প্রিয়তমা,
ফ্রান্সে এসেছি আজ ৪ দিন, ঠাণ্ডা লেগেছে, তুমি তো জানো, হঠাত নতুন যায়গায় আমার অসুবিধা হয়, আজ ও সেই স্বভাব যায়নি, কি করবো বলও, পুরনো অসুবিধা,সহজে কি কাটানো যায়??প্যারিসে অলিতে গলিতে ঘুরেছি্ এজ এক রমনীকে দেখে থমকে দাড়ালাম, অবিকল তোমার রুপ,অবাক নয়নে চেয়ে রইলাম, কিছুক্ষণ পর বুঝলাম, আসলে এ আদৌ তোমার মত নয়, তোমার চেহারা গোলগাল, হাসলে টোল পড়ে,আর এর চেহারা লম্বাটে,মিলটা আসলে, চোখে,অদ্ভুত নীল চোখ, সাগরের জলের মত।
বয়স হয়েছে, দিন দিন নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি,মনে আছে আমাদের বিয়ের কথা??
আমরা গাড়িতে করে আসছিলাম, পথে তুমি কাঁদছিলে, বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতুমি বৃষ্টি দেখছ আর কাদছ, নিঃশব্দে কান্না,খুব খারাপ লাগছিল আমার, আমি বললাম,
জানো? তোমার চোখ যে নীল??
তুমি কিছু বললেনা,আমি বললাম, চোখ আর সাগরের মাঝে মিল হল, চোখের জল ও লোনা, সাগরের জল ও লোনা, দুটোই আসে ঢেউ মত প্রবল ভাবে,
তুমি অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালে, পড়ে ফিক করে হেসে দিলে, আমার মনে হচ্ছিল এক টুকরো জ্যোৎস্না আমার কোলে এসে পড়েছে,
“বাজিল বুকে সুখের মত ব্যাথা”
আমি সেদিন টের পেলাম সুখের সংজ্ঞা কি,
বয়স বারছে নীলু, আজকাল রাতে কি সব দেখে, কেঁদে উঠি,৫৫ বছরের একজন স্বপ্ন দেখে কাঁদছে, কি অদ্ভুত দৃশ্য বলতো,
মনে আছে সেই দিন গুলি, বাসর ঘরে কেও কাওকে উপহার দেয় জানতাম না,তুমি আমায় উপহার দিলে DSLR ক্যামেরা, কোথা থেকে শুনেছ আমার ছবি তোলার সখ, আমি অবাক হলাম, প্রতিজ্ঞা করলাম, এই ক্যামেরায় শুধু তোমার ই ছবি তুলবো,
পারিনি সে কথা রাখতে
সে রাত আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ রাত, ধাধাঁর উত্তর বের করে সারা রাত পার করলাম আমরা, কি বোকা, আমি, কিছুই পারিনা, তোমার সেই খিলখিল হাসি,আজ ও আমার বুকে বাজছে,
এক বিকেলে মুনির আসলো, আমার ছোটকালের বন্ধু,
বড় সুপুরুষ আর বুদ্ধিমান ও, আমাদের হিংসার পাত্র,ও যখন হেসে হেসে তোমার সাথে কথা বলছিল, মিথ্যা বলবনা আমার ক্ষোভে অন্তর জ্বলে যাচ্ছিল,
ওর চাকরী নেই, তুমি বললে ওকে আমাদের সাথে প্রতিদিন খেতে, চাল নেই চুলো নেই, একলা মানুষ,আমি তোমার কথা ফেলতাম না, এও ফেললাম না।অথচ আমি জলছিলাম অন্তর যন্ত্রনায়,
আমি দূর থেকে দেখতাম, তুমি ওকে হেসে হেসে, নিজের হাতে বেড়ে খাওয়াতে,আমি সারাদিন কাজে ব্যাস্ত থাকতাম। ফিরে এসে দেখতাম ,তুমি ওকে নিয়ে ব্যাস্ত, আমি, কিছু বলতাম না, দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যেতাম,
কতদিন তুমি যেতে চেয়েছ, কক্স বাজার, আমি নিইনি, ব্যাস্ততার কারনে, তবু তুমি রাগ করতে না, তোমার কোন চাওয়া ছিলোনা।
দিন দিন আমার ক্ষোভ বাড়ল, তোমার সাথে রাগারাগি করি, গায়েও হাত তুলি, তুমি সব মেনে নাও, আদর করো আমায় প্রতি রাতে, তবু আমার অন্তর জ্বালা যায় না,
সেদিন জ্যোৎস্না রাত,তুমি বারান্দায় বসে আমাদের শোনালে ” চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে”
কি কিন্নর কণ্ঠ তোমার, মনে হচ্ছিল তুমি যা চাও, আমি তোমাকে দিয়ে দেই।
মুনির তখন ওঘরে,
তুমি পানি খাচ্ছ,আমি ধীরে ধীরে এগুলাম,তুমি আমার দিকে চাইলে,
আমি তোমার গলা চেপে ধরলাম,
তোমার চোখে মুখে তখন শ্বাস নেবার তীব্র আকুতি, কি অদ্ভুত নীল চোখ তোমার কি অসাধারণ অভিব্যাক্তি।
ধীরে ধীরে নিথর হয়ে গেলো তোমার শরীর,
আমার সামনে তোমার নিথর দেহ পড়ে আছে, আমি সিগারেট খাচ্ছি,এত সুন্দর কেন তুমি?জ্যোৎস্নার আলো তোমার মুখে এসে পড়ছে,এত রুপ, প্রকৃতি তার সমস্ত রুপ দিয়ে তোমাকে সৃষ্টি করেছে, মনে হচ্ছে তীব্র ক্লান্তি নিয়ে তুমি ঘুমাচ্ছ,
নীলু,
কিছুক্ষনের মাঝে সামনে রাখা পিস্তল আমি ব্যাবহার করবো, এর একটি বুলেট নিয়ে যাবে আমাকে তোমার কাছে,গত ৩০ বছর আমি তোমাকে সারা পৃথিবী খুজেছি, অন্য কোন রুপে তোমায় পাবো বলে,আজই আমার শেষ রাত, মুনির আজ তোমার খুনের দায়ে জেলে, জানো? আমার একফোঁটাও অপরাধবোধ নেই।
আজ ই আমার শেষ রাত নীলু,
আমি আসছি,এইতো আর কিছুক্ষণ………………………
🙁
🙁
ভাইয়া পোস্ট এর ফরম্যাট খেয়াল করে দিও। non html টাইপের একটা অপশন আছে, সেখানে গিয়ে লিখতে পারো
ওকে ভাইয়া।
ফিনিশিং বেশ ভালো লাগলো 😀
ধন্যবাদ
গল্পটা ভালো লেগেছে খুব। লিখে যাও………
কমা, দাঁড়ি-র পর স্পেস হবে। খেয়াল রেখো।
ধন্যবাদ ভাইয়া, আমি খেয়াল রাখব অবশ্যই 🙂
সব ভালোবাসার গল্পেই কেন ফিনিশিং-টা এই ফরম্যাটের হয়? তুই মর, আমিও মরি। কেউ বিরহে, আর কেউ হিংসায়। ধুরর! 🙁