সমাজের যান্ত্রিকতায় যখন আমরা নিত্য পিষ্ট হই লালসা, হতাশা আর ফেলে আসা স্মৃতিকাতরতায়, তখনই খুঁজে ফিরি এক টুকরো নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা। একুশে বইমেলা ঠিক তেমনই এক স্বপ্নদ্রষ্টা শক্তির নাম, যেখানে খুঁজে পাওয়া যায় সেই পুরনো ‘আমি’কে। ফেলে আসা জীবনের কথকতা আর নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার সেই বইমেলায় হাজারো বইয়ের ভিড়ে খুঁজে নিতে হয় নিজের কথা বলা বইটিকে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ‘সরব’ ব্লগের এই আয়োজন, ‘আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক’। লেখালেখি জীবনে ব্লগ থেকে বইতে পা রেখেছেন যারা, তাদের ভাবনার জগত পাঠকদের সামনে উপস্থাপনের ছোট্ট প্রয়াস।
অপেক্ষায় থাকুন নতুন বইয়ের, অপেক্ষায় থাকুন নতুন সাহিত্যিকের…
বইমেলা হোক সরব, প্রাণের উৎসবে!
১. নিজের সম্পর্কে কিছু বলবেন?
– নিজের সম্পর্কে বলার মত তেমন কিছু নেই। বই পড়া ছাড়া জীবনে আর কিছুই শিখিনি এটুকুই বলতে পারি।
২. লেখালেখির সাথে সম্পর্কের শুরু হলো কী করে?
– লেখালেখির শুরু একটা সিনেমা পত্রিকায় ভিডিও রিভিউ করে। পরে অন্যান্য পত্রিকায় ফিচার ইত্যাদি লিখেছি।
৩. কেন লিখেন? লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
– লিখি নিজের জন্যই। অপরকে পড়তে দিয়ে আনন্দলাভ আমার বাড়তি। আমার ইচ্ছা যে সব বই আগে অনুদিত হয় নি, সেগুলো অনুবাদ করা।
৪. লেখালেখির ক্ষেত্রে কোন অনুপ্রেরণা আছে কি? কাউকে কি অনুসরণ করেন?
– আমি পুরোপুরি প্রগতি প্রকাশনের স্টাইল ফলো (পড়ুন চুরি করি) করি। অনেককাল আগে শার্লক হোমসের একটা গল্প পড়ে ইচ্ছে হয়েছিল অনুবাদক হবার। সেই ইচ্ছেকেই অনুসরণ করছি।
৫. অনেকের ধারনা এখন অধিকাংশ লেখকের লেখা একই প্যাটার্নের হয়ে থাকে, নতুনত্ব খুব কম পাওয়া যায় – আপনি কি এর সাথে একমত?
– ধারণাটি সঠিক কিনা সেটা আলোচনা সাপেক্ষ। আমি একমত নই।
৬. নতুন লেখকদের বিষয়ে পাঠকদের মনোভাব কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
– এক কথায় বলা যায়- ইতিবাচক।
৭. একজন ব্লগারের কি তার প্রতি কোন দায়বদ্ধতা আছে? থাকলে কতটুকু? বাংলা ব্লগে দায়বদ্ধতার কী রকম ছাপ দেখতে পান?
– পাঠকের প্রতি? থাকা উচিৎ আমার মতে। আমি যা খুশি লিখতে পারি না। আর বাংলা ব্লগে মোটামুটি দায়বদ্ধতা বিরাজমান। আমাদের ‘স্বাধীন’ পত্রিকাগুলো অনেকসময় যা ছাপাতে সাহস করে না, ব্লগ সে কথা লিখে দেয়।
৮. ব্লগের ফীডব্যাক নিয়ে আপনার মন্তব্য কী? সবসময় কি ঠিক মনে হয়?
– যা আপনার কাছে ঠিক, অন্যের কাছে তা বেঠিক হতেই পারে। তবে কুবাক্য প্রয়োগ অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে অসহিষ্ণু করে তুলতে পারে।
৯. ব্লগ আসার পর মানুষ খুব বেশি ওয়েব-নির্ভর হয়ে গেছে, আগের মত বই কিনে পড়ে না – এ নিয়ে আপনার কী মতামত?
– ১৯৯৩/৯৪ এর দিকে ইন্টার্নেট আসবার আগেও এ কথা শুনেছি। আমাদের বই পড়বার সংস্কৃতি সেভাবে গড়ে ওঠেনি। এটা নিয়ে এই স্বল্প পরিসরে বলা অসম্ভব।
১০. আপনার নতুন প্রকাশিত বই সম্পর্কে পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
– আলেক্সান্দার বেলিয়ায়েভের লেখা প্রথম কল্পবিজ্ঞান কাহিনী ‘প্রফেসর ডয়েলের মস্তক’, লেখা ১৯২৫ সালে, উভচর মানুষ বইটিরও আগে। সম্ভবত বাংলাভাষায় প্রকাশিত এটি তার তৃতীয় কল্পবিজ্ঞান।কাহিনীর বিষয়বস্তু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন। বেলিয়ায়েভের প্রথম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ‘প্রফেসর ডয়েলের মস্তক’-এ তিনি ধ্বংসাত্মক নয়,গঠনমূলক রূপেই দেখতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানকে। বস্তুতপক্ষে আলেক্সান্দর বেলিয়ায়েভ ছিলেন আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের ভবিষ্যৎ-দ্রষ্টা। আমাদের বরেণ্য নিসর্গী শ্রীদ্বিজেন শর্মা ব্যস্ততার মাঝেও এই বইয়ের জন্য একটি প্রসঙ্গকথা লিখে দিয়েছেন। প্রচ্ছদ করেছেন নজরুল ইসলাম। মূল্য ২৫০ টাকা। মেলার দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে লিটল ম্যাগ চত্বর আর পাঠসূত্রে পাবেন। ননী ভৌমিকের অসাধারণ অনুবাদে আমরা অল্প বয়সেই ‘উভচর মানুষ’ আর ‘হৈটি-টৈটি’ পড়েছি; এবার প্রিয় লেখকের আরেকটি বিশ্ববিশ্রুত কল্পবিজ্ঞান উপন্যাস বাংলায় অনুবাদ করার সুযোগ পাওয়া আমার পক্ষে পরম সৌভাগ্য।
দারুণ ব্যাপার আপু। উভচর মানুষ পড়ার সেই অসাধারণ অভিজ্ঞতা এখনো মনে আছে। আশা করি এইটাও ভালো লাগবে।
দেশে গিয়ে নেই – অটোগ্রাফ সহ…! 8)
তাড়াতাড়ি চলে আসুন। :happy:
পড়ার আগ্রহ রইলো!
