এই কানা গলিতে দুই প্রহর রাত পেরিয়ে গেলে
জানালার ফাঁক গলে কান্নার স্বর ভেসে
ঠাণ্ডা হাওয়ায় উড়ে উড়ে আসে আমার কাছে
দুধ-পিয়াসী কোন শিশু যেন কাঁদে মায়ের বুকের শুয়ে
একপাল নেড়ি কুকুর অবিরত গর্জায় ঐ গলির মোড়ে
তখন আস্তে করে সবার চোখের পাতা-জোড়ায় ঘুম নামে
প্রান্তরে জেঁকে বসা গাঢ় কুয়াশার মতো-
গাঢ় ঘুম নামে।
সবার চোখে ঘুম নামে তখন
শান্তির ঘুম
স্বস্তির ঘুম
জমাট রক্তের মতো গাঢ় ঘুম!
আমার দেয়ালে ঝোলানো ঘড়িটা গর্জে ওঠে,
সশব্দে চিৎকার করে সে-
ঢং ঢং ঢং
ঘুম চাই তোমার- মৃত্যুর মতো গাঢ় ঘুম!
ঘুমিয়ে পড়ো সোনা, অনেক জেগেছ তুমি
ঘুমোও এবার!
ওরে অর্বাচীন এবার থাম, আমি ঘুমাবো না!
বেয়াদবটা অনেক জ্বালিয়ে নিজে থামে
কিন্তু মগজের গভীরতম ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় নিজেকে
মাথার ভেতরে ক্রমাগত বাজতেই থাকে শুধু
ঢং ঢং ঢং
ঘুম চাই, গভীর ঘুম-জমাট রক্তের মত গাঢ় ঘুম!
ঘুমিয়ে থাকা মানে- কিছু সময়ের তরে মরে যাওয়া
ঘুমিয়ে থাকা মানে- কিছু সময়ের জন্যে নিজেকে
আলাদা করে নেয়া এই রংমহল থেকে,
কিছুসময়ের তরে বাইজীর বুকের নরম মাংসের স্বাধ ভোলা,
সংগীতে মূর্ছনায় ভুল তাল আর ভুল লয়ে ভাসা।
কিছু সময়ের জন্যে মরে যাওয়া-
ভুলে যাওয়া সব স্বপ্ন- সাধ- দুঃখ – কষ্ট-অভিলাষ- অভিমান!
ঘুমিয়ে থাকা মানে কিছু সময়ের জন্যে পালিয়ে আসা
সাহেবি ঐ উদ্দাম ড্যান্স ফ্লোর থেকে!
সাময়িক মৃত্যু- কি সাংঘাতিক কথা!
আর যদি না জাগি তাহলে চিরতরে মরে যাবো
কিশোরীর লাল ঠোটে আলপনা আর আকা হবে না
আর পাবেনা রূপ রস গন্ধ এ নশ্বর দেহ
আস্তে করে গলে পচে যাবে মাটির গভীরে
আগামী কালের সূর্যের সাথে ভেসে আসা দিনটাকে
আর দেখবোনা আমি, দেখবোনা আর পাশের ফ্লাটের
রুপসীর তারে ঝুলানো কালো ওড়নার বাতাসে দোলা
সিঁড়ির ধারে- শরীরে কাঁপন তুলে হেটে যেতে
আর দেখব না তাকে!
ভালোবাসি এ বুকের ধুকপুক শব্দ
গভীর থেকে আসা যত দীর্ঘনিঃশ্বাস
ভালবাসি শিরা উপশিরায় ছুটন্ত গরম তাজা রক্তের তাণ্ডব
ভালবাসি লোভী এ দেহ!
তার যত কামনা আর বাসনা তাও ভালবাসি!
তাই আমি ঘুমাতে পারি না
একবার ঘুম যদি চিরকালে রূপ নেয়
যদি মরে যাই-যদি মরে যাই
ক্রমাগত সেই ভয়ে কুড়ে খায় আমায়
একবার মরার ভয়ে বার বার মরি
তবু ঘুমাই না।
জীবনের প্রয়োজনে ঘুম আসে- মৃত্যুর ভয়ে চলে যায়
আমার দুচোখে এখন তাই দুর্ভিক্ষের মত আকাল লেগেছে
একফোঁটা ঘুমের জন্যে।
যে ঘুম আমার চক্ষু শীতল করবে
সেই ঘুম আমি অনেক কাল ঘুমাই না।
অনেক কাল আমি নির্ঘুম আছি!
——————–
কবিতাঃ একফোটা ঘুমের জন্যে।
মিজানুর রহমান পলাশ
——————
১৩.৪.২০১২
রাত ১:৪৭
নজরুল ইসলাম হল, বুয়েট।
কবিতায় মন্তব্য করা অনেক কঠিন। 🙂
কঠিন কাজটাই কত সহজে সমাধা হলো!
🙁 🙁 8) 8) 😯 😯 :penguindance: :penguindance:
আচ্ছা, সবার-ই কি ঘুমের সমস্যা?? আমি তোহ যখন তখন চাইলেই ঘুমিয়ে পড়তে পারি… 😛
কবিতা চলুক…… 🙂
কবিতা চলবে ইনশাল্লাহ!
একটা ব্লগ লেখা যায় না, যেখানে ঘুমহীণদের জন্যে সহজে ঘুমিয়ে পড়ার টিপস থাকবে?
:thinking: :thinking: :thinking:
হুমম, যায়! 😀 😀
লিখে ফেলবো , অপেক্ষা করুন…… 🙂
অপেক্ষায় থাকলাম! :happy:
আমার তো খালি ঘুম পায়। :crying:
কবিতাটা সুন্দর! 🙂 🙂
ধন্যবাদ!
আমারো খালি ঘুম পায়, সেটা পিএল আর পরীক্ষার সময়, টার্ম ব্রেকে নয়!
আমি আর ঘুম চাই না এমনিতে অনেক ঘুমাই। 😛
কবিতাটা ভালো হয়েছে। 🙂
বিষে বিষক্ষয়!
অনেক ঘুম থাকলে এই ঘুমের কবিতা পড়লে ঘুম কমে যাবার কথা!
কবিতা বুঝতে সমস্যা! 🙁
চেষ্টা করলে কোন কিছুই সমস্যা না!
:babymonkey: :penguindance: :happy: :happy:
“তাই আমি ঘুমাতে পারি না
একবার ঘুম যদি চিরকালে রূপ নেয়
যদি মরে যাই-যদি মরে যাই
ক্রমাগত সেই ভয়ে কুড়ে খায় আমায়
একবার মরার ভয়ে বার বার মরি
তবু ঘুমাই না।”
চমৎকার! :clappinghands:
কিছু টাইপো আছে। ঠিক করবেন আশা করি 🙂
অনেক ধন্যবাদ!
টাইপো ঠিক করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
🙁 🙁 🙁