গত কয়েক দিন ধরে পাকিস্তানে খেলতে যাবার ব্যপারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে ব্যপক উদ্যোগ দেখা যায়। অনেকেই বলেন, আইসিসি-র সহ-সভাপতি হবার ব্যপারে পাকিস্তানের সমর্থন পাবার আশায় এই সব উদ্যোগের পিছনে আছেন একজন মানুষ-ই। কিন্তু, তার ভাষ্যমতে পাকিস্তান খেলতে যাবার জন্য খুবই নিরাপদ যায়গা। বাংলাদেশের ক্রিকেট এর দায়িত্ব, বহুদিন ধরে ক্রিকেট থেকে বঞ্চিত পাকিস্তানের জনগণকে ক্রিকেটের আনন্দ ফিরিয়ে দেয়া।
আসুন দেখা যাক, পাকিস্তান কতটা নিরাপদ। গত এক মাসে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে যে সকল নিরাপত্তাহীনতার ঘটনা ঘটেছে তারই কিছু দেয়া হল এখানে-
১৭ই মার্চ-রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৩ মেয়ে নিহত। [১]
১৮ই মার্চ-সপ্তাহব্যপী সংঘর্ষে ২৫জন জঙ্গী ও ৪ জন সেনা সদস্য নিহত। [২]
২১এ মার্চ-৫ জঙ্গী নিহত। [৩]
২২শে মার্চ-নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩জন নিহত। [৪]
২৩শে মার্চ-অজ্ঞাতনামার হামলায় ৩ সৈনিক নিহত। [৫]
২৪শে মার্চ-৮ জন ‘টার্গেট কিলিং’-এ হত্যার শিকার। [৬]
২৫শে মার্চ-অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীদের গুলিতে এক গাড়িতে ৪ জন নিহত। [৭]
২৬শে মার্চ-বিদ্যুৎয়ের দাবির আন্দোলনে ১ জন নিহত। [৮]
২৭শে মার্চ- রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় একই দিনে করাচীতে ৭ জন নিহত। [৯]
২৮শে মার্চ- আগের দিনের মতই রাজনৈতিক কারণে আরো ৩ ব্যক্তি করাচীতে নিহত। [১০]
২৯শে মার্চ-‘টার্গেট কিলিং’এ ৬ জন নিহত। [১১]
৩০ শে মার্চ- একদিনে আরো ১৩ রাজনৈতিক ব্যক্তি হত্যা। [১২]
৩১শে মার্চ- পার্লামেন্ট ভবনে হামলার পরিকল্পনাকারী আটক। [১৩]
২রা এপ্রিল- সীমান্তের ৫ সৈন্য ও ৮ জঙ্গী নিহত। [১৪]
৩রা এপ্রিল-সমাবেশে হামলায় ১৪জন নিহত। [১৫]
৫ই এপ্রিল- করাচীতে আত্নঘাতী বোমা হামলায় ৪ জন নিহত। [১৬]
৮ই এপ্রিল- ১২০ জন বিদেশী নাগরিককে আটকে পড়া শহর থেকে বিমানবাহিনী কর্তৃক উদ্ধার। [১৭]
৯ই এপ্রিল- ‘টার্গেট কিলিং’-এ ৮ জন নিহত। [১৮]
১২ই এপ্রিল- আরো ৪ জন ‘টার্গেট কিলিং’ এর শিকার। [১৯]
১৩ই এপ্রিল- নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে বেলুচিস্তানে সেনাবাহিনী ডাকা হতে পারে। [২০]
১৪ই এপ্রিল- আরো ৯ জন গুলিতে নিহত। [২১]
১৫ই এপ্রিল- পেশোয়ারের জেলে জঙ্গী হামলা চালিয়ে ৩৮৪ জন বন্দীকে মুক্ত করে নিয়ে যায় জঙ্গীরা। [২২]
১৬ই এপ্রিল- করাচীতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা বাস স্টপেজে গুলি চালালে ৩ জন নিহত। [২৪]
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর ২০০৯-এ হামলার কথা মনে আছে? যেই হামলায় ৬ জন ক্রিকেটার আহত হয় আর নিহত হয় নিরাপত্তারক্ষী ৫ জন। আসুন ছবি দেখে কিছু মনে করি।
যে দেশে প্রায় প্রতিদিন অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় মানুষ মারা যায়, যে দেশে সমাবেশে মানুষ মারা যায়, যে দেশে নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী ডাকা হতে পারে, যে দেশে সেনা সদস্যদেরই নিরাপত্তা নেই, যে দেশে নিয়মিত রাজনৈতিক হত্যা হয়, যে দেশের রাজধানীতে বোমা হামলা, খুন লেগেই আছে- সেই দেশে কিভাবে আমরা আমাদের সেই ক’জন খেলোয়ড়কে পাঠাতে পারি, যারা পুরো দেশকে একসাথে হাসায়, একসাথে অনন্দে ভাসায়।
পুরো দেশকে কি একসাথে কাঁদতে দেখতে চান কেউ? আমি চাই না, এই দেশের কোন সুস্থ মনের মানুষই চায় না।
এখন শুধু অপেক্ষা, নিশ্চয়ই কেউ একজন এই আত্মঘাতী সফর বাতিল করবে।
আমরা অপেক্ষায় আছি……
পাকিস্তানে যাবার কোন মানে নেই… তারচেয়ে বরং ইন্ডিয়া সফর সম্ভব করতে পারলে, বেশি লাভ!
