আমার এই লিখাটির কোন পরিকল্পনা নেই, কোন অবতারণা নেই, কোন উপসংহার থাকবে কিনা তাও জানিনা, খুব অসম্ভব ধরণের সম্ভাবনা আছে লিখাটি এখানেই পড়ে থাকবে, কেউ পড়বে না, তবে এটুকু বলতে পারি, এই লিখাটিতে নিখাদ আবেগ দিয়ে লিখা কিছু কথা আছে, আর কিছু না হোক, আমার বিশ্বাস এই লিখাটিতে আমাদের, আমাদের ক্রিকেট দলের প্রতিটি ভক্তের না বলা কিছু কথা থাকবে……
বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই, খুব অবাক হয়ে লক্ষ করি, এই অভাগা মানুষগুলোর জীবনে খুব বেশি উপলক্ষ আসে না উৎসবে মেতে ওঠার, অসংখ্য কষ্টের ভীড়ে বহুদিন ধরেই আমাদের ক্রিকেট হয়তোবা একমাত্র উৎসবের উপলক্ষ, অনেক দিনই তো হয়ে গেল, সেই পাইলটের দুর্দান্ত ছক্কা মারা দিয়ে যার শুরু তারপর অনেক বল গড়িয়েছে মাঠে, আমরা হেসেছি আনন্দে, কেঁদেছি আনন্দে, আমরা অজানা অচেনা অসংখ্য মানুষের হাতে হাত মিলিয়ে গেয়েছি আমাদের বিজয়গাঁথার গান, বহুবার, শুধু একটা জিনিসের খামতি ছিলো, আমাদের দলের ধারাবাহিকতার অভাব ছিলো, অভাব ছিলো ধারাবাহিক ভালো খেলার, খুব কষ্ট নিয়ে দেখতাম, একটা জয়ের ঠিক পরের খেলাতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ছে আমাদের ব্যাটিং। দুর্দান্ত একটা খেলার পরের দিনই চূড়ান্ত রকমের বাজে ফিল্ডিং দিলো আমাদের দল……
কষ্ট পেতাম খুব, মনে আছে কেন জানি চোখে পানি চলে আসতো কোন কোন সময়, শেষ ব্যাটসম্যান উইকেটে, তবু আমি আশা করে থাকতাম, হতেই তো পারে, ৪টা বলে ৪টা ছয় তো মারতেই পারে ও, তাইনা?? হতো না, দীর্ঘশ্বাসটা গোপন করে উঠে আসতাম টিভির সামনে থেকে, ফিরে আসতাম মাঠ থেকে, কিন্তু তবু পরের খেলায় ঠিকই আবার ভাবতাম, হতেই তো পারে……
কেন জানি এখন খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়, দিন অনেক পাল্টেছে, এই এশিয়া কাপে আমাদের দলটাকে দেখে আমার কেন জানি খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে একটা পরিবর্তন এসেছে আমাদের এই দলটার মাঝে, কেন জানেন?? একটা সময় ছিলো, আমাদের অসাধারণ সব ব্যাটসম্যান একটা ছয় মারার ঠিক পরের বলেই আবার ছয় মারতে যেতো, যেনবা বলাই ছিলো, পর পরে ছয় মারতেই হবে, একবার অ্যাটাকে গেলে বুঝি ঠেকানোর আর কোন উপায়ই নেই! ঠিক যখনই আশা করে উঠতাম এইবার খেলাটা ঘুরবে, তখনই উইকেটটা যেনবা দান করেই আসতো আমাদের দলটা……
এইবারও তামিম যখনই একটা ছয় কিংবা চার মেরেছে, আমি তার পরের বলটাতে দম বন্ধ করে বসে থাকতাম, খারাপ বল না হলে মারতে যাস না রে, পায়ে পড়ি! এইবারই অয়াক হয়ে দেখলাম, আমাদের দলের খেলোয়াড়রা এখন বুঝতে শিখেছে, ঠিক কোন বলটা মারা দরকার, কখন একটু ঠেকানোর দরকার, বুকের মাঝের আটকে থাকা নিশ্বাসটা বের করে দিয়ে খেয়াল করে দেখি, কেন জানি এখন এমনিতেই বিশ্বাস চলে আসে, ওরা পারবে, নতুন করে আমাদের স্বপ্ন দেখাতে……
অবাক হয়ে দেখি, খেলা শেষের আগে হাল ছেড়ে দিতে ওরা ভুলে গেছে, শুধু একজন কি দু’জন ভালো খেলবে, সে দিনটা শেষ হয়ে গেছে, আমরা এখন সবাই মিলে ভালো খেলি, এই শেষ খেলাটাতেও, কেন জানি মনে হচ্ছিলো ওরা পারবে, পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত ব্যাটিং, তামিমের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, তারপর সাকিবের ঝড়ো ব্যাটিং, আর সবশেষে মুশফিকের ক্যাপ্টেনস নক……
