সারা বিশ্বে চলছে যুদ্ধ। কোথাও নিজেদের সুবিধা আদায় করে নেয়ার জন্য, কোথাও অন্যদের দমিয়ে রাখার জন্য। সামরিক খাতে বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে চলেছে দেশগুলো।
২০১০ সালে বিশ্বে সামরিক খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
২০১০ সাল শেষে যা দেখা যায়:
১. বিশ্বে সামরিক খাতে ব্যায়ের পরিমাণ ১.৬২ ট্রিলিয়ন ডলার।
২. এই ব্যয়ের পরিমাণ ২০০৯ থেকে ১.৩% এবং ২০০১ থেকে ৫০% বেশি।
৩. সমগ্র বিশ্বের GDP এর ২.৬% এই ব্যয়।
৪. বিশ্বের সব মানুষকে এই অর্থ ভাগ করে দিলে প্রত্যেকে ২৩৬ ডলার পাবে।
৫. শুধুমাত্র আমেরিকা এর ৪৩% ব্যয় করে।
এমন কিন্তু নয় যে, সব দেশই সামরিক খাতে বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে। মাত্র ১৫টি রাষ্ট্র এই ব্যয়ের ৮২% বহন করছে।
২০০৮ সালে সামরিক খাতে সর্বাধিক ব্যয় করা দেশগুলোর ব্যয়ের পরিমাণ(বিলিয়ন ডলার):
১. আমেরিকা ৬০৭
২. চীন ৮৪.৯
৩. ফ্রান্স ৬৫.৭
৪. ইংল্যান্ড ৬৫.৩
৫. রাশিয়া ৫৮.৬
৬. জার্মানী ৪৬.৮
৭. জাপান ৪৬.৩
৮. ইটালী ৪০.৬
৯. সৌদী আরব ৩৮.২
১০. ভারত ৩০
দেশগুলো তাদের সামরিক খাতে ব্যয়ের পরিমাণ কী হারে বাড়িয়েছে তা দেখা যায় এই গ্রাফ থেকে:
এমনকি বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশেও বাজেটের ৭.৩% ব্যয় হয় সামরিক খাতে।
এছাড়া মারাত্নক ধ্বংসযজ্ঞ তৈরী করার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তো তৈরী-ই আছে। ধারণা করা হয়, পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মোট নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড এর সংখ্যা ৮,৪০০। এছাড়া সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় নেই, এমনগুলোকে ধরলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৩,৩০০ তে। এই বিশাল পরিমাণ ধ্বংসাত্বক অস্ত্রের মালিক মাত্র ৮টা দেশ। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্থান, ইসরায়েল।
যে কোন মূহুর্তে নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কত, জানেন?
২০০০ টি।
এবার আসুন দেখা যাক, সামরিক খাতে এক বছরের ব্যয় দিয়ে কী করা যায়।
১.
পৃথিবীতে বর্তমানে জাতিসংঘ অনুযায়ী দরিদ্র ধরে নেয়া হয়, যাদের দৈনিক আয় ১.২৫ ডলারের কম। অর্থাৎ, প্রায় ১০০ টাকা। এর চেয়ে কম আয়ের জনসংখ্যা প্রায় ১.৪ বিলিয়ন। এদের সবাইকে দারিদ্র সীমার উপরে উঠিয়ে নিয়ে আসা যায়, এই খাতে সামরিক ব্যয় পুরোটা খরচ করে।
২.
কিছু দেশ (যেমন: চীন, ভারত) তাদের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিশাল অংশ ব্যয় করছে সামরিক খাতে। কিন্তু, তাদের দেশের বিশাল জনগণের(এই দুই দেশের মোট জনগণ প্রায় ২৫০ কোটি) সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানে খুব একটা পরিবর্তন আনা যায় এই বিশাল পরিমাণ অর্থ দিয়ে।
৩.
২০০৮ সালে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দার অন্যতম কারণ এই বিশাল সামরিক ব্যয়। সামরিক ব্যয় কমিয়ে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তোলনের পথ করা যেতে পারে।
৪.
