মাননীয় মহোদয় এবং মহোদয়াগণ,
আমি কারো মুখপাত্র নই, কারও পক্ষ থেকে কথা পৌঁছিয়ে দেবার জন্য এই লেখার অবতারণা নয়। আপনাদের প্রাণের ব্যাকুলতা, সংগ্রামী চেতনা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবার তেজটা তো সর্বোচ্চ ফেসবুকে শেয়ার, আর নিজেদের মধ্যে আলোচনা পর্যন্তই। আমি আরেকটু সাহস করে সেই শেয়ারের ব্যবস্থাটা করে দিচ্ছি।
বর্তমানে বুয়েটে কমবেশি চারটা প্রধান শ্রেণী লক্ষণীয়,
প্রথমত, মাননীয় উপাচার্য মহোদয় নজরুল ইসলাম, এবং উপ-উপাচার্য জনাব হাবিবুর রহমান
দ্বিতীয়ত, শিক্ষক সমিতি, যার অধীনের কতিপয় শিক্ষক ব্যাতীত মোটামুটি সবাই আছেন
তৃতীয়ত, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী
এবং সর্বশেষে চতুর্থত, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদবাকী আপামর অসাধারণ শিক্ষার্থী
সবার উদ্দেশ্যেই বেশ কিছু কথা বলতে চাই। ক্রমানুসারেই শুরু করা যাক –
মাননীয় উপাচার্য মহোদয় নজরুল ইসলাম, এবং উপ-উপাচার্য জনাব হাবিবুর রহমান,
আপনাদের কথা বলতে গেলে এতো বেশি কথা মাথায় চলে আসে যে, কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো, সেটা বোঝাই মুশকিল হয়ে যায়!
রেজাল্ট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রসঙ্গে আসি প্রথমে,
বুয়েটে ভর্তি হবার পর থেকে শুনে আসছি, জেনে আসছি, দেখে আসছি, বুয়েটের পরীক্ষা ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচাইতে সুষ্ঠু, কোনোপ্রকার প্রভাবের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। আপনি পরীক্ষা ব্যবস্থা আগের মতই সমুন্নত রেখেছেন, তার জায়গাতে পরিবর্তন করেছেন ফলাফল। আপনি বলতেই পারেন, বুয়েটের পরীক্ষা এখনো আগের মতই অবাধ, তবে ফলাফলটাও কি আগের মতই অবাধ?
ভালোই করছেন, এমনেই চালায়া যান, অদূর ভবিষ্যতে আমরা মোকাম্মেল, মিশু, তন্ময় এদের সবাইকে বুয়েট শিক্ষক হিসেবেই পাবো আশা করা যায়। এক সময় তারা আপনার বর্তমান পদও দখল করবেন, তারা আমাদেরকে ক্লাসে, মাঠে, ঘাটে, সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে, সমাবর্তনে, নবীনবরণে তাদের মূলমন্ত্র শেখাবেন, “হকিস্টিক, নানচাকু ইত্যাদিই সকল ক্ষমতার উৎস। যার যত দক্ষতা ভালো, সে তত উপরে উঠবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চাসনগুলোও তাদের দখলেই যাবে।”
মাঝে মধ্যেই একটা প্রশ্ন মাথাচাড়া দেয়, বুয়েট ছাত্রলীগ কারা, মিশু-তন্ময়, নাকি নজরুল-হাবিবুর?
মামারা, ভাগিনাদের মদদ তো দিচ্ছেন, দিবেনও জানি, আর কতদিন?
শুনতে পাই, আপনি নাকি শেখ হাসিনার গৃহশিক্ষক ছিলেন, উনার পিতা এই দেশের জনক, সেই হিসেবে দেশের দায়ভার আপনার উপরেও কিছুটা বর্তায়, সেইটা শুধু ভাগিনাদেরকে দিলেই চলবে?
জনাব হাবিবুর রহমান, আপনারে দেখলে আমার আর কোনো কিছুই মাথায় আসে না, একটা জিনিসই ঘুরপাক খায়? মানুষ এতো নির্লজ্জ ক্যামনে হয়? ক্যামনে??
