১)
সময় কম। অনেক কিছু লেখার ছিলো। এতো লিখতে পারবোনা, লেখার আসল কথা দিয়েই শুরু করবো, আসল কথা দিয়েই শেষ করবো। “জাগো” – একটি নন-প্রোফিটেবল ফাউন্ডেশন। খুব ভালো কথা! দেশ ও জাতির জন্য তাদের প্রচন্ড উদ্বেগ, যা কিনা মাঝে মাঝে কালো ঘামের বদলে হলুদ হয়ে বের হয়!
“কেউ দুধ বেঁচে মদ খায়, কেউ মদ বেঁচে দুধ খায়” – একটা প্রবাদ বাক্য আছে। দুধ বেঁচে মদ খাওয়া ভালো ও মন্দ দুটোই হতে পারে! সে নিজের ক্ষতি করে মানুষের উপকার করছে! আর, মদ বেঁচে দুধ খায় এটার ভালো দিক একটাই, মদ ওয়ালার লাভ হচ্ছে ! নিজে দুধ খাচ্ছে ঠিকই কিন্তু হাজার হাজার মানুষকে মদ খাওয়াচ্ছে!
দ্বিতীয় অংশটি সম্পর্কে সবাই যদি আমার সাথে একমত থাকেন, তাহলে এইবার কিছুটা এগিয়ে যাওয়া যায়!
জাগো গত ৪ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবসে একটা কার্যক্রম হাতে নেয়! নিঃসন্দেহে তা ছিলো বড়ই নেক ( পড়বেন ন্যাক্কার) উদ্দেশ্য! তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন চুম্বক অংশ যেমনঃ চট্টগ্রাম শহ, সিলেট শহরে তাদের নিজেদের বানানো স্কুলের বাচ্চাদের পড়াশুনার জন্য চাদা তোলে বিনিময়ে তারা চাদা প্রদানকারীকে ক্রেতায় পরিনত করতে ফুল প্রদান করে কিংবা বিক্রী করে! (গোলাপ ফুল যে ৫০০ টাকা, তাতো জানতাম না, তাই টাইপিং মিসটেক হইছিলো!)।
ঢাকাতেও হয়েছিলো, কিন্তু তারা খুব্বি দুরদর্শী হওয়ায় তারা বুঝে ফেললো যে গরীবদের সাহায্য করতে হলে বড়লোকদের পকেট হালকা করতে হবে! তাই তারা বড়লোকদের এলাকা যেমনঃ গুলশান, বনানী, ধানমন্ডী তে গনগনে রোদে পুড়ে চাদা তুলতে লাগলো। আমার জানামতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সচেতন এই সাহায্যকারীরা যাত্রাবাড়ি, মাদারটেক এমন কি গোড়ান, রেলগেটের এদিকে আসেই নাই! এখানে এসে কি হবে? গরীবদের তারা সাহায্য করবে, তাদের দিকে তাকানোর সময় আছে?
তো শেষ পর্যন্ত তারা চাদা তুলে এবং সবাই আনন্দে ঐদিন তাদের ইভেন্ট পেইজ ও ফ্যান পেইজে গিয়ে নাঁচতে নাঁচতে পোস্ট দেয় যে, “ হেই! ছবি কোথায়?”, “ আমার ছবি নাই কেনো?”, “আচ্ছা, জাগো থেকে কি সার্টিফিকেট দেয়া হবেনা?” এবং আরও অনেক !
