শচীন টেন্ডুলকার সেঞ্চুরি করলেই ইন্ডিয়া হারে– এইটা একটা কমন কৌতুক হিসেবে প্রচলিত। কথাটা কতটা সত্য? বিষয়টা আমরা পরিসংখ্যান থেকে বোঝার চেষ্টা করব।
নিচের পরিসংখ্যান দেখা যাক। দেখা যাচ্ছে শচীন এর সেঞ্চুরিতে জয়ের পরিমাণ সবচেয়ে কম! (অন্তত বেশি সেঞ্চুরিয়ানদের মধ্যে!)
ভিভ রিচার্ডস এর ১১ সেঞ্চুরির সব কটিতেই জয়! ১০০%
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ১৬, ১৬ জয়, ১০০%
মাহেলা জয়বর্ধনে ১৫, ১৪ জয়, ৯৩.৩৩%
মোহাম্মদ ইউসুফ ১৫, ১৪ জয়, ৯৩.৩৩%
সানাথ জয়সুরিয়া ২৮, ২৫ জয়, ৮৯.২৯% ((একটিতে ফলাফল নেই))
নাথান এস্টল ১৬, ১৪ জয়, ৮৭.৫%
ব্রায়ান লারা ১৯, ১৬ জয়, ৮৪.২১%
মার্ক ওয়াহ ১৮, ১৫ জয়, ৮৩.৩৩
রিকি পন্টিং ২৯, ২৪ জয়, ৮২.৭৬% ((১ টা বাদ দিয়েছি কারণ এশিয়া একাদশ এর বিরুদ্ধে করেছেন))
সৌরভ গাংগুলি ২২, ১৮ জয়, ৮১.৮২%
জ্যাক কালিস ১৭, জয় ১৩, ৭৬.৪৭%
রাহুল দ্রাবিড় ১২, ৯ জয়, ৭৫%
শচীন টেন্ডুলকার ৪৯, ৩৪ জয়, ৬৯.৩৯
দুর্বল দেশগুলোর বিপক্ষে সেঞ্চুরি আর জয় বাদ দিলে সেটার অবস্থা আরও করুণ হয়! ৬২% এর চেয়ে নিচে নেমে আসে!
টপ সেঞ্চুরিয়ানদের মধ্যে সম্ভবত শচীন সবচেয়ে বেশি দুর্বল দলের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছেন! ১০ টা ( কেনিয়া ৪, নামিবিয়া ১, জিম্বাবুয়ে ৫)
সুতরাং যারা শচীন বিরোধী তারা সম্ভবত খুব খুশী! শচীন এর সেঞ্চুরিতে কোয়ালিটি নাই! গুজবটা আসলেই সত্যি!!
সিদ্ধান্ত নেবার আগে আমরা আরেকটু গভীরে যাই।
২। দলগত অবস্থান
প্রশ্ন আসতে পারে, দল জেতা কি একজনের উপর। ভিভ রিচার্ডস এর সেঞ্চুরিতে দল জিতেছে এর একটা কারণ হতে পারে ওর পুরো দল ভালো ছিল! ((১৯৭৬ থেকে ১৯৮৮ এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর জেতার হার ছিল ৭৪% )) যেমন ট্রেসকোথিক এর ১২ সেঞ্চুরির অর্ধেকই পরাজয়ের মুখ দেখেছে! কারণ হিসেবে বলা যায় ওর দল সবচেয়ে দুর্বলদের একজন!
তাহলে খতিয়ে দেখা যাক বাকি সেঞ্চুরিয়ানদের সময়ে তাদের দলের অবস্থা কেমন ছিলো?
ব্রায়ান লারার দল ১৯৯৩ থেকে ২০০৫ এর মধ্যে মাত্র ৪৬.৪৫ % ম্যাচ জিতেছে! ((২৮২ ম্যাচে ১৩১ জয়!))