নিজেরে আপনার হোমড়া-চোমড়া মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক, এই বুয়েটে আপনার যোগ্য কোনো পদমর্যাদা ছিলো না, আপনার উপযুক্ত কোনো পদ আমরা খুঁজে পাই নি, তাই শুধুমাত্র আপনার জন্যেই বুয়েটে একটা পদ তৈরি করা হয়েছে, বুয়েটের ’৬২ সালের ইতিহাস থেকে এখন পর্যন্ত যার কোনো নজির নেই।
আত্মসম্মানের লেশমাত্র থাকলেও আপনি এই পদ গ্রহণ করতেন না, আপনার রুচিতে বাধতো।
রেজিস্টার নিয়োগ নিয়ে আপনারা যা দেখাইলেন! বলিহারি যাই! এক কামালউদ্দিনকে নিয়োগের জন্য আপনারা লোটাস কামালের নির্লজ্জতাও পার কইরা গেছেন। আচ্ছা, সবার সামনে, সবাইকে জানিয়ে, একটা অন্যায় করতে, আপনাদের একটুও বাধে না?
’০৬ ব্যাচের ২০ জনের ফলাফল আপনারা আটকাইসেন। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবৈধভাবে তারা আপনার রুম অবরোধ করছে। আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারেন নাই, খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম হইসে, বাসায় ঘুমাইতে পারেন নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। এই জন্যে আপনি ২০ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল আটকায়া দিয়া তাদের জীবন নিয়া কান্নাকাটি শুরু করায়া দিলেন? এদের সবাইই এখন দৌড়াদৌড়িতে আছে, এইখানে অইখানে চাকরির ইন্টারভিউ, অমুক তমুক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হইতে চায় তারা, উচ্চশিক্ষার জন্য তারা বিদেশে পাড়ি জমাইতে চায়, সবগুলা আশা ভরসা আপনি আটকায়া দিলেন ক্যান? কারণ আপনার এক রাত ঠিকমত ঘুম হয় নাই, খাওয়া দাওয়া হয় নাই, বাসায় যাইতে পারেন নাই, এইজন্য।
তিন হাজার ছাত্রের তিন দিন তিন রাত না জেগে না খেয়ে থাকা আন্দোলনের ফলাফল এখন দিব্যি দেখা যাচ্ছে, সুজিত মিঠুন আবারো হলে, কয়েকদিন পর আবারো কাউকে ধরে পেটাবে, আপনি আবারো তদন্ত করবেন, তারপর যা ছিলো সেই তাই। যেমন ছিলো তেমন।
মাননীয় উপাচার্য এবং উপ উপাচার্য মহোদয়, বিশ্বাস করেন, আপনাদের প্রতি আমাদের কোনো ব্যাক্তিগত ক্ষোভ নেই, কিন্তু আপনাদের বিরুদ্ধে জমতে থাকা অভিযোগগুলো যদি এক এক করে তোলা হয়, তাহলে এই লেখা কখনই শেষ হবে না। সাধারণ ছাত্রছাত্রীর কষ্টগুলো কই, সেটা আপনারা কখনই বুঝবেন না। ঈশান ভাইয়ের মতো আপনাদের পায়ের উপর হকিস্টিকের বাড়ি পড়তো, গৌতমদার মত নানচাকুর আঘাতে যখন আপনি রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় শুয়ে থাকতেন, আপনার চেয়ে খারাপ ফলাফল করেও অন্য কেউ যখন শুধুমাত্র উপরমহলের চ্যালা হবার কারণে ফলাফল ভালো হতো, শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতো, তখন আপনারা বুঝতে পারবেন, এই ঘৃণা, রাগ, আজন্ম বিদ্বেষ কই থেকে আসে।
বরাবর শিক্ষক সমিতি,
আপনারা বরাবরই নিজেদের দাবিতে সোচ্চার, নিজেদের অধিকারের সবটুকু আদায় করে নিতে আপনারা যারপরনাই সচেষ্ট। আপনারা আপনাদের অধিকার আদায়ে ১৬টি অভিযোগ পেশ করেছেন, সবাই সেটা দেখেছে, এবং বুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্য সেটি উপকারমূলক বলে মেনেও নিয়েছে।
একটা গুজব শোনা যায়, আপনারাই জানেন, আপনাদের অভিযোগ নাকি ১৭টি ছিলো? সেই ১৭ নং দাবিতে ছিলো বুয়েট ক্যম্পাস, হল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে চাঁদাবাজি বন্ধ করা? সেই অভিযোগটি কোথায় গেলো? ফোনে হুমকি, কক্ষে তালা, উড়ো আতংক এতটাই আতঙ্কিত হয়েছেন, যে সেটা বাদ দিয়ে দিলেন? নাকি অই অভিযোগটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো না আপনাদের কাছে? মনে হয়েছে, চাঁদাবাজির শিকার তো আমরা হইনি, তাহলে আমাদের এতো চিন্তা করে কি লাভ?
