোয়ার্নার হলেন পৃথিবীর একমাত্র ব্যাক্তি যিনি Hodgkin’s disease এবং Askin’s sarcoma তে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি যখন Hodgkin’s disease এ আক্রান্ত হন তখন ডাক্তাররা বলেন তিনি ৩ মাসের বেশি বাঁচবেন না। ১৫ বছর বয়সে তিনি Askin’s টিউমারে আক্রান্ত হন এবং ধারনা করা হচ্ছিলো তিনি দুই সপ্তাহের বেশি বাঁচবেন না। কিন্তু মরনব্যাধি ক্যান্সার জয় করার পরও তিনি যেন থামলেন না। শন একে একে জয় করেছেন সাতটি মহাদেশের সাতটি পর্বতমালা। তিনিই ক্যান্সারের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তি যিনি সাতটি পর্বতমালাই জয় করেছেন।

বিথোভেন (Beethoven):

রোমান্টিক ও ক্ল্যাসিকাল সংগীতের জন্য যিনি সবার হৃদয়ে আছেন তিনি হলেন বিথোভেন। সংগীতজ্ঞ পরিবারেই তাঁর জন্ম। ছোটবেলা থেকেই কানে কম শুনতেন এবং এটা হ্রাস পেতে পেতে একসময় বধির হয়ে যান। কিন্তু তা মোটেই সংগীতের প্রতি তাঁর আগ্রহকে দমাতে পারেনি। সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা এর আবিষ্কারক। সংগীত জগতের একজন লিজেন্ড হিসিবেই তাঁকে সবাই চেনে।

হেলেন কেলার (Helen Keller):

The miracle worker (1962) ছবিটি যাঁর জীবনকাহিনী অবলম্বনে তৈরী তিনি হলেন হেলেন কেলার। পৃথিবীর প্রথম বধির ও অন্ধ ব্যক্তি যিনি ব্যচেলর অফ আর্টস ডিগ্রী লাভ করেছেন। Socialist Party of America এর অথোরেটিটিভ মেম্বার ছিলেন এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট Woodrow Wilson এর নীতির প্রত্যক্ষ সমালোচনা করেন। ১২ টি বইয়ের লেখিকা এবং স্বাধীনতা পদক বিজয়ী। জীবনের বাকী সময়ে তিনি American Foundation for Blind এর পিছনে কাজ করেছেন।

জেসিকা কক্স (Jessica Cox):

প্রথম পাইলট যিনি পা দিয়ে বিমান পরিচালনা করেন। জন্মের সময়ই তাঁর দুটি হাত ছিলো না কিন্তু এটা তাঁর লক্ষ্য থেকে তাঁকে বিচ্যুত করতে পারেনি। জেসিকা কক্স সাইকোলজিতে গ্র্যাজুয়েট, তায়কান্দোতে দুটি ব্ল্যাক বেল্টের অধিকারী। পা দিয়েই তিনি তাঁর চোখের কনটাক্ট লেন্স বসাতে পারেন, গাড়ি চালাতে পারেন এবং প্রতি মিনিটে ২৫ টি শব্দ টাইপ করতে পারেন। এমনসব বিমান তিনি চালিয়েছেন যেগুলো স্পেশালভাবে ডিজাইন করা এবং পৃথিবীর খুব কম সংখ্যক পাইলটই তা চালাতে পারেন।

নিক ভুজিকিক (Nick Vujicic):

অতি দুর্লভ রোগ টেট্টা অ্যামেলিয়ার শিকার নিক ভুজিকিক। যার মানে হল হাত ও পায়ের চারটি বাহুর অনুপস্থিতি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য হাত পা ছাড়াই তিনি সাঁতার কাটতে পারেন এবং গলফ ও ফুটবল খেলতে পারেন। ১৯৮২ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার এক সার্বিয়ান পরিবারে তাঁর জন্ম। শৈশব থেকেই সমাজ ও পরিবারের অসুস্থ মানসিকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং অবশেষে ১৭ বছর বয়সে নামক একটি এনজিও কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন। ২১ বছর বয়সে অ্যাকাউন্টিং এবং ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং এ ডাবল মেজর নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। বর্তমানে তিনি জীবন সম্পর্কে একজন বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। রোল মডেল হিসেবে ইতিমধ্য শতকোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন নিক ভুজিকিক।

অদ্ভুত ছেলে সম্পর্কে

"অদ্ভুত সেই ছেলেটি আবার শুরু করল হাঁটা.. হাতে তার অ্যাকুয়স্টিক পকেটে হারমোনিকা..."
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

22 Responses to পৃথিবী জয় করা মানুষেরাঃ (পর্ব ১)

  1. জনৈক বলেছেনঃ

    আর আমাগো ছাত্রলীগ!

  2. কিনাদি বলেছেনঃ

    বাহ্‌! আমি তো শুধু হেলেন কেলারেরটা জানতাম।
    তথ্যবহুল পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ 🙂

  3. মুবিন বলেছেনঃ

    তাঁরা দৈহিকভাবে বিকলাংগ কিন্তু মানসিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
    আর আমরা বাঙালি সন্তান, অলস দেহ ক্লিষ্ট গতি গৃহের প্রতি টান।

    পরের পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম।

  4. অনাবিল বলেছেনঃ

    কয়েকজনের কথা জানতাম। বাকিদের কথা জেনে ভালো লাগ্লো।

    আসলে, ইচ্ছাটাই প্রধান, তাই না? 🙂
    পরের পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম….

  5. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    একেই বলে প্রাণশক্তি. . . . . . . . . .

  6. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    শুধু শেষ জনের কথাই জানতাম।

    অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই রকম পোস্টের জন্যই তো সরব! 😀

  7. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    কী অদম্য এদের ইচ্ছেশক্তি। সবাই যদি এমন হতে পারতাম!

  8. সাথী বলেছেনঃ

    !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
    আশ্চর্য রকমের আশ্চর্য হয়ে গেলাম। 😐
    অনেক অনেক ধন্যবাদ এরকম একটা পোস্টের জন্য।
    অনেক অনেক ভালো লেগেছে। 😀 :clappinghands:

  9. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    অসাধারণ! আমাদের সব কিছু পারফেক্ট থেকেও আমরা কিছু পারিনা…
    আশা জাগানিয়া পোস্ট :clappinghands:
    টাইটেলের শেষে পর্ব ১ দেখে খুশি হয়ে গেলাম। তারমানে সামনে আরও আসছে :happy:

  10. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    :clamppinghands:

  11. সামিরা বলেছেনঃ

    এত ভাল পোস্টটা এতদিনে পড়লাম আমি।
    কী অসাধারণ মানুষ সব! দুজনের কথা জানতাম, বাকিদেরটা জেনে ভাল লাগলো। অনেক ভাল!
    এই পোস্টের আর পর্ব দেখলাম না যে ভাইয়া? 🙁

  12. ইয়াদ বলেছেনঃ

    এই মানুষ গুলোর কথা শুনলে নিজেরই লজ্জা লাগে!

    এত প্রতিবন্ধকতার মাঝে কত কিছু করে ফেললেন, আর এত আরাম আয়েশে থেকেও মাঝে মাঝে হতাশায় হাবুডুবু খাই 😳

  13. ইয়াদ বলেছেনঃ

    ভাই, পরের পর্ব কি আসবে না?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।