SOPA এবং PIPA নামক আমেরিকার দুটি প্রস্তাবিত আইনের প্রতিবাদ হিসেবে আমেরিকান প্রশান্ত মহাসাগরীয় সময়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বন্ধ থাকবে।
SOPA কী? :
SOPA হচ্ছে Stop Online Piracy Act. প্রস্তাবিত আইনের মূল উদ্দেশ্য পাইরেসি প্রতিহত করা। তবে, পাইরেসি প্রতিরোধকারী অন্যান্য আইনের সাথে এর পার্থক্য বিশাল। এই আইনের আওতায় সমগ্র বিশ্বের ওয়েবসাইটগুলো থাকবে।
এই আইন কী করবে? :
১. কোন ওয়েবসাইট সত্ত্বাধিকারীর অনুমতি ব্যতীত কোন কিছু প্রকাশ করলে সত্ত্বাধিকারী, ওই ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে আমেরিকার আদালতে মামলা করতে পারবেন।
২. মামলার ফলাফল হিসেবে উক্ত ওয়েবসাইটকে প্রকাশিত পাইরেটেড লিংক সরিয়ে ফেলতে হবে।
৩. উক্ত ওয়েবসাইট এর বিজ্ঞাপন কোন আমেরিকান ওয়েবসাইটে দেখানো হবে না, সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টেও ওই ওয়েবসাইটের কোন পেজ এর লিংক আসবে না।
৪. আমেরিকায় ওই ওয়েবসাইটকে ব্লক করাও হতে পারে।
PIPA কী? :
PIPA হচ্ছে PROTECT IP Act. এই আইনের আওতায় আমেরিকার সরকার এবং সত্ত্বাধিকারীর কোন ওয়েবসাইটে বাধাদান করার জন্য প্রবেশাধিকার থাকবে। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য আমেরিকার বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রিত ওয়েবসাইটকে নিয়ন্ত্রনে আনা।
এই আইন কী করবে? :
১. এই আইনের আওতায় আসবে সেসব ওয়েবসাইট যারা কোন অনুনোমোদিত তথ্য প্রকাশ করবে বা ভালো কাজের বিপক্ষে কোন তথ্য প্রকাশ করবে। এখানে, ভালো কাজ বলে কোনগুলো নির্ধারিত হবে, তা আমেরিকান সরকারের সুবিধা অনুযায়ী হবে বলেই ধরে নেয়া যায়।
২. ওই ওয়েবসাইট যে IP Address থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে, সেই Address থেকে ইন্টারনেটে প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে বাধাদান করা হবে।
৩. উক্ত ওয়েবসাইট সম্পর্কিত কোন তথ্য ইন্টারনেটে প্রবেশে বাধা দেয়া হবে।
৪. সার্চ ইঞ্জিন (যেমন: গুগল) থেকে ওই ওয়েবসাইটের লিংক দেয়া যাবে না।
৫. কোন ওয়েবসাইট থেকে ওই ওয়েবসাইটের হাইপারলিংক দেয়া যাবে না।
SOPA ও PIPA এর আওতায় কোন ওয়েবসাইট পড়বে:
এই দুই আইনের আওতায় ওয়েবসাইটগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
১. আমেরিকান ওয়েবসাইট: যে সব ওয়েবসাইটের ডোমেইন নাম আমেরিকান, অর্থাৎ, শেষে .com, .org, .us আছে।
২. বিদেশী ওয়েবসাইট: যে সব ওয়েবসাইটের ডোমেইন নাম আমেরিকান নয়, অর্থাৎ, আমারিকান ওয়েবসাইটগুলোর বাইরের সবগুলো।
তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটকে একই সাথে আমেরিকান বা বিদেশী ওয়েবসাইট হিসেবে দেখানো যায়। এতে, ভিন্ন ভিন্ন আইনের আওতায় একই ওয়েবসাইট পড়তে পারে।
আমেরিকার উদ্দেশ্য:
SOPA এবং PIPA আইনের পক্ষে বলা হচ্ছে, এই আইন সত্ত্বাধিকারীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। যদিও, এই আইন সত্যিকার অর্থে আমেরিকার সরকারই বেশি ব্যবহার করবে বলে বোঝা যায়। কিন্তু, কেন?
বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ হয়ে থাকে, যা আমেরিকার স্বার্থ পরিপন্থী হয়ে থাকে। এর অনেক বড় প্রমাণ ‘উইকিলিকস’, যা আমেরিকার ভিতকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। মূলত, এসব ওয়েবসাইটকে বাধাদান করাই আমেরিকার উদ্দেশ্য।
কেন ওয়েবসাইটগুলো এর বিপক্ষে? :
১. এই আইনের অধীনে কোন বিচ্ছিন্ন একটা কন্টেন্ট এর জন্য পুরো ওয়েবসাইটের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্থ হবে।
২. ইন্টারনেটে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ ব্যপকভাবে বাধার মুখে পড়বে।
৩. শক্তিশালী আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলোর বিপক্ষে কথা বলার এবং যুক্তি তুলে ধরার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ‘ইন্টারনেট’। এ জন্যই এই আইন প্রণয়ন করে আমেরিকা তাঁর বিপক্ষে কথা বলা বন্ধ করতে চাইছে।
৪. উইকিপিডিয়া বা ওয়ার্ডপ্রেসের মতো ওয়েবসাইটগুলো, যেগুলোর ব্যবহারকারীরা এর প্রকাশিত কন্টেন্ট তৈরী করেন, সেসব ওয়েবসাইটগুলো টিকে থাকা হুমকির মুখে পড়বে।
৫. গুগল এর মতো অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া ব্যপকভাবে বাধাগ্রস্থ হবে।
৬. সামজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটগুলোতে(ফেসবুক, টুইটার) নিজের মত প্রকাশে বাধাগ্রস্থ হবে ব্যবহারকারীরা।
কোন কোন ওয়েবসাইটগুলো প্রতিবাদ করছে আজ? :
SOPA এবং PIPA নামক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি প্রস্তাবিত আইনের প্রতিবাদ হিসেবে আমেরিকান প্রশান্ত মহাসাগরীয় সময়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ২৪ ঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে। এই প্রতিবাদে যে সকল ওয়েবসাইট অংশগ্রহণ করছে:
Wikipedia(english), Moveon.org, Craigslist, Reddit, Boing Boing, Cheezburger network
এছাড়া এই আইনের বিপক্ষে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে Google, Facebook, Twitter.
ইন্টারনেটে মানুষের মতামত প্রকাশকে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার বিনিময়েও এই আইন অনুমোদন পায় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
একটা ছোট্ট টিপস:
উইকিপিডিয়া আমাদের এতটাই প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট যে, একদিন না ব্যবহার করতে পারলেও ব্যপক সমস্যা হতে পারে। উইকিপিডিয়ার ব্লাকাআউট চলাকালে কোন পেজ সম্পূর্ণ লোড হবার আগে ‘Esc’ বাটন চাপলে, ওই পেজ ব্লাকআউট হবে না।
সহায়ক লিংক:
1. SOPA
2. PIPA
দারুণ! :huzur:
গোড্যাডি’র এই নিয়ে একটা মজার কাহিনী আছে!
গোড্যাডি এই আইন সাপোর্ট করছিলো – তারপর তাদের বিপুল ইউজার ডোমেইন ট্রান্সফার করে ফেলছে! এবং গোড্যাডিকে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হইছে
অবশ্যই এই আইন প্রণয়ন বন্ধ করা উচিত। ইন্টারনেট যে মুক্তবুদ্ধি, স্বাধীনতা ও জ্ঞানের দ্বার খুলে দিয়েছে আমাদের জন্য, তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে এ আইনের মাধ্যমে……
তবে, অন্য কোনভাবে পাইরেসি বন্ধ করা উচিত।
গোড্যাডি’র মতো কোম্পানির পক্ষেই এটা করা সম্ভব। এরা বিনা নোটিশেই ‘সামান্য জনপ্রিয়’ হওয়া ডোমেইন বেহাত করে ফেলার ব্যবস্থা করে দেয়। অন্তত দুইটা সাইটের মালিককে কাছ থেকে দেখেছি হাতের আঙ্গুল কামড়াতে।
আর ইন্টারনেটকে নিয়ন্ত্রনের এই আমেরিকান স্বপ্ন আদৌ সফল হবে না বলে বিশ্বাস। মনে আছে পাইরেট বে’কে আদালতে কতো টানা হ্যাছড়া হলো। সবসময়-ই একটা ওয়ে-আউট থাকবেই।
আশা করি ‘ওয়ে আউট’ খুঁজতে হবে না………এই আইন-ই যেন না হয়, সেই প্রত্যাশায় আছি।
উইকি ছাড়া এমবিবিএস পাশ করুম ক্যামনে !!!!
চোপা, পিপা নিপাত যাক !!!!
উইকি ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার কষ্টকর হয়ে যাবে………
অল্প পরিসরে পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ! শেয়ারাইতেসি 🙂
ধন্যবাদ, রাইয়্যান 🙂
গোছানো লেখা। শেয়ার করছি। 🙂
ধন্যবাদ 🙂
লেখাটা খুব গোছানো হয়েছে। 🙂
ধন্যবাদ 🙂
সবারই এর প্রতিবাদ করা উচিত….
যারা এই আইন তৈরী করছে, তারা এই প্রতিবাদ শুনতে পারুক……
স্টিকি করা হোক। :multitalk:
😳 :thinking:
🙁
🙁
সরব হই আমরা!
সরব হয়েছে সারা বিশ্ব। দেখা যাক কী হয়……