সমস্যাটা ঘটে এর পরেই! আমার মতো কিছু বিখাউজ পাবলিক বাংলা আন্তঃজালে হুমড়ি খেয়ে পরে তাদের ধোলাই দিতে! প্রথমেই ব্লগারেরা এটাক করে তাদের ভলান্টিয়ারদের পোশাক নিয়ে। আমার মতে এক দিকে থেকে এটা খারাপ আরেক দিক থেকে প্রশ্ন করাটা সমীচিন! একটা অর্গানাইজেশনের হয়ে যখন মেম্বারেরা মাঠে নামবে, অবশ্যই একটা ড্রেসকোড মানা উচিত, এখন ড্রেস-কোড যদি এমন হয় যে, “তুই ক্ষ্যাত আমি ইশমাট” কিংবা “ তুই গরীব, আমি বড়লুক”, তাহলে একটি নন-প্রোফিটেবল দাতব্য সংস্থার প্রতি মানুষের কিছুটা অবিশ্বাস থেকেই যায়!
এরপরে তাদের অর্থের অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে, তাদের ফ্যান পেইজে এই নিয়ে শত বার প্রশ্ন তোলা হলেও তারা কোনো জবাব দেইনি, বরং হয় গালাগালি করেছে নয়তো কমেন্ট মুছে ব্যান করে দিয়েছে!
২)
জাগো শুধু বাংলাদেশে নয়, আরও বহু দেশে তাদের শাখা খুলেছে এবন সাফল্যের সাথেই তাদের কাজ (!!) চালিয়ে যাচ্ছে! কানাডায় জাগো-র নতুন ইভেন্ট লাঞ্চ হচ্ছে, আর তা হলো “JAAGO, FID & SAA at UTSC presents : Arabian Night”
আনন্দ ফুর্তির জন্য কি কি ব্যবস্থা থাকছে, একটু দেখে নেয়া যাক ? কি বলেন?
Live Bellydancing Performance
Man Auction
Shisha & Food Available ALL NIGHT LONG
Happy Hour Drinks are ONLY $3
বেলি ড্যান্সিং নিয়ে আমার কোনোই আপত্তি নেই! বেলি হোক আর ভুড়ি হোক – আমার কি?
এরপরেই পয়েন্ট আসে যেটা সেটা বিস্তৃত করলে যা অর্থ দাঁড়ায় তা হলো –
Description
Man Auction
“A chance for women to buy a man
Get him to do whatever you would like”
এর মানে আমি করতে চাইনা, ইচ্ছাও নাই। তার চেয়ে বরং আরও কয়েকটা স্ক্রীনশট দেই!
তৃতীয় পয়েন্টের দিকে তাকাই। শীসা – সারা রাত ইচ্ছেমতো! আচ্ছা, শীসা জিনিসটা ভালো না খারাপ সেইটা পড়বার জন্য নিচের লিংকে গেলেই বাকি কাজ আপনার!
http://www.facebook.com/sadman94?ref=tn_tnmn#!/note.php?note_id=10150181402137903
আমি শুধু কয়েকটা পয়েন্ট দেই শীসা সম্পর্কে –
১) এই সীসার ৪টা পার্ট। বেজ, পাইপ, বওল আর মাউথপিস। বওলটাকে এলুমিনিয়ামের কভার দিয়ে ঢেকে দেয়া হয় আর সেই ফয়েলের মাঝে উত্তপ্ত কয়লা রাখা হয়। যা কিনা ভেতরের টোব্যাকো (তামাক) পুড়াতে সাহায্য করে। অশিক্ষিত মাত্র জানে যে, কয়লা পুরে কার্বন মনো অক্সাইড হয়, যা মানুষের স্বাস-প্রস্বাসে চরম ক্ষতি করে। মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