বার বার শিক্ষার্থীরা আপনাদের কাছে গিয়েছে, তাদের সমস্যা নিয়ে, ছাত্র রাজনীতি নামক আতংক নিয়ে, এর সমাধান চাইবার জন্য, কোনোবারই তো আপনারা তাদেরকে সাহায্য করেননি। আজকে যখন সরাসরি এটি আপনাদের স্বার্থে আঘাত হেনেছে, তখনই আপনারা ধর্মঘটে নামলেন?
নিজেদের ব্যাপারে তো ষোলআনা, ছাত্রদের স্বার্থ এলে, আর সেটাতে আপনাদের কোন লাভ না থাকলে, তখনই কেনো ডিগবাজি খেতে হয় আপনাদের? বিশ্ববিদ্যালয়ে এতোগুলা নির্যাতন, এতোগুলো অনিয়ম, এগুলো আপনাদের চোখে পড়ে না। ক্যাফেতে, হলেতে, ক্যাম্পাসে যখন কেউ মার খায়, তখন আপনাদের ধর্মঘট দূরে থাক, একটা সাধারণ বিবৃতিও তো চোখে পড়ে না, এমন কেনো? সেটা আপনার স্বার্থান্বেষী নয় বলে?
রাখাল আর বাঘের গল্পটা তো জানেন, এমন আর বেশিদিন চলবে না, খুব শীঘ্রি দেখবেন, যে ছেলেমেয়েগুলো আপনাদের কথাতে মূহুর্তেই রাস্তায় নেমে পড়তো, তারা আপনাদের বিপক্ষে শ্লোগান দেবে।
শ্রদ্ধেয় মামাবাহিনী (ওরফে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা),
আপনাদের সাথে কথা বলতে গেলেই আপনাআপনি নিজের ভেতর থেকে সম্মানসূচক সম্বোধন চলে আসে।
ক্যাম্পাস পিতৃসূত্রে না পাইলেও, মাতুলালয়ের সম্পর্কে তো সম্পূর্ণভাবেই আপনারা অধিকার করে নিয়েছেন। ক্যাফে আপনাদের, ক্লাসরুম আপনাদের, হল আপনাদের, জিমনেশিয়াম আপনাদের, অডিটোরিয়াম আপনাদের। সর্বত্র আপনারা কে কি ঘোড়ার ডিম পারসেন, কে কয়জনকে পিটিয়ে খুন করে কেন্দ্রীয় দলে পদ পাইসেন, তাদের বিজ্ঞাপনে মুখর আপনারা। বিপরীতে কেউ কিছু বললেই বিনে পয়সায় আপনারা একটু আদর করে দেন, আপনাদেরও ব্যায়াম হয়, তাদেরও কয়েকদিন বিশ্রামের সুযোগ হয়।
আপনাদের প্রশংসার ভাষা আমাদের জানা নাই, ছোটবেলায় ছাত্র রাজনীতির উপকারিতায় পড়েছিলাম, নেতৃত্বের ক্ষমতা লাভ করা যায়, জাতীয় দুর্যোগে এরা জাতিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারে।
আপনারা আরো এক কাঠি বেশি, এখন যদি প্রয়োজন হয়, আপনারা আমাদের তিন সশস্ত্র বাহিনীকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন। মারামারি কি ওরা আপনাদের থেকে বেশি করসে নাকি?
