সিরিয়াল, সিরিয়াল কিলার এবং অপরাধী আমরা

কয়েকদিন আগে ফেসবুকে আমার এক বন্ধুর আপডেট করা স্ট্যাটাস দেখে হঠাৎ করেই থমকে গেলাম। ক্ষুব্ধ সেই বন্ধু লিখেছে – জীবনটাকে সবচেয়ে বড় প্রহসন মনে হয় যখন রাত ১১.৩০ এ আব্বু-আম্মু আমার হাতে রিমোট দিয়ে বলে, “নাও বাবা, সিরিয়াল শেষ, এখন তোমার যা ইচ্ছা হয় দেখ। আর কেউ তোমাকে ডিস্টার্ব করবে না।” :wallbash:

এই ছোট্ট অথচ নির্মম কথাটাই একসাথে অনেকগুলি সত্যকে উপস্থাপন করার জন্য যথেষ্ট।আসলেই তো! আমরা অনেকেই তো এই প্রহসনের শিকার! এ থেকে মুক্তির কথা অনেক আগে থেকেই আমরা গলা ফাটিয়ে বলে আসছি। কিন্তু ফলাফল এখনও শূণ্যের আশেপাশেই ঘুরাঘুরি করছে। আমরা এখন এই ঘটনাকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে ভাবতে শুরু করেছি, আর তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নীরব দর্শকের মহান দায়িত্ব পালন করে চলেছি। 😳

আমার সেই বন্ধুটিকে বয়সের (এবং মানসিকতার) দিক দিয়ে শিশু বলা চলে না। সে এখন নবতারুণ্যের অধিকারী। কিন্তু তার এই ধরণের প্রতিক্রিয়ার সূত্রপাত কি শৈশব থেকেই নয়? আমরা সকলেই জানি যে, একটি শিশু ছোটবেলা থেকেই তার পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত এবং ক্ষেত্রবিশেষে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত হয়। আর এটা যেহেতু স্বপ্রণোদিত ব্যাপার, তাই আমরা চাইলেই তাকে এই প্রভাবমুক্ত করতে পারি না। যখন একটি শিশু দেখে তার অভিভাবকেরা টিভি সেটের সামনে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল দেখায় ব্যস্ত, তাকে সময় দিতে পারছেন না তারা – তখন তার মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আর বর্তমান সময়ে আমরা আমাদের শিশুদের প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেহেতু রাখতে পারছি না, সেহেতু তাদের বিনোদনের মাধ্যমগুলোও সংকীর্ণ হয়ে আসছে। এরই মাঝে সে যখন দেখছে তার একটিমাত্র পছন্দের টিভি অনুষ্ঠানের সময় তার শুভাকাঙ্ক্ষী বাবা-মা ভিলেনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে টিভি দখল করে রাখছেন, তখন তার মাঝে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হতেই পারে। এই কারণে অবচেতনভাবে সন্তানের সাথে বাবা-মায়ের দূরত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাদের সম্পর্কের মাঝে অদৃশ্য দেয়ালের সূচনা ঘটে। আর এটা নিশ্চয়ই আমাদের কারোই কাম্য নয়। বাবা-মা হয়তো ভেবেও দেখছেন না, কি নির্মমভাবে তাদের আদরের সন্তানকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন! :thinking:

এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। মনে করি, বাবা-মা খুব সতর্ক। তারা চান না তাদের সন্তানকে দূরে ঠেলে দিতে। তাদের সচেতনতার ফলস্বরূপ দেখা গেল তাঁরা তাদের সন্তানকে সাথে নিয়ে বসে একেবারে সিরিয়ালি টিভি সিরিয়াল গলাধঃকরণ করে যাচ্ছেন (প্রসঙ্গতভাবে সিরিয়ালগুলোর কথা বলা হলেও ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানকেও এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা যায়)। তাদের লক্ষ্য হয়তো মহৎ, কিন্তু প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ বিপরীত। আমি নিজে টিভি সিরিয়াল বিশেষজ্ঞ নই। তবে মাঝে মাঝে চ্যানেল ঘুরানোর ফাঁকে হয়তো কয়েক মিনিট দেখি। এই স্বল্প সময়ের পর্যবেক্ষণে সঠিকভাবে মন্তব্য করা যায় না। তবু যতটুকু দেখেছি তাতে আমার এটুকু মনে হয়েছে যে, এগুলোর মধ্যে দিয়ে শিক্ষামূলক কিছু গ্রহণ করতে পারছে না কেউ (ব্যতিক্রম থাকতে পারে)। ইলাস্টিক তারের মত কেবল দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির প্রবণতা ছাড়া কিছু আছে কিনা সেগুলোতে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ প্রকাশ্য। কিন্তু আমরা শিশুদের অপরিণত মানসে এগুলো জোরপূর্বক প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছি, সে তা হজম করছে না বদহজম হয়ে তার ক্ষতি করছে সেদিকে লক্ষ্য রাখছি না। ফলাফল তাৎক্ষণিক নয়, সুদূরপ্রসারী।

অনেকে হয়তো পাল্টা (এবং হাস্যকর) যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেন যে, সন্তানদেরকে জীবনের কঠিন দিক, বিবাদ, অসঙ্গতি ইত্যাদির সাথে পরিচিত থাকা উচিত। এতে মানসিকভাবে দৃঢ়তা অর্জনের পাশাপাশি এসব থেকে মুক্তির পথ সম্পর্কেও জানতে পারবে। কিন্তু তাদের এই ভাষ্য কতটুকু যুক্তিযুক্ত? ভিত্তিটা শক্ত না করে তার উপর ইমারত গড়ার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কী? এভাবে আমরা তাদের মানসিক বিকাশের পথে বরং বাঁধার সৃষ্টি করছি। আমরা যেদিকে তাদের শিক্ষামূলক, মানসিক বিকাশের পথে সহায়ক অনুষ্ঠান দেখতে উৎসাহী করতে পারি; সেদিকে কেন শুধু শুধু এই প্রহসনের সূচনা? আর তাদের সঙ্গ দেওয়ার জন্য অবশ্যই সচেষ্ট হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমার ধারণা এক্ষেত্রে কারো দ্বিমত করার কথা নয়।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে, অন্যান্য দেশের টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সিরিয়ালের দৌরাত্ম্যকে আমাদের দেশীয় চ্যানেলগুলো হুমকি মনে করে তাদেরকে অনুকরণ করছে। এভাবে হয়তো তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চাচ্ছে। এতে তারা কতটুকু সফল তা তর্কসাপেক্ষ। তবে এটি সঠিক যে, এই অনুকরণ আমাদের জন্য ইতিবাচক কিছু বয়ে আনছে না। মাঝখান দিয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের মানসিকভাবে হত্যা করে চলেছি। দুর্ধর্ষ কোন সিরিয়াল কিলারের চেয়ে কোন অংশেই যেন পিছিয়ে নেই এইসব টিভি সিরিয়ালগুলো। আর আমরাও তাতে পরোক্ষভাবে সহায়তা প্রদান করেই চলেছি। আর এই হত্যার বিচার সাধারণ আদালতে হবার সুযোগ নেই, কেননা এই অপরাধ চর্মচক্ষে সহজে দৃষ্ট হয় না। কিন্তু আসলেই কি আমরা আমাদের সন্তানদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা-অনিচ্ছা আর স্বপ্ন দেখার স্বাধীনতাকে হত্যা করছি না? আমরা তো তাদের সাথে প্রতারণা করছি। প্রতারিত-বঞ্চিত করছি দেশকে, দেশের ভবিষ্যতকে ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে ছুঁড়ে ফেলে। 🙁

সমাধান আমাদের অজানা নয়। কেবল আলস্য আর অনীহা।

মাহি সম্পর্কে

নিজেকে চরম আশাবাদী মানুষ বলে মনে করি। জীবনের আপাত নগণ্য অংশগুলো থেকেও অনুপ্রেরণা পাবার চেষ্টা করি। অল্পতেই হতাশ হই না। আত্মোপলব্ধি করার প্রচেষ্টা চালাই প্রতিনিয়ত। এক্ষেত্রে সফলতা আপেক্ষিক, তবু নিরস্ত হই না। কেননা এটাকে আমি পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করি।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

