আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(৬): নুরুন্নবী হাছিব

সমাজের যান্ত্রিকতায় যখন আমরা নিত্য পিষ্ট হই লালসা, হতাশা আর ফেলে আসা স্মৃতিকাতরতায়, তখনই খুঁজে ফিরি এক টুকরো নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা। একুশে বইমেলা ঠিক তেমনই এক স্বপ্নদ্রষ্টা শক্তির নাম, যেখানে খুঁজে পাওয়া যায় সেই পুরনো ‘আমি’কে। ফেলে আসা জীবনের কথকতা আর নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার সেই বইমেলায় হাজারো বইয়ের ভিড়ে খুঁজে নিতে হয় নিজের কথা বলা বইটিকে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ‘সরব’ ব্লগের এই আয়োজন, ‘আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক’। লেখালেখি জীবনে ব্লগ থেকে বইতে পা রেখেছেন যারা, তাদের ভাবনার জগত পাঠকদের সামনে উপস্থাপনের ছোট্ট প্রয়াস।

অপেক্ষায় থাকুন নতুন বইয়ের, অপেক্ষায় থাকুন নতুন সাহিত্যিকের…

বইমেলা হোক সরব, প্রাণের উৎসবে!

১.       নিজের সম্পর্কে কিছু বলবেন?

–     প্রযুক্তি ভালোবাসি। ভালোবাসি দেশকে..ভালোবাসি নিজেকে। সব সময় ভাবি ভালো কিছু করার..এই নিয়ে আমার আমি।

২.       লেখালেখির সাথে সম্পর্কের শুরু হলো কী করে?

–       আমার শখ লেখালেখি। শুরুটা হয়েছিলো ১৯৯৯ সালে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে। তখন বিভিন্ন পত্রিকার ফিচার পাতায় লিখতাম। পরবর্তীতে লেখালেখির নেশাটিকেই পেশা হিসেবে নিয়ে নেই। এভাবেই শুরুটা।

৩.      কেন লিখেন? লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

–      আসলে শখ থেকেই লেখালেখি করা। তার পাশাপাশি নিজে যা জানি ভালো সেসব বিষয় যাতে অন্যদের জানাতে পারি এ জন্যই লেখালেখি। প্রযুক্তি নিয়েই থাকতে চাই আর ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি নিয়ে আরো বই লেখার ইচ্ছে আছে। পাশাপাশি লেখালেখিও চলবে। প্রযুক্তির পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়েও লেখালেখির ইচ্ছে আছে।

৪.       লেখালেখির ক্ষেত্রে কোন অনুপ্রেরণা আছে কি? কাউকে কি অনুসরণ করেন?

–      শখ থেকেই লেখালেখি। তবে এখনও কেউ অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে নি। লেখালেখির ক্ষেত্রেও কাউকে অনুসরণ করি না। নিজের মতো লিখি।

৫.       অনেকের ধারনা এখন অধিকাংশ লেখকের লেখা একই প্যাটার্নের হয়ে থাকে, নতুনত্ব খুব কম পাওয়া যায় – আপনি কি এর সাথে একমত?

–      হতে পারে। দেখা যায় বইমেলায় গল্প, উপন্যাস, কবিতার বই যেভাবে আসছে অন্যান্য বই তেমন আসছে না। যেমন, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, গণিত ইত্যাদি। একই বিষয় হওয়ায় অনেক সময়ই নতুনত্বের বিষয়টি কমে যায়।

৬.       নতুন লেখকদের বিষয়ে পাঠকদের মনোভাব কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?

–      নতুন লেখকরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে পাঠকদের জন্য ভালো কিছু দেয়ার চেষ্টা করে। আমার মনে হয় নতুন লেখকদের বই পড়ে পাঠকরা নতুনদের উৎসাহ বাড়াতে পারেন কয়েকগুণ। তাই নতুন লেখকদের ভালো বই বেশি কেনা উচিত বলে আমি মনে করি।

৭.       একজন ব্লগারের কি তার প্রতি কোন দায়বদ্ধতা আছে? থাকলে কতটুকু? বাংলা ব্লগে দায়বদ্ধতার কী রকম ছাপ দেখতে পান?