শ্রী লঙ্কা ১৯৯৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ৪৩৩ ম্যাচে ২৩৫ ম্যাচে জিতেছে, জয়ের হার ৫৪.২৭%
নাথান এস্টল এর দল নিউ জিল্যান্ড ২৫৫ ম্যাচে ১১০ জয় পায় ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ এর মধ্যে। মাত্র ৪৩.১৪%! (নাথান এস্টল এর নিজের সেঞ্চুরিতে জয়ের হার ৮৭%)
সৌরভ গাংগুলির ৯৭ থেকে ২০০৩ এই সময়ে ২৪৩ ম্যাচে জয়ের হার ছিল ৪৮.১৫ আর গাঙ্গুলির নিজের হার ৮১.৮২%! এখানে লক্ষণীয় একই দলের হওয়া সত্ত্বেও গাংগুলির পার্ফর্মেন্স বেশি ভালো! দ্রাবিড় সহ অন্যান্য ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরিতে জয়ের হার শচিন এর চেয়ে অনেক বেশি।
সুতরাং এই যুক্তি গেলা যাবে না যে দল দুর্বল ছিল বলেই শচীন ম্যাচ জেতাতে পারেন নি!!
৩। আগে এবং পরে
ভারত ১৯৯৪ থেকে ২০০০ পর্যন্ত ২২৫ ম্যাচে ১০৬ জয় পেয়েছে। জয়ের হার ৪৭.১১%
এই সময়ে শচীন এর ২৭ সেঞ্চুরির মাত্র ৫ টিতে ভারত হারে! সেঞ্চুরিতে জয়ের হার ৮১.৪৮!
৮১.৪৮ >> ৪৭.১১
শচীন সে সময়ে সত্যি একজন ম্যাচ উইনার ছিলেন।
২০০১ থেকে ২০১২ এর এই পর্যন্ত ৩৪৫ ম্যাচে ১৮৯ জয় পেয়েছে। জয়ের হার ৫৪.৭৮%
এই সময়ে শচীন এর ২১ সেঞ্চুরির ৮ টায় হেরেছে, একটা টাই, আর একটিতে ফলাফল নেই! সেঞ্চুরিতে জয়ের হার ৫২.৩৮%!
৫২.৩৮ < ৫৪.৭৮%
কী বিশাল পার্থক্য!
আরও একটা পরিসংখ্যান
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ
১৯৯০- ২০০০ পর্যন্ত ৩৬ বার
২০০১- ২০১২ পর্যন্ত ২৫ বার
এর কারণ কী হতে পারে?
শচীন এর বয়সের কারণে খেলা বদলেছে? নাকি অন্য কিছু? আপনারাই বলুন।
শচীন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ এর শুরু সম্ভবত ২০০৪ থেকে।
২০০৪ থেকে ২০০৬ এর মধ্যে শচীন এর সব সেঞ্চুরিতেই ভারত পরাজয় এর মুখ দেখে। এর মধ্যে পর পর ৩ সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের সাথে হারাটা বোধহয় পর্যবেক্ষক/ সাংবাদিকদের চোখে লাগে এবং রটনা শুরু হয়।
আমাদের মনে রাখা উচিৎ একদিনের ক্রিকেটে শচীন এর ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হবার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ((http://en.wikipedia.org/wiki/List_of_ODI_Awards_for_Sachin_Tendulkar))
ট্রেসকোথিক এর ১২ জয়ের ৬ টিতেই তার দেশ হেরেছে, তাই বলে আমরা বলতে শুরু করি না ট্রেসকোথিক সেঞ্চুরি করলেই দল হারে! শচীন অনেক বেশি জনপ্রিয় তাই তার সেঞ্চুরিতে হারলে সবার চোখে পড়ে বেশি।
শচীন অসংখ্যবার ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছেন তাই শুধু নিন্দা করার জন্য নিন্দা করাটা উচিৎ হবে না। তিনি ১৮ বার ৯০ এর ঘরে রান করেন। তার অনেকগুলাতেই জয় পান। শচীন এর ভক্ত এবং অন্ধ শত্রুরা এই সাইটটা দেখতে পারেন ((http://www.sachinandcritics.com/sachin_is_a_match_winner.php))
এই সব পরিসংখ্যান ((গত মাসের শেষে হিসেবগুলো করেছিলাম। ))থেকে আপনার সিদ্ধান্ত কী? গুজব কতটা গুজব?
আরে দারুণ সব পরিসংখ্যান !
আপনিতো কোন সিদ্ধান্ত টানলেন না !
তবে শচীনকে এখন আর স্বচ্ছন্দ মনে হয়না ।
বিশেষ করে শততম সেঞ্চুরিতে তিনি খুবই নার্ভাস ছিলেন ।
আমার অবস্থান মনে হয় কিছুটা বোঝা যায়! আমি এই পরিসংখ্যান থেকে কে কী সিদ্ধান্তে পৌঁছান সেটার ব্যাপারে আগ্রহী!