22 Responses to সিরিয়াল, সিরিয়াল কিলার এবং অপরাধী আমরা

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    এই বিষয়টা নিয়ে ভিন্ন একটা পয়েন্ট থেকে লেখা! সিরিয়ালগুলার নেতিবাচকতা এইভাবে দেখি নাই

    শেষ লাইনটা দুর্দান্ত “সমাধান আমাদের অজানা নয়। কেবল আলস্য আর অনীহা।”

    সরব শৈশব একটা পিচ্চিদের জন্য চ্যানেল খুলতে চায়! পারবে কি? ফান্ড? চলবে কী করে?

    (BTW আমি তো জানতাম বেশিরভাগ ছেলেপেলে টিভি দেখে না! মানে কলেজ লেভেল এ উঠার পরে! )

    • মাহি বলেছেনঃ

      পিচ্চিদের চ্যানেল খুলতে পারবে কিনা জানি না, তবে আমার ধারণা যেকোন লক্ষ্য যদি সৎ হয় তাহলে তা অর্জন করাটাও অসম্ভব নয় … 🙂 … এ জন্য শুভকামনা রইল …

      আর কলেজ লেভেলে উঠার পর টিভি দেখে কিনা সবা ছেলেপিলে জানি না। কিন্তু আমি নিজে কিন্তু দেখার চেষ্টা করতাম। বিশেষত বিভিন্ন খেলা আর অল্প কিছু নাটক। (আমাকে অবশ্য এতটা প্রহসনের শিকার হতে হয়নি)
      😀

    • রাইয়্যান বলেছেনঃ

      আমারে না নিয়া যদি টিভি চ্যানেল খুলছেন তাইলে কলাম খেলুম না!! :crying: :crying: @বোহেমিয়ানদা

  2. অনাবিল বলেছেনঃ

    “তবু যতটুকু দেখেছি তাতে আমার এটুকু মনে হয়েছে যে, এগুলোর মধ্যে দিয়ে শিক্ষামূলক কিছু গ্রহণ করতে পারছে কেউ (ব্যতিক্রম থাকতে পারে)।” পারছে না কি পারছে না হবে লিখতে চেয়েছিলেন?? 🙂

    :dhisya: :dhisya: পোস্ট!
    আমরা সচেতন হই!

  3. তিষা বলেছেনঃ

    আমি নিত্য এই প্রহসনের স্বীকার কিন্তু নিতান্তই নিরুপায়। কারণ আমি তো ‘ভদ্র’ মেয়ে। আমার তো বাবা-মায়ের ইচ্ছার উপরে বুলডোজার চালানো সাজে না।
    নিজেকে অসহায় মনে হয়। :wallbash:

    সিরিয়াল গুলাকে ইচ্ছা করে, :fire: :dhisya: করে দেই >:(

    লেখা ভালো লাগলো।
    :welcome:

  4. অনীক বলেছেনঃ

    সমাধান একটাই, টিভি দেখা বন্ধ করে দেয়া। 🙂

    টিভি একটা বিনোদন-মাধ্যম। আমরা প্রায়ই সেটা ভুলে যাই এবং ধরে নিই যে এটা শিক্ষামূলক মাধ্যম। টিভি বানানোই হয়েছিল বিনোদনের জন্য, এখনও তা সেই কাজেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। একমাত্র ‘ব্রেকিং নিউজ’ না হলে টিভি মূলত জরুরি কোন তথ্য আমাদের দেয় না। দিলেও সেই তথ্য পাওয়ার বিকল্প, সুলভ মাধ্যম আছে – যে মাধ্যমে কেবল তথ্যটিই পাওয়া যাবে। টিভি থেকে তথ্য নেয়ার সময় আবার একগাদা জঞ্জাল (বিজ্ঞাপন) এবং অলঙ্কার দেখতে হয়। যাতে করে সেই তথ্যটাও ঠিকমত ‘ট্রান্সমিট’ না করার সম্ভাবনা থাকে।

