রোমানা মঞ্জুর হারিয়ে গেছেনঃ পরিমলও কি বিস্মৃতির আড়ালে থেকে বিচারের প্রহসনের মাঝে বেঁচে যাবেন?

‘ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ প্রসঙ্গ’ গতবারের লেখার সাথে সাথে এই ইস্যুটি শেষ হয়ে গেলেই ভালো হত। স্বপ্ন দেখতে দেখতে যে লেখাটির সমাপ্তি টেনেছিলাম সেই স্বপ্নের গায়ে আঁচড় কেটে গেল কতগুলো কালো হাত। স্বপ্ন-আশা ভেঙে তাই আবার হাতে বেঁচে উঠলো কলম; সরাসরি আন্দোলনের সবগুলো রাস্তা একে একে বন্ধ হয়ে যাবার পর এই একটামাত্র উপায়ই পড়ে ছিলো বৈকি!

ভিকারুননিসা আন্দোলন- অমিমাংসিত ঘটনাঃ

আমাদের আন্দোলন থেমে গেছে, বলা ভালো সুচারুভাবে তা থামিয়ে দেয়া হয়েছে। যখন আমাদের ৭টি দাবীর একটিও পূরণ হচ্ছিলো না, আমরা তখন বাধ্য হয়ে মাত্র ২টি স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে ছিলাম।

১. পরিমল জয়ধরের বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা

২. ধর্ষকের সহযোগী এবং মদতদাতা বিশেষ করে অধ্যক্ষ হোসনে আরার অপসারণ

এই সেই ঘৃণ্য হোসনে আরা

[এই সেই ঘৃণ্য হোসনে আরা। মিউচুয়াল সেক্স, রাজনীতি অনেক কিছু বলেই তিনি পরিমলকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী বলে পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন]

১৬ হাজার ছাত্রীর বর্তমান চাওয়া মাত্র এই দুটি! কিন্তু এই দুটি চাওয়া পূরণ করতে সরকার আমাদের কাছে চেয়ে নেয় ৬ মাস সময় যেখানে চাইলেই সর্বোচ্চ ১ সপ্তাহের মাঝে তারা বিনা কষ্টে আমাদেরকে সান্তনা পুরষ্কার দিতে পারতেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের সম্মান-আব্রু রক্ষা করতে পারতেন। হ্যাঁ, আমাদের বোনের আব্রু বাঁচাতে গিয়ে আমরা নিজেরাই এখন নগ্নতার শিকার! আমাদের প্রতিষ্ঠানের লজ্জা ঢাকার জন্য এখন এতটুকু আব্রুও আমাদের কাছে নেই, যেটুকুও বা ছিলো, সেটুকুও কেড়ে নেয়া হয়েছে!

পরিমল জয়ধরের বিচার ব্যবস্থার বর্তমান রূপঃ

পরিমল জয়ধরের বিচার চাইতে গেলে আমাদেরকে মিডিয়ার চরম প্রহসনের শিকার হতে হয়। আমরা জানতে চাই, পরিমলের বিচার ব্যবস্থার বর্তমান চিত্রটি কী? কিন্তু আমাদের প্রশ্নের উত্তরে মিডিয়া নিশ্চুপ! মিডিয়া শুধু তখনই সমস্বরে চিৎকার করে ওঠে আমাদেরই বিরুদ্ধে যখন আমরা পরিমলের বিচারের দাবী জানাই। দেশটিভি-এনটিভি (( https://www.facebook.com/note.php?note_id=10150256103654914)), মুন্নি সাহা (( https://www.facebook.com/vnsc.update/posts/169746869757795)), প্রথম আলো (( http://www.somewhereinblog.net/blog/barbie1616/29414776)) (( http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-07-16/news/170699)) তাদের স্বাভাবিক (!) দায়িত্ব পালন করার পর নিশ্চুপ হয়ে যায়। মঞ্জু আরাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আসনে বসিয়ে দিয়েই তারা প্রকাশ করে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেছে! জনকণ্ঠের মত পত্রিকার এ ধরণের গৎবাঁধা রিপোর্ট (( http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-07-15&ni=64979)) আমাদের জন্য স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশিত ছিলো কারণ মিডিয়ার বিরূপ আচরণের সাথে আমরা বেশ ভালভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছিলাম বটে! নইলে ইসলামিক টিভিতে প্রচারিত সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী রিপোর্টে (( http://www.somewhereinblog.net/blog/raatmojurblog/29413736)) কেউ অবাক হয়ে প্রতিবাদ করি নি কেন? মিডিয়ার বিপক্ষে প্রতিবাদ করার মত নতুন কোন ভাষা আমাদের ছিল না বলেই তো!