২) এই ধোয়া বেজ এ রাখা সুগন্ধী (যেমনঃ স্ট্র্যবেরী, নারিকেল, চকলেট, গোলাপ) পানির ভেতর হয়ে আসে এবং তা মাউথপিসের সাহায্যে সোজা পাকস্থলিতে পৌছে।
৩) রয়টার্সের নাম তো শুনেছেন? রয়টার্সের এক সংবাদ অনুযায়ী একটা পুর্ণ সেশনের সীসা গ্রহন এক প্যাকেট সিগারেট সেবনের মতোই মারাত্মক।
৪) সিগারেট এদিক থেকে একটু ভালো। সিগারেটে যেখানে ১-৩% নিকোটিন থাকে, সেখানে সীসাতে ব্যাবহৃত তামাক থেকে ২-৪% নিকোটিন থাকে। সুত্রঃ ড. কেনেথ, আমেরিকা একাডেমী অফ পেডিয়াট্রিক্স এর প্রেসিডেন্ট।
৫) ইয়েমেন এর একটি প্রসিদ্ধ হাসপাতালের কার্ডিয়াক স্পেশালিস্ট ড. আহমেদ আল-মোতাররেব বলেন, “ একবার পুর্ণ ভাবে সীসা গ্রহন করা ৬০টি সিগারেট গ্রহন করবার সমান”। সুত্রঃ Journal of Periodontology (Nov. 2005)
৬) কিছু আধা শিক্ষিত মানুষ যুক্তি দেখায়, “এটা তো পানির মুধ্যে দিয়ে আসে। সব কিছু তো শোষন হয়ে যায়”। আমি তাদের দক্ষিন হাত ব্যাবহার করে বলি, “ওহে মুর্খ, নিকোটিন পানিতে প্রকৃতভাবে দ্রবীভুত হয়নারে ছাগলের ৩নম্বর বাচ্চা”
৭) সুগন্ধী, ঠান্ডা ধোয়া এবং প্রবল বিশ্বাস যে এটি ক্ষতিকর নয়, এগুলোই সীসার প্রতি মোহের একমাত্র কারণ। (সুত্রঃ ড. আল খামেরী, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।)
এক বেচারা ভুল-ভাল ইংরেজিতে হলেও কিছুটা প্রোটেস্ট করবার চেষ্টা করলে তাকে কোনো সদুত্তর তো দেয়া হয়ই নাই বরং তাকে রিপোর্ট করে দেয়া হয়!
আর শেষ পয়েন্ট দ্বারা (সুখকর তরল গেলা) কি বুঝানো হচ্ছে, আমি বুঝতেছিনা। আপনারা কি বুঝেছেন? একটা গান মনে পরলো, – “খুব জানতে ইচ্ছে করে, ও-ও-ও-ও জানতে ইচ্ছে করে!”
একটি ওয়ালপোস্ট দেখে বুঝতে পারলাম, ১৮ বছর বা তদুর্ধ্ব না হলে, আপনাকে এই ইতিহাসের স্বরনাতীত পার্টি থেকে রাত সাড়ে দশটার মধ্যে বেড়িয়ে যেতে হবে! আফসুস !!
ভাবসিলাম, কানাডার টিকেটটা কেটে ফেলেই, কিন্তু সার্টিফিকেটে ১৮ হইলো, ইশশশ! বিরাট মিশটেক!
৩)
এবার ১) আর ২) জোড়া লাগাই! জাগো কি তাহলে মদ বেঁচে দুধ খাচ্ছে নাকি দুধ বেঁচে মদ খাচ্ছে?
এদের অর্থনৈতিক বহু অস্বচ্ছতা আছে। বিভিন্ন ব্লগ থেকে সুত্র সহ কিছু উল্লেখ করিঃ
ব্লগার নিশাচর বাদূড়ঃ
১.জাগোর ওয়েবসাইট অনুযায়ি তাদের রেজিসটার্ড মেম্বার হচ্ছে ৭০০০ এবং এদের প্রত্যেককে সদস্য হবার সময় ১০০০ টাকা করে দিতে হয়েছে যার মানে ৭০ লক্ষ্য টাকা!!!! আবার এদেরকে প্রতি মাসে ৫০০ করে চাদা দিতে হয় মানে আরো ৩৫ লক্ষ্য টাকা!!!! এই ছেলে-মেয়েদের থেকে তারা এই টাকাটা নিচ্ছে মানব সেবার কথা বলে অথচ আসলেই কি এত টাকার কাজ হচ্ছে????