অনেকেই পুরোটা না পড়ে মন্তব্য করছেন
শচীন খুব খুবই ভালো খেলে কিন্তু কেন জানি তার খেলা আমি খুব আগ্রহ ভরে দেখিনা, সৌরভ এর খেলা বরং অনেক আগ্রহ নিয়ে দেখতাম ।
তবে ব্যক্তি শচীন কে আমার খুবই পচন্দ। এমন নিরহংকার সরল ঠান্ডা মাথার খেলোয়াড় খুব কমই দেখা যায় , সেই সাথে গোছানো পারিবারিক জীবন ।
খেলা বিষয়ক আরো পোস্ট আসুক!
আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন দেখতাম শচীন সেঞ্চুরি করলে ইন্ডিয়া ম্যাচ জিতে। তখন তো আর পরিসংখ্যান এত বুঝতাম না কিংবা ঘাটতামও না। (হমম… আসলে ওই সময়টা ২০০৪ সালের আগ পর্যন্ত)।
এরপর দেখা গেল শচীন সেঞ্চুরি করলো তো ইন্ডিয়া ম্যাচ হারা শুরু করলো। কই, আগে তো শচীন সেঞ্চুরি করলে ইন্ডিয়া ম্যাচ জিততো, তাহলে এখন আবার ম্যাচ হারা আরম্ভ করলো ক্যান? 🙁
এ ব্যাপারে আমার মনে হয় শচীনের প্রতি টিমের সকলের অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়া।
টিমের অন্য সকলে সাধ্যমত পারফরম্যান্স করছে না কারণ আমাদের তো শচীন আছেই। তাই এরপর থেকে দেখা গেল শচীন সেঞ্চুরি করলেই ইন্ডিয়া ম্যাচ হারা শুরু করছে। এ মানসিকতা ধীরে ধীরে সবার মনে বদ্ধমূল হওয়া শুরু করলো এবং আস্তে আস্তে সবাই মানসিকভাবে দুর্বল হয়েও গেল, “খাইছে! আজকে শচীন সেঞ্চুরি করসে! তাইলে তো আমরা ম্যাচ হারসি!!” 😳
কোন একটা ওয়ার্ল্ড কাপে ধোনি শচীনকে পরোক্ষভাবে দোষারোপ করলো না যে “ওনারা (সিনিয়র) প্লেয়াররা যদি ঠিকভাবে পারফর্ম না করেন, তাহলে দলের কি হবে?” এরকম কিছু একটা…
একই ব্যাপারটা আমার মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের ক্ষেত্রেও খাটে। আমরা সবাই সাকিব আল হাসান এর উপর অতিরিক্ত নির্ভর না হয়ে (অবশ্যই স্বীকার করি সাকিব আমাদের গর্ব) সবাই নিজের সাধ্যমত পারফর্ম করতে থাকি, তাহলে আমাদেরও জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে ইনশা’আল্লাহ। এই এশিয়া কাপ দেখে তো আমার তাই মনে হলো।
আগেই বলে রাখি আমি কোনো ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ না, আমার যা মনে হলো তাই বললাম আর কি! 😐
খেলাধুলা নিয়ে মাথা ঘামাই না, তারপরও পড়লাম। 😀 ভাল লেগেছে!
আচ্ছা, নাম্বারের পর দাঁড়ি দিলে ঐ লাইন পুরাটা বক্স বক্স হয়ে থাকে ক্রোমে। কেন বলেন তো?
