প্রলাপ

(ডিসক্লেইমারঃ এটি একটি টাইট্রন গ্রহ সম্পর্কিত প্রলাপ, পৃথিবীর কোন ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রাণীর সাথে কোন মিল খুঁজে পেলে তার দায় কিনাদির উপর বর্তাবে না)

ঘটনা-১: বেশ কিছুদিন আগের কথা। স্কুলের এক ফ্রেন্ডের বাসায় কোন এক কারণে কয়েকজন মিলিত হলাম। সেখানে ওর কলেজ ফ্রেন্ডরাও ছিল। আমি ফেসবুক আর ব্লগে যতোই বক বক করি না কেন,বাস্তবে অল্প কিছু মানুষ ছাড়া সবার সামনে কিছুটা চুপচাপই থাকি। টপিক পছন্দ হলে টুকটাক কথা বলি। সেখানে নতুন কিছু মানুষ দেখে একটু চুপচাপ ছিলাম। তাছাড়া কথায় পারাও যেতো না ওদের সাথে, ওর কলেজ ফ্রেন্ডদের কথার তোড়ে ভেসে যাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ হ্যা-হু করার পর খেয়াল করলাম ওদের আলোচনা পুরোপুরি হিন্দি সিরিয়াল আর বিএফ কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। এই টপিক আমার একদমই ভালো লাগেনা তাই চুপ করে রইলাম। সবার সামনে চুপ করে থাকাটাও একটা ঝামেলা, মুখে একটা আলগা হাসি ঝুলিয়ে বসে আছি আর ওদের কথা শুনে টাসকি খাচ্ছি। এক পর্যায়ে ওদের আলোচনা বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ার নায়ক-নায়িকাদের আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে গেলো। এক পর্যায়ে এক মেয়ে বলে উঠলো, “বাংলাদেশেরগুলোর কোন ছিরি আছে নাকি? ইন্ডিয়া থেকে একটা চামচা এলেও আমি দৌড়ায়া যাব”।
আমি স্তম্ভিত। বেশ অনেকক্ষণ সময় লাগলো কথাটা হজম করতে। ইন্ডিয়ায় কী পাইসে এই মেয়ে! বড় বড় কথা ফেসবুক আর ব্লগে যতোটা বলা সম্ভব, বাস্তবে ততোটা না। তাই মুখে সেই আলগা হাসি ঝুলিয়ে রেখেই বললাম, “তোমার রুচির এতো করুণ দশা কেন?”

ঘটনা-২: এটা ২০০৬ এর ঘটনা, ক্লাস টেনে পড়ি তখন। স্কুল থেকে পিকনিকে যাচ্ছিলাম ক্লাস টেনের মেয়েরা। বাস ছিল ৭টা। আমি যেই বাসে উঠেছিলাম সেখানে কেবল “ধুম মা চালে…” আর “আশিক বানায়া…” গান চলছিলো। তখন ক্লোজ-আপ ওয়ানের কল্যাণে বেশ পুরানো সুন্দর কিছু গান সবার মুখে মুখে ঘুরতো। অন্য বাসে সেসবই চলছিলো। আর আমাদের বাসে এই দুই গান ছাড়া অন্য কিছুই দিচ্ছেনা। আমার কানের বারোটা বেজে গেছে একদম, মাথার ভেতর দপদপ করছে। একসময় এক টিচারের কথায় গানের সাউন্ড কিছুটা কমিয়েছিলো। ঢাকায় ঢোকার সময় কয়েকজন চিৎকার করে উঠলো, “হিন্দি গান, জোরে ছাড়, বাংলা গান দিলে ঢাকার সব আমাদেরকে ক্ষ্যাত ভাববে”।

পবিত্র গাভী! হিন্দি গান কি স্মার্টনেসের একক হয়ে গেলো নাকি? আমার তো জোরে জোরে হিন্দি গান ছেড়ে রাখাটাই ‘ক্ষ্যাত’ পাবলিকের কাজ বলে মনে হয়। অবশ্য আমি বড্ড ব্যাকডেটেড।

ঘটনা-৩: এটা এবারের পহেলা বৈশাখের ঘটনা। ফ্রেন্ডকে নিয়ে মেলায় গেলাম ঘুরতে। মেলায় আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে মাটির জিনিসগুলো। কারণ, অন্য জিনিসগুলো যে কোন দোকানেই পাওয়া যায়। মাটির জিনিস খুব কম দোকানেই পাওয়া যায়। তাছাড়া গ্রাম, গাছ আর মাটি এগুলো সবসময়ই টানে আমাকে। আমি মেলায় ঘুরে ঘুরে মাটির নানা জিনিস কিনছিলাম। একসময় মাটি দিয়ে বানানো গাছ গুলো নাড়াচাড়া করছিলাম। একটা মরিচ গাছ আর পাতাবাহার খুব ভালো লেগেছে। এমন সময় এক পিচ্চি তার মা-বাবাকে নিয়ে এলো স্টলের সামনে, আমার ঠিক পাশেই। পিচ্চি একটা গাছ কিনবে, মা মুখ বাঁকিয়ে বললো, “এগুলোর উপর ধূলা পড়ে থাকবে, কে পরিষ্কার করবে এগুলো?”
বাবা বললো, “আচ্ছা, তাহলে কিছুদিন পর ফেলে দিও, এমন দামী কিছু তো আর না!”
মহিলা এবার নাক কুঁচকে বললো, “মাটির জিনিস আমার কী ঘেন্না করে!”
আমি পুরো তাজ্জব বনে গেলাম। এরকম কথা আমি জীবনেও শুনিনাই। মাটির জিনিস ভালো না-ই লাগতে পারে, তাই বলে এরকম ঘেন্না লাগবে এটা মানতে কষ্ট হচ্ছিলো। জিনিস কেনা বাদ দিয়ে মহিলার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম। লাল-সাদা শাড়ির বাঙ্গালী সাজে তাকে কেন যেন একটুও ভালো লাগছিলো না আর।
অনেকক্ষণ পর্যন্ত মাথায় ঘুরছিলো, “মাটির জিনিস ঘেন্না করে”।

ঘটনা-৪: এক পিচ্চি মেয়ে বেড়াতে এসেছিলো বাসায়। পিচ্চি বলতে আমার থেকে কিছু ছোট আরকি। আমার কম্পিউটার থেকে ফেসবুকে যাওয়ার সময় তার কী যেন একটা সমস্যা হচ্ছিল। আমি এসে ঠিক করে দিতে গিয়ে দেখলাম ওর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস এ ইন এ রিলেশনশিপ লেখা। আমি ওর দিকে জিজ্ঞাসা নিয়ে তাকাতেই সে উত্তর দিল, “সিঙ্গেল লিখে রাখলে পুলাপান জ্বালায়”। আমি হাসবো না কাঁদবো ভেবে পেলাম না।

আমাদের কথা গুলো সব এখান থেকে সেখানে লাফ দিয়ে বেড়াচ্ছিলো। এক সময় এই পিচ্চি বলে, “আমি চাই না আমার কোন ননদ থাকুক, ননদগুলো সবসময় কুটনী হয়”। আমি এগেইন টাসকিত। সে নিজে তিন তিনটা ভাবীর ননদ হয়ে কী কী কুটনামী করেছে জিজ্ঞেস করতে গিয়েও থেমে গেলাম। সব কথা সবসময় বলা যায় না।

সে ফেসবুক আর মিগ এ কত আড্ডা দেয় সেগুলো বলছিলো খুব। আমিও তো ফেসবুক এ অনেক আড্ডা দেই, আমিও গল্পের ঝাঁপি নিয়ে বসলাম ওর কাছে। পিচ্চির গল্পগুলো শুনতে গিয়ে খেয়াল করলাম ওদের সব আলোচনা কেবল রিলেশন, ব্রেক-আপ, বিএফ, জিএফ চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে। কেমন অদ্ভুত লাগছিলো, এর বাইরে কোন গল্প থাকবে না কেন? আমরা তো ব্লগ-ফেসবুকে কত মজা করি। ফেসবুকে গেলে মনে হয় একদল বড় আপু ভাইয়া, পিচ্চি কিছু আপু ভাইয়া আর কিছু সমবয়সী ফ্রেন্ড মিলে একটা পরিবার। ওদের এরকম কোন গল্প নেই কেন? হৈ-হুল্লোড় করে বড় আপু কিংবা ভাইয়ার বিয়ে দিয়ে দেয়া, কারো কোন সুসংবাদে মিষ্টি খাওয়া নিয়ে হৈ-চৈ করা, কারো মন খারাপে মন খারাপ করা, কারো কষ্টে কেঁদে ফেলা, কোন পিচ্চি কে আদরমাখা শাসন করা, কিংবা দলবেঁধে ঘটা করে কাউকে পচানো- এ ধরণের কোন গল্প নেই এই পিচ্চির। ‘এটা আমার বড় আপু’ বলে কোন এক পিচ্চি যখন তার বন্ধুদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়, কেউ যখন বলে ‘কিনাদি কিন্তু আমার ছোট বোন’, কিংবা কেউ যখন বলে, ‘আমার একটা ছোট বোন থাকলে কিনাদির মতো হতো কিংবা চাইতাম ওর মতোই হোক’ – তখনকার অদ্ভুত ভালোলাগার অনুভূতি গুলো এই পিচ্চির নেই বলে খুব আফসোস হচ্ছিলো।

এই পিচ্চি তার এক ফ্রেন্ডের কথা বললো যে কিনা মিগ থেকে এক ছেলের সাথে রিলেশনে জড়িয়েছে। পিচ্চি যখন বুঝাতে চাইলো ছেলেকে চিনিস না, কিছুই জানিস না হুট করে রিলেশনে জড়ানো ঠিক না। তখন তার ফ্রেন্ড বলেছিলো, “আরে ধুর! আমি তো আম্মুর পছন্দেই বিয়ে করবো। কোন রিলেশনে না থাকলে মন উড়ু উড়ু করে এজন্য আছি”।

আচ্ছা! সবার চিন্তা ভাবনা এরকম অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে কেন? নাকি আমারই কোথাও গলদ! কে জানে হয়তো এগুলো সবই স্বাভাবিক, আমার চিন্তাগুলোই অসুস্থ আর বড্ড বেশি সেকেলে।
আমি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলি।
আমার নিঃশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়।

কিনাদি সম্পর্কে

মাথা নষ্ট পাবলিক
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা, হাবিজাবি-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

54 Responses to প্রলাপ

  1. ইয়াদ বলেছেনঃ

    বেশিরভাগ মানুষ কেন যেন স্বকীয়তা হারাচ্ছে !
    নিজের একটা জীবন দর্শন থাকতে পারে, স্বপ্ন থাকতে পারে এটা অনেকের কাছে পাপ!
    এই যে হিন্দি সিনেমা নিয়ে লাফালাফি….. কেন যেন মনে হয় বেশিরভাগ হুজুগে মাতাল! “আরো দশ জন এটা নিয়ে কথা বলে, তাই আমারও বলতে হবে” এই মনোভাব থেকেই অনেকে হিন্দি ভক্ত!

    কথা বলার টপিক ২-৪ টা বিষয়কে ঘিরেই আবর্তিত হয়।
    হোক তা সমস্যা নেই!
    কিন্তু সেগুলো যদি নোংরামি আর গীবতে ভরা হয় তাহলে রুচিতে বাঁধে কথা বলতে!

    ভালো পোস্ট

    • কিনাদি বলেছেনঃ

      আসলে পরিবেশটা অনেক বেশী প্রভাব ফেলে। সচেতনতার শুরুটা ফ্যামিলি থেকে হলে এসব সমস্যা অনেক কমে যেতো। কিন্তু বাসায় সারাদিন হিন্দি সিরিয়াল চলতে থাকলে সেই বাসার লোকজন থেকে আমরা কতটা আশা করতে পারি?

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    টিভি/ মুভি সহ এই জাতীয় বিষয়গুলা দায়ী। পিচ্চিদের দোষ দেয়া যাবে না আসলে। কেন এমন হচ্ছে সেটা বের করে ঠিক করার চেষ্টা করতে হবে।

    ভালো বই ছড়ানো উচিৎ। বই নিয়ে আলোচনা করতে পারত [বই এর নায়কের প্রেমে পড়া কিংবা নায়িকাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাও খারাপ না!]

    হিন্দির জনপ্রিয়তা কমাতে আমাদের কিছু কাজ করা অবকাশ আছে বইকি!