–      বর্তমানে বিকল্প মিডিয়া অনেক ভালো করছে। সেদিক চিন্তা করলে ব্লগারদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই যায়। আমার মনে হয় ব্লগারদের জন্য সবগুলো ব্লগের পক্ষ থেকে কিছু কিছু করা হচ্ছে।

৮.      ব্লগের ফিডব্যাক নিয়ে আপনার মন্তব্য কী? সবসময় কি ঠিক মনে হয়?

–      ব্লগে কোন লেখা প্রকাশের পর অনেকের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। যা সত্যিই দারুণ। তবে সবক্ষেত্রে ফিডব্যাক একই রকম হয় না। তবে বিষয়টি দারুন।

৯.       ব্লগ আসার পর মানুষ খুব বেশি ওয়েব-নির্ভর হয়ে গেছে, আগের মত বই কিনে পড়ে না – এ নিয়ে আপনার কী মতামত?

–      এটা ঠিক না। যিনি পাঠক তিনি বই পড়ার ক্ষেত্রেই বেশি আগ্রহী বলে আমি মনে করি। ব্লগে তাৎক্ষনিক লেখা দেয়া যায় সাথে সাথে, মতামত, পরামর্শও পাওয়া যায়। তবে পড়ার ক্ষেত্রে ছাপানো বই পড়ার মজা অন্য কোন ভাবে পাওয়া যায় না। আমার মনে হয় যারা সত্যিকারের পাঠক তারা বই কিনেই পড়েন।

১০.     আপনার নতুন প্রকাশিত বই সম্পর্কে পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?

–    বর্তমানে কাজের ক্ষেত্রে খুব সহজেই ব্যবহার করা যায় মুক্ত সফটওয়্যার। নির্দিষ্ট ভাবে পুরো অপারেটিং সিস্টেম ছাড়াই বেশ কিছু জনপ্রিয় মুক্ত সফটওয়্যার রয়েছে যা যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন সুবিধার মুক্ত সফটওয়্যার নিজের ভাষায়ও ব্যবহার করা যায়। নানা কাজের এ ধরনের মুক্ত সফটওয়্যারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এ বইতে। শুধু নির্দিষ্ট মুক্ত অপারেটিং সিস্টেমগুলোর জন্য নয় সফটওয়্যারগুলো প্রায় সব ধরনের অপারেটিং সিস্টেমেই ব্যবহার করা যাবে। এ ধরনের কাজের একগুচ্ছ মুক্ত সফটওয়্যার নিয়েই ‘নানা কাজের মুক্ত সফটওয়্যার’ বইটি। বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন নিয়াজ চৌধুরী তুলি। বইটি পাওয়া যাবে তাম্রলিপি স্টলে (স্টল নং ৪৫১/৪৫২/৪৫৩) এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড স্টলে (স্টল নং ৪৮৭/৪৮৮)। বইটি কেনা যাবে http://www.rokomari.com/book/10644 সাইট থেকেও। বইটির দাম ১০০ টাকা..

পূর্বে প্রকাশিত সাহিত্যস্বর:

আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(৫): নির্ঝর নৈঃশব্দ্য

আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(৪): মাইনুল এইচ সিরাজী

আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(৩): আবদুল্লাহ আল মাহমুদ

আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(২): অদিতি কবির

আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(১): আবদুর রাজ্জাক শিপন

সাহিত্যস্বর সম্পর্কে

সরব বাংলাদেশে বই জনপ্রিয়করণের লক্ষ্যে কাজ করতে চায়। এই লক্ষ্যে আমরা নানান ধরনের কাজ করতে চাচ্ছি। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে একুশে বইমেলা ২০১২তে বিভিন্ন ব্লগারদের বই আমরা প্রোমোট করতে চাইছি। প্রতিদিন একজন করে ব্লগার/লেখক এর ইন্টারভিউ আমরা ছাপানোর পরিকল্পনা নিয়েছি।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বইপড়ুয়া, সাহিত্য-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

3 Responses to আয়নায় মুখোমুখি ব্লগার-লেখক(৬): নুরুন্নবী হাছিব

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    ভাল লাগলো। 🙂

  2. অক্ষর বলেছেনঃ

    বইটা পড়ার অপেক্ষায় 🙂

  3. নূরবাহার ঈয়াশা বলেছেনঃ

    খুবই দরকারী একটা বই!

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।