এবারে বইমেলা প্রায় পুরোটা মিস! গড়ে ২০ দিন কিংবা তারও বেশি যাওয়া ছেলে এইবার দেশে থাকছে না ২৪ দিন! ভাগ্যিস এই বছরটা লিপইয়ার এর! একটা দিন বোনাস!
ছোটবেলায় বই মেলা ভিন্ন রকম ছিল। টাকা পয়সা ছিল না। তাই টাকা জমাতাম আগে থেকে। ঈদে পাওয়া সালামিগুলো চলে যেত মাটির ব্যাংকে। সেই টাকাগুলো জমত। আর ফেব্রুয়ারিতে কিনতাম! পকেট খালি করে! খুব বেশি কিনতে পারতাম এমনও না! টাকা কম থাকত বলে সমগ্র কিনতাম! একসাথে অনেকগুলা পড়া হয়ে যেত! এখনো আমি সবাইকে উপদেশ দেই সমগ্র কিনতে! সমগ্র’র মত মোটা বইও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেত! তাই যেটা করতাম বন্ধুদের সাথে জোট বাঁধতাম! যদিও সব সময় ওরা কথা শুনত না! আমি একটু জাফর ইকবাল স্যার এর অতি পাঙ্খা থাকায় তার বই বেশি কিনতাম। বন্ধুদের দিয়ে হুমায়ূন কিংবা অন্য সায়েন্স ফিকশন কিনাতাম।
এসএসসিতে ফাইভ পাবার পর (আমাদের সময় মাত্র ১৩০০ জন পাইছিল। ফাইভ পাওয়া একটা ভাবের ব্যাপার ছিলো বটে!) বিপুল বখশিশ পাইছিলাম! বলাই বাহুল্য পরবর্তী মেলা (যখন আমি নটরডেম এ পড়ি) কী অসাধারণ গেছে!
নটরডেম এ আমার লাইফের সবচেয়ে স্বর্ণালী অধ্যায় ছিলো। নানান ব্যাক গ্রাউন্ডের ছেলেপেলে। নানান রকমের বই পত্র! আহা উহু অবস্থা! এক বন্ধুর বাবা রাশিয়ায় পড়তে গিয়েছিল, রাশিয়া থেকে আনা সব জটিল বই! রাদুগার সব বই! (গুগল সওয়ারী হয়ে দেখলাম রাদুগা আসলে অনেক জনপ্রিয়!প্রচুর ব্লগার রাদুগার বই পড়েছেন।) আরেক বন্ধু ভবিষ্যতে সাংবাদিক হবে বলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ম্যাগাজিন নিয়ে ব্যস্ত। ওর কাছেও বই পাওয়া যেত। ভিন্ন স্বাদের সব বই। যতদূর মনে পড়ছে হেলাল হাফিজ এর পাংখ্যা হয়েছিলাম সেই বন্ধুর কাছ থেকে নিয়েই।
কথা বলছিলাম বইমেলা নিয়ে চলে গেলাম বই এ!
বইমেলার আরেকটা বড় ব্যাপার আড্ডা। আড্ডা ছাড়া জমেই না! আমার আবার অনেকগুলা সার্কল। স্কুল ফ্রেন্ডদের সাথে একটা, বুয়েটের বন্ধুদের সাথে একটা, ব্লগের বন্ধুদের সাথে কয়েকটা (কয়েকটা ব্লগ যে!), কাছের বন্ধুদের সাথে একটা, আপুদের সাথে একটা… এই রকম। এ ছাড়া এক সার্কলের সাথে গেলে অন্য সার্কলের সাথে দেখা হয় যায়। তখন একটু জবাবদিহিতা করতে হয়! সার্কল ওয়াইজ আবার খাওয়া দাওয়া এবং বিল দেওয়া! বড়দের সার্কলে গেলে বিল নিয়ে চিন্তা নাই! পিচ্চিদের সার্কলে গেলে সব নিজের পকেট! আর বন্ধুদের সার্কলে গেলে মিলেমিশে…
যে দিন যে দিন বেশি বই কিনি সে সব দিন একা থাকি! (নাইলে বই বাসায় নিয়ে যাওয়া যায় না!) এই একা বই কেনার দিনটায় একটু সাবধানে থাকি! কারও সাথে যেন দেখা না হয় 😛 । এই দিন নিজের মতো করে এক্সপেরিমেন্টাল নানান বই কিনি। আমি সাধারণত নতুন লেখকদের বই কিনি (গত ৯ বছর ধরেই এই কাজ করছি! নতুন লেখকদের বেড়ে ওঠা দেখার জন্য আলাদা আগ্রহ কাজ করে কীনা!)। ততো