যেখানেই যাক, পাকিস্তানে না গেলেই হলো……
পাকিস্তান একটা ফেইল্ড স্টেট। ঐখানে আমাদের সোনার ছেলেদের পাঠানোর কোন মানে নাই
সবাই এটা বোঝে, শুধু যারা ডিসিশন নেয় তারা বাদে :dhisya:
আমি এই ব্যাপারটায় ক্লান্ত হয়ে গেছি। এখন শুধু দোয়া করে যাচ্ছি মনে মনে যেন দলকে না পাঠায় বিসিবি।
একই দোয়া রইলো……
আমরা জনগণ হিসাবে খুবই লক্ষ্মী প্রকৃতির। দুই সতীন কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে দেশটাকে নরকের কাছাকাছি নিয়ে যেতে চান- আমরা বলি, “হায়রে!!” তারপর ভাবি এটাই তো স্বাভাবিক। শেয়ারবাজারে কাহানী হয়, এই লুটপাটের টাকা কারও না কারও পকেটে তো যায়, অথচ কারও শাস্তি হয় না- আমরা বলি, “হায়রে!!” তারপর ভাবি এটাই তো স্বাভাবিক। সাগর রুনি তো Gone Case – আমরা বলি, “হায়রে!!” তারপর ভাবি এটাই তো স্বাভাবিক।
কিন্তু জাতির সবেধন নীলমণি গৌরব, আনন্দ আর অশ্রুর উৎস ক্রিকেটারদের নিয়ে একটা আহাম্মক ছেলেখেলা খেলবে– না ভাইজান এইবার একটু বেশি হয়া গেসে। এইটা এই লক্ষ্মী জাতিও হইতে দিবে না।।
নিশ্চয়ই……
ওরা বোঝে না ক্যান সাকিব-তামিম রা গাঙ্গের জলে ভেসে আসেনা। আমি মরলে আজ দেশের কোন ক্ষতি হবে না।কিন্তু সাকিব-তামিমদের জীবন হাতে নিয়ে ওই দেশে যাওয়ার কোন মানে আমি খুঁজে পাইনা। :wallbash:
ঐখানে কিছু হয় নাকি গোলাগুলি ছাড়া? :dhisya:
“বাংলাদেশের ক্রিকেট এর দায়িত্ব, বহুদিন ধরে ক্রিকেট থেকে বঞ্চিত পাকিস্তানের জনগণকে ক্রিকেটের আনন্দ ফিরিয়ে দেয়া।”
এটা দেখে পুরাই অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। বাংলাদেশের ক্রিকেটার দের কবে থেকে এই দায়িত্ব দেয়া হল যে তারা পাকিস্তানের জনগণের মনোরঞ্জন করবে!! 😯
সৃষ্টিকর্তা লোকগুলাকে একটু সুবুদ্ধি দান করুন যাতে তাদের মাথা থেকে পাকি ভুত চলে যায়। 😳
“সৃষ্টিকর্তা লোকগুলাকে একটু সুবুদ্ধি দান করুন যাতে তাদের মাথা থেকে পাকি ভুত চলে যায়। ”
সহমত
আমার সোজা সাপ্টা কথা, পাকিস্তানে খুশির খোরাক জোগাতে আমরা ইজারা নেইনি। তারা মাটি খুড়ে তাদের আনন্দ খুঁজে বের করুক কিংবা আকাশ চিড়ে, আই ডোন্ট গিভ এ ড্যাম কেয়ার। কিন্তু, সাকিব-তামিমদের ওখানে পাঠানোর চেষ্টা করা মাত্র, লোটা’র জীবনের অন্যতম ভুল হবে, এটা যেনো সে মাথায় রাখে। সাকিব-তামিমরা এয়ারপোর্ট পৌছাতে হলে, লাখ মানুষের অস্তিত্ব মিটিয়ে যেতে হবে, লোটাকে কথা দিয়ে রাখলাম।
একখান লাইক বাটনের অভাব বোধ করতাসি :love:
(Y)
সহমত
শুভবুদ্ধির উদয় হোক ………… 🙁
সেই আশাতেই আছি…
🙁
নিশ্চয়ই কেউ একজন এই আত্মঘাতী সফর বাতিল করবে। – তাই যেন হয়।
তাই যেন হয়। 🙁
ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকেরা সবাই এই সফরের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। এখন যার বোঝা দরকার, সে বুঝলেই হয়……
এই আত্মঘাতী সফরটা বাতিল করা উচিৎ। 🙁
অপেক্ষায় আছি…… 🙁
অবশেষে স্বস্তি। চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা।
আগে আদালতের এই status quo খুব বিরক্ত লাগত। আজ লাগছে না। বরং মনে হচ্ছে লোটাকে একটা চমৎকার বাড়ি দেয়া হয়েছে
হা হা :happy:
যাবেনা মনে হয় 😛
:penguindance: