তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। রাস্তায় কাউকে সাইকেল চালাতে দেখলেই ভাবতাম দুই চাকার এই অদ্ভূত জিনিসটা মানুষ চালায় কিভাবে! :thinking: কাত হয়ে তো পড়ে যাওয়ার কথা। যেই বাহনটা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না সেটা চালানো তো নিদারুন সোজা কাজ নয়। তাই আব্বুকে একদিন বললাম সাইকেল কিনে দিতে। আব্বু কয়েকদিন পরই একটা সাইকেল কিনে নিয়ে আসলো। তবে সেটা আমার জন্য নয়, ভাইয়ার জন্য। 😳 আর সাইকেলটার সাইজ ছিলো আমার শরীরের সাইজের তিনগুন।
আমরা তখন থাকতাম আজিমপুর কলোনীতে। সামনে ছিলো বিশাল মাঠ। আব্বু প্রতিদিন সকালে ভাইয়াকে সাইকেল শেখানোর জন্য মাঠে নিয়ে যেত। সাথে আমিও যেতাম। আমি যেতাম ভাইয়া কিভাবে সাইকেল নিয়ে উষ্ঠা খায় সেটা দেখার জন্য। 😛 ও কতদূর গিয়েই পড়ে যেত আর আমি হাসতাম। এভাবে আস্তে আস্তে ভাইয়া সাইকেল চালানো শিখে ফেললো।
এবার আমার পালা। আমি তো প্রথমদিনই বেশ খুশি। :happy: আব্বু সাথে থাকে আর আমি প্যাডেল দেই। পড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পড়তে নিলেই আব্বু ধরে ফেলে। চালাতে চালাতে একসময় দেখি পাশে আব্বু নাই। আর তখনি ঢিং ঢাং টং টিস। 😳 প্রথমদিন পা কেটে গিয়েছিলো। এরপর প্রতিদিনই হাত-পা কাটত। দেয়ালের সাথে বাড়ি খেতাম, মানুষের গায়ের উপর তুল দিতাম। আর যখনি বুঝতাম কোথাও ঝামেলা হয়েছে একটু পরেই পড়ে যাব তখনি সাইকেল থেকে লাফ দিতাম। 😛
অবশেষে সাইকেল চালানো শিখলাম। এবার রাস্তায় চালানো শুরু করলাম। সমবয়সী অনেক ছেলেই তখন আমার সাথে কলোনীতে সাইকেল চালাত। আমরা বিকেলে একসাথে সাইকেল নিয়ে বের হতাম। চলত রেসিং প্রতিযোগিতা। 😀
মজার ঘটনাও আছে অনেক। এক বন্ধু বেশি জোরে চালাতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলো। শালা পড়বি পড়, তাই বলে দুনিয়াতে এত জায়গা থাকতে ড্রেনের মধ্যে! 😛
ব্রেকফেল সম্পর্কে এত আইডিয়া ছিলো না। তবে এটা কি জিনিস সেটা টের পেলাম যখন খেয়াল করলাম সাইকেলের ব্রেক চাপছি কিন্তু কাজ করছে না। শুরু করলাম পা মাটিতে দিয়ে ব্রেক করা। কিন্তু এত জোরে চলছিলো সাইকেলটা তাও শেষমেষ একটা চটপটিওয়ালার দোকানে লাগিয়ে দিলাম। 😐 (আসলে বামদিকের ব্রেক আমি চাপতে পারতাম না আর ডানদিকেরটা ঢিলা হয়ে গিয়েছিলো) আর পার্ক করে রাখা গাড়ির লুকিং গ্লাসে যে কতবার ঢুস দিয়েছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
ছোটোখাটো আরো অনেক দুর্ঘটনা ঘটিয়েছি, সব মনে নেই। তবে সাইকেল চালানো শিখতে পারাটা আমার জন্য অন্য রকম আনন্দের ছিলো। এখনো চালাই। আমার খালামনি বলতেন, “শোন, তিনটা জিনিস আছে যা মানুষ জীবনে একবার শিখলে কখনোই ভোলে না। সাইকেল চালানো, দাবা খেলা আর সাঁতার।” সাইকেল চালাতে আর দাবা তো খেলতে পারি কিন্তু তৃতীয়টা যে এখনো শেখা হয়নি। 🙁
দাবা খেলতে পারি,কিন্তু, না পারি সাইকেল চালাতে, না পারি সাঁতার 🙁
আমার সাইকেলটা নিয়া দুইটা টান দিয়েন। দেখবেন শিখে ফেলসেন 😀
সাঁতার শেখার প্ল্যান আছে শীঘ্রই, আর সাইকেল চালানোর সুপ্ত ইচ্ছা! 😛
আমিও শুনছিলাম সাঁতার আর সাইক্লিং মানুষ নাকি ভোলে না কখনো, দাবারটা এখন শুনলাম। আমি তো ভাবছিলাম ভুলে গেছি দাবা খেলা। 😀
আমারো শীঘ্রই সাঁতার শেখার প্ল্যান আছে। ঢাকা ভার্সিটিতে নাকি শেখায় শুনসি। সাঁতার না জানলে যে পানিতে নামতে ভয় করে 🙁
আমি সাইকেল চালানো শিখেছি বুড়ো বয়সে, লেভেল ১ টার্ম ২ শেষের দিকে ,একা একা! :penguindance: :penguindance:
একা একা! 😯 ওরে বাপস!
আমি খালি দাবা পারি
আসে পাশে নার্ড বেশি ছিলো ভাই!! তাই হয় নাই যুদ্ধে যাওয়া, আই মিন সাইকেল চালানো। বই পড়া শিখছিলাম, আর লেখালেখির প্রতি আগ্রহ জন্মাইছিলো
আশেপাশে নার্ড বেশি ছিলো মানে কি! আপনে কি নার্ড না 😛
ভাগ্যিস আপনার লেখালেখির প্রতি আগ্রহ জন্মাইছিলো নাইলে আজকে সরব আসতো কই থিকা! 😀
না পারি সাঁতার ,না পারি সাইকেল চালাতে খালি দাবা পারি তাও বেশি ভালো না।
🙁
এত কিছু পারা লাগবে না 😛
মজা পেলাম পড়ে!
বড় হয়ে সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে বেশ বিপদেই পড়েছিলাম, ছোটভাই দুটো সাইকেল ধরে রাখতে রাখতে হাত ব্যাথা করে ফেলেছিল আর পরে ইচ্ছে করে ছেড়ে দিয়েছিল আর আমি ঢুস করে একটা গাছে ধাক্কা দিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম… অনেকদিন ব্যাথা ছিলো…… 🙂
সাঁতার শেখার ইচ্ছে আছে…… 🙂
সামান্যই দাবা খেলতে পারি, ধৈর্য হয় না……… :p
হা হা! আপনার ছোটোভাই দুটো দেখি বেজায় পাজি! 😛
আমারো সাঁতার শেখার ইচ্ছা আছে 🙂