আর কি চাই জানিনা, শুধু চিৎকার করতে করতে মনে হচ্ছিলো, আমাদের বুঝি আর কোন কষ্ট নেই, আমাদের বুঝি আর কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে না, আমরা বুঝি নিখাদ নির্ভেজাল একটা সময়ের মধ্যেই দিয়েই যাচ্ছি, এই সাকিব, তামিম, মুশফিক এদের হাত ধরেই……
আমি অবাক হয়ে দেখি, আমাদের নতুন প্রজন্ম এখন সাকিব হতে চায়, মাশরাফি কিংবা তামিমের মতো হতে চায়……অন্য কারো মতো না।
খেলার মাঠে যখন দর্শকদের দেখি, আমি খুব মনোযোগ দিয়ে মানুষটাকে দেখি, হয়তো মানুষটার ভীষণ কোন কষ্ট আছে, হয়তোবা তার কোন এক বিষণ্ণ বিকেলে ঘরে ফেরার কেউ নেই, কিন্তু এই মানুষটাই, একটা চার কিংবা ছয়ের পর যে অসাধারণ আনন্দ নিয়ে পাগলের মতো আমাদের পতাকাটা নিয়ে ঝাঁকাতে থাকে, তার তো আর কোন দুঃখের কথা মনে থাকার কথা না, এই আনন্দটুকু দেবার ক্ষমতা তো সবার হয় না, সবাই পারে না, সবাইকে দেয়া হয় না……
শুধু এই একটা প্রার্থনাই করি তোমাদের কাছে, আমাদের এই মানুষদের খুব বেশি উপলক্ষ থাকে না আনন্দ করার, আমাদের অনেক কষ্টের মাঝেও আমরা তোমাদের দিকেই তাকিয়ে থাকি, জানি, তোমরাই আমাদের একটুকরো হাসির উপলক্ষ হয়ে আসতে পারো…
এই তোমরাই…
“এইবারও তামিম যখনই একটা ছয় কিংবা চার মেরেছে, আমি তার পরের বলটাতে দম বন্ধ করে বসে থাকতাম, খারাপ বল না হলে মারতে যাস না রে, পায়ে পড়ি । ”
ভাইয়ারে একদম হুবহু মিলে গেছে , আমিও একটা চার বা ছয় মারলে হাত-পা জড় করে বসে থাকি পরের বলে না জানি কি হয় ! ! কিন্তু আমাদের ছেলেগুলা শিখে গেসে মনে হচ্ছে 😀
ওদের জন্য ওনেক অনেক শুভ কামনা পরের ম্যাচটার জন্য, আর আমরা যেন ওদের সব সময় এভাবেই সাহস ও সমর্থন দিয়ে যাই। জয় ওরাই আনবে । :dhisya:
আমারও খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে, ওরা এখন অনেক কিছু পারে……
কমেন্ট পরে করি।
(এই কথাগুলা কি আমাদের সবার না?! এই কারণেই মুখে কিছু আসছে না)
আমার খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে, আজকে অন্যরকম কিছু একটা হবে…
নিজের কথাগুলো অনায়াসে স্ক্রিনে উঠে আসতে দেখবো ভাবতে পারি নি!
নিজের আবেগটাকে বর্ণমালায় দেখতে পেলাম। নিজের আবেগ যখন দৃশ্যমান তখন কি আর কিছু বলার থাকতে পারে?
*বাংলাদেশের জন্য ভালোবাসা, সাকিবদের জন্য ভালোবাসা*
ধন্যবাদ… :happy:
বাঙ্গালী এমনই। এমনই আমার বাংলাদেশ। এই যে চারিদিকে এত খারাপ খবর, সবচেয়ে মুখ গোমড়া করা মানুষটাকেও সব ভুলে গিয়ে প্রাণ খুলে হাসতে, চিৎকার করতে দেখি। এত পথ ভারী করা, পুলিশি ঘেরাও করা কত মিছিল দেখি। এই একটা মিছিলে আমরা দেখি, পুলিশেরাও হাত পা ছুঁড়ে মিছিলে গলা মেলাতে।
কে বলে আমরা পারি না? আমরা পারি, এতটুকুন একটা খেলার বিজয়ে আমরা পাগলপারা হয়ে নাচতে পারি। আমাদের চোখ ছলছল করা আকাশ, সেই আকাশের একই ছাদের নীচে বড় হয়েছে এই সাকিব, মুশফিকরা। তারাও পারে। আমাদেরকে আরেকটা খুশির বন্যায় ভাসাতে।
আমরা পথ চেয়ে থাকি।
(অসাধারণ একটা লেখা। আবেগী হয়ে কিছু বাক্য বর্ষন করে ফেললাম। জিতবেই বাংলাদেশ।)
“আমরা পারি, এতটুকুন একটা খেলার বিজয়ে আমরা পাগলপারা হয়ে নাচতে পারি। আমাদের চোখ ছলছল করা আকাশ, সেই আকাশের একই ছাদের নীচে বড় হয়েছে এই সাকিব, মুশফিকরা। তারাও পারে। আমাদেরকে আরেকটা খুশির বন্যায় ভাসাতে।”>> জ্ঞানচোরের কথাগুলো পড়ে মাথা ওলোট পালোট হয়ে গেল!