২. জাগোর কর্পোরেট পার্টনার হচ্ছে কে এফ সি, ডি এইচ এল, ঢাকা ব্যাংক এর মতো বড়ো বড়ো কম্পানি,,তারাও নিশ্চয়ই কম টাকা দিচ্ছেনা,,,সেসব টাকা যাচ্ছে কোথায়????
৩. জাগোর প্রোফাইল এ দেখলাম তাদের স্কুলের শিক্ষার্থিদের স্কুল ব্যাগ, জুতো, শিক্ষার বিভিন্ন উপকরন ডোনেশন হিসেবে আগা খান স্কুল এর মত অনেকে দিচ্ছে। তাহলে তারা যে টাকা কালেক্ট করছে সেটা খরছ করছে কোথায়??
সুত্রঃ http://www.somewhereinblog.net/blog/hisham_aiub/29478772
ব্লগার নিঝুম মজুমদারঃ
ফেসবুকে কিছুক্ষণ আগে জাগোর ফেসবুক পেইজে জাগো ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার করভী’র একটা স্ট্যাটাস দেখলাম। স্ট্যাটাসে লেখা রয়েছে,
Some third parties have used pictures of our volunteers, specially female volunteers for their own publicity – a violation of human rights. JAAGO has collected names of such third parties and we hereby publicly request them to remove these pictures, IMMEDIATELY. If the respective parties do not take action we will send a legal notice to these individuals and their parents during Eid vacation, proclaiming the violation of privacy and intellectual property. In the event that this violation persists, we will be forced to file a lawsuit against these individuals under Eve Teasing, Section 298 (A) and (B) of the Penal Code amongst others.
এই কথাগুলো বলা হয়েছে এই জাগো ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার করভী’র মাধ্যমে, লিখিত আকারে। তাই করভীর কাছেই কিছু ব্যাপার জানার রয়েছে-
এই থার্ড পার্টি কারা? ব্লগার রা? যারা আপনাদের কার্যক্রমের অস্বচ্ছতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে? আর যেসব ছবির কথা বললেন, সেগুলো তো আপনাদের ওয়েব পেইজ থেকে নেয়া এবং এটা তো সবার জন্য উন্মুক্ত। আর যদি ব্যাপারটা এমন হয় যে, যেসব ছবি নেয়া হয়েছে তা সবার জন্য ওপেন ছিলো মানে “এভরিওয়ান” অপশনে ছিলো তখন তো আইনগত ভাবে এটি দেখার বা শেয়ার করবার একটা ট্যাসিট অনুমতি বা অনুমোদন থেকেই যায়।
আপনি বলেছেন, আপনি এসব থার্ড পার্টির অভিভাবক দের চিঠি, উকিল নোটিস ইত্যাদি পাঠাবেন। সেটা কিভাবে সম্ভব? আপনি কাদের কাদের অভিভাবকদের চেনেন? কয়জনকে চেনেন? আমি আসলে এই ব্যাপারে কৌতূহলী হয়েছি, তাই জানতে চাইলাম।
আর ইভটিজিং এর ব্যাপারটা ভালো উদ্যোগ। যেসব ইতর, অভদ্র আর কুরুচিপূর্ণ মানুষেরা কোনো ছেলে বা মেয়ের ছবি দিয়ে নোংরা সব কথা লেখে সেটি অবশ্যই আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। কিন্তু, যেসব ছবি আপ্নারা আপনাদের ওয়েব পেইজে দিয়েছেন এবং সেখান থেকে নিয়ে আপনাদের কার্যক্রমের বিভিন্ন সমালোচনা হয়েছে, সেটির ক্ষেত্রে কি হবে?