যে সংবাদ সম্মেলনের ছবি পত্রিকায় আসে নাই

[যে সংবাদ সম্মেলনের ছবি পত্রিকায় আসে নি। আমরা ফেইসবুকেই যতটুকু পারছি প্রচারণার চেষ্টা করছি ]

তারপরেও আমরা তাদের কাছেই জানতে চাই, পরিমলের বিচার ব্যবস্থার বর্তমান সংবাদ। কারণ আমাদের সাধারণের জন্য সেই সংবাদ জানার আর কোন উপায় ছিল না। কিন্তু ঠিক এই সময়েই তারা চিৎকার ভুলে নিশ্চুপ হয়ে যায়! আমাদের প্রশ্ন ছিল অনেক, জানতে চাওয়ার ছিল অনেক কিছু।

১. পরিমল জয়ধরের আইনি সহায়ক হয়ে কোন অ্যাডভোকেট লড়ছেন? কি তার নাম? এখন পর্যন্ত তার লড়ে যাওয়া অন্যান্য মামলায় তার নিজের ভূমিকা কতটা শক্তিশালী ছিল? সেসব মামলার রায় সপক্ষে আনতে তিনি কতটা সক্ষম হয়েছিলেন?

২. জনসাধারণ জানে, নারী নির্যাতন মামলায় জামিন পাওয়া যায় না। কিন্তু তাদের এই জানায় গলদ আছে (( http://bit.ly/oR7Z8H )) (( http://bit.ly/mYkG5B )) (( http://www.banglaeye.com/news/index.php?news=3&news_id=190))। বর্তমান পরিসংখ্যান হিসেব করে এ পর্যন্ত নারী নির্যাতন মামলায় কতজন আসামী জামিন পেয়েছেন? পরিমল জয়ধরের পক্ষে সেরকমভাবে জামিন পেয়ে যাবার আদৌ কোন সম্ভাবনা আছে কি?

৩. ধর্ষক চাইলেই কি ১৬৪ ধারায় দেয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নিতে পারে? তাতে করে তার জামিন পাওয়া সহজ হয়ে যাবে কি?

৪. ধর্ষিতার পক্ষের আইনজীবী ধর্ষকের পক্ষের আইনজীবীর চাইতে কতটা শক্তিশালী? পরিসংখ্যানমতে ধর্ষিতার পক্ষে বিচার পাবার সম্ভাবনা কতটুকু?

৫. ধর্ষকের তৈরি করা ভিডিও চিত্রটি এখন কোথায়?

 

আমাদের এইসব প্রশ্নের একটির উত্তরও আমরা পাই নি। তবু জানতে পেরেছি, পরিমল তার জবানবন্দি প্রত্যাহার করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মানবজমিনে প্রকাশিত রিপোর্টে (( http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&view=article&id=14830%3A2011-07-21-15-55-23&catid=49%3A2010-08-31-09-43-32&Itemid=83)) জানা যায়, প্রথমবার এমন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু পরেরবার যে তা সফল হবে না সেটি আমরা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। সম্প্রতি পরিমলের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করা হলেও তার জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন কিন্তু ঠিকই নথিবদ্ধ করা হয়েছে (( http://on.fb.me/og6WSD))।

পশুর চেয়ে অধম পরিমল

[তবে কি সময়ের সাথে সাথে পরিমল এর জঘন্য অপরাধের কথাও আমরা ভুলে যাব? এবং সে বিচারের প্রহসনের ফাঁক গলে বেঁচে যাবে?]

