প্রথম কবে TEDএর সাথে পরিচয় হয়েছে, ঠিক মনে নেই। খুব বেশিদিন যে হবে না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত। তবে এই অল্প সময়ে যতটা মুগ্ধতা আর আগ্রহ জেগেছে, তার বশেই সেদিন ঢাকা তথা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২য় TED কনফারেন্সে অডিয়েন্স হিসেবে অ্যাপ্লাই করে ফেললাম দারুণ আগ্রহ নিয়ে আর যদি ভাগ্যে থাকে, তবে এই ১৭ তারিখ আসছে প্রতীক্ষিত সেই দিন।
আমি কী নিয়ে কথা বলছি সেটা এতক্ষণে যারা বুঝে গেছেন তাদের জন্য নয়, বরং TED কী সে সম্পর্কে যাদের তেমন ধারণা নেই তাদের জন্যই মূলত এই পোস্ট।
Technlogy, Entertainment, Design – এই তিন শব্দের আদ্যাক্ষর নিয়েই TED। এক কথায় বলতে গেলে – এগুলো তো বটেই, সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুগান্তকারী কিংবা ব্যতিক্রমী আইডিয়া শেয়ারিং-এর প্ল্যাটফর্ম এই TED। আইডিয়াধারীরা TED আয়োজিত কনফারেন্সে খুবই সীমিত সময়ের মধ্যে(সাকুল্যে ১৮ মিনিট) তাদের বক্তব্য জানিয়ে দেন শ্রোতাদের। TEDএর মূলমন্ত্র – ভাল ভাল যত চিন্তা আর উপলব্ধি, সেগুলোকে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দেয়া: Ideas Worth Spreading!
কারা এসব বক্তা? বিল ক্লিনটন, ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল, জেমি অলিভার থেকে শুরু করে নাম-না-জানা জিনিয়াসেরা এসে তাদের অসাধারণ ভাবনাগুলো ভাগ করে নেন পৃথিবীবাসীর সাথে। শ্রোতার সারিতেও থাকেন বাঘা বাঘা সব মানুষ। আপনি-আমি তো অবশ্যই! 😀
মূল ইভেন্ট – TED কনফারেন্স প্রতি বসন্তে দুবার অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে, আর TED গ্লোবাল কনফারেন্স প্রতি গ্রীষ্মে একবার যুক্তরাজ্যে। তবে এর বাইরেও নানান জায়গায় TED কনফারেন্সের আয়োজন করে থাকে, যেমন TEDIndia, TEDWomen, TED Salons ইত্যাদি। Richard Saul Wurmanএর হাত ধরে ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই অলাভজনক উদ্যোগ আজ কেবল কনফারেন্সেই সীমাবদ্ধ নেই, সাথে আছে –
- TEDTalks ভিডিও সাইট (এখানে কনফারেন্সের বক্তৃতাগুলো শুনতে পারবেন যে কেউ, কোন খরচ ছাড়াই),
- TED ওপেন ট্রান্সলেশন প্রজেক্ট (উন্মুক্ত অনুবাদ কর্মসূচি – যে কেউ যে কোন ভাষার বক্তৃতা অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে পারবেন এর আওতায়),
- TED প্রাইজ (প্রতি বছর একজন সেরা বক্তা ১০০,০০০ ডলারের পুরষ্কার আর সেই সাথে পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য নিজের একটা ইচ্ছা পূরণের সুযোগ পান, কারেন আর্মস্ট্রং যেমন পেয়েছেন Charter for Compassion – সহানুভূতির সনদ বাস্তবায়নের),
- TEDFellows (এই কর্মসূচি নানান ক্ষেত্রে সৃজনশীল উদ্যোক্তাদেরকে তাদের কাজে সাহায্য করে থাকে),
- TEDx – যার মাধ্যমে স্বাধীনভাবে মূল TED কনফারেন্সের অনুকরণে ইভেন্ট আয়োজন করা যায়, যে কোন স্থানে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য TEDxDhaka এমনই এক ইভেন্ট।
- TEDMED (স্বাধীনভাবে আয়োজিত স্বাস্থ্য বিষয়ক TED সম্মেলন),
- TED Books (কোন শক্তিশালী চিন্তাকে স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করে এমন সর্বোচ্চ ২০,০০০ শব্দের বই),
- TED Conversations (প্রশ্ন, চিন্তা, বিতর্ক – এই ৩ বিষয়ে অন্যদের সাথে ভাবনা শেয়ারের সুযোগ পাওয়া যায় এর মাধ্যমে),
- Ads Worth Spreading (বিজ্ঞাপনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে TEDএর আয়োজন)
দিনের শেষে TEDএর লক্ষ্য একটাই, একটা সুন্দর, সুস্থ পৃথিবীর জন্য চিন্তার খোরাক যোগানো। পরিবর্তন আসবে কি আসবে না তা নিশ্চিত না হোক, চেষ্টা করতে তো দোষ নেই!