ক্যাম্পাসের সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব যেহেতু আপনাদের হাতে, কাজেই আপনাদের খুশি করাটা তো কতৃপক্ষের আসেই। তাই আপনারা ফাউ খান, ফাউ থাকেন, ১২ বছরের পিচ্চির চায়ের দোকান থেকে ভিক্ষার মত করে চাঁদা নেন, একেকজনের নামে ৩০-৪০ হাজার করে বকেয়া তৈরি হয়, এটুকু তো সামান্যই। ভাগ্যিস, আপনারা আপনাদের সেবার বদলে সমগ্র দেশের কতৃত্ব চাননি, এইই তো আমাদের কাছে অনেককিছু!
আপনারা আরো বেশি করে শারীরিক ব্যায়াম করুন, মুখের উপর কেউ কথা বললে মুখ উড়িয়ে দিন, আঙ্গুল তুললে আঙ্গুল ভেঙ্গে দিন, মাগনা খান, মাগনা ঘুরেন, মন্ত্রীদের সাথে সুসম্পর্ক রাখুন, সুন্দরী ললনা দেখলে পিছনে লাগেন, এটুকু তো আপনাদেরি ন্যায্য অধিকারই, তাই না!
একটা মহান বাণী মনে পড়ে গেলো, বিশ্ববিদ্যালয়েরই কোনো এক কর্মচারী কয়েকজন শিক্ষার্থীদেরকে বলেছিলো, “আপনারা হইলেন কলাগাছ, আর এরা (তন্ময়-বিশু) হইলো হাতি, আপনাদেরকে মুড়ায়া খায়া ফেলবে।!! আর শুনেন আপনারা হইল মানুষ, আর ওরা হইলো প্রাণী।”
আশা করি, খুব শিঘ্রী আপনাদের সশস্ত্র সামরিক দল বাংলাদেশের যে কাউকে ছাড়িয়ে যাবে,আপনার নানচাকু, লাঠি, হকিস্টিক, ছোরা থেকে বের হয়ে একে-৪৭, ট্যাংক, বাজুকা নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববদ্যালয়, কুয়েট, চুয়েট এগুলো আপনাদের পদাবনত হবে, সেঞ্চুরি মানিক, সুইডেন আসলামের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলবেন, এককালের পড়াশুনার দিক থেকে এক নং এ থাকা প্রতিষ্ঠানটিকে আপনারা এখন পড়াশোনা ছাড়া সকল ক্ষেত্রেই প্রথম স্থানে নিয়ে যাবেন!
এবং অবশেষে, ক্যাম্পাসের অসাধারণ ছাত্রছাত্রীরা –
আপনারা বিশিষ্ট সুশীল সমাজ, হলে বসে, চায়ের আড্ডায় তর্কে ঝড় তোলেন, ক্রিস্টোফার নোলান না জেমস ক্যামেরুন, টারান্টিনো নাকি গাই রিচি, জেমস বন্ড নাকি মিশন ইম্পসিবল… এদের সকল ব্যাপারে আপনাদের জ্ঞান অসীম। আপনারা পড়াশুনা করেন, সুন্দরী বালিকাদের সাথে প্রেম করে বেড়ান, সারারাত হলের ছাদের পায়চারী করে আপনাদের রাত কাটে চাঁদ দেখে আর অইপাশের ভালোবাসার মানুষটির সাথে কথা বলে, পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাল্গুন, একুশে ফেব্রুয়ারী, ছাব্বিশে মার্চ, ষোলোই ডিসেম্বরে আপনার ভেতরের বিপ্লবী মানুষটি জেগে ওঠে, ফেসবুক আর ব্লগের আকাশ বাতাশ কাপিয়ে আপনি মৃতদের স্মরণ করেন, ভালোবাসা দিবসে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা হাতে প্রিয়ার সাথে ডেটিং এ যান, এবং দিনশেষে হলে বা বাসায় ফিরে ক্যাম্পাসের কথা মনে করে বলে ওঠেন, এদেরকে দিয়া কিছু হবে না। নোংরা রাজনীতি দেশটাকে খেলো, এখন বুয়েটকেও খাবে!