আইনের ব্যাবহার ও প্রয়োগ নিয়ে যখন কথা উঠলোই, সেক্ষেত্রে আপনাদের নামে জালিয়াতি, শিশু নির্যাতন আইনে অভিযোগ বা মামলা দায়ের করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেই না। কেননা আপনাদের কিছু ছবিতে দেখলাম একজন শিশুকে নিয়ে আপ্নারা খুবই অরক্ষিত ভাবে খেলাধুলা করছেন, যাকে শিশু নির্যাতন হিসেবে সহজেই চিহ্নিত করা যায়।
আবার যেই ফান্ড উঠিয়েছেন সেটিরও কোনো স্বচ্ছতা নেই। উপরন্তু, যাদের যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তাদের কাউকে কি টাকার রশিদ দিয়েছেন? এই সংস্থাটি কি সরকার অনুমোদিত? এই সংস্থার চ্যারিটি নাম্বার কি? পরিচয় কি? এই সংস্থার মাধ্যমে উত্তোলিত টাকা কি কি খাত এবং কিভাবে ব্যয় হয় তার বিবরণ কোথায়?
বিভিন্ন ব্লগে বিভিন্ন সমালোচনার উপর অনেকেই দেখলাম কোনো কোনো নিরীহ সমালোচনাকে বেশ গালিগালাজ দিয়ে আপনাদের ওয়েব পেইজ ভর্তি করে ফেলছে। পেইজের মালিক হিসেবে জাগো এর কোনো প্রতিবাদ করেনি কিংবা মডারেট করেনি। আপনারা কি তাহলে জনতাকে আরেক অংশের জনতার দিকে উশকে দিচ্ছেন? এটা কি সমাজে নৈরাজ্য প্রমোট করা নয়? এটাও কিন্তু আইনগত কাঠামোর আওতায় পড়ে।
আপনাদের উদ্যোগ ভালো না মন্দ সেটি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অনেক কথা বলেছি। আপনাদের উদ্যোগের অনেক ফাঁক ফোঁকর রয়েছে এবং বড় আকারের অস্বচ্ছতা রয়েছে যা আলাদা আলোচ্য বিষয়। আপাতত এই প্রশ্ন বা কৌতূহল গুলোর উত্তর জানা দরকার।
সুত্রঃ http://www.somewhereinblog.net/blog/ghaghuBabublog/29479216
৪)
এবার আসি রগ কাটতে! এই ছবি গুলো তাদের সাইট থেকেই নেয়া।
এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে তারা এরকম কিছু একটা বোঝাতে চাচ্ছে যে, “ তারা আনন্দ-ফুর্তি করতে পারেনা। কোথাও ঘুরতে যেতে পারেনা। সবাই যে মজা করে তারা যদি এরকম করতে পারে, এটা তাদের জীবনের সবচেয়ে দামী একটা মুহুর্ত হয়ে থাকবে”
এ থেকে কিছুটা দাঁড়ায় এরকম যে, বাচ্চাদের আনন্দ দানের জন্য তারা এগিয়ে এসেছে। খুবি ভালো কথা, কয় জনই বা যায় ? আমি যাই ? হ্যাঁ আমিও যাই, কিন্তু জানাইতে ভালো লাগেনা, তাই জানাই না। আমি যেখানে যাই, সেখানে ছবিও দেয়না, সার্টিফিকেটও দেয়না। তারা খুউউউপ খ্রাপ! কিন্তু আমি তবুও যাই, সেসব কথা পরে আরেকদিন হবেনে !
তারা আসলে কাদের জন্য কাজ করতে চায়? সুবিধা বঞ্চিত নাকি অধিকার বঞ্চিতদের জন্য? শিক্ষা, বস্ত্র এসব কখনও সুবিধা হতে পারেনা! এখন তারা যদি বস্তির বাচ্চাদেরকে আই-পড কিনে দিয়ে আসে, তারা ঐটা দিয়া ইয়েটাও ফালাইতে পারবেনা! আই-পড তার অধিকার না, সুবিধা! তারা বিভিন্ন স্থলে সুবিধাবঞ্চিত শব্দটি ব্যবহার করে থাকে, আশা করি ঠিক করে নিবেন তারা!