১/ ফজাস্লকজফ
১। আসদজফ্লকাজসদল্কফ
এখানে প্রথম লাইনটা পড়া যাচ্ছে, দ্বিতীয় লাইনে দাঁড়ির পর থেকে সব বক্স। 🙁
আমার মনে হয়, অনেকটাই গুজব। মানুষ বিখ্যাত লোকের খুঁত বের করতে পছন্দ করে। এজন্যই এসব কথা বলে……
শচীন নিয়ে পরিসংখ্যান ভালো লাগলো। তবে শুধু লেখা না এসে দু-একটা ছবি-পাই চার্ট ধরণের পরিসংখ্যান এলে মনে হয় আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন হতো।
বার চার্ট অথবা পাই চার্ট দিলে বেশি ভালো হত। সামনে খেলা নিয়ে আরো পোস্ট আসবে আশা করি। 🙂
শচীনকে ভালো লাগে…… এইসব পরিসংখ্যানে তেমন মাথা ঘামানো হয় না……
দুঃখিত অ-সেন্সেটিভ মন্তব্যের জন্য…… :p
আসলে বাপ্পী ব্যাপারটাকে শচীনের দোষ হিসেবে না দেখে আমাদের এমন ভাবেও দেখা উচিত।
শচীন টপ অর্ডারে ব্যাট করে। দীর্ঘ দুই দশক সে ভারতের ত্রাতা। তাই তার সেন্চুরি বা সেট হয়ে যাওয়া ভারতের অন্য ব্যাটসম্যানদের রিলাক্স করে দেয়। এর পরবর্তীতে দেখা যায় শচীন যখন ১০০ শেষ করে ১১০-১২০ রানে আউট হয় তখণ যদি পনের বিশ ওভার থাকে তখন বাকি ব্যাটসম্যানরা রান তুলতে ব্যর্থ হয়। বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রকার বিরুদ্ধে হার, এছাড়াও আরো অনেক ম্যাচেই শচীনের দ্রুত গতির সেন্চুরির পরেও ভারত হেরেছে
তবে শততম সেন্চুরিতে সে বহুত নার্ভাস ছিল এটা বলাই যায়। আর সবার মত আমিও মনে করি অনেক হয়েছে। ট্রেনটা এখন থামা উচিত। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা লিজেন্ড দের মানায় না।
পোস্টটার দিকে তাকায়েই দেখি একগাদা সংখ্যা 🙁 পুরোটা পড়ি নাই, মাথা ধরে গেসে 🙁
১ স্টার রেটিং দিসি :love:
ব্যস্ততার জন্য রিপ্লাই করতে পারি নি। আমি এই পোস্ট নতুন করে সাজাবো ভাবছি
সবাইকে ধন্যবাদ। আলাদা ভাবে রিপ্লাই করার আশা রাখি
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ এর সাথে খেলার সময়, সেঞ্চুরি করার পর যখন ভারত হারলো…. এত মজা লাগছে!
বেচারা!
এই কথাটা ইনফর্মালি বললেও লেখা হিসেবে আনার সাহস পাইতাম না আমি কখনো। 😛
বহুত উপাত্ত সংগ্রহ করতে হইসে দেখি!
You missed(deliberately missed?) to apply the same formula to other
players as well. Lets apply the same formula to his more-comparative
counterpart Sourav Ganguly, out of his 18 winning cause centuries 8
are against minnows. So now his winning percentage is 45.45%(Sachin’s
63.15%). You have to apply the same formula to all of them.
1. Brian Lara: 3 of his centuries against minnows so now winning cause
is 68.42%.
2. Sanath Jayasuriya: Out of 24, 6 are against minnows. So now winning
cause 64.28%
3. Saeed Anwar: Only one of his century is against minnows. (his highest no. of centuries against india and srilanka while india is never a good opponent with weak bowling and fielding and srilanka before 1996 was minnow by the way.
4. Mohammed Yousuf: Out of 14 winning centuries 6 against minnows. So
53.33%
5 Mahela Jaywardene: 3 winning centuries against minnows. Winning
percentage 76.92%
6. Nathan Astle: 4 winning centuries against minnows. So 62.5%
Some rational things missed in the argument
1. Some players has accompanied with some of the world’s greatest
bowlers in their carrier. For eg. Lara with Walsh, Ambrose, Ian
bishop. Throughout the carrier of Saeed Anwar and Inzamam have been accompanied with Wasim Akram, Waqar Younis, Aquib Javed, Saqlain Mushtaq, Mushtaq Ahmed and
off late with Sohib Akthar. Note that India never get a world class
pacer since Kapil Dev.
2. Some teams has very high winning percentage in their home like NZ
and SL
3. India’s winning percentage is always lesser than most of the
countries in large part of SRT carrier.
4. India’s winning percentage is increasing only after 2000. it was rather because of the captaincy by ganguly that changed the attitude a lot……..thanx…….sorry for in english.(dont have avro installed in pc.)
*sorry that the above comment is also copied from website as those are true . for details you can visit http://sachinandcritics.com/index.php