’০৬ এর ভায়ারা, ঈশান ভাইকে মারার প্রতিবাদে আপনারা তো ক্যাম্পাসে নেমে এসেছিলেন, তিন দিন তিন রাত কষ্ট করে নির্ঘুম না খাওয়া রাত দিন পার করেছেন ক্যাম্পাসে। আজকে সেই আন্দোলনের জের ধরে আপনাদেরই ২০ জন বন্ধুর জীবনের উপর হুমকি এসেছে? আপনাদের সেই ৩১’ ডিসেম্বরের অগ্নিঝরা মিছিল কন্ঠ আজ কই গেলো? নাকি চাকরি বাকরি হবু বিয়েশাদী ইত্যাদির জ্বরে মনে করছেন, দরকার নেই!!
জেনে রাখুন, যে ২০ জন আজকে এই ফলাফল ভোগী, তার দায়ভার আপনারও, ওরা যদি অন্যায় করে থাকে, আপনিও করেছেন, অই আন্দোলনে আপনিও ছিলেন, আপনিও সুজিত-মিঠুনের শাস্তির দাবিতে অনড় ছিলেন। আজকে সেই সমাবেশের জন্য আপনাদের মধ্যে থেকে যাকে তাকে ধরে ২০ জনকে নিয়ে দুর্দশা ভোগ করানো হচ্ছে, আর আপনি ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়ে এলেন? ধিক আপনাদেরকে, ধিক আপনাদের ক্ষণেক জ্বলে ওঠা প্রতিবাদী কন্ঠকে, ধিক আপনাদের সমাবেশের সাথে হুজুগে চলে ল্যাজ নাজানোর তাড়নাকে, ধিক আপনাদের ক্যানভাস ’০৬ কে।
ধরি মাছ না ছুঁই পানি নীতি দিয়া আপনারা পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কাটাবেন, তারপরে সুন্দর একটা চাকরি, হয় দেশে না হলে বিদেশে, অতঃপর বুদ্ধিজীবি হিসেবে সর্বত্র সমাদর পাবেন। আপনার বুদ্ধিবৃত্তির নিকুচি করি আমি।
আচ্ছা, আজকে ছাত্রলীগের পান্ডাদের খায়েশ হলো, তারা অনেকদিন শারীরিক ব্যায়াম করে না, তারা আসলো, আপনার উপর সেই চর্চা চালায়া চলে গেলো, তারপরে কি হবে।
আর কি, আপনার বন্ধুবান্ধবরা উহ-আহ করবে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিবে, কিন্তু প্রতিকারের জন্য কেউ কিছু করবে না? খুব ভাল্লাগবে না, শুকনো কথাটাই যথেষ্ট, বিপ্লবের কি দরকার, বিচারই বা কে চেয়েছে?
আজকে ক্যাম্পাসে যে ছেলেটা মার খেলো প্রতিবাদ করতে গিয়ে, সে আপনার সহমর্মিতা চায় না, চায় না তার জন্য ঝড় উঠুক অন্তর্জালে, সে শুধু চায়, অন্যায়ের প্রতিবাদে সে যেনো একাই না থাকে, লেজটা না গুটিয়ে, একবার মেরুদন্ডটা সোজা করে দাড়ান, অই ছেলের পাশে গিয়ে একই সাথে প্রতিবাদ করে উঠুন, আপনারা সাড়ে চার হাজার, ওরা ৫০ জনও নয়। তারপরও কিসের ভয় আপনাদের?
ঘরে বসে বাইরের উদাহরণ টানি আমরা, ফেসবুক দিয়ে সেখানে বিপ্লব ঘটে গিয়েছিলো, ভাইয়েরা… তারা ফেসবুকের বাইরে গণময়দানে সংগ্রাম করেছে, আপনারা সে সাহসটুক দেখান! আজকে যখন কেউ চাইছে, একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য, তার সাথে দাঁড়ান গিয়ে।
বুয়েটিয়ানরা, মামাবাহিনী, ভাগিনাবাহিনীর, শিক্ষক সমিতির সব কিছুরই বাঁশ আপনারাই খেয়েছেন, খাচ্ছেন এবং খাবেন। একবার কন্ঠ উঁচু করে এগিয়ে এসে দেখুন, নিজের কাছে ছোটো হতে হতে এক পর্যায়ে হলে আর নিজেকে খুজেই পাবেন না!
এতোকিছু বলার পর, এতো ক্ষোভ ঝাড়ার পরও নতুন করে কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি স্বনামে বেরিয়ে এসে সবার সাথে এই কথাগুলো বলতে পারবো না, নিজের পরিচয় দম্ভ ভরে স্বীকার করে মনের মধ্যে জমে থাকা এই বিষগুলো ঝাড়তে পারবো না!
কোনো এক প্রাচীনকালে জাকারবার্গের ফেসবুকে, আর স্বাধীন চিন্তার ব্লগেও আমাদের মুক্ত মত প্রকাশের অন্তরায় হয়েছিলো এই রাজনৈতিক সংগঠনের পোকাগুলো, চিন্তাগুলোর স্থবিরতা তখন থেকেই শুরু। তার ধারা আজও বহন করছি আমরা, নিজেদের মাথাটাকে কানের নিচে গুজেঁ, কিছুই না দেখে দিব্যি বেঁচে আছি আমরা। থাকবোও হয়তো, আর মাঝে মাঝে হঠাৎ হঠাৎ একজন দুইজনের দুর্ভাগ্যে বিচলিত হয়ে উঠবো!
শেষমেষ, এই ব্লগ আর ফেসবুকই আমাদের আশ্রয়!
অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করছে কিন্তু কিছুই বলার খুঁজে পাচ্ছি না। 🙁
আমাদের সবাইকে একএ হয়ে এটা প্রতিরোধ করতে হবে
অনেক লজ্জার সাথে শেয়ার করলাম। 🙁
লেখাটার প্যারাগ্রাফ স্পেসিং এর সমস্যাটা আবেদন কমায়া দিসে!
লেখা ভালো হইসে, স্বনামে লেখেন না বস! 😀
When the Nazis came for the communists,
I did not speak out;
As I was not a communist.
When they locked up the social democrats,
I did not speak out;
I was not a social democrat.
When they came for the trade unionists,
I did not speak out;
As I was not a trade unionist.
When they came for the Jews,
I did not speak out;
As I was not a Jew.
When they came for me,
there was no one left to speak out.
– Martin Niemöller
🙁
আমাদের ছোট ভাইয়া আপুদের পাশে আমরা আছি।
বাপ্পি ভাই, আসলেই লেখকের লেখাটার মধ্যে এলামনাই এর সদস্যদের উদ্দেশ্যেও কিছু বলা উচিত ছিলো, আপনারা মাঝখানে দিয়া বাদ গেছেন! 😀
সেদিন প্রতিবাদে আমিও ছিলাম। জ্বী, তদন্তের দরকার নাই, আমি স্বীকার করছি আমি ছিলাম। আমার রেজাল্ট স্থগিতের দাবি জানাই।
ফাইজলামি করতেছি না। একটা প্ল্যাকার্ডে ২১তম ছাত্র হিসাবে আমার রেজাল্ট ফিরিয়ে নেবার দাবি লিখে অফিসের সামনে অবস্থান নিব কিনা ভাবতেসি। সিরিয়াসলি। আমি তো জানি আমি কোন অন্যায় করি নাই, আমরা কোন অন্যায় করি নাই!!
শুধু লজ্জা হচ্ছে। কিছু বলতে পারছি ন…………
খেলারাম খেলে যা…
ব্লগের article গুলো পড়ে এবং BUET এর বর্তমান পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করার পর শুধু একটা কথাই মনে হয়, একটা মানুষ এতটা নির্লজ্জ কীভাবে হয় !! কীভাবে মানুষ নিজের বিবেক-বুদ্ধি সবকিছু অকাতরে বিলীন করে দিতে পারে !!! কোন মানুষের পক্ষে এতটা বেহায়া হওয়াও সম্ভব !!!!
