হিউম্যান কম্পিউটার ইন্টারএকশন(HCI) বা হিউম্যান টেকনলজি ইন্টারএকশন(HTI), এই বিষয়গুলা বাইরের দেশগুলাতে বেশ আলোড়ন তুললেও, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এখনো আনকোরা। মানুষের সাথে কম্পিউটারের সম্পর্ক আরো সহজ , সাবলীল আর উপযোগী করে তোলাই এদের উদ্দেশ্য। তবে দেরীতে হলেও, আশার কথা হচ্ছে বুয়েট এ অবশেষে HTI গ্রুপের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারী থেকে পুরোদমে যাত্রা শুরু হলেও এর শুরুটা হয়েছিল আরো খানিকটা আগে, বুয়েট এর সিএসই ডিপার্টমেন্ট এর ফ্যাকাল্টি, সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ এর ছাত্রাবস্থায় অটিস্টিক শিশুদের জন্য কাজ করার মাধ্যমে।
সময় করে কোনো এক দিন এর শুরুর গল্প করা যাবে, আজকে বরং এগিয়ে চলার কথা বলি।
এই ১৪ই আগস্ট বুয়েট এ হয়ে গেলো HTI গ্রুপের, বড় পরিসরে করা প্রথম সেমিনার। সবার জন্য উন্মুক্ত এই সেমিনার এ বুয়েট ছাড়াও অন্যান্য ভার্সিটি স্টুডেন্টরাও অংশগ্রহন করেন। সেমিনারে সি এস ই ডিপার্টমেন্ট এর ফ্যাকাল্টি, হাসান শহীদ ফেরদৌস, HTI গ্রুপের বিভিন্ন দিক উপস্থিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন। HTI গ্রুপ এর মূল লক্ষ্য হল সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সহজ এবং প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান খুঁজে বের করা। ই-লার্নিং, HTI গ্রুপের অন্যতম প্রধান ফোকাস। ই-লার্নিং এর আওতায় এ গ্রুপের করা প্রজেক্টগুলোর মাঝে রয়েছে Autism Spectrum Disorder এ আক্রান্ত বাচ্চাদের জন্য স্পিচ থেরাপি, স্পেশাল ক্লাসরুম(A-Class), বিভিন্ন প্র্যাক্টিক্যাল গেইমস এর মাধ্যমে ম্যাথাম্যাটিক্যাল স্কিল ডেভেলপ করা ইত্যাদি। ভাল কাজের ফলস্বরূপ দেশে-বিদেশে খ্যাতিও মিলেছে ঢের, সাথে সাথে পাবলিশ হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেপার।
সবচাইতে আশাব্যঞ্জক দিকটি হচ্ছে…প্রথাগত ভাল স্টুডেন্ট এর গন্ডি থেকে বের হয়ে ছোট ছোট বাচ্চারা(মানছি ওরা না হয় এখন আন্ডার গ্রেড স্টুডেন্ট, কিন্তু আজ যখন ভার্সিটি কে বিদায় জানানোর সময় এসেছে, পিছনে ফিরে এই ২-১, ২-২ ‘র স্টুডেন্ট নেহাত ই বাচ্চা মনে হচ্ছে 😀 ) নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে!!
বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন এর জনপ্রিয়তার সাথে সাথে যেটার জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে সেটা হল, লোকেশন বেস্ড সার্ভিস। লোকেশন বেস্ড মার্কেটিং, ইন্টেলিজেন্ট এডভার্টাইজিং, স্যোশালাইজিং, নেভিগেটিং ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক কিছুই এখন বাস্তবে সম্ভব, একসময় যেগুলো ছিল সায়েন্স ফিকশন মুভিগুলোতে!! কিন্তু সমস্যা একটাই, আমাদের নিজেদের কোনো ডিজিটাল ম্যাপ নাই। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, Google থাকতে আর চিন্তা কি! Google Map আছে না!! একটু খেয়াল করে, Google Map আছে ঠিক ই কিন্তু Google Map কোনো ফ্রি সার্ভিস না! ম্যাপ আর ম্যাপ এর ডাটা এক জিনিস না। আপনি যখন স্পেসিফিক কোনো লোকেশন ম্যাপ এ দেখতে চাবেন, তখন এটা ফ্রি। কিন্তু, আপনি যখন বাল্ক ডাটা নিয়ে কাজ করতে চাবেন তখন Google Map কখনোই আপনাকে ফ্রি সার্ভিস দিবে না :voypaisi: । এই সমস্যাও খুব বেশিদিন আর আমাদের থাকবে না ইনশাআল্লাহ, HTI গ্রুপ ইতোমধ্যে ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ এর সাহায্যে বাংলাদেশ এর জন্য ফ্রি ডিজিটাল ম্যাপ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। বুয়েট ম্যাপিং এর মাধ্যমে এর কাজ শুরু হলেও এরইমধ্যে পুরান ঢাকাসহ ঢাকার অন্যান্য অংশ, এবং চাঁটগা’র উল্লেখযোগ্য অংশ ম্যাপিং করা হয়েছে। সেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে ম্যাপিং কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে জিপিএস ডিভাইস এর স্বল্পতার কারনে সকল জায়গায় একি সাথে ম্যাপিং শুরু করা যাচ্ছে না। যে পাঁচটা জিপিএস ডিভাইস দিয়ে ঢাকা ও চিটাগং এ কাজ চলছে, সেগুলোও ইন্টারন্যশনাল ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ অর্গানাইজেশন এর সৌজন্যে পাওয়া।
