বুয়েট কেন খুলছে না

বুয়েট কেন খুলছে না তা নিয়ে আপামর জনসাধারণ অতীব চিন্তিত , সারা দেশ জুড়ে এই বিষয়ে মানুষের উৎকণ্ঠার প্রমান পাওয়া গেছে । আর বুয়েটের “mango student”দের কথা আর নাই বা বলি , তারা ক্লাস করার জন্য নাকের, চোখের , মুখের ও শরীরের নানা অঙ্গ প্রতঙ্গের জল এক করে ফেলছে , তাদের আহাজারিতে ফেসবুক খুবই ভারী হয়ে পড়েছে , বর্তমানে অবস্থা এতটাই খারাপ যে বুয়েতিয়ান্সদের কান্নার কারনে ফেসবুকের পেজই লোড হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ।

এদিকে ক্লাস না শুরু হওয়ায় স্টুডেন্টদের মাঝে কোন রকম কোন প্রতিক্রিয়া না দেখা গেলেও তাদের অভিভাবকগণ খুবই ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন , জানা গেছে কোন কোন অভিভাবক তাদের সন্তানদের “মেডিকেল কোচিং” এ ভর্তি হবার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন , কিন্ত স্টুডেন্টরা তাদের সাধ্যমত তা প্রতিরোধের চেষ্টা করছে ,কিন্তু কতদিন তারা এ প্রতিরোধ ধরে রাখতে পারবে ,তা প্রশ্নের সম্মুখীন ।

এদিকে ছাত্র ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা বর্তমান এই পরিস্থিতিতে খুবই খুশি , তারা প্রায়ই তাদের ক্যাম্পাসে “চড়ুই ভাতি” খেলতে পারছে বলে জানা গেছে , তারা ক্লাস না শুরু করার জন্য বিশেষভাবে অনুরধ জানায়

তবে “আমরা ছাত্র সমাজ” দাবী করে তারা ক্লাস করতে খুবই আগ্রহী , এবং বুয়েটের বেশির ভাগ স্টুডেন্টই আমাদের পক্ষে , তারা অভিলম্বে ক্লাস শুরুর আবেদন জানায়।

এদিকে ক্লাস শুরুর দাবিতে ঘাস খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বুয়েটের আপামর “গরু ছাগল সমিতি” তারা ক্লাস না শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘাস খাবে না বলে জানা গেছে

তবে এত কিছুর পর ও কেন ক্লাস শুরু হচ্ছে না তা নিয়ে আমরা কথা বলি “বুয়েটের মাননীয় “ভিসির” সাথে । তার ভাষ্য নিচে তুলে ধরা হল , তিনি তার বক্তব্যে ক্লাস না করার উপকারিতা তুলে ধরেন ,

“আজ জাতি এক চরম দুর্যোগের সামনে দাঁড়িয়ে , জাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে , কোষে কোষে আজ অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়েছে , যে দিকে তাকাই সে দিকেই অশ্লীলতা , এই সব কিছুর ফলে আমাদের যুব সমাজ আজ হুমকির মুখে , চারিদিকে শুধুই নৈরাজ্য , বাহিরে বের হলেই মৃত্যুর ভয় , আপনি জানতে পারবেন না আপনি কখন গুম হয়ে যাবেন , যে কোন স্থান থেকে যে কোন সময় আপনি গুম হয়ে যেতে পারেন, যখন তখন আপনি ক্রসফায়ারে মারা যেতে পারেন , যেকোনো সময় আপনাকে পুড়িয়ে মারা হতে পারে, আমি নিজের অজান্তেই চলে যাবেন ওই পাড়ে , দেশে নিয়মিত বিরতিতে হরতাল হচ্ছে , এর মধ্যে কি হয় বলা যায়??

আমি আমার ছাত্র ছাত্রীদের অনেক ভালবাসি , আমি চাই তারা যাতে সুস্থ থাকে , তারা যাতে যখন তখন গুম না হয়ে যায় , তাই আমি বুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি , আমি চাই আমার ছাত্র ছাত্রীরা তাদের নিজের বাসায় মা বাবার কাছে নিরাপদে থাকে , জীবন থেকে নিশ্চয় লেখা পড়া বড় না, লেখা পড়া করার জন্য তো সারা জীবন পড়েই আছে , সুতরাং আমি আমার ছাত্র ছাত্রীদের বাঁচাতেই বুয়েট বন্ধ রেখেছি , এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় আমি আমার ছাত্র ছাত্রীদের কতটা ভালবাসি