    বিনোদনের সাথে শিক্ষামূলক কিছু মিশিয়ে দেখানোর আইডিয়া এসেছিল সম্ভবত নিরন্তর বিনোদিত হওয়ার একঘেঁয়েমি কাটানোর উপায় হিসেবে। কিন্তু এটাকে অনেকে ভুল বুঝেছে – মনে করেছে যে টিভির কাজ শিক্ষা দেয়া। সিরিয়ালগুলো মনে হয় এতদিনে ঐ ভুল ধারণাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে। যদি শিশু-কিশোরদের রূপকের মাধ্যমে ভাল-খারাপ-নীতি-দুর্নীতি শেখাতেই হয়, তাহলে কার্টুন, অ্যানিমেশন ইত্যাদি দেখানো যেতে পারে। যদি তার আশেপাশের প্রকৃতি চেনানোর ইচ্ছা থাকে, তবে অ্যাটেনবুড়োর ভিডিওগুলো নেট থেকে বা ডিভিডিতে দেখানো যেতে পারে। এক খেলা দেখা ছাড়া বিশুদ্ধ বিনোদন আমি টিভিতে পাই না। সবখানেই ভেজাল। এখন এই খেলার ফাঁকেও এমন বিজ্ঞাপন দেখাতে থাকে যেগুলো বাবা-মায়ের সাথে বসে দেখা অস্বস্তিকর! 🙁

    তাই আমার মনে হয় টিভিটাকেই ছুঁড়ে ফেলে দেয়া ভাল। না রইবে বোকাবাক্স, না রইবে এইসব সিরিয়াল কিলার। 🙂

    • মাহি বলেছেনঃ

      আমরা যদি বোকা বাক্সের ব্যবহার বোকার মত করি সেটাই সমস্যা।
      ছুঁড়ে ফেলার পক্ষে যুক্তিগুলো খারাপ না। কিন্তু এভাবে চিন্তা করলে তো আরও অনেক মাধ্যমকেও ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া যেতে পারে …!!

      তাহলে কি সমাধান হবে ??

      • অনীক বলেছেনঃ

        বোকা বাক্সটির বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার কীরূপ? এই আবিষ্কারটি তথ্য দ্রুত পৌঁছানোর এবং বিনোদন দেয়ার কাজে তৈরি হয়েছিল। এই দুটো কাজের একটিও এখন সে করতে পারে কি?

  5. সিফাত বলেছেনঃ

    আমি একটা কথাই বলব , তা হল দুই জায়গায় লেখা আসে নাই… এইটা ছাড়া বুঝার উপায়ই নাই যে এই লাইনে তোর বয়স কত :clappinghands: … like a boss 8) …

  6. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    আমিও সেইম ‘নির্যাতনের’ শিকার 🙁 বাসায় স্ট্রাইক করসি, কাজে দেয় নাই 🙁

  7. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    সিরিয়ালগুলো আসলেই জীবনটাকে অতিষ্ট করে ফেলছে। আগে বাংলা চ্যানেলগুলোতে সুন্দর সুন্দর নাটক দেয়া হতো। এখন বাংলা চ্যানেলগুলোও মেতে উঠেছে সিরিয়ালের নেশায়।
    শুধু কম বয়সী নয়, সকল বয়সী মানুষেরই সিরিয়াল নামক বিষের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার……

    • মাহি বলেছেনঃ

      ছোট বেলায় বিটিভিতে নাটক দেখতাম। সাপ্তাহিক নাটকগুলা আসলেই অনেক সুন্দর ছিল। বিজ্ঞাপনের অত্যাচারও ছিল না। আর এখন যেসব দেখানো হয় তা আসলেই হতাশাজনক।

  8. সামিরা বলেছেনঃ

    সিরিয়াল নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই আসলেই। অনেক কথা বলা হয়ে গেছে। 🙁 লাভ তেমন হয় নি।

    টিভি জিনিসটার ভাল দিক সীমিত আসলে। বিশেষ করে এখন তো আরোই। এই নিয়ে Roald Dahlএর “টেলিভিশন” কবিতাটা খুব বেশি খাটে!

