সাগর-রুনির মেঘ: এক শেষ না হওয়া গল্প

আজ আমি তোমাদের একটি গল্প শোনাবো। এ এক হতভাগা রাজপুত্রের গল্প। রাজা আর রানী আদর করে যার নাম রেখেছিলো ‘মেঘ’। হয়তো ভেবেছিলো তপ্ত রোদে সে মাথার ওপর ছায়া হয়ে শীতল পরশ দেবে, ক্লান্তির অমানিশায় ছুঁয়ে যাবে পেঁজা তুলোর মত কিংবা বৃষ্টি হয়ে ধুয়ে দিয়ে যাবে সব বেদনা। কারণ মেঘ ছিলো তাদের ভালোবাসার ফসল, অনেক যত্নে গড়া রত্ন। আজ আমি সেই মেঘের গল্প শোনাবো তোমাদের। মেঘের গল্প, ছবির ভাষায় মেঘের কাব্য।

মেঘের জন্ম হলো আজ থেকে বছর পাঁচেক আগে। রূপকথার এক রাজ্যে। রাজা আর রানী তো ভীষণ খুশি। মেঘের জন্মে তাদের পরিবারে যেন আনন্দের বান ডাকলো। মেঘ জন্ম নিলো, আদরে আদরে বড় হয়ে উঠতে লাগলো রাজা-রানীর ভালোবাসার সমুদ্রে।

Boro Hoye Otha

 

ছোট্ট মেঘ ভেবেছিলো সে আকাশ ছোঁবে, মেঘের জন্মই তো তার জন্য। তাই সে মাঝে মাঝেই রাজার কাঁধে চড়তো। কাঁধে চড়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতো।

Babar Kadhe

 

মেঘের দুরন্তপনায় সমস্ত রাজ্য সারাদিন আনন্দের হুল্লোড়ে মেতে থাকতো। রাজা-রানী প্রতিদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে যোগ দিতো সেই আনন্দে।

Baba-Mayer Shathe Megh

 

তাই বলে কিন্তু মেঘ মোটেও বাজে সময় নষ্ট করতো না। রাজা যখন ঘরের বাইরে যেত তখনই সে এক ছুটে চলে যেত রাজার পড়ার ঘরে। কী জানি সে কী ভাবতো! হয়তো ভাবতো বড় হলে এই সব বই তার হবে। এক ঘর ভর্তি বইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে সে স্বপ্ন দেখতো তার বাবার মত বড় হবার, মায়ের মত বড় হবার।

Babar Porar Ghore Megh

 

তারপর যদি বা কখনো টের পেত যে তার বাবা ফিরে এসেছে কাজ শেষে, অমনি ছুট ছুট বাবার কোলে, শুরু হয়ে যেত রাজার সাথে তার যত আহ্লাদপনা।

Babar Shathe Megh

 

মাঝে মাঝে বায়না ধরতো মেঘ ঘুরতে যাবে, সোমেশ্বরীর তীরে। রাজা কখনো নিষেধ করতো না। সময় পেলেই রাজপুত্রকে নিয়ে বেড়িয়ে আসতো নদীর তীর থেকে।

Shomesshorir Teere

 

আর কখনো যদিবা রাজা সময় না পেতো, ছোট্ট রাজপুত্র মেঘ ছুটে যেত রানীর কাছে। মায়ের আদরে আদরে সিক্ত হয়ে তখন তার কতইনা দুষ্টুমি!

Mayer Shathe Megh

 

সারা প্রাসাদ জুড়ে চলতো মেঘের ছুটোছুটি আর হুটোপুটি। ঘরময় দৌড়ে বেড়ানো, এমনকি পায়রাদের সাথে ছুটে ছুটে পাল্লা দেয়া কিছুতেই তার কোন কমতি ছিলো না।

Payra Dhora

 

সাথে ছিলো আরও একটা শখ। ছবি তুলতে সে খুব ভালোবাসতো। ছোট ছোট হাতের ছোট্ট মুঠোর ভিতর ক্যামেরাটা ধরে সে বাবা-মায়ের ছবি তুলতো। শুধু যে ছবি তুলতো তা-ই নয়, বাবা আর মাকে তার নির্দেশমত ছবির জন্য ঠিকঠাক দাঁড়াতেও হতো। তার ভয় ছিলো বাবা-মাকে যদি কোনভাবে পঁচা দেখায় ছবিতে! বাবা-মাকে যে সে খুব ভালোবাসে। তাদের ছবি পঁচা হলে মেঘের নিজের কষ্ট হবে না বুঝি?