মিডিয়া আমাদেরকে কখনোই ভেতরের প্রকৃত খবর জানতে দেয় না কিংবা সরকারপক্ষ থেকে তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয় (( https://www.facebook.com/vnsc.update/posts/173682736030875)) আমাদেরকে তা জানতে না দেবার জন্য। ঢাবি শিক্ষক রোমানা মঞ্জুরের বর্তমান পরিস্থিতি আমরা কেউ জানি না। বাহ্যিকভাবে তার চোখ আবার দৃষ্টির আলো ফিরে পাবে কিনা এমন ঠুনকো সংবাদ (( http://bdnews24.com/details.php?id=201215&cid=2)) প্রকাশের মাধ্যমে তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করে কিন্তু আমাদের কখনোই জানতে দেয়া হয় না আসামী হাসান সাঈদের বিচার ব্যবস্থার বর্তমান চিত্রটি কেমন। ভিকারুননিসা ইস্যুতেও  ঠিক একই প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হচ্ছে? ছেলে ভুলানো কিছু খবর দিয়ে আমাদেরকে সত্যিকার পরিস্থিতি জানতে না দেবার সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ধর্ষকের সহযোগী হোসনে আরার বিপরীতে আনা দাবীর ফলাফলঃ

আমরা ভিকিরা আম্বিয়া খাতুন কিংবা মঞ্জু আরার মধ্যে কে অধ্যক্ষের আসন পাচ্ছেন তা নিয়ে চিন্তিত নই। আমরা চিন্তিত ছিলাম “পরিমলের রক্ষক” হোসনে আরার অপসারণ নিয়ে, চিন্তিত ছিলাম আমাদের প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচানো নিয়ে। হোসনে আরার স্বরূপ ((http://on.fb.me/pYW5q3)) আমরা জানতে পারার পর এই প্রতিষ্ঠানে তার উপস্থিতি আমরা কেউ চাই নি। কিন্তু আবারো নিছক একটি খেলনা ধরিয়ে দিয়ে আমাদেরকে সেই চাওয়া ভুলিয়ে দেবার জন্য চেষ্টা চালানো হয়। প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়, (( http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-07-17/news/171057)) অধ্যক্ষ হোসনে আরা তিন মাসের ছুটিতে আছেন। তার মানে দাঁড়ায়, হোসনে আরা পদত্যাগ করেন নি অথবা তাকে বরখাস্ত করাও হয় নি এবং নিয়ম অনুযায়ী তিন মাস পর তিনিই আবার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন! যদি তাই হয়, তবে সরকার কেন আমাদের কাছে ৬ মাসের সময় চাইল? একজন দুর্নীতিগ্রস্থ এবং ভক্ষকের সহায়তা প্রদানকারীকে বরখাস্ত করতে কি ৬ মাস সময়ের প্রয়োজন হয়? নাকি প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবীকে বাঁচাতে নিখুঁত প্ল্যান কষবার জন্যই আমাদের কাছে মিথ্যে আশ্বাসের নাম করে এ সময় চেয়ে নেয়া?

