অনুবাদ: অপেক্ষা – প্যাট্রিক জোহানসন

মাটিতে গাছের বীজটা পুঁতে অপেক্ষা করতে বসলো সে। কিছুক্ষণ পর আকাশ থেকে বৃষ্টি নেমে এলো; বৃষ্টির ছাঁট এসে বিঁধতে লাগলো তার শরীরে, শীতল করে দিয়ে গেল ভেতরটা। সে কেঁপে উঠলো, কিন্তু চলে গেল না; যাওয়ার সময় আসে নি এখনো।

তারপর সূর্য উঠলো। রোদ এসে তার হাড়ের ভেতর থেকে তাড়িয়ে নিয়ে গেল শীত, মাটিকেও উষ্ণ করে তুললো। সে তখনও অপেক্ষায়। কতগুলো মেঘ হুড়োহুড়ি করে চলে গেল মাথার ওপর দিয়ে; কিসের তাড়া তাদের কে জানে! এরপর চাঁদ উঠলো, তারাগুলো গড়িয়ে গেল আকাশ বেয়ে, তারপর আবার সূর্য এলো।

সারাটা সময় অপেক্ষাই করলো সে। আর প্রার্থনা করলো, গান গাইলো, পুরনো সব গল্প পড়লো – পুরাণ আর রূপকথার গল্প। সাত দিন পর, মেঘহীন আকাশের নিচে একটু যখন চোখ বুজে এলো, তখন একটা গঙ্গাফড়িং নিচু হয়ে নাক ছুঁয়ে যাওয়ায় কিছুক্ষণের জন্য ঘুম ভাঙলো তার। গির্জার জানালার মত পাখাগুলোকে সূর্যের আলোয় রঙধনুর মত ঝিকমিকিয়ে ফড়িং-টার চলে যাওয়া দেখলো সে তাকিয়ে তাকিয়ে, তারপর আবার ঘুমিয়ে পড়লো।

রোদ-বৃষ্টি, চাঁদ-তারা – সবাইকেই সইলো সে। তারপর? মাটি ফুঁড়ে কোঁকড়ানো, জিজ্ঞাসু সবুজ মাথা বের করলো চারাটা, ‘প্রাচীন ভাষা’র প্রশ্নবোধক চিহ্নের মত যেন খুঁজতে শুরু করলো গোটা পৃথিবীটাকে। সে তখন এসে চারাটার ওপর বসলো। আর অপেক্ষা করতে থাকলো: দিন, মাস, বছর।

একদিন এক ছেলে এসে জানতে চাইলো, সে কেন গাছের চুড়োয় উঠে বসেছে।

“আমি উঠি নি তো,” মেয়েটার উত্তর।

সামিরা সম্পর্কে

পীচ-গলা তরলে আটকে পা, দুঃস্বপ্ন অন্ধ দুই চোখে/ অসতর্ক হৃদয় পোষ মানে মিথ্যে বলার আফসোসে.../// প্রকাশিত লেখার কপিরাইট সংশ্লিষ্ট লেখক সংরক্ষণ করেন এবং লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখা আংশিক বা পূর্ণভাবে কোন মিডিয়ায় পুন:প্রকাশ করা যাবে না।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে অনুবাদ, গল্প, সাহিত্য-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

29 Responses to অনুবাদ: অপেক্ষা – প্যাট্রিক জোহানসন

  1. এখনও শিশু বলেছেনঃ

    বাহহহ!!! :clappinghands:

  2. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    আমমমমমমম আমি আসলে ঠিক বুজছি কিনা শিউর না। :crying:

    মোরালটা কী দাঁড়াল? আমি একটি ভাল কাজের সূচনা করব, যত দেরিতেই হোক না কেন প্রাপ্য ফলাফল আমার জন্য নির্ধারিত থাকবে– এটা?

    সৌভাগ্য কেবল একটু উদ্যোগ আর একটু সুযোগ-সনাক্তকরণ-সামর্থ্যের মিশেল?

  3. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    আমার মনে হয় রাইয়্যান ঠিকই বুঝেছে।

    আচ্ছা এত ছোট হলে ২ টা গল্প দেয়া কি বেশি ভালো হয় না?

    অনুবাদ ভালো লাগছে। গল্পটাও।

  4. অনাবিল বলেছেনঃ

    চমৎকার লেগেছে!

    প্যাট্রিক জোহানসন পড়া হয়নি এর আগে, পড়া হয়ে গেল এই সুযোগে, ধন্যবাদ!

    🙂

  5. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    দারুন আপু! :clappinghands:

  6. অদ্ভুত ছেলে বলেছেনঃ

    বাহ দারুণ! 😀
    আমার কাছে মোরালটা ধৈর্যের বলে মনে হলো

  7. শারমিন বলেছেনঃ

    আমি মোরালটা বুজি নাই 🙁
    :crying:
    তবে তোমার অনুবাদটা ভালো হয়েছে। 🙂

  8. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    সব সময়ের মতো ভালো অনুবাদ :clappinghands:

    দুই বার পড়া লাগলো বোঝার জন্য, যদিও মরাল-টা ঠিক কী বুঝতে পারলাম না। অবশ্য রাইয়্যানের কথাটাই ঠিক মনে হচ্ছে……

  9. নোঙ্গর ছেঁড়া বলেছেনঃ

    সুন্দর ঝরঝরে অনুবাদ। কিন্তু বিশেষ কিছু বুঝিনি 😛

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।