Megh- The Photographer

 

মাঝে মাঝে ছোট্ট রাজপুত্র রাজার সাথে চোর-পুলিশ খেলতো। রাজা হতো চোর আর রাজপুত্র পুলিশ। তারপর যা হয়। পুলিশ ধরে ফেলে চোরকে আর চোরের তখন সে কী মন খারাপ! মেঘ ছিলো এমনই। সে বাজে লোকদের শাস্তি দিতে চাইতো, রাজা আর রানীকে সে এতোটাই ভালোবাসতো যে কখনো তাদের কেউ কিছু বললে সে তেড়ে আসতো। সে চাইতো তার বাবা-মাকে রক্ষা করতে। কিন্তু শেষ অবধি বাবা-মাকে রক্ষা করতে সে পেরেছিলো কি?

Police Megh

 

সারাদিন ছুটোছুটি করে, ছবি তুলে আর চোর-পুলিশ খেলে যখন ছোট্ট মেঘ ভীষণ ক্লান্ত, তখন শুরু হতো টেবিলে বসে তার আঁকিবুঁকি খেলা। একবার রাজার জন্মদিনে সে একটি উপহার দিয়েছিলো। সেটি ছিলো নিজের হাতে আঁকা তার বাবার ছবি! ছবি দেখে রাজা তো মহাখুশি। কিন্তু রাজপুত্র যেই দেখলো রানীকে কিছুই দেয়া হয় নি বলে সে মন খারাপ করে বসে আছে, তখন সে তাকে কথা দিলো যে রানীর জন্মদিনেও তাকে অমনি একটি আঁকা ছবি সে উপহার দেবে। কেউ তখনো জানতো না, রানীর সেই জন্মদিন আর কখনো আসবে না!

Megh er Akibuki

 

মেঘের একটা প্রিয় খেলা ছিলো। অনেক অনেক দূরের মাঠে সে প্রায়ই ঘুরতে যেত রাজা-রানীর হাত ধরে। তারপর বাবা-মাকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে রেখে সে প্রায় দিগন্তের কাছাকাছি চলে যেত। রাজা-রানী যখন চিন্তায় চিন্তায় ব্যাকুল হয়ে উঠতো ঠিক তখনই এক নিমেষে মেঘ ছুটে চলে আসতো তাদের কাছে। এমনি একদিন সে ছুটতে শুরু করলো সেই দিগন্তের কাছ থেকে। ছুটতেই লাগলো, ছুটতেই লাগলো। কিন্তু সেই মাঠের কোন শেষ সে দেখতে পেলো না। যতই দৌড়ে মেঘ সামনে এগিয়ে যায়, রাজা-রানীর ছবিটা যেন ততই ঝাপসা হয়ে আসে, আরও দূরে মিলিয়ে যায়। ছোট্ট মেঘ তবু দৌড়োতে থাকে, ছুটে যেতে থাকে বাবা-মাকে স্পর্শ করার আশায়।

Fire Asha

 

তারপর রাজা আর রানী একদিন হারিয়ে যায় চিরতরে। রাজ্য পুরো শোকে স্তব্ধ। রাজপুত্র তখনও দৌড়ে চলেছে, তার কাছে সবসময়ের হিরো যে সেই স্পাইডারম্যানকে ডেকে চলেছে যাতে স্পাইডারম্যান এসে তার বাবা-মাকে ফিরিয়ে দেয় তার কাছে। স্পাইডারম্যান আসে নি। রানীর জন্মদিনে মেঘের আর নিজের হাতে আঁকা মায়ের ছবি উপহার দেয়া হয় নি, কখনো হবে না। ছোট্ট মেঘ তবু বুঝতে পারে না। সে এখনও বিশ্বাস করে বসে থাকে তার বাবা-মা একদিন ফিরে আসবে। পুরনো ছবির অ্যালবাম জড়িয়ে সে বাবা-মাকে খুঁজে ফিরে, কবে যে তারা ফিরে আসবে, ছোট্ট মেঘ আবার তাদের একসাথে দাঁড় করিয়ে ছবি তুলবে! বাবা-মা ফিরলে সে আবার পুলিশ হবে, যারা যারা তার বাবা-মাকে মেরেছে তাদের খুব করে শাস্তি দেবে, দেবেই দেবে।