এ ছড়াও আরও কিছু কারণ আছে আমি আগেই বলেছি চারিদিকে শুধু অশ্লীলতা , আমি জানতে পেরেছি বুয়েট খুললে নাকি “ পুনম পাণ্ডে” নামক এক জন ও খুলবেন!!! এ কথা শুনে আমি স্তম্বিত!! এটা কি ধরনের কথা!! কি ধরনের অশ্লীলতা!! এই ধরনের কর্মকাণ্ড আমার ছাত্র ছাত্রীদের জন্য খুবই বিপদজনক , এটা তাদের বিপথে পরিচালিত করতে পারে ,এতে তাদের নৈতিকতার অবক্ষয় দেখা দিবে ,তাহলে জাতির কি হবে ? কে দিবে আশা , কে দিবে ভরসা?

আমি জেনে শুনে আমার ছাত্র ছাত্রীদের বিপদ ঢেকে আনতে পারি না , আগেই বলেছি আমি আমার ছাত্র ছাত্রীদের ভালবাসি , তাদের শিক্ষক হয়ে এত বড় বিপদের দিকে আমি তাদের ঠেলে দিতে পারি না , বুয়েট খুললে যদি সত্যিকার অর্থেই “পুনম পান্ডে” খুলেন তাহলে সেটা হবে বিরাট বিপর্যয়ের কারণ, তাই আমি বুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে , ছাত্রদের অকল্যাণ হয় এমন কোন কিছুই আমি করব না , পড়ালেখার চেয়ে “চরিত্র” অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ , আপনারা নিশ্চয় ছোটবেলায় বাংলা রচনা পড়ে এসেছেন , সেখানে কি লেখা ছিল?? মনে আছে নিশ্চয়? চরিত্র কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা নিশ্চয় আপনারা জানেন , এখন আপনারাই বলেন আমি কি কোন ভুল করেছি?? লেখাপড়া তো সারা জীবনই করা যাবে , দরকার হলে আমার ছাত্র ছাত্রীরা ৩০ বছর বয়সে বুয়েট থেকে বের হবে , তাতে কি?? তারা তো চরিত্রবান হবে ,সেইটাই আসল ।

এ ছাড়াও আরও আছে “ আমি দেখেছি ১১ ব্যাচের স্টুডেন্টরা প্রয়শই বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বুয়েটে আসে , এতে তাদের বুয়েটের প্রতি ভালবাসা প্রকাশিত হয়, আর আমরা তাদেরকে এই বন্ধের মাধ্যমে একটি বিষয় শিক্ষা দিচ্ছি , তা হল “ধৈর্য” জীবনে সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিশ্চয় আপনারা জানেন , ১১ ব্যাচের স্টুডেন্টরা বুয়েটে আসছে আবার ফিরে যাচ্ছে এর মধ্য দিয়ে তাদের ধৈর্য বাড়ছে , তা ছাড়া তাদের লেখা পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ।

এ ছাড়াও এই যে তারা বুয়েটে আসছে প্রত্যেকের মধ্যেই একটি উৎসব মুখর আমেজ দেখা যায় , তারা একে অপরের সাথে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছে , ফলে তাদের মধ্যে সৌহার্দ দিন দিন বাড়ছে ,ক্লাস শুরু হলে কি এমনটা হত?? তা ছাড়াও আমি শুনেছি তারা বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করছে ,এতে তাদের জ্ঞান বাড়ছে , ক্লাস শুরু হলে কি এ সব কিছু হত?? কখনই না,

আমি আমার স্টুডেন্টদের কল্যাণের জন্যই বুয়েট বন্ধ রেখেছি ,কিন্তু নিন্দুকেরা অন্য কথা বলছে , আমি সকল অপবাদের নিন্দা জানাচ্ছি ।

আসলেই বুয়েট বন্ধ থেকে দেশ ও জাতির বিরাট উপকার করছে , আমাদের উচিত একে স্বাগত জানানো উচিত।

কালপুরুষ সম্পর্কে

অতি সাধারণ মানুষ , খাঁটি বাংলায় যাকে বলা হয় "বেগুন (যার কোন গুণ নাই) স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি স্বপ্ন দেখাতে ও । আত্মকেন্দ্রিক মানুষ , নিজের গণ্ডির মাঝে বাস করি , বাহিরের জগত খুব একটা আকর্ষণ করে না। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়য়ে computer science এ অধ্যয়নরত ।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা, বিবিধ-এ এবং ট্যাগ হয়েছে স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

1 Response to বুয়েট কেন খুলছে না

  1. তিষা বলেছেনঃ

    =)) =)) 🙄 🙄 :huzur:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।