বলা শুরু করলে আসলে অনেককিছুই বলা যায় কিন্তু উলুবনে মুক্তো ছড়াতে আর ইচ্ছে হচ্ছে না। কুকুরের লেজ কখনো যে সোজা হয় না – ব্যাপারটা আমরা BUETIAN রা মনে হয় বেশ ভালোভাবেই বুঝে গিয়েছি। তারপরও একটা কথা boldly বলতে চাই, আমার Result টাও ফিরিয়ে নেয়া হোক, এমন result নিলে আমি নিজেই নিজের কাছে ছোট হয়ে যাচ্ছি, নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছি।
ব্যাপারটা ঠিক বক্তব্যের সাথে যায় কি না বলতে পারি না।
তারপরও বুয়েটে যে কিছু একটা বদলে গ্যাছে তার প্রমাণ হতে পারে এটি।
একসময় বুয়েটের গেইটে ঝুলতো, ডিবেটিং ক্লাব কি বিজ্ঞান ক্লাব কি রক্তদাতা সংগঠনের ব্যানার। সুন্দর সেমিনার বা র্যাগ এর ব্যানার ও শহীদ মিনারের পাশে রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ঝুলতে।
কিন্তু, কিছুদিন আগে ফেবুতে একটা ছবি দেখে সম্পূর্ণ অবাক হয়েছি। নানান রাজনৈতিক ধন্যবাদ জ্ঞাপনে ঠাসা গ্যাটের গ্রীল গুলা। এই ছোট্ট পরিবর্তনই বলে দেয় ভেতরে কি ঘটে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি ভাল হোক। এই কামনা করি।
লেখাটির সাথে সম্পূর্ণ একমত এবং একজন বুয়েটিয়ান হিসেবে আমি হতাশ।
তবে একটু অবাক হচ্ছি কারণ পোস্টে স্যাটায়ার কথাটা আছে।
স্যাটায়ারের যে সঙ্গা জানতাম তাতে তো লেখাটি পড়ছে না। স্পষ্ট এ লেখাটি কোন রূপক বা গল্পচ্ছলে নেই যে একে স্যাটায়ার বলব।
যাই হোক, আশা করছি পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে
কিছু নির্লজ্জ মানুষের জন্য আমাদের সাধের বুয়েট এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে ভাবতে পারছি না, কেন জানি এখনো বিশ্বাস আছে, বুয়েটকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারব, কথা দিলাম, পাশে আছি, বুয়েটকে যেমন পেয়েছিলাম, তেমন করে যাবো এবার…
🙁
আমি কখনও লিখতে চাই না। টাইপ করতে বড় কষ্ট ও হয়। তবে আজ আর নিজেকে মানাতে পারলাম না। মূল লিখার …আজকে যখন সরাসরি এটি আপনাদের স্বার্থে আঘাত হেনেছে, তখনই আপনারা ধর্মঘটে নামলেন? এ প্রসঙ্গে-
একথা মোটেও ঠিক নয়। কারণ, শিক্ষকদের আজকের এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য উনাদের নিজস্ব কোন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নয় বরং বুয়েটে চলমান সব নিয়ম বহির্ভূত কার্যক্রম প্রতিহত করার জন্য। বুয়েট শিক্ষক সমিতির প্রায় প্রতিটি General Metting এ বুয়েটের ছাত্র রাজনীতি নামক আতংক নিয়ে, এর সমাধান চাইবার জন্য, ক্যাফেতে, হলেতে, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আলোচনা হয়। কিন্তু আমাদের শ্রদ্ধেয় (!) VC ( সহযোগি Pro VC ) sir এর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করলে তাদের দাবি কই আমাদের চোখে ত পরে না। এসব প্রহসন মূ্লক আচরনের কারনে এবং শিক্ষকদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ না থাকায় শিক্ষকরা জোর দাবী করতে পারেন না।