    • কিনাদি বলেছেনঃ

      বই পড়ার অভ্যাসও আজকাল অনেক কমে গেছে। আমার কেন যেন মনে হয় টিভি, মুভি, ফেসবুক এগুলোর জন্য দায়ী।আমি আগে যতোটা বই পড়তাম ফেসবুকে আসার পর কমে গেছে অনেকটা। 🙁
      তবে ব্যতিক্রমও আছে। আমার ভাগ্নীটা গল্পের বই পেলে আর সব কিছুতে ছাড় দিতে রাজি। :love:

    • স্রোতস্বিনী বলেছেনঃ

      “বই এর নায়কের প্রেমে পড়া কিংবা নায়িকাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাও খারাপ না!”

      সহমত। তাইতো এখন ও “বিপ্রদাস” এর মত মানুষকে খুঁজি আর “মাহমুদ”এর প্রেমে হাবুডুবু খাই। 😀

  3. Peer Pressure একট খুব বড়ো জিনিস এখানে, বাকি সবাই করছে, তাই আমি না করলে আমি ওদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবো না, এই ভাবনা থেকেই অনেক খানি এই কাজগুলো করা হয়, নিজের চিন্তা-ভাবনা খুব কমই কাজে লাগানো হয়……

    কিন্তু তবু ভালো লাগে, এখনো আমি অনেক নতুন মানুষ খুঁজে পাই, যাদের ভাবনা নতুন করে সাহস দেয়, যাদের ছেলেমেয়েরা বড়ো হয় সত্যিকারের ভাবনা-চিন্তা করার আগ্রহ নিয়ে……

    লিখাটা পড়ার পর প্রশ্ন জাগে এখানেই, এরকম চলতে থাকলে এরপর কী হবে?

  4. আকাশটালাল বলেছেনঃ

    পাগলে (কিনাদি) কি না বলে :happy: :yahooo: :fire: :babymonkey:

  5. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    এমন একটা চমৎকার লেখা দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। :clappinghands:

    আসলেই সবার চিন্তাভাবনাগুলো কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। নিজের বাঙালীত্ব নিয়ে লজ্জা, রিলেশন থাকতেই হবে এমন একটা চিন্তা- এগুলো দেখে খুব অস্বস্তি হয়। আশায় আছি, একদিন নিশ্চয়ই সব ঠিক হয়ে যাবে……

  6. সামিউর রহমান বলেছেনঃ

    লিখাটা ভালো লাগলো ,
    জানেন আমারও না মাঝে মাঝে মনে হয় ‘ কে জানে হয়তো এগুলো সবই স্বাভাবিক, আমার চিন্তাগুলোই অসুস্থ আর বড্ড বেশি সেকেলে’।

  7. ইঁদুর বলেছেনঃ

    এই কথাগুলো মাথায় ঘুরে-সুন্দর করে লিখেছেন। ভালো লাগল।

  8. নোঙ্গর ছেঁড়া বলেছেনঃ

    এখন অফিসে বসে আছি। টুইটারে লিঙ্ক পেয়ে লেখাটা পড়ে ফেললাম। অনেক সুন্দর লেখনী, তাই একটানে শেষ পর্যন্ত এসে গেলাম।

    একটা সত্যি কথা বলি আপু? অদ্ভূত একটা কষ্টে চোখে পানি চলে এসেছে। জানিনা এত খারাপ কেন লাগছে, হয়ত লাগা উচিত না। আমি একটা ধারণা থেকে এই ধরণের অভিজ্ঞতা হতে পারে এমন এলাকা থেকে দূরে দূরে থাকি সচরাচর। আমিও অনেক বাজে আর অদ্ভূত অভিজ্ঞতা লাভ করেছি জীবনে কিন্তু এভাবে একবারে অনেকগুলো ঘটনা পড়ে আমি স্তব্ধ।

    আমাদের পরের প্রজন্মের ছোটভাইবোনেরা জীবনটাকে কী অপার বিচিত্র প্যাঁচময় আর জটিল করে ফেলছে — কেন বুঝতে পারছে না!! আমাদের সংস্কৃতি ধুয়ে মুছে নোঙরা সংস্কৃতির কলঙ্কে লেপ্টে আছে, এটাই বাস্তব। কোন তর্কের ধার ধারিনা, কিন্তু কষ্টটা আমিই টের পাচ্ছি। আল্লাহ সবাইকে বুঝ দান করুন। আরো অনেক খারাপ অবস্থা থেকে এই ছেলেমেয়েগুলো রক্ষা পাক

    অনেক ভয়ংকর চিন্তা পালিয়ে বাঁচতে চাই, যেমন করে সচরাচর পালাতে চাই নিজের মৃত্যূ চিন্তা থেকে। ট্রাইটন গ্রহের ছেলেমেয়েগুলোর ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাটাও আমার এমনই পালানোর মতন….