Megher Poribar

 

গল্পের শেষে মেঘের জন্য আমার মনটা কেঁদে যায়। আমি মনে মনে মেঘকে বলে চলি, ‘মেঘ তুমি ছায়া হও, পেঁজা তুলো হও কিন্তু বৃষ্টির মত নিজেই ঝরে যেও না। কারো উপর অভিমান করে কালো মেঘের মত মুখ ভারি করে থেকো না। তোমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার কবে হবে, আদৌ হবে কিনা তাও জানি না কিন্তু তবু তুমি ছায়া হও, পেঁজা তুলো হও। একা একা দূরে উড়ে চলে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেও না।’

ফিনিক্স সম্পর্কে

"প্রিয় পতাকার লাগি // জটায়ুর মত রক্ত ঝরাতে // আমিও প্রহর জাগি..." https://www.facebook.com/phoenix.chhanda
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে পাগলামি, বিবিধ, স্মৃতিচারণ, হাবিজাবি-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

47 Responses to সাগর-রুনির মেঘ: এক শেষ না হওয়া গল্প

  1. অক্ষর বলেছেনঃ

    আপি এই ধরনের লেখাগুলো পড়তে পড়তে খুব কষ্ট লাগে, নিজেকে বড় অসহায় লাগে, মনে হয় আজ মেঘের যায়গায় যদি আমি হতাম ! ভাবতেই কেমন জানি লাগে, আম্মু-আব্বু থাকবেনা, এইটা হয় নাকি? আর যখন দেখতে হয় এই ছোট্ট ছোট্ট মানুষগুলোকে আজীবন এক কান্না বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে তখন অনেক কান্না পায়, মনে হয় ওই নরখাদকগুলাকে যদি পেতাম তাহলে জিজ্ঞাস করতাম ” আচ্ছা তুই কি মানুষ না, তোর কি বাবা-মা ছিল না? মায়ের ভালোবাসা, বাবার শাসন কি বুঝতি না? তোরা কি ? ? আল্লাহ তোদের কেন বানাইছে??” বিশ্বাস করো একদিন এই কুকুর গুলার শাস্তি হবেই, আর মেঘের জন্য অনেক দোয়া করি, আল্লাহ ওকে শক্তি দিক, ও যেন অনেক ভালো একজন মানুষ হতে পারে। 🙁 🙁

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      আমিও মেঘের জন্য প্রার্থনা করি অক্ষর। যেদিন এই ঘটনা ঘটেছে তার পরের দিন আমার পরীক্ষা ছিলো, তবু ঘন্টা দুয়েকের জন্য আমি একেবারেই স্বাভাবিক হতে পারি নি, পড়াশুনো মোটামুটি একরকম বন্ধ ছিলো। সেই দিন থেকে নামাজে আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাচ্ছি সাগর ভাইয়া আর রুনি আপুর জন্য, তাদের ছোট্ট রাজপুত্র মেঘের জন্য।

      ৩-৪ দিন তো বয়ে গেলো, তবু কেন এখনও চোখে জল আসে এই ঘটনার কথা ভেবে? আমি সত্যি জানি না।

  2. মুবিন বলেছেনঃ

    ছোটবেলায় যত গল্প শুনেছিলাম আর পড়েছিলাম সব গল্পেরই শেষ হতো এভাবে, তারপর রাজা-রাণী আর রাজপুত্র-রাজকন্যা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল। কিন্তু এখন কোন গল্পই এভাবে শেষ হয় না। গল্প শুরু হতে না হতেই কারা যেন থামিয়ে দেয় সব কিছু।

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      এখন গল্প শুরু হতে না হতেই কারা যেন থামিয়ে দেয় সব কিছু>> কারা থামায়? কেন থামায়? এইসব সুন্দর রূপকথার গল্প থামিয়ে দিতে ওদের একটুকুও হাত কাঁপে না বুঝি?