কিন্তু TED নিয়ে এত যে কথা, তা থেকে আমাদের অর্জন? সবচেয়ে ছোট অর্জনের কথাও যদি বলতে হয়, নিজের ভাবনাগুলোকে অন্যদের সাথে মিলিয়ে নেওয়ার আর উপলব্ধিগুলোকে যাচাই করে নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ TED।
চমৎকার কিছু TEDTalk শেয়ার করছি এখানে:
ওহ্ আর খুশির খবর হচ্ছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি TEDxDhaka ইভেন্টের পুরোটা সময় অনুষ্ঠানের লাইভ আপডেটিং করবো আমি সরব থেকে। 😀
দারুন! আমি এই তথ্যগুলো জানতামনা মিস করে ফেললাম 🙁
ওহ্। 🙁
আগামীবার ইনশাআল্লাহ্। 🙂
TeD এর অনেক ভিডিওই অনেককেই শেয়ার করতে দেখি। কিন্তু সেভাবে কখনই দেখা হয়নি। কারণ হয়তো, শোনার চেয়ে দেখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি বলে।
আচ্ছা। 🙂
১৭ তারিখের TEDxDhaka অ্যাটেন্ড করার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ!! 😀
দেখা হবে ইনশাআল্লাহ্। 😀
ভালো লেগেছে পোস্ট
অনেকেরই কাজে লাগবে
🙂
টেড এর প্রেমে পড়ি ড্যান আরিয়েলি’র এই ভিডিও লেকচার দেখে।
http://www.ted.com/talks/dan_ariely_asks_are_we_in_control_of_our_own_decisions.html
এছাড়াও খুবই ইমোশনাল একটা লেকচার জ্যাসিকা জ্যাকলি’র
http://www.ted.com/talks/jessica_jackley_poverty_money_and_love.html
এবং মাইকেল কাহনেম্যানের এই ভিডিওটা।
http://www.ted.com/talks/daniel_kahneman_the_riddle_of_experience_vs_memory.html
আর চমৎকার এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ 🙂
অরিয়েলির এইটা আমারও দারুণ প্রিয়!
আপনাকেও ধন্যবাদ চমৎকার লিঙ্কগুলির জন্য। শুনছি। 🙂
দারুন ব্যাপার। কিন্তু বক্তা হিসেবে আমি খুবই খারাপ 🙁 তবে বাপ্পি ভাইয়া দারুন বলতে পারে 😛
আপু পচায়েন না!
😛
চমৎকার সামিরা!
আমিও এখন অধীর আগ্রহে TEDxDhaka এর অপেক্ষায়! 😀
দেখা হবে ফিনিক্সপু! 😀 ইনশাআল্লাহ্।
ইনশাআল্লাহ আপু, বেঁচে থাকলে দেখা হবে। 😀
আমি টেডের অনেক ভিডিও দেখেছি আর খুবি অনুপ্রানিত। এতো এতো সুন্দর আইডিয়া, চিন্তাভাবনা, আবিষ্কার কি সুন্দর করে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা হয়। কিন্তু আমি কখনি ভাবিনি যে বাংলাদেশে এই অনুষ্ঠান হতে পারে! আর যখন জানতে পারলাম, মানে আজ এই মাত্র, আমি হতাশ! আমার আর সুযোগ থাকলো না ইভেন্টে যোগ দেবার। হায় হায়, কপাল আমার! দেখি, সুমন ভাইকে বিশেষ আকুতি জানিয়েছি। দেখা যাক, আমার একটু হলেও সৌভাগ্য হয় কিনা।
হয়েছিল তো সৌভাগ্য? 🙂
ভালো কথা আপু, আর কোনো কি উপায় নাই এই ইভেন্টে যোগ দেবার?
আর কিছুর কথা তো জানি না আমি, তবে ইভেন্টের পর ভিডিও আপলোড করা হয় ওয়েবসাইটে, সেখানে দেখে নেয়া যায়। আবার অনেক সময় লাইভ ওয়েবক্যাস্টও হয়, এবার হয় নি অবশ্য।