অসাধারণ লাগলো আপনার লিখাটা, দুর্দান্ত! 😀
ফাটিয়ে দিয়েছিস দোস্ত!
পুরাটাই একটা ঘোরের মধ্যে লিখা! জানিনা কেমন হলো! কিন্তু তোদের কথা শুনে মনে হচ্ছে ভালোই হয়েছে! 😛
: আজকে বাঘ-সিংহের লড়াই, আশা করি বাঘ লড়াই তা জিতবে…বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্যে রইলো শুভকামনা …
ইনশাল্লাহ!
দেখলা 😀 :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :dhisya: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance: :penguindance:
টিমটাকে এখন অনেক বেশি ম্যাচুর্ড লাগে… ভালো লাগে।
আজ একটু পর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ব্যাটিং এ খুব বেশি আশাবাদী…
গর্জে ওঠো! :dhisya:
যত কিছুই হোক, দলের পাশে থাকবো, এই খেলাটা কিন্তু পুরোটাই কাকতালীয় নয়, এটা আমার বিশ্বাস…
খেলা তো দেখি না…তবুও শুভকামনা বাংলাদেশ দলের জন্য। গর্জে উঠুক বাংলাদেশ!
যথারীতি আবেগময় লেখা হয়েছে ভাইয়া। 🙂
ধন্যবাদ আপু…
আমি খুব ভয়ে ভয়ে খেলা দেখছি আজ। তার উপর কারেন্ট গেল। এখন নেটে চোখ রাখছি ।
চোখটা ভিজে উঠলো…ভালোবাসায় বাংলাদেশ……
অসাধারণ লিখেছেন, আবেগটাকে ভাষা দেয়া অনেক কঠিন… 🙂
ধন্যবাদ ভাইয়া! 😀
বাংলাদেশ, কী সাহসী একটা নাম ! কী অসাধারণ একটা নাম ! কেমন যেনো জয়ের গন্ধ, কেমন একটা উল্লাসের আভাস আর কেমন যেনো ভালোবাসা ভরা একটা নাম !!!! দেশটাও যেনো কেমন !!! দেশকে, ভাষাকে ভালোবেসে প্রান দিয়ে ফেলে !!! এই অসাধারণ দেশের অসাধারণ মানুষ গুলো যে অসাধারণ হবে, এটাই তো স্বাভাবিক !!!! মাঠে নামে এগারো জন, সাথে থাকে ১৬ কোটির আনন্দ অশ্রুর শপথ ! সাথে থাকে কোটি মায়ের দোয়া, কোটি বাবার আস্থা, কোটি ভাই-বোনের আবদার ………. সাকিব-মুশফিক-তামিম-নাসির আর সব্বাই, এরা ১৬ কোটির আপন জন !!!!! লেখা প্রচন্ড আবেগ ধরানো, শব্দ করে পড়লে গলা কেঁপে উঠবে, তাই আস্তে আস্তে পড়লাম……..
ভালো লাগলো এই ভালোবাসাটা দেখে, আমাদের এই একটা জিনিসের খুব প্রয়োজন…
পুরো আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে মিছিল করে আসলাম।
মিছিলের নেতৃত্বে যারা ছিল, তাদের বেশির ভাগের পরনে লুঙ্গি। কারো কারো গায়ে জামা নেই। বোঝাই যাচ্ছে তাদের অনেকেই সারাদিন রিক্সা চালিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন হয়তো।
এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো চিকচিক করা চোখের ভাষায় আমিও হারিয়ে গেলাম তাদের আনন্দে। শ্রীলংকাকে হারিয়ে ফাইনালে গেলাম আমরা। “আমরা”;একেই বলে সজাত্যবোধ, মাটির টান।
এটাই ফিরিয়ে আনতে হবে সবখানে। (যেমনটি এসেছিল সেই যুদ্ধদিনগুলোয়)
দুর্দান্ত বলেছেন, পুরোই একমত…
এইটা কিভাবে সম্ভব যে, আমি এই পোস্টে কমেন্ট করি নাই!!! 😯
অসাধারণ লেখা!!!!!
মাঝে মাঝে অনেক কিছুই হয় যা অবিশ্ব্বাস্য! 😛
অন্তরের অন্তঃস্থল নিংড়ানো কিছু কথা; কিছু নিখাদ আবেগের কথা………
আফসোস, এমন একটা লেখা এত দেরিতে কেন পড়লাম…
এই লিখাটির প্রতি আমার নিখাদ একটা ভালবাসা আছে, আমার বিশ্বাস এই দলটা আমাদের আর কাঁদাবে না আগের মতো, সব কিছু না পাল্টালেও, কিছু জিনিস অবশ্যই পাল্টাবে, পাল্টাচ্ছে… 😀