কথা দিলাম

ছবির কাহিনীঃ কাঁকড়ার একটি হাতের ছবি। কবিতাটিতে শূন্যতার কথা বলেছি। অনেকটা এই ছবিটির মতো যেখানে কাঁকড়ার একটি হাত তার অপর দিকের হাতের অপেক্ষাতে আছে সেই কতকাল ধরে। তার সামনে শুধু দীর্ঘ শূন্যতা।

 

বসন্তের আগমনে দশম বছরের মত এবারো আরেকটি ভালবাসার কবিতা………আমার ছন্দে…………

 

তখন রাত। গভীর রাত। চারিদিকে যেন ঝেঁকে বসেছিল কনকনে শীত, প্রবল বাতাসে। সমুন্দ্র থেকে ভেসে আসছিল ৪ নাম্বার সতর্ক সংকেত এর ঢেউয়ের গর্জন। এরি মাঝে আমরা বন্ধুরা বিদ্যুৎহীন প্রবাল দীপে, খোলা ছাউনির নীচে বসে ছিলাম সংগীত মূর্ছনার মায়াজালে। তিরিশটি মাথার ক্রমাগত দুলুনিতে হাহাকার করা ভালবাসার গানের সুরগুলো মিলে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছিল টিমটিমে জ্বলতে থাকা হারিকেনের আলোতে। জিকো, তউসিফ, রেজা, তাবাসসুম ভাইয়ার গিটাররের তারগুলো কেঁপেই যাচ্ছিল ফাইয়ায এর গানের সেই উদাত্ত আহবানে “আমার হাড় কালা করলাম রেএএএএ…..আমার দেহ কালার লাইগা……”

একটুখানি উষ্ণতার তৃষ্ণাতে;  সুরের ছন্দের সাথে বার বার হাতড়ে ফিরছিলাম নিজের অতীতকে, নিজের সবচেয়ে মূল্যবান সৃতিগুলোকে। কি মনে হতে যেন পিছনে ফিরে তাকালাম, দেখি ছাউনির আসে পাসে মায়াবী আলো কেমন যেন হাতছানি দিচ্ছি। বসে থাকতে পারলাম না। ঘোর লাগা দৃষ্টি নিয়ে, উঠে হাঁটতে শুরু করলাম সৈকতের দিকে। যা দেখলাম সেটা জীবনেও ভুলতে পারবনা। নিসুথ রাতে গর্জন করা সমুদ্রের সামনে সৈকতের সৌন্দর্য দেখে চিৎকার করে উঠলাম আনন্দের আতিশয্যে। সাদা-সফেদ-কোমল-আলোতে ভেসে যাচ্ছে সৈকত-সমুদ্র আর আকাশ। এরেই বুঝি জোছনা বলে। জোছনা বুঝি এতো মায়াবী হতে পারে………..তাইতো কথা দিলাম তাদেরি নামে…………………

 

 

কথা দিলাম

 

আমার শূন্য সময়গুলো,

আজও শূন্যই রয়ে গেলো।

অজানা গন্তব্যে,

হৃদয় ভরা, কথা গুলো, মুক্তি পেলোনা-

গাঙচিলের ডানায়,

প্রবল লোনা জলে।

 

নীল আকাশ ভরা, নীরবতা

আজও অভিমানে, চুপটি করে

ডুব দিয়ে রয়।

শীতের কোন এক সকালে;

হু হু করা কনকনে বাতাসে।

 

আমার এ শূন্য হৃদয় আজও-

ঢেউয়ের মাঝে, নোঙর ফেলা

শূন্য মাছ ধরা নৌকার মতো; অপেক্ষায়।

সেই মেঘ ঢাকা দিন,

কিংবা ছায়াপথময় রাত্রির খোঁজে।

 

তুমি ছাড়া এই শূন্য সময়ে,

তোমার কল্পনা নিয়েই ঘুরে ফিরবো

কেয়া বন পথে,

হেটে আসবো যতদূর চোখ যায়

দৃষ্টির ওপারে।

 

 

সাদা বালির, সৈকতে

বিছানো মাদুরে।

শুয়ে থাকার ছলে-

রাতের পর রাত কেটে যাবে।

লাল নীল, তারাদের মেলায়

কোন এক, প্রিয় তারার খোঁজে।

 

তোমার অবয়ব কল্পনায়, ক্লান্ত এ হৃদয়

আজ তোমাকেই খুঁজে পেতে চায়।

হোক না তুমি বহুদূরে

ঝাপসা হওয়া সময়ের ভিরে।

 

সামনে নিয়ে- আলোকহীন শূন্যতা;

গভীর নীল জলে।

এ শূন্য হৃদয়; আজও

তোমাকেই দেখাতে চায়।

কিভাবে উঠে জাহাজ দুলে দুলে

তাণ্ডব করা ঝড়ে।

 

আজও আমি, একা বসে

যখন পাওয়া না পাওয়া গল্প গুলো,

নিভু নিভু, আগুনের সাথে মিলাবে

কাঁপা কাঁপা -শিখার ধোঁয়াতে,

নামহীন অজানাতে।

সাথে মিশবে, হাহাকারের স্পন্দন

সাতরঙা গানের সুরে ।

 

তখনো;

রূপালী-তরল, জ্যোৎস্নার ঠাই হয়ে,

অসীম সমুদ্রের বুকে, জেগে থাকা,

জীবন্ত প্রবালের, এই দ্বীপে।

পাশের ফাঁকা দোলনাটা না হয়-

ফাঁকাই পরে থাকবে;

তোমার প্রহর গুনে।

 

নিঃসঙ্গ হৃদয় আমার;

করবে না আফসোস আজও।

ভেজা বালিতে পা ডুবিয়ে,

ধূমায়িত চায়ের কাপে;  নির্জনে-

রবে অপেক্ষায়।

তোমার চায়ের কাপ,

আর ফাঁকা দোলনাটা পাশে নিয়ে।

 

শুধু তুমি এসো-

কথা দিলাম,

আমার কবিতা

আমার স্বপ্ন

এই সমুদ্র

আর

ঐ আকাশের নামে।

 

এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে কবিতা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

11 Responses to কথা দিলাম

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    ভাল হইছে পোস্ট। ছবিটা আসতে এত্ত সময় লাগলো!
    নিজে নিজে টাইপ করছো নাকি? অভিনন্দন! 😛 টুকটাক ভুল আছে কিছু, দেইখো তো আরেকবার।

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    ভালো লাগছে 😀

  3. বাবুনি সুপ্তি বলেছেনঃ

    কাঁকড়ার হাত দেখে আমি প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম 😛

    সুন্দর হয়েছে কবিতা।

  4. মুবিন বলেছেনঃ

    ভালো লাগলো 🙂

  5. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    কবিতাটা সুন্দর হয়েছে।
    পড়তে বেশ লাগলো।

    অফটপিক- বানান!

  6. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    লাইক!! 😀

  7. সাদামাটা বলেছেনঃ

    ছবিটা সুন্দর। কবিতাটাও 🙂

  8. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    পুরো পোস্ট পড়ে শেষ করেও দেখি ছবি লোড হওয়া শেষ হয় নি 😛

    কবিতা ভালো লেগেছে। আর, কবিতার আগের বর্ণনা পড়ে মনে হলো, এক ছুটে ওই সাগরতীরে চলে যাই…

  9. পলাশ মিজানুর রহমান বলেছেনঃ

    এত এত কথা দিলেন, রাখতে পারবেন তো?
    🙁

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।