আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা যখন বিরোধী দলে থাকে , তখন সরকারের অনেক অপকর্ম নিয়ে বিদেশী রাজনৈতিক আর কূটনীতিকদের কাছে বিচার দেয়। আমাদের সাংবাদিকরাও এমন ভাবে প্রশ্ন করে , মনে হয় এরাই আমাদের বড় শুভাকাঙ্ক্ষী। এমনটা মনে হওয়ার কারণ, এসব শিক্ষিত লোকজন এমন ভাবে কথা বলে যেন আমাদের কাছে মনে হয়, এরা আমাদের (আমাদের দেশের লোকদের) চেয়েও আমাদের বড় শুভাকাঙ্ক্ষী। কারণ, এসব রাজনীতিবিদ আর কূটনীতিবিদরা কথা বলার সময় আমাদের স্বার্থ, আমাদের কিসে ভাল সেসব নিয়ে কথা বলে।
এরকমই একটা পরামর্শ, উল্লিখিত বইটা তে দেওয়া আছে । পরামর্শটা হচ্ছে, ” Talk in the terms of other person’s interest”.
আপনিও এই টিপস বা টেকনিকটা প্রয়োগ করে দেখতে পারেন, দেখবেন লোকজন আপনাকে পছন্দ করা শুরু করছে। আপনাকে তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করছে । প্রতারণার দরকার নাই, আপনি সত্যি সত্যি আপনার আশে পাশের লোকজনের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে যান। উইন উইন চিন্তা করুণ, নিজে ঠকবেন না, কাউকেও ঠকাবেন না। তাহলে দেখবেন অনেকেই আপনাকে পছন্দ করছে । আর লোকজন আপনাকে পছন্দ করলে আপনার প্রাত্যহিক জীবন অনেক সহজ হবে, যেহেতু আপনি অনেক লোকের সাহায্য পাবেন দরকার হলেই।
সামনে একটা বিপদ বা ঝামেলার আশঙ্কা করছেন? ভয়েই অস্থির হয় যাচ্ছেন ? এরকম পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করেন? এরকম কোন পরিস্থিতিতে যদি পড়েন, তাহলে ডেল কার্নেগীর পরামর্শ হচ্ছে, আগে পরিস্থিতি নিয়ে একটু ভাবুন আর হিসাব করে দেখুন যে খারাপ কিছু যদি ঘটেই তাহলে সবচেয়ে খারাপ কি হতে পারে। যেমন ধরুন আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতি তেমন ভাল না কোন কারণে। এই নিয়ে খুব টেনশন হচ্ছে । আর টেনশনে পড়তেই পারছেন না। এরকম পরিস্থিতিতে আগে বসে ভাবুন, পরীক্ষা খুব খারাপ হলে কি হতে পারে? ফেল করবেন? না আশানুরূপ নম্বর পাবেন না? যদি মনে করেন খুব ভাল নম্বর পাবেন না, তাহলে এই মনে করে মনে শক্তি যোগাড় করুন যে ফেল ত করছেন না। তাই এত চিন্তার কি আছে ? এই ভেবে মাথা যখন ঠাণ্ডা হল, তখন চিন্তা করুন ফলাফল কিভাবে আরেকটু ভাল করা যায়। কি কি পড়লে আপনি যেমন আশঙ্কা করছেন তার চেয়ে ভাল করতে পারেন। দেখবেন উপায় একটা কিন্তু পেয়ে যাবেনই। মুল কথা হচ্ছে , যখন খারাপ কিছুর আশংকা করছেন, তখন সবচেয়ে খারাপ কি হতে পারে তা ঠিক করে নিয়ে পরিস্থিতি তা থেকে কিভাবে উত্তরণ করা যায় সেই চেষ্টায় নেমে পড়ুন। দেখবেন আপনি অনেক ভাল করেছেন। তা না করে যদি হায় হায় আমার কি হবে রে কি হবে রে করতে থাকেন, তাহলে সবচেয়ে খারাপ কিছুই হয়ে যেতে পারে, আপনি ফেল করে বসতে পারেন।