  3. বাবুনি সুপ্তি বলেছেনঃ

    একটা লেখা দেখলাম ফেবুতে। যেভাবে মেঘের বাবা মায়ের উপর নোং করা কাঁদা ছোড়া হচ্ছে, কিভাবে এই ছোট বাচ্চাটা এসব সহ্য করে বড় হবে! এই ছবি দেখে কি বলবে যে এমন কিছু হতে পারে! যখনি কিছু লুকানোর দরকার হয়, অনেক গুলো মিথ্যে দোষ দিয়ে দেয়া হয়।

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      দুটো কারণ হতে পারে আপু,
      ১. মানুষের খেয়ে-দেয়ে কোন কাজ-কাম নাই। তাই এইসব ফালতু কাহিনী বানায়।
      ২. ব্যাপারটা রাজনৈতিক। সাগর-রুনি খুব সম্ভবত এমন কিছু জেনে গিয়েছিলো যার কারণে তাদেরকে সরে যেতে হয়েছে পৃথিবী থেকে এবং এই কারণটাই সবথেকে ভয়ংকর। কারণ এটা হয়ে থাকলে আসল খুনির ধরা পড়বার বা বিচার হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। ওদের রুম পুরো ওলোট-পালোট ছিলো, তার মানে কিছু খোঁজার চেষ্টা চালানো হয়েছে। তাছাড়া ল্যাপটপ, মোবাইল ছাড়া আর তেমন কিছুই হারানো যায় নি, তার অর্থ হলো দামী অলংকার বা টাকা-পয়সার প্রতি হত্যাকারীদের কোন লোভ ছিলো না।
      মিথ্যে দোষটা একারণেই দেয়া, যাতে ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।

  4. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    এত্ত মন খারাপ হয় 🙁

  5. নোঙ্গর ছেঁড়া বলেছেনঃ

    ছেলেটার কথা ভাবলে মন খারাপ লাগছে। এরকম আরো কত সাগর আমাদের সমাজে যে আছে!! কবে বন্ধ হবে এসব 🙁

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      ঠিকঠাক বিচার না হলে এসব কিভাবে বন্ধ হবে? কেন বন্ধ হবে?
      বাংলাদেশে এ পর্যন্ত কোন সাংবাদিক হত্যার সুষ্ঠু বিচার হয় নি।

  6. সামিরা বলেছেনঃ

    বিচার না হলে এরকম ঘটনা একের পর এক ঘটতেই থাকবে, ঘটেই তো যাচ্ছে।
    দেখতে দেখতে গা-সওয়া হয়ে গেছে বোধ হয় আমাদের বেশির ভাগেরই।

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      ঠিক, বিচার না হলে এসব ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
      তাছাড়া মৃত মানুষ নিয়ে অহেতুক নোংরা গল্প বানানো মানুষের জন্য সোজা। আদৌ এতো সস্তা বিনোদনের ক্ষেত্র খুব সোজাসুজি বন্ধ হবে কি?

  7. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    এমনিতেই ঘটনাটা নিয়ে মনটা অনেক খারাপ ছিল। তোর লেখাটা পড়ে মনে হলো, চোখের সামনে একটা রূপকথা খুব কষ্টের পরিণতি নিয়ে শেষ হলো।
    ভীষণ কষ্ট হয়……ভীষণ!

  8. Farah Nusrat বলেছেনঃ

    আমি মনে মনে মেঘকে বলে চলি, ‘মেঘ তুমি ছায়া হও, পেঁজা তুলো হও কিন্তু বৃষ্টির মত নিজেই ঝরে যেও না। কারো উপর অভিমান করে কালো মেঘের মত মুখ ভারি করে থেকো না। তোমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার কবে হবে, আদৌ হবে কিনা তাও জানি না কিন্তু তবু তুমি ছায়া হও, পেঁজা তুলো হও। একা একা দূরে উড়ে চলে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেও না।’

    🙁

  9. Farah Nusrat বলেছেনঃ

    ‘মেঘ তুমি ছায়া হও, পেঁজা তুলো হও কিন্তু বৃষ্টির মত নিজেই ঝরে যেও না। কারো উপর অভিমান করে কালো মেঘের মত মুখ ভারি করে থেকো না। তোমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার কবে হবে, আদৌ হবে কিনা তাও জানি না কিন্তু তবু তুমি ছায়া হও, পেঁজা তুলো হও। একা একা দূরে উড়ে চলে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেও না।’
    :'(