তারা সরকারি ভাবে স্বীকৃত একটি নন-প্রোফিটেবল অর্গানাইজেশন, এটা তারা তাদের সাইটে দাবী করেছে। ভালো কথা। এরাই আবার এমপ্লোইজ নামে আলাদা ট্যাব রেখেছে, যেখানে তাদের এমপ্লোয়ীদের পরিচিতি দেয়া।
আমি ভাই মুখ্য-সুখ্য মানুষ। ইংরেজী বুঝিনা! নেট ঘাটালাম, উইকি বাবা এসে আমাকে জানালো যে,
“Workers who are not paid wages, such as volunteers, are generally not considered as being employed”
সুত্রঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Employee#Employee
তার মানে কি দাড়ালো? তাদের যারা এমপ্লোয়ী, তাদের বেতন দেয়া লাগে! সমস্যা বাধে আবার এখানে !
নন-প্রোফিট অর্গানাইজেশনের সংগা খুজতে গিয়ে শিখলাম এর সংগা আসলে এরকমঃ
A non-profit organization is a group organized for purposes other than generating profit and in which no part of the organization’s income is distributed to its members, directors, or officers.
সুত্রঃ http://www.law.cornell.edu/wex/Non-profit_organizations
তাহলে, যদি তারা বেতন দিয়ে থাকেন, তাহলে তারা এমপ্লোয়ী পালছেন! আর যদি এমপ্লোয়ী পালেন, তাহলে এটা তো নন-প্রোফিটেবল থাকছেনা!
এরপরে আসি তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। তাদের সাইটে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা আছে,
“The JAAGO Foundation School follows a unique curriculum that is of International Standard, and has been developed by combining the International Baccalaureate and the Edexcel program. However, various techniques and teaching methods are used that are adapted to suit the requirements of the students of the school.”
আমার কথা হলো, বাংলাদেশের কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষাপাঠ থেকে বিরত থেকে এই পাঠদানের অনুমতি তাদের কে দিয়েছে? তাদের মাশাল্লাহ দিলে সৎ (!!) কার্যের যে বিকাশ ঘটছে, হাজার হাজার গরীব বাচ্চা যদি তাদের স্কুল থেকে বের হয়, তাহলে সেই ছেলে মেয়েরা কি তাদের পড়াশুনা অনুযায়ী এদেশে টিকতে পারবে কিংবা তাদের কর্মক্ষেত্র খুঁজে পাবে? এর উত্তর হ্যাঁ হতে পারে, নাও হতে পারে! অর্থাৎ, তা এক্সপেরিমেন্টাল। এই বাচ্চাদের জীবন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট ক্রবার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?
এবার এদের কর্পোরেট পার্টনার গুলোর দিকে একটু চোখ বুলাই।
এদের থেকে কি পরিমান অর্থ তারা পেতে পারে, তার ধারণা আমাদের আছে কি নাই, সেটা গৌন। কথা হলো, এদের থেকে প্রাপ্ত টাকা এবং মেম্বারদের থেকে প্রতি মাসে প্রাপ্ত ৩৫ লক্ষ টাকা এবং মেম্বার হবার কালে এককালীন এক হাজার হিসেবে বাকি ৭০ লক্ষ টাকার হিসাব তার কবে দিবে? বহুদিন ধরে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছে তারা যে অচিরেই প্রকাশ করবে, সেটা কবে? সাইটের ডেভেলপমেন্ট তো ভালোই করেছে, তো এই ডাটা এন্ট্রি করতে এতো মাসের পর মাস লেগে যাচ্ছে কেনো?