ইন্টারন্যশনাল ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ অর্গানাইজেশন একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যারা বিশ্বব্যপী ফ্রি ম্যাপ ডাটা প্রোভাইড করে। আর ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ হচ্ছে এমন একটি ম্যাপ, যেটি একি সাথে ম্যাপ এবং উইকির সুবিধা প্রদান করে। HTI গ্রুপের “লোকেশন বেস্ড ইনফরমেশন সার্ভিস”, সম্প্রতি চুয়েট এ অনুষ্ঠিত “টিআইবি- প্রথম আলো তারুণ্য উৎসব, ২০১১” এ চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে।
HTI গ্রুপের কারেন্ট প্রজেক্ট লিস্টটিও বেশ আকর্ষণীয়ঃ gesture and posture detection এর মাধ্যমে ন্যাচারাল ইউজার ইন্টারফেস এর ইম্প্রুভমেন্ট; স্মার্ট এন্ড ইন্টারএক্টিভ ক্লাস রুম; দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক্ প্রতিবন্ধীদের সহায়ক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যবহার; ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ এর সাহায্যে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা খাত এবং যানজট নিরসন ও ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের জন্য কার্যকর প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং আরো অনেক কিছু।
নতুন নতুন উদ্যোগ আর উদ্ভাবনে আমাদের দেশের তারুণ্য এগিয়ে যাক…সমৃদ্ধির সোপানে যাত্রা শুরু হোক সবার…আশায় বুক বাঁধি আমরা…
ইশ আমারো কাজ করতে ইচ্ছে করছে। যারা এত কষ্ট করে ম্যাপিং এর কাজ করছে তাদের জন্য শুভকামনা। অনেক অনেক ভালো লাগছে। 🙂
ধন্যবাদ আপু 🙂
আপনি চাইলেই কাজ করতে পারবেন…এটা সবার জন্য উন্মুক্ত!
সুপ্তি আপু, পুরনো ঢাকার একটা অংশের ম্যাপ, তোমার এই ছোট ভাইয়ের করা 🙂
শুভকামনা নতুন দিনের যোদ্ধাদের…… :dhisya:
ধন্যবাদ 🙂
হুমম অনুপ্রেরণা পাইলাম… 🙂
🙂
খাপছাড়া অনুপ্রেরণা… 😀
সবকিছু খাপে খাপ মিলে গেলে বৈচিত্র কই বলেন!! 😀
HTI গ্রুপের প্রতি রইল শুভকামনা।
এগিয়ে যাক আমাদের দেশের তারুণ্য।
HTI গ্রুপের কাছে পৌছে যাবে আপনার শুভকামনা 🙂
আগ্রহ নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে ও ধন্যবাদ!
আশার আলো দেখতে পাই আবারো …
শুভকামনা রইল। 😀
আপনাদের শুভকামনা কে পাথেয় করলাম 🙂
HTI গ্রুপের প্রতি রইল শুভকামনা…. 😀
অনেক ধন্যবাদ 🙂
বাহ !!! বড় ভাই গুলা যা দেখাইতেসে না !!!!! আমিও ইরাম হতে চাই !!!
একসময় তোমাকে দেখেও যেন কেউ বলে, নিশম ভাইয়ের মতো হতে চাই… এই দোয়া রইল 🙂
বুয়েটের ছেলেমেয়েরা এমন দারুণ কিছু করছে দেখলে খুব ভাল লাগে,, প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে গর্ব বোধ করি।
ধন্যবাদ ভাইয়া… 🙂
আপনাদের গড়ে দেয়া ভিত এর উপরেই তো আমরা ইমারত গড়ছি 🙂
সেমিনারে আমিও ছিলাম 🙂
দারুন অনুভূতি! কাজের পরিবেশ পেলে আসলে এমন কিছু করা সম্ভব যা হয়তো আমি কখনো ভেবেই দেখি নি!
HTI এমনই এক পরিবেশ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।
কম্পু সায়েন্সের স্টুডেন্টদের এমনিতেই বেশ কয়েকটা প্রজেক্ট করতে হয়।
সেই প্রজেক্টের টপিক যদি এমন কিছু হয়, যা মানুষের কাজে লাগবে তাহলে তো হুলস্থুল অবস্থা!
এই সব খবর আসলেই মন ভালো করে দেয়! :penguindance:
ইয়াদ, তোমাকে আর আলাদা করে ধন্যবাদ দিলাম না 🙂
শুভকামনা আপু! 😀
সরবে স্বাগতম। :welcome:
থ্যাঙ্ক ইউ সামিরা 😀
গ্রেইট পোস্ট।
সরব ত এই রকম পোস্টের জন্যই!
সরবে সরব স্বাগতম! :welcome:
আরও আরও লেখা চাই!
চেষ্টা করবো অবশ্যই… 😀
অনুপ্রেরণার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ 🙂
“নতুন নতুন উদ্যোগ আর উদ্ভাবনে আমাদের দেশের তারুণ্য এগিয়ে যাক…সমৃদ্ধির সোপানে যাত্রা শুরু হোক সবার…আশায় বুক বাঁধি আমরা…” 🙂
সরবে স্বাগতম। :welcome:
এইচটিআই গ্রুপের জন্য শুভ কামনা 🙂