  10. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    জানেন আমার বন্ধু ঐশী মেঘদের ঠিক নিচতলায় থাকে. . . . ঘটনার পর ওর স্ট্যাটাস,
    jei mukhe 1st shunsilam je ..”eai shuno,amar na ekta barbie doll ase..tumi na otar moto dekhte…or naam megh…tomar naam ki???”and eai ekta kotha ro onek bar shunsilam tomar oi cute mukh theke…she mukh diye tumi ki kore tomar life er shobcheye terrible accident take describe korso…ami jani na…i just knw….u r brave boy ‘megh’….and tomar eai barbie doll api tomar jonno pray korbe…jn tumi ro onek brave how…promise… 🙁

  11. Zarin Tasnim Joyeeta বলেছেনঃ

    মেঘের আকাশ যেন শরতের আকাশের মতই শুভ্র হয় ।কালবৈশাখীর ঝড়ের সাথে লড়াই করার সাহস আর শক্তি যেন ও পায় যার কিনা রুপকথার গল্প শুরু না হতেই নিষ্ঠুর,নির্মম বাস্তবতার শিকার হতে হয়েছে …এইটুকু প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করার আমাদের সামর্থ্য হয়তো নেই ।সত্যি খুব অসহায় আমরা … স্বাধীন so called গনতান্ত্রিক দেশের অসহায় সাধারণ মানুষ। এভাবে থাকতে চাইনা আপু । এভাবে আর থাকতে চাইনা…একটা ছোট্ট বাচ্চা বাবা মার,ফুলের ,আকাশের,পাখির ছবি কেন আর আকবেনা! কেন সে লাশ , রক্ত , নির্মমতা , নিষ্ঠুরতার ছবি আঁকবে ! কেন আমাদের কিছ করার থাকবেনা!

  12. নীল বলেছেনঃ

    মানুষের জীবন, আর জীবনের পরিনতি কত অদ্ভুত, তার হিসাবো পাওয়া যায় না!
    কষ্ট লাগল পড়ে…

  13. শুভ পাল বলেছেনঃ

    কখনো ভাবিনি এরকম চিন্তা করতে হবে…এরকম একটা ঘটনা দেখতে হবে…মেঘের এক একটা কথা পড়ছিলাম…আর চোখের কোনে জল এসে জমছিলো…গল্পের শেষটুকু পড়ার সময় সারা শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো…আমাদের এই নিম্নমানের,অপরাধপ্রবন,পাপী এক সমাজ ব্যাবস্থার পাপের ফসল পেতে হচ্ছে মেঘের মত আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন নিয়ে জন্ম নেয়া মেঘের…উপরে যদি কেউ একজন থেকে থাকেন…কেনো এইসব হতে দে্ন…পাপের শাস্তি পাপীকে দিন…কেনো এই অবুঝ শিশুদের স্বপ্ন কেড়ে নেন? কেনো ওদের একটা সুন্দর সম্ভবনাময় ভবিষ্যত কেড়ে নেন??? জানিনা…!!!! এ তার কেমন বিচার…!!!!

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      উপরের সেই একজন ভীষণ ক্ষমতাবান ভাইয়া। তিনি শুধুই আমাদের পরীক্ষা নিয়ে চলেছেন, বিচারের সময় ঠিকই তিনি সুবিচার করবেন। কিন্তু এখন আমরা কী করি, এটাই হয়তো উনি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছেন। শুধু আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না অথবা বুঝতে চাইছি না। আমাদের নিজেদের ভেতরে বিশ্বাস নামক বস্তুটার যে বড্ড অভাব!

  14. km.musa বলেছেনঃ

    ai golpo amader home minister ar ridioi kadabe na karon tar niger kono santan ba megh nai

  15. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    কি বলবো আপু! আমি যদি মাহির, নয়তো রুনিপুর জায়গায় হতাম… এর বেশি আর ভাবতে পারি না…

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      ঠিক এই চিন্তাটা আমার মাথায়ও খেলা করে। আমি যদি সেই জায়গায় হতাম তবে কি আমার সন্তানও আজ অসহায়ের মত মানুষের দয়ার প্রার্থী হয়ে বেঁচে থাকতো!