ঘটনার আড়ালের ঘটনাঃ

শুধু ভিকিদের নয়, মাত্র এই দুটি চাওয়া এখন পুরো দেশবাসীর। ভিকারুননিসার মত প্রতিষ্ঠানে যদি এরকম দুর্নীতির কোন বিচার না হয় তবে অভিভাবকরা তাদের প্রাণাধিকপ্রিয় কন্যা সন্তানটির নিরাপত্তা অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আশা করতে পারেন কি? ভিকারুননিসার এই ঘটনার পরেও তো দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষন ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে স্বেচ্ছায় জীবন বিসর্জন দিয়েছেন আরো অনেকে (( http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-06-19/news/163460)) (( http://bdnews24.com/bangla/details.php?id=165584&cid=2))। তারা কি আগে থেকেই জানতেন, ভিকিদের এই ইস্যু বাস্তবায়নের কোন সম্ভাবনা নেই যার কারণে তারা কারো কাছ থেকে বিচার পাবেন না ধরে নিয়ে নিশ্চুপ অভিমানে-লজ্জায় ঝরে গেছেন?

তবু প্রশ্ন জাগে, ভিকিদের এত বড় ইস্যুর কেন সহজ সমাধান হচ্ছে না? বিচারের নামে কেনই বা চলছে মিথ্যে সময় নষ্টের খেলা? চলুন কাগজে-কলমে কিছু হাইপোথিসিস দাঁড় করিয়ে নেই এই প্রশ্নের উত্তর পেতে। কারণ সত্যিকার উত্তর আমাদের কেউ জানতে দেবে না বরং আমাদের নিজেদেরকেই সম্ভাব্য উত্তর খুঁজে নিতে হবে।

*ভিকারুননিসাকে ঘিরে প্রতি বছর ভর্তির নামে চলে একটি ব্যবসা উৎসব। আর এই ব্যবসাকে আগলে রাখেন চলতি বছরের দায়িত্বপ্রাপ্ত গভর্নিং বডির প্রধান প্রধান সদস্যরা। ব্যবসা প্রক্রিয়াটি অনেক পুরনো এবং সবার জানা। শুধু পার্থক্য এই যে আগে ব্যবসাটি চলত চুপিসারে আর এখন প্রকাশ্যে (( http://www.somewhereinblog.net/blog/RABI08/29285304))! ব্যবসার সব থেকে লাভবান ব্যক্তি হন সংশ্লিষ্ট এলাকার এমপি, একই সাথে গভর্নিং বডির প্রধান।

সরকার যায়, সরকার আসে- ব্যবসাটি তার ঐতিহ্য ধরে রাখে শক্ত হাতে। তাই বর্তমানে হুট করে চলে আসা ধর্ষন ইস্যুতে কিছুতেই সেটিকে নড়বড়ে হতে দিতে চান না কতিপয় ব্যবসায়ীবৃন্দ (এরা মূলত সরকারি দলের উপরের শ্রেণীর সাথে যুক্ত ভদ্রলোক)। ভিকারুননিসার এই ইস্যুতে বর্তমান গভর্নিং বডির (ক্ষমতায় থাকা পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে নতুনভাবে যেটি (( http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-07-13/news/170020)) গঠন করা হয়) সদস্যরা তাই নড়েচড়ে বসেছেন। বছর বছরের একটি উল্লেখযোগ্য অসাধু আয়ের খাত যখন সরকারের বেহাত হতে চলেছে তখন আবার আরেকটি দল (বিপরীত দলীয় ব্যক্তিবর্গ) মাথা তুলে ঢুকতে চাইছে গভর্নিং বডির ভেতরের কোঠায়। সরকার এমন অবস্থায় কী করবে? ব্যবসা ধরে রাখতে চাইবে নাকি নিজের সম্মান নষ্ট করে, ব্যবসার অংশীদারিত্ব হারিয়ে ভিকিদের সামান্য সেন্টিমেন্টের দাম দেবে? কোনটা করতে গেলে ৬ মাসের দীর্ঘ সময়ের দরকার পড়ে?