একটু লুইচ্চামি করি? রাগ কইরেন না। জাগো-র ভলান্টিয়ারেরা যে কিভাবে মাঠে নেমেছিলেন, সে সম্পর্কে আইডিয়া দিতে চাইনা আর। কিন্তু এই ছবিটা দেখেন, কী সুন্দর!
হিজাবি দুই বোনের ছবি দিয়ে রেখেছে! একটা ভারসাম্য আছেনা? কেউ শর্টস পরবে কেউ হিজাব পরবে, কার বাপের কি? কিন্তু কোনোভাবেই এই দেশের সাথে খাপ খায়, এমন কিছু পরতে পারবিনা, খবরদার!
আর, তাদের শিশুশ্রম নিয়ে কিছু বলবার আগে নিজেদের গায়ে নিজেদের থুতু মারা উচিত! যদি সামান্য পরিমান লজ্জাবোধ থেকে থাকে!
৫)
লেখা শেষ। যা লিখতে চেয়েছিলাম, সত্যি বলতে কিছুই লিখতে পারিনাই। এবার শীসা-মদ পার্টি, পরে হতে পারে ফ্রী সেক্স পার্টি ( ধরলাম ২০ বছর পরে!) হতেই পারে! সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না, কারণ নিলামে পুরুষ বিক্রী যদি শুরু করে দিতে পারে, ফ্রী সেক্স পার্টি আর এমন কি দূর কি বাত! আচ্ছা এমন কি হতে পারে, তারা এদেশের বাচ্চাদের টার্গেট করবার একটা মুখ্য উদ্দেশ্য তাদের কিংবা একটি প্রজন্মকে আমেরিকাভক্ত বানানো? আমেরিকাকে প্রভু মেনে তাদেরকে বড় করা হচ্ছে, এমন কি হতে পারেনা? খুবি হাস্যকর, তাইনা? এই হাসি যাতে আজ থেকে ১৫-২০ বছর পরে গলার ফাঁসি না হোক, সেই দোয়াই করি!
যখন কোন ভালো কাজ হতে দেখি নিজেরা কিছু করতে না পারার আফসোস কমে যায়। কিন্তু যখন শুনি তার পিছনে আছে হাজারো রকম নোংরা ব্যাপার, যার মূলই ঠিক নেই তখন কষ্ট লাগে এই ভেবে যে আমরা কতই না বোকা মানুষ! সবাই আসে আর কিছু একটা বুঝ দিয়ে তাদের স্বার্থ গুলো করে নেয়। আমাদের সরলতা, আমাদের অভাব, অশিক্ষা, নানারকম সমস্যা তখন এদের ব্যবহারের পাত্র হয়ে থাকে শুধু।
এর আগেও যখন জাগো নিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে আমি কিছু ঠিক করি নি যে কি ধরে নিব কে ঠিক! কিন্তু শুধু দেখেছি পক্ষ আর বিপক্ষের কথা।
কিন্তু মিথ্যের যে অনেক শাখা প্রশাখা থাকে। তাদের এসব ঢাকতে বা এড়িয়ে যেতে খুব সমস্যা হবে না। কারন তাদের পিছনে অনেকে আছে। খুব খুব অসহায় লাগে।
আসলে, আমরা চুপ করে থেকেই তাদের পথটা সোজা করে দিয়েছি সুপ্তিপু 🙁 যে কাজটা ধমক মেরে বন্ধ করতে পারতাম আমরা, এখন তার জন্য রীতিমত সংগ্রাম করা লাগবে !
🙁
:thinking: :thinking: :thinking:
খুব অসহায় লাগছে, কী ভাবব বোঝার ক্ষমতা যেন হারিয়ে ফেলেছি……… 🙁
আগেরবার আমি কোন কথাই বলি নি। কিন্তু ইভেন্টটা দেখার পর থেকে অসম্ভব খারাপ লাগছে। সাথে সাথে প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ তো থাকছেই। অবশ্য সদুত্তর পাওয়া যাবে না বলেই ধরে রেখেছি।