  16. nowsher roman বলেছেনঃ

    আমি মেঘ-এর মামা। মেঘ আমাদের কাছেই আছে। আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি কাল থেকে আপনার অসাধারন লেখাটা পরছি। আমি যতবারি পড়ছি আমি র থাকতে পারছিনা। তারপর আমি বারবার পরছি। এই রুপকথা-র গল্পটা যে কতটাই বাস্তব আর ছবিগুলোর সাথে বর্ণনা… আমার একটাই প্রশ্ন কেন আমার বাবাটার সাথে এরকম হল??? আমার খুবি জানতে ইছছা করছে আপনার পরিচয়, আমাকে আপনি দয়া করে আপনার পরিচয়টা জানাবেন??

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      আপনি এই গল্পটা পড়েছেন সেইজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি ক্ষমাপ্রার্থী যে এইভাবে আমাকে গল্পটা লিখতে হলো, সত্য মাঝে মাঝে এতো নিষ্ঠুর হয়!

      • তাওহীদ হাসান বলেছেনঃ

        আপনার অনেক লেখা পড়ি। দয়া করে একটি সহায়তা করুন। সরবে আমার লেখা নিজের স্বরেও যোগ না হওয়ায় মনোবেদনায় আছি। কিছুই ভালো লাগে না। খুবই খারাপ লাগে। দয়া করে একটি কথা জানান। লেখকদের লেখা নিজের স্বরেও যোগ হবার জন্য কি মডারেশন হয়? যদি তাই হয়, পরিত্রানের ব্যবস্থা? আমার ব্লগকি এমন কোন ষ্টাটাসে আছে যে, প্রথম পাতায় ছাপা হবে না?
        জানালে, উপকৃত হব।

        • ফিনিক্স বলেছেনঃ

          আমি সরবের মডারেশানের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। লেখা নিজের স্বরে যুক্ত হওয়া নিয়ে কোন নিয়ম আছে কিনা আমি জানি না। মডারেশনের সমস্ত পদ্ধতিও আমার জানা নেই বলে আমি দুঃখিত।
          আপনার শেষ পোস্টে এই মাত্র আমি মন্তব্য করে এলাম। আপনার স্বরে গিয়ে কিন্তু আমি আপনার সবগুলো লেখাই দেখতে পেয়েছি। আপনি কেন পাচ্ছেন না, সেটা বুঝতে পারলাম না। অন্য কোথাও কোন সমস্যা আছে কিনা আরেকবার দেখে নিন।
          তারপরও সমাধান না হলে সরব টিমের কাছে আপনার প্রশ্ন লিখে জানতে চাইতে পারেন।

          ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ার জন্য।

  17. Muhammad Mumin বলেছেনঃ

    Meger basar kasa kasi thakar sotte o oke dekhar sujog amar hoi ni,tobi o or jonno amar chok theke pani jorceee

    tomar jonno valobasa roilo Meg

  18. নিপন বলেছেনঃ

    🙁
    অনেক খারাপ লাগল গল্পটা পড়ে…!

  19. তাওহীদ হাসান বলেছেনঃ

    শোকাহত। সহমর্মিতা। দূঃখ প্রকাশ। কিছু করতে না পারার আক্ষেপ . . .

  20. পাহাড়ি কন্যা বলেছেনঃ

    মেঘের জন্য খুবই কষ্ট হয়| এত বাচ্চা বয়সে বাবা-মাকে হারানোর বেদনা হয়তো আমরা অনুভব করতে পারব না| ওর রঙিন জীবনটা কিভাবে বর্ণহীন হয়ে গেল! আমাদের কিছুই করার নেই- ভাবতেই আরো কষ্ট হয়| আমরা কেবল সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশী| তবুও অপেক্ষার প্রহরগুলো মাঝে মাঝে হতাশার উদ্রেক করে|

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      আমি তো সেই কবে থেকে আশা করে করে এখন প্রায় হতাশায় ডুবতে বসেছি।
      জানি না, মেঘ এই দেশে থেকে কোনদিনও তার বাবা-মায়ের মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার আর পাবে কিনা।

  21. শুকপাখি বলেছেনঃ

    রুপকথার গল্প যেমন কল্পনাতেই থেকে যায়,তেমনি মেঘদের জীবনে অমানিশা কাটে না কিংবা বৃষ্টি হয়ে সব বেদনা ধুয়ে যায় না। কেননা রুপকথার রাক্ষসেরা যে বড় ভয়ঙ্কর।http://shorob.com/wp-includes/images/smilies/icon_sadfinal.gif

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।