তর্ক করতে গিয়ে বন্ধু বান্ধবের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়নি বা তিক্ত হয়নি, এরকম মানুষ খুব কমই আছে। কারণ, আমরা তর্ক করার সময় সব সময় ফোকাসড থাকি কিভাবে অন্য জনের সাথে ভিন্নমত পোষণ করা যায় এবং তার বক্তব্যকে কিভাবে ভুল প্রমাণ করা যায়। আর খুব সহজেই বলে দেই, ইউ আর রং। ফলে যা হবার তাই হয়, প্রতিপক্ষের মন বন্ধ হয়ে যায়, তারাও আমাদের বক্তব্য ভুল ঠিক যাই হোক, ভুল বলে ঘোষণা দেয়। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় না, মাঝখান থেকে কিছু সময় নষ্ট হয়। অনেক সময় সম্পর্কটাও নষ্ট হয়। তাই ডেল কার্নেগীর বক্তব্য হচ্ছে, তর্কে জেতার উপায় হচ্ছে তর্কে না জড়ানো। বোখারী শরিফের হাদিসেও এরকমই বলা আছে, এবয়েড আর্গুমেন্ট। তবে যুক্তি তর্কে যদি জড়াতেই হয়, সে ক্ষেত্রে ডেল কার্নেগীর পরামর্শ হচ্ছে, আপনি কথা বলার সময় আগে ফোকাস করুণ, কোন পয়েন্টে আপনি একমত হতে পারেন, আগে সেটার দিকে নজর দিন এবং কথা বলার সময় আগে সেটাই বলুন। এই এই ব্যাপারে আমি তোমার সাথে একমত তবে এই এই কারণে এই এই পয়েন্টে আমি একমত না। আপনার কথায় যদি সত্য আর যুক্তি থাকে, তাহলে দেখবেন আপনার যুক্তি উনি মেনে নেবেন। আপনি জিতে যাবেন। কিন্তু আপনি যদি বলেন আপনি তার কোন পয়েন্টই ঠিক মনে করেন না, তাহলে সেও আপনার পয়েন্ট গুলিও যাচাই বাচাই না করেই বাতিল করে দিবে। ফলাফল যা হবার তাই হবে, সময়ের অপচয় আর সম্পর্কেও টানাপোড়ন হতে পারে।
প্রাত্যহিক জীবনে দরকারি এরকম অনেক কার্যকরী টিপস আর টেকনিক পাবেন আপনি এই বইতে। তাই বইটা পড়া উচিত সকলের। বইটির টিপস আর টেকনিকগুলি থেকে উপকৃত হতে হলে কিভাবে কয়বার পড়তে হবে , তা লেখক নিজেই বলে দিয়েছেন বইটিতে।
তবে আমার শেষ কথা কিছুতেই বইটির অনুবাদ পড়বেন না, ইংরেজিটাই পড়ুন। অনুবাদ পড়লে বইটি সম্পর্কে আপনার অনেকের মত নাক সিটকানো ভাব আসতে পারে। ইংরেজী বইটা এখান থেকে নামিয়ে নিতে পারেন যদি পড়তে চান
সম্ভবত আপনার আগের একটা ব্লগেও এই বইটার উল্লেখ ছিলো। পড়তে শুরু করেও থেমে গেছি- সময়াভাবে।
হ্যা ছিল তো। কেন পড়া উচিত সেটা একটু ডিটেলস বলার জন্যই এর কি।
ডাউনলোড করলাম, পরার ইচ্ছে রাখি…
ইচ্ছা না, সিদান্ত নিন , পরিকল্পনা করুন কখন কিভাবে পড়বেন। প্রিন্ট করে ব্যাগে রাখতে পারেন, রাস্তা যখন কিছু করার থাকবে না জ্যামে আতকা পড়ে, বা গাড়ির জণ্য অপেক্কাহ করহচেন সেই ফাকে দুই এক পাজ পড়ে নিলেন। না হলে এসব বই পড়া কঠীন।