    • কিনাদি বলেছেনঃ

      আমি আপনার কমেন্ট পড়ে অনেকক্ষণ কোন কথা খুঁজে পাইনি। আমার প্রলাপ কারো চোখে পানি এনে দিতে পারে কল্পনার বাইরে ছিল। মনযোগ পাঠে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

      আমার ভাগ্নীকে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “তুই কি ডোরেমন কার্টুন দেখিস?” সে আমাকে উত্তর দিয়েছিল, “হিন্দি আমার অসহ্য লাগে। বাংলা বা ইংরেজী হলে দেখতাম।” কী যে খুশী হয়েছিলাম ওর উত্তর শুনে! আমরা যদি হিন্দি চ্যানেলগুলো ছেড়ে রাখতাম সারাদিন, তাহলে এরকম উত্তর পেতাম না।
      সচেতনতার শুরুটা ফ্যামিলি থেকে আসলে কিন্তু কাজটা অনেক সহজ হয়। আমরা এখানে যারা ‘বড্ড ব্যাকডেটেড’ তারা অন্তত নিজেদের ফ্যামিলিতে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে পারি। তাহলে আশাকরি টাইট্রন গ্রহে একদল সচেতন পিচ্চি পাওয়া যাবে 🙂

  9. নিশম বলেছেনঃ

    খুব দৈন্য দশাময় একটা জেনারেশন তৈরী হচ্ছে আমাদের। আমাদের সমাজবিজ্ঞানীরা কোথায়, এ থেকে উত্তরণের উপায় কি একটু বলে দেন। আমি তো চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, ক্লিক গুলাতে এবোর্শনের লাইন আর ফার্মেসি গুলাতে “স্যালাইন” কেনার লাইন ! এভাবে হলে কিভাবে হবে? একটা প্রোডাক্টিচ জেনারেশন দরকার, বিএফ-জিএফ জেনারেশন না। এমন প্রজন্ম দরকার, যারা বিজ্ঞানকে ভালোবাসবে, গনিতকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে। প্রজন্মটা কেনো শুধু একমাত্র শরীরকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে, মূল সমস্যাটা কোথায়,। আমি তো বুঝতেসিনা !

    কিনাদি, অসাধারণ একটা লেখা। একেবারে বাস্তব সব উদাহরণ দিয়ে একটা জেনারেশনের হাল-চাল খুব ভালো করে ফুটিয়ে তুলেছো

  10. অপু বলেছেনঃ

    যাক না জীবন যাচ্ছে যখন নির্ভাবনার লাটাই হাতে……..
    :dhisya:
    :balancin:
    :penguindance:
    :haturi:

  11. unmad বলেছেনঃ

    valo bolechen nistobdho shoishob

  12. অনাবিল বলেছেনঃ

    লেখা আর কমেন্ট গুলো পড়তে খুব ভালো লাগছিল, মনে এই আশা- এখনো অনেকেই আছে যারা প্রচলিত স্রোতের বাহিরে আর চিন্তায় অনেক নির্মল……… আমরা সচেতনতার বীজ ছড়াতে পারি এখান থেকেই………

    অনেক ভালো লেগেছে……… 🙂

  13. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    “কিনাদি কি না বলে!”