আর অনেক অনেক শুভকামনা… :clappinghands:
অসংখ্য ধন্যবাদ। বইটা পড়ে জানাবেন কেমন লাগল।
এই অনুবাদটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, অদিতি আপু ।
অবশ্যই সংগ্রহ করবো ।
ধন্যবাদ শিপন ভাই। আপনার বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে আমি মুগ্ধ!
ওহ! প্রথমবার দু’সপ্তাহের আগেই চলে গিয়েছিলাম দেখে পাইনি বইটা! কিন্তু আপনার লিখা পড়ে অনুবাদটি পড়ার জন্য আগ্রহ তৈরি হলো! সত্যি কথা ভালো অনুবাদকের অভাবে অনুবাদ সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ অনেকটাই কমে গিয়েছিলো আপু!
এবার বিশ্বাস নিরাশ করবেন না! :happy:
নিরাশ হবেন না বলেই আমার বিশ্বাস। পড়ে দেখুন। ভাল লাগবে।
বেশিরভাগ বাংলা অনুবাদ পড়ে হতাশ হই। সম্প্রতি আলকেমিস্টের অনুবাদ পড়ে আমার হতাশা নতুন মাত্রা পেয়েছে। আপনার অনুবাদ পড়ার আশা রাখছি।
সরবে আপনার কিছু অনুবাদ আশা করছি 🙂
সেবা প্রকাশনীর কিছু অনুবাদ আছে, ভাল লাগবে আপনার। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি উপাদেয় করবার। আমার প্রচেষ্টা মনে হয় অসফল হয় নি। সময় পেলে সরবে দেবার চেষ্টা থাকবে।
ওয়াও!!!!!!!! অদিতি আপু বই বের করেছে 😀 আমি কবে যে মেলায় যাব!!! এই বইটা হাতে না পেলে আমি মরেই যাব 🙂 ইশ আমি কত দেরী করে জেনেছি 🙁
better late than never. মেলা শেষ হতে এখনও দেরী আছে, তাই যে কোন একদিন গেলেই হবে। 😀
অনেক ভালো লাগলো অদিতি আপু । তোমার এই বইটি অবশ্যিই পড়ব এবং পড়াবও বটে…
অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
হ্যাঁ পড় এবং পড়াও। সবাই জানুক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী সত্যিও হয়ে ওঠে।
‘উভচর মানুষ’ স্কুলে থাকতে পড়েছিলাম।
একবারে প্রথমদিকের পড়া একটা অনুবাদ ছিল। তাই কাহিনীটা এখনো মাঝে মাঝে চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
আশা করছি ‘প্রফেসর ডয়েলের মস্তক’ও আরেকটা সুপাঠ্য লেখা হবে।
অপেক্ষায় থাকলাম।
শুভকামনা রইল সবসময়ের জন্য।
ইকথিয়াণ্ডরকে ভালবাসে নি, উভচর মানুষের এমন পাঠক পাওয়া মুশকিল। সেই ভালবাসা থেকেই আমাদের এই প্রয়াস। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি অনুবাদটি উপাদেয় করবার। ধন্যবাদ।
বইটা পড়ে ফেলবো তাত্তাড়ি দেখি। 😀
নিজে টুকটাক অনুবাদের চেষ্টা করি, খুবই নতুন এই ক্ষেত্রে আর আনাড়ি। আপনার বইটা থেকে কিছু শিখতে পারবো আশা করি।
আচ্ছা আপু, একটা কথা ভাবছি, কোন বই আগে অনুদিত হয় নি সেটা বুঝতে পারেন কীভাবে? এত অনুবাদের ভিড়ে?
উভচর মানুষ পড়বার পর থেকেই বাসনা বেলিয়ায়েভের অন্য লেখা পড়বার। হৈটৈ-টৈটির পর আর পাই নি। প্রগতি প্রকাশনে যাঁরা অনুবাদক হিসেবে কাজ করেছেন, তাঁরাও বলতে পারেন নি। আমি তখন ইংরেজিতে খুঁজতে থাকি, এবং পেয়ে যাই।
আজকে গিয়েছিলাম বইমেলাতে আপু, তোমার বইটা কিনবার জন্য! কিন্তু পেলাম না, আসেনি এখনো! 🙁
তোমাকে ফেসবুকে খুঁজছিলাম এই মেসেজটা পাঠানোর জন্য! 😛
আমি আসলে ঠিক হাবিজাবি করে ছাপা আর বাঁধাই বই মেলায় দিতে চাই না। একজন বই কিনবেন কষ্টার্জিত অর্থে, বাঁধাই আর ছাপা খারাপ হলে চলে? তাই একটু দেরী করেই দিচ্ছি।
অনুবাদ ! ! ! জিভে জল চলে আসছে !