বৈশ্বিক উষ্ণতা গত ১০০ বছরে বৃদ্ধি হয়েছে ১ ডিগ্রি, যা সমগ্র জীবজগতের জন্য হুমকিস্বরুপ। কিন্তু, এই খাতে প্রতিরোধ তৈরী করার মতো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায় না কখনোই।
মাত্র কয়েকটি রাষ্ট্র অস্ত্র তৈরী করে। তারাই এই অস্ত্র ব্যবহার করে। তারাই নতুন নতুন যুদ্ধ তৈরী করে। বিশাল পরিমাণ মারণাস্ত্র মজুদ করে রাখে।
এবং, সেই দেশগুলোই বিশ্বশান্তির কথা বলে!
কোন একদিন নিশ্চয়ই সামরিক খাতের বদলে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ মানুষের সত্যিকারের উন্নয়নে ব্যয় হবে।
সহায়ক লেখাসমূহ:
1. http://www.globalissues.org/article/75/world-military-spending
2. http://www.globalissues.org/article/4/poverty-around-the-world
3. http://www.sipri.org/research/armaments/milex/resultoutput/trends
4. http://en.wikipedia.org/wiki/Global_warming
5. http://archive.truthout.org/1109097
“যুদ্ধ মানে শত্রু শত্রু খেলা,
যুদ্ধ মানে তোমার প্রতি আমার অবহেলা।” 🙁
যুদ্ধ শেষে আশার বসত গুনি,
শান্তি চেয়েছি, যুদ্ধ তো চাইনি………
আর ভাই বাংলাদেশে?
“বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশেও বাজেটের ৭.৩% ব্যয় হয় সামরিক খাতে।”
কিন্তু ঠিক তার পাশের কোন দেশেই মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যায়……
তবু যুদ্ধ চলে বছরের পর বছর……আর কেউ এই যুদ্ধ নিয়ে করে ব্যবসা…
পৃথিবীর সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। কয়েকটা মানুষ ঝরে পড়ে পথিমধ্যে, তাতে কার কী?
manus manuser jonno – ai kothata bastob hote r o onk onk din lege jabe, hoito kokhonoi hobena 🙁
আশা ছেড়ে দিলে তো কখনোই হবে না।
আশায় বসত বাঁধি মোরা,
নইলে হব ছন্নছাড়া।
“এবং, সেই দেশগুলোই বিশ্বশান্তির কথা বলে!”
অন্ধরাই যে এখন সবার থেকে বেশি চোখে দেখে!
মানুষ মানুষকেই মারার জন্য কত নিত্যনতুন জিনিস আবিষ্কার করে, অবাকই লাগে দেখলে।
ভালো জিনিস আবিষ্কারের চেয়ে মারণাস্ত্র আবিষ্কারে লাভ যে অনেক বেশি……
“মাত্র কয়েকটি রাষ্ট্র অস্ত্র তৈরী করে। তারাই এই অস্ত্র ব্যবহার করে। তারাই নতুন নতুন যুদ্ধ তৈরী করে। বিশাল পরিমাণ মারণাস্ত্র মজুদ করে রাখে। এবং, সেই দেশগুলোই বিশ্বশান্তির কথা বলে!” -কথা সত্য।
কিন্তু, “কোনদিন সামরিক খাতের বদলে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ মানুষের সত্যিকারের উন্নয়নে ব্যয় হবে না বলেই মনে হয়।”
আশা করে যাই কোন একদিন শান্তি আসবে।
ভাইয়া, আরো বর্ণনা চাই! খালি কিছু উপাত্ত না… পুরা চিত্র আরো তীব্র ভাবে তুলে ধরবেন…আপনার কাছে বিশাল প্রত্যাশা… আরো বড় পোস্ট চাই!!! 😀
চেষ্টা করবো পরবর্তী পর্ব লিখতে পারলে, আরো বিস্তারিত লিখার……… 🙂
কোন একদিন নিশ্চয়ই সামরিক খাতের বদলে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ মানুষের সত্যিকারের উন্নয়নে ব্যয় হবে। >> এখনও এই আশা করি।
বিধাতার কাছে প্রার্থনা, অন্ধজনে দেহ আলো।
বিধাতার কাছে প্রার্থনা, অন্ধজনে দেহ আলো।
ওই গান টার কথা মনে পড়লো–
i heard them say, love is the way, love is the answer, that’s
what they say, but look how they treat us, make us …..
আর কতো??????
আর কতো……?