    . . . অবশ্য আমি বড্ড ব্যাকডেটেড।।

  14. খেয়ালী কিশোর বলেছেনঃ

    আমাদের প্রজন্মের দৈন্য দশা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ায় লেখিকাকে ধন্যবাদ। নিজের অভিজ্ঞতা আরো খারাপ 🙁 শীর্ষস্থানীর একটা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য়/৪র্থ বর্ষের মেয়েরা যখন ল্যাবে এসে হিন্দি সিরিয়াল ডাউনলোড দেয়, র‌্যাগ ডে তে যখন “শীলা কি জাওয়ানি” বাজে তখন লজ্জায় মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজি :wallbash:
    ঘটনাগুলো লক্ষ্য করলে দেখবেন, পুরো জিনিসটাতেই সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সুস্পষ্ট। এ প্রজন্মের দোষ দিয়ে লাভ কি? আমাদের টিভি-রেডিও-সংবাদপত্র-গান-ফেবু পেজ সব জায়গাতেই তো শুধু বিএফ-জিএফ-প্রেম-পরকীয়া। সম্পর্কের ভাঙা-গড়া তো এখন মজার খেলা। যে যত পারদর্শী সে তত স্মার্ট!

    সমস্যাটা নিয়ে ইদানীং ব্লগে-মিডিয়ায় বলাবলি হচ্ছে। কিন্তু সমাধান কি :thinking: আমি দুইটা কাজ করি। আমার সংগ্রহে থাকা বাংলা বইগুলো বন্ধুদের পড়তে দেই আর সময় পেলে দল বেধে ঘুরতে যাই। এতে নিজেদের সম্পর্কগুলো অনেক বেশী আন্তরিক হয়ে উঠে। কিন্তু এইটা তো যারা আমার বন্ধু তাদের ক্ষেত্রেই পারি। কিন্তু যাদের আমি দেখছি আমার আশেপাশেই তাদের ফেরাবো কিভাবে?

    • কিনাদি বলেছেনঃ

      অনেক শুভেচ্ছা রইলো এমন কাজ করার জন্য। অন্তত বন্ধুদেরকে ফেরাতে পারলেও ভুত থেকে ভুতে পদ্ধতিতে অনেকটা কাজ হয়ে যাবে। 🙂

  15. সামিরা বলেছেনঃ

    এইসব নিয়ে এত কথা বলছি, আর ভাল লাগে না।
    🙁

  16. অক্ষর বলেছেনঃ

    আপি মন্তব্য করব না, এটা আমাদের একটা ট্রেডিশন হয়ে গেছে যে আমরা আনুকরণ করতে খুব পছন্দ করি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খারাপটাই । আর আমিও তোমার মতি ব্যাকডেটেড। তাই আমিও মনে হয় ক্ষ্যাতই হব তাই তোমার পোস্টটা ভালো লাগল ।

  17. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    ব্যাকডেটেড মানুষ হিসেবে পোস্ট ভালো লাগলো! ভাগ্যিস আমি ব্যাকডেটেড! :happy:

    আমি কিন্তু মন্দের মাঝেও অনেক ভালো কিছু দেখতে পাচ্ছি। কিনাদি, নিশম, ইয়াদ, অক্ষর, রাইয়্যান- কত্ত ভালো এরা! কে বলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে নিমেষে? এই যে তোদের মত মানুষগুলোই সব জঞ্জাল রুখবে, আমি জানি! :beshikhushi:

  18. মাহি বলেছেনঃ

    এইভাবে ‘ব্যাকডেটেড’ হয়ে থাকতে আমার লজ্জা করে না।
    লজ্জা করে ওইসব ‘আধুনিক’ মানুষ হতে :haturi: …

  19. জনৈক বলেছেনঃ

    নিজের ভাবনার তালা দিয়ে অন্যের ভাবনা দিয়ে নিজের মাথা চালানোতেই এই অবস্থা সবার!

    ব্লগে :huzur:

  20. ইনকগনিটো বলেছেনঃ

    কিনাদি , মুখে আঙ্গুল দিয়ে জেনারেশন নিয়ে চিন্তা করা তোমার মানায় না 😛

  21. স্রোতস্বিনী বলেছেনঃ

    “আমি ফেসবুক আর ব্লগে যতোই বক বক করি না কেন,বাস্তবে অল্প কিছু মানুষ ছাড়া সবার সামনে কিছুটা চুপচাপই থাকি। টপিক পছন্দ হলে টুকটাক কথা বলি।”- একদম মিলে গেল,আজকাল ওই টুকটাক টুকুও বলতে পারি না।সিরিয়াল,কাপড় চোপড় আর বিএফ ছাড়া জীবনে আর কিছু নাই মনে হয়। :wallbash:
    তারপর ও আমি ব্যাকডেটেড হয়ে খুশি,সেটাই আমার স্বকীয়তা। 🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।