তো এই পরীক্ষা নিরীক্ষায় বেশিরভাগ সময়ই হতাশ হই! পরের বার আবার কিনি… যদি লাইগা যায় মার্কা। আর কারও লেখা ভালো হলে অন্যদের সাজেস্ট করি।
দূরে বসে থেকেই দেখছি সরব এর ছেলেপেলেরা ব্যাপক আড্ডা দিচ্ছে, স্ট্যাটাস দিচ্ছে! আর বই কিনে তার ছবি দিচ্ছে! সব মিস! সরব এ চমৎকার একটা সিরিজ শুরু হয়েছে। আবদুর রাজ্জাক শিপন ভাই আর অদিতি কবির আপুর ২ টা ইন্টারভিউ এর মধ্যেই ছাপা হইছে। বই জনপ্রিয়করণ এর জন্য বিশেষ করে অনলাইন লেখকদের জন্য চমৎকার একটা উদ্যোগ। এই সব বইও মিস করতেছি! গতবার মাসুম ভাই, নুশেরা আপু সহ অনেকের বই কিনছি সাথে অটোগ্রাফও… আমি মেলায় যাবার আগেই অনেক কিছু হয়ে যাবে। অনেক কিছুই মিস।
হোটেল এ একা রাতে কিন্ডলে বসে বই পড়ি। সব ভারিক্কী ধরনের বই। (সেই সব নিয়ে সামনে লেখা আসবে। এখনই নাম বলে সারপ্রাইজ ভাঙতে চাই না!) আর মিস করি বইমেলা শেষে সবার সাথে ঠাণ্ডা রাতে বাড়ি ফেরার হাঁটাচলা। হাঁটতে কখনই ক্লান্তবোধ করি না। সেই বাড়ি ফেরাটাও মিস করতেছি!
[ইস্তাম্বুল, তুরস্ক]
হুম!
লেখায় বিস্ময়সূচক চিহ্নের এত আধিক্য কেন? 😛
লেখাটা বেশিই পচা হইছে। ডিলিট মারতে হবে কোন এক সময়!
আমার আবার অনেকগুলা সার্কল। স্কুল ফ্রেন্ডদের সাথে একটা, বুয়েটের বন্ধুদের সাথে একটা, ব্লগের বন্ধুদের সাথে কয়েকটা (কয়েকটা ব্লগ যে!), কাছের বন্ধুদের সাথে একটা, “আপুদের সাথে একটা ” … এই রকম
ভালৈ ভালৈ !!!!!!!!!!!!!!!
পরতেকডাদিন বইমেলায় যাই, প্রথমে প্রচ্ছদ দেখি এরপরে এট্টু ভেতরে দেখি, শ্যাষে দাম দেখি, এরপরে রাইখ্যা দেই। হাজার খানেক ট্যাকা নিয়া গিয়ে ৩ খান বই আনাও দুষ্কর !!!
আপুদের পার্টটাই দেখলা না?!!
এত দাম 🙁
দ্রুত এসে মেলাকে জাগিয়ে দিন
বা নিজেকে জাগানোর খোরাক নিন !
শুভ কামনা ।
ধন্যবাদ শিপন ভাই। আশা তো করছিই! 😀
বইমেলা মিস করা ভালো না, ২০১০ এ শেষ পরীক্ষা চলায় বাসায় আসতে পারি নাই; সেই দুঃখে পড়ের বছর ডাবল কিনছিলাম 🙂
তুমি ভালো অন্তত ১ সপ্তাহ পাচ্ছো :S
ভাইয়া বইমেলায় এক বার যেতে পারছেন না বলে আফসোস করবেন না। আপনি যেই সব লেখা আর স্ট্যাটাস দিচ্ছেন এই খানে যাচ্ছি ঐ খানে যাচ্ছি লিখে আমাদের কিন্তু কম হিংসে হচ্ছে না 😛
:fire: :haturi: :slap:
এইবারের বইমেলাটা যা জমছে না বোহেমিয়ান ভাই! পুরাই আহা উহু অবস্থা! 😛
আমি যে কবে যাবো! :crying:
তখন যাই হইছে, হোক!
এইবার সরব বোহেমিয়ান আমারে গোটা দশেক ইয়া মোটামোটা বই কিনে দেবে,আমি শিওর!! 😀
ফিলিং, জিভে জল এসে গেছে বইয়ের লোভে… 😛