    আর বাবা-মার জন্য ছেলেমেয়েরা টিভি দেখতে পারছে না – এই দৃশ্য দেখার অভিজ্ঞতা হয় নি এখনো। 😛 ইন্টারেস্টিং তো!

    • সামিরা বলেছেনঃ

      আমার খুবই প্রিয় কবিতা। 🙂
      Television
      Roald Dahl

      The most important thing we’ve learned,
      So far as children are concerned,
      Is never, NEVER, NEVER let
      Them near your television set —
      Or better still, just don’t install
      The idiotic thing at all.
      In almost every house we’ve been,
      We’ve watched them gaping at the screen.
      They loll and slop and lounge about,
      And stare until their eyes pop out.
      (Last week in someone’s place we saw
      A dozen eyeballs on the floor.)
      They sit and stare and stare and sit
      Until they’re hypnotised by it,
      Until they’re absolutely drunk
      With all that shocking ghastly junk.
      Oh yes, we know it keeps them still,
      They don’t climb out the window sill,
      They never fight or kick or punch,
      They leave you free to cook the lunch
      And wash the dishes in the sink —
      But did you ever stop to think,
      To wonder just exactly what
      This does to your beloved tot?
      IT ROTS THE SENSE IN THE HEAD!
      IT KILLS IMAGINATION DEAD!
      IT CLOGS AND CLUTTERS UP THE MIND!
      IT MAKES A CHILD SO DULL AND BLIND
      HE CAN NO LONGER UNDERSTAND
      A FANTASY, A FAIRYLAND!
      HIS BRAIN BECOMES AS SOFT AS CHEESE!
      HIS POWERS OF THINKING RUST AND FREEZE!
      HE CANNOT THINK — HE ONLY SEES!
      ‘All right!’ you’ll cry. ‘All right!’ you’ll say,
      ‘But if we take the set away,
      What shall we do to entertain
      Our darling children? Please explain!’
      We’ll answer this by asking you,
      ‘What used the darling ones to do?
      ‘How used they keep themselves contented
      Before this monster was invented?’
      Have you forgotten? Don’t you know?
      We’ll say it very loud and slow:
      THEY … USED … TO … READ! They’d READ and READ,
      AND READ and READ, and then proceed
      To READ some more. Great Scott! Gadzooks!
      One half their lives was reading books!
      The nursery shelves held books galore!
      Books cluttered up the nursery floor!
      And in the bedroom, by the bed,
      More books were waiting to be read!
      Such wondrous, fine, fantastic tales
      Of dragons, gypsies, queens, and whales
      And treasure isles, and distant shores
      Where smugglers rowed with muffled oars,
      And pirates wearing purple pants,
      And sailing ships and elephants,
      And cannibals crouching ’round the pot,
      Stirring away at something hot.
      (It smells so good, what can it be?
      Good gracious, it’s Penelope.)
      The younger ones had Beatrix Potter
      With Mr. Tod, the dirty rotter,
      And Squirrel Nutkin, Pigling Bland,
      And Mrs. Tiggy-Winkle and-
      Just How The Camel Got His Hump,
      And How the Monkey Lost His Rump,
      And Mr. Toad, and bless my soul,
      There’s Mr. Rat and Mr. Mole-
      Oh, books, what books they used to know,
      Those children living long ago!
      So please, oh please, we beg, we pray,
      Go throw your TV set away,
      And in its place you can install
      A lovely bookshelf on the wall.
      Then fill the shelves with lots of books,
      Ignoring all the dirty looks,
      The screams and yells, the bites and kicks,
      And children hitting you with sticks-
      Fear not, because we promise you
      That, in about a week or two
      Of having nothing else to do,
      They’ll now begin to feel the need
      Of having something to read.
      And once they start — oh boy, oh boy!
      You watch the slowly growing joy
      That fills their hearts. They’ll grow so keen
      They’ll wonder what they’d ever seen
      In that ridiculous machine,
      That nauseating, foul, unclean,
      Repulsive television screen!
      And later, each and every kid
      Will love you more for what you did.

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।