ঈশান এর ঘটনাও বুয়েট শিক্ষক সমাজকে চরম ভাবে আহত করে এবং জানা যায়, ওই সময় শিক্ষক সমিতির সম্মানিত কয়েকজন সদস্যদের মধ্যস্তায় Pro VC এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সমঝোতা হয় এবং দ্রুত তদন্ত করা হয়। ঐই ঘটনা, যারা ওইদিন frontline ছিল তারা সবাই জানে, হয়ত সব general ছাত্ররা তা জানে না। শোনা যায়, ঐদিন নাকি সমঝোতা না হলে pro VC পুলিশ বাহিনী দিয়া তার রুমের সামনে র ছাত্র দের size করত। যাই হোক, একটা আপাত সমাধানের মাধ্যমে ঐ সমস্যার সমাধান হয়।
শিক্ষকদের আন্দোলনের কোন দাবীটা তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য? নাকি কাম্পাস এ চলমান সকল অনিয়মের পূন্জীভূত বিষফোড়া/ক্যন্স্যার নিরাময়ের জন্য? এ প্রশ্ন সকলের কাছে। আমরা সবাই আমাদের বুয়েট কে ফেরত চাই।
আজ এমন দিনে আমরা উপস্থিত হয়েছি, যেদিন মুষ্টিমেয় কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী সম্মানিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কথা বলে। শিক্ষকদের কাল হাত ভেঙ্গে দিতে চায়। এটা কি আমাদের জন্য লজ্জাকর না? শিক্ষকরা তো কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে না। কর্মকর্তা কর্মচারীদের ন্যায্য যেকোন দাবী কে তো তারা পূর্ন সমর্থন করে। কিন্তু কেন এভাবে রটানো হচ্ছে যে, শিক্ষকরা কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধার বিরোধী? এটা কি উদ্দেশ্যমূলক নয়? কর্মকর্তা কর্মচারীরা সুযোগ সুবিধা পেলে শিক্ষকদের কি আসে যায়? কেন মূল স্রোতকে অন্য দিকে Divert করা হচ্ছে?
ঈশান এর ঘটনার জন্য ২০ জন ছাত্রের result আটকানো হয়েছে। কেন আটকানো হয়েছে? তারা এখন কোথায়? তারা কি সব জেনারেল ছাত্রদের তা জানাইছে? জানাইলে তারা বা কোথায়? তারা কি শিক্ষকসমিতির কারো কাছে গিয়েছে?
শিক্ষকরা সবসময়ই অনিয়ম এর বিরদ্ধে সোচ্ছার ছিল। আর একারনেই বুয়েট এতদিন পর্যন্ত বুয়েট ই ছিল। সেটা আমাদের মনে রাখা উচিত।
Save BUET নামে অনেকেই buet কে বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এটাই কি যথেষ্ঠ? সকলের কাছে প্রশ্ন? বুয়েটে কি হচ্ছে কে কি চাই, তা আমরা সবাই জানি। At least বুয়েটের কাম্পাসে যারা থাকে তারা তো সবাই জানে। কিছু কিছু মিডিয়াতে শিক্ষকদের আন্দোলনের against এ বলা হচ্ছে? শিক্ষকদের জামাত, হিজবুত তাহরীর, বিএনপি etc বলা হচ্ছে। কেউ বুঝে, কেউ না বুঝে। কিন্তু আমাদের কি করা উচিত? আমরাও কি তাই বলবো?
শিক্ষকদের এই ন্যায্য আন্দোলন ব্যর্থ হলে বুয়েট এর কি হবে তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু জানার পর ও আমরা…।।
আজ ভাবার সময় এসেছে…
মুরুব্বীরা যখন আমাকে বলেন ‘বুয়েটে তো এরকম হয় কখনো শুনি নাই, হঠাৎ কি হইলো’ তখন খুব কষ্ট লাগে।
দিন আসবে, আমাদের ক্যাম্পাস আমারাই ঠিক করব…
খুবই কষ্ট লাগে যখন আমার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির বিষাক্ত থাবার নিষ্ঠুর কর্ম দেখি। যদিও আমি বুয়েটের কেউ না। আমি চাই এই নির্লজ্জরা বুয়েট থেকে বিতাড়িত হোক।
amra s0bay ki krsi asol e….???buetian ra ki kisu e krte pare na???oi sob mukhosdhari der biruddhe ki kisu e kora jay na?????