*আমাদের সবার বুকে এখন পরিমলের জামিনের ভয় ঘুরছে। কেননা আমাদেরকে বিচার ব্যবস্থার সঠিক অবস্থানটি কোনভাবেই জানতে দেয়া হচ্ছে না।

পরিমলের জামিন-> হোসনে আরার পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ-> নবগঠিত গভর্নিং বডির স্থায়িত্ব-> ভর্তি ব্যবসায় সরকারি ক্ষমতা অব্যাহত– এইসব ঠিকঠাক মিলিয়ে ফেলতেই কি করিপয় সরকারি ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা পরিমলকে ফাঁসানো হয়েছে বলে মত প্রকাশ করছেন? পরিমল কখনোই ধর্ষক নন, বিপরীতপক্ষ তাকে ফাঁসিয়ে গভর্নিং বডির ক্ষমতা হাতে নিয়ে ব্যবসার পুরোভাগ তাদের পকেটে পুরতে চাইছেন- এমনটাই সন্দেহ বলে কি শিক্ষামন্ত্রী জোর কণ্ঠে বলছেন যে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তির এতে হস্তক্ষেপ রয়েছে? তবে কি পরিমলের বিরুদ্ধে আনা ধর্ষনের অভিযোগ এবং তার স্বীকারোক্তি, পূর্বে শিক্ষকতা করে আসা স্কুল থেকে তাকে বহিষ্কারের ঘটনা সবই পূর্বপরিকল্পিত তৃতীয় শক্তির কাজ? হাস্যকর বটে!

*কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোক- এটা রাজনৈতিক নেতারা কেউ চান না। আর সেকারণেই ভিকিদের সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করার ফায়দা লুটছেন তারা। ৬ মাসের সময় চেয়ে আমাদেরকে আন্দোলন থামিয়ে রাখতে বাধ্য করা হচ্ছে। চলতি ব্যাচের ভিকিরা অনেকেই অভিযোগ করেছে, তাদেরকে হুমকি দেয়া হচ্ছে আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকলে খুঁজে বের করে বহিষ্কার করে দেয়া হবে বলে। সাথে তো আছেই পুলিশ আর প্রশাসন মহলের পুরনো হুমকি (( http://newagebd.com/newspaper1/frontpage/26588.html))। বিভিন্ন নেটয়ার্কিং সাইটেও যারা এই ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করছেন তাদেরকেও সইতে হচ্ছে সাংবাদিক/ সরকারপক্ষের নিত্য উৎপাত (( https://www.facebook.com/note.php?note_id=10150330494920996))।

কারা দিচ্ছে ভিকিদের এই হুমকি?

অন্যান্য ভিকিদের কারা হুমকি দিয়ে চলেছে সেটা বাদ দিয়ে বরং নিজের কথা বলি। ভিকারুননিসা প্রসঙ্গে প্রথমবার লেখার ((http://on.fb.me/nHPSKe )) পরে আমাকে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। আমি কে, আমার বিস্তারিত পরিচয়, কোথায় কিসের সাথে যুক্ত আছি জানতে চেয়ে, পাশাপাশি অশালীন ভাষা ব্যবহার করে ফেসবুকে আমাকে ইনবক্স পাঠানো হচ্ছে। কেউ কেউ ভদ্রভাবে সখ্যতা গড়ে তুলে ভেতরের খবর বের করার প্রয়াসে আছেন। সন্ধানকারী বা হুমকিদাতাদের কাউকে আমি চিনি না, শুধু বুঝতে পারি আমার খোঁজ নিতে বিভিন্ন মহল হঠাৎ করেই সচেষ্ট হয়ে উঠেছে, খুঁজে পেলে কী করা হবে হয়ত সেটাও কেউ কোনদিন জানতে পারবে না!

এখন আমরাঃ
আমাদের একটা ব্যাচ সবেমাত্র সাফল্যের সাথে পেরিয়ে গেছে এইচ.এস.সি.’র কোঠা। পুরো বাংলাদেশের বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এখন আমাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে জ্বলছে। প্রতিবারের মত তবু কোথাও নেই আনন্দধ্বনি, নেই বিজয়ের জয়গান। বিজয়ী হয়েও তবু আজ আমরা পরাজিত। বর্তমান অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক, ছাত্রী, কর্মচারি ও অভভাবক আজও অপেক্ষা করে আছে কেবল একটি দিনের জন্য, যেদিন আমাদের সত্যিকারের বিজয় আসবে- ধর্ষক পরিমল এবং ধর্ষকের সহকারীরা সবাই আইনানুযায়ী শাস্তি পাবে। ন্যায়ের বিজয়ে সেদিনই প্রকৃত জয়ী হবে ভিকারুননিসা নুন পরিবার (( http://www.somewhereinblog.net/blog/Masudbestbest/29421114 ))।
এখন আমরা শুধুই অপেক্ষার প্রহর গুনি।

vnc issue-2

[বর্তমান অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক, ছাত্রী, কর্মচারি ও অভিভাবক আজও অপেক্ষা করে আছে কেবল একটি দিনের জন্য, যেদিন আমাদের সত্যিকারের বিজয় আসবে- ধর্ষক পরিমল এবং ধর্ষকের সহকারীরা সবাই আইনানুযায়ী শাস্তি পাবে]

শেষ কথাঃ

আমি কখনোই নেতিবাচক হতে চাই না। মন খারাপ করে দেয়া পরিস্থিতির হাত ধরে স্বপ্ন দেখতে এবং তা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। সব হতাশার ভিড়েও ভালো লাগে যখন দেখি আমার লেখা পড়ে আমার চেনা মুখগুলো পালটে গেছে, ফেসবুকে থাকা নারীদের নিয়ে নেতিবাচক পেইজগুলো unlike করেছে। বিপদজনক একটা পরিস্থিতির মাঝে একলা দাঁড়িয়ে থেকেও ভাবতে ভালো লাগে, আমার পাশে অনেকগুলো প্রতিবাদী কণ্ঠ আছে, আমার উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতিতেও যারা ধর্ষক ও ধর্ষকের সহযোগীদের বিচার চাইবে। সেই বিচার শুধু ভিকারুননিসা নুন স্কুল ও কলেজে নয়, বাংলাদেশের আর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও প্রতিফলিত হবে। স্বাধীন দেশের পরাধীন-জিম্মি নারীরা নতুন করে স্বাধীনভাবে বাঁচতে জানবে।

 

ফিনিক্স সম্পর্কে

"প্রিয় পতাকার লাগি // জটায়ুর মত রক্ত ঝরাতে // আমিও প্রহর জাগি..." https://www.facebook.com/phoenix.chhanda
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে সচেতনতা-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

18 Responses to রোমানা মঞ্জুর হারিয়ে গেছেনঃ পরিমলও কি বিস্মৃতির আড়ালে থেকে বিচারের প্রহসনের মাঝে বেঁচে যাবেন?

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    আমি শুধু ভাবছি, এরকম নামকরা স্কুলের শিক্ষক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার পর কিংবা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকাকে স্বামী পাশবিক নির্যাতন করার পরও যখন ছাড়া পেয়ে যায় অথবা তাদের বাঁচাতে উচ্চপদস্থ লোকদের চেষ্টার অন্ত থাকে না, তখন অন্যান্য অপরাধীদের মনের অবস্থা কি দাঁড়ায়?
    আর গভর্নিং বডির দুর্নীতির কথা আর কি বলব! সব জায়গায় একই অবস্থা। 🙁

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      কিন্তু গভর্নিং বডির দুর্নীতি নিয়ে কেউ কখনো মুখ খুলবে না। কারণ এটা চলতি সরকারের একটা পার্মানেন্ট আয়ের খাত। সরকার বদল হলেও এই খাত কখনো বন্ধ হয় না।

  2. কার্টুন বলেছেনঃ

    আমরা সবাই কেমন জানি ঘুমিয়ে আছি…
    ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভাবছি,এইতো বেশ আছি…

  3. বাবুনি সুপ্তি বলেছেনঃ

    অনেক কিছুই দেখেছি , সময়ের সাথে সাথে সবাই ভুলে যায় ।

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      হাসান সাইদের কি অবস্থা আমরা কেউ জানি না, এখন পরিমলের বিচার ব্যবস্থাও আবছায়া হয়ে আসছে। অথচ আশেপাশে রক্ত গরম কথা বলা মানুষের অভাব নাই। এভাবে চলতে থাকলে আসামীদের বিচার ব্যবস্থা শিথিল হতে হতে একেবারে নাই হয়ে গেলেও আমরা আর টের পাবো না। 🙁

  4. shoishob বলেছেনঃ

    আমরা মনে হয় বিবর্তনের মাধ্যমে গোল্ডফিশে পরিণত হচ্ছি, শুধু গায়ে গতরে একটু বড়ো! এছাড়া আর কিছু না!! আমরা সব কিছুই সহ্য করে যাই, মিরসরাই, আমিনবাজার, পরিমল, রুমানা……কি জানি, সেই ইয়াসমিন থেকেই শুরু কিনা…
    তবে আমরা পাল্টাবো, মানুষকে ভুলে যেতে দেয়া যাবে না……ধাক্কা দিতে হবে আমাদেরই…… :dhisya:

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      আর জোরে ধাক্কা দিন যাতে এক ধাক্কায় মানুষ পানিতে পড়ে যায়। বাঁচার জন্যে হলেও তখন জেগে উঠতে বাধ্য। :dhisya:

  5. shopno_bilash বলেছেনঃ

    ইচ্ছে করে অমানুষগুলোর চামড়া ছাড়িয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে লবণ লাগিয়ে দিতে।
    সারা জীবন যন্ত্রণা ভোগ করুক পিশাচগুলো………

    সময়ের সাথে সাথে দুঃসময় ভুলে যেতে চাইনা………

  6. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    অসাধারণ একটা লেখা।

    আসলেই তো! অন্য সব কিছুর মত এইবারও কি আমরা সব ভুলে যাব?

    এই রকম লেখা আমাদের চাবুকের মত করে জাগিয়ে দিয়ে যায়- স্যালুট।

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      ধন্যবাদ বোহেমিয়ান।
      সবাই অর্ধেকের বেশি ভুলে গেছে ইতিমধ্যে। দেখা যাক, তাদেরকে কিছুটা হলেও মনে করিয়ে দিতে পারি কিনা।

  7. সাদামাটা বলেছেনঃ

    একবার যদি কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হয় যাতে সেটা কেউ না ভুলে তাহলেই এরপর এত কিছু আর নতুন করে মনে রাখতে হবে না।

    ততদিন পর্যন্ত হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না ঘটনাগুলো। এরকম শক্তিশালী লেখা দিয়ে মনে করিয়ে দিতে হবে বারবার।

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      হারিয়ে যাক চাই না। শাস্তি আড়াল হোক, তাও চাই না।
      শুধু আমাদের শুভ চাওয়াটা যেন সবসময় পূরণ হয়।

  8. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    কী চমৎকার প্রতিক্রিয়া লেখাটার! অনেক অনেক বার পঠিত হইছে! গ্রেইট জব ম্যান! :dhisya:

  9. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    “বিজয়ী হয়েও তবু আজ আমরা পরাজিত ”
    🙁
    সময়ের সাথে আমরা কি ভুলে যাব? আমি শুধু চিন্তা করি, মেয়েটা কেমন আছে? ওর ভাবনা গুলো যদি জানতাম…

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      মেয়েটা ভালো নেই। খুবই দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যদিও। ওর পরিবার এখন সব আশা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা কেউ আর কোন তল খুঁজে পাচ্ছি